বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে
পোস্ট সূচিপত্রঃ বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে
- বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে
- বায়োফ্লক ট্যাংকে কয়টি মাছ পাওয়া যায়
- বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ খরচ
- বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ট্রেনিং
- উপসংহার
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে
আজ আমি এই আর্টিকেলে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। আপনি যদি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে এ বিষয়ে তথ্য জানার জন্য আর্টিকেলটি পড়া শুরু করেন তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেলটি পড়ছেন। বর্তমানে দিন দিন আমাদের জায়গার পরিমাণ কমে যাচ্ছে সেজন্যই মানুষ অল্প জায়গাতে কিভাবে মাছ চাষ করা যায় সে বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।
অল্প জায়গাতে মাছ চাষ করার লাভজনক পদ্ধতি হচ্ছে বায়োফ্লক পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে কম পুঁজিতে কম এবং অল্প জায়গার মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা যায় এবং তা লাভজনক। আপনি যদি সঠিক ভাবে ট্রেনিং নিয়ে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেন তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠা পেতে বেশি সময় লাগবে না। আপনি চাইলে আপনার বাসার আঙ্গিনায় বা বাসার ছাদেও এই বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে সেই বিষয়ে এখন আমি আপনাকে তথ্য দিব আশা করি আপনি তথ্যগুলো পেয়ে উপকৃত হবেন। একটি চৌবাচ্চা বা ট্যাংক বা হাউজ, লোহার খাঁচা, ত্রিপল, আউটলেট, টিডিএস মিটার, পিএইচ মিটার, অ্যামোনিয়াম টেস্ট কিট, অক্সিজেনের জন্য মটর, বিদ্যুৎ, মাছের পোনা, খাদ্য ও প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি। এই সমস্ত উপকরণ দিয়ে আপনি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি নিশ্চয় বুজতে পেরেছেন বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে।
বায়োফ্লক ট্যাংকে কয়টি মাছ পাওয়া যায়
আপনি হয়তো জানেন না বায়োফ্লক ট্যাংকে কয়টি মাছ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক বায়োফ্লক ট্যাংকে কয়টি মাছ পাওয়া যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য। ১০০০০ লিটার প্রজেক্ট থেকে ৮০০ থেকে ১০০০ কেজি মাছ পেতে পারেন। বায়োফ্লক প্রোজেক্টে অল্প ঘনত্বে অধিক মাছ চাষ করা গেলেও এই পরিমাণ মাছ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখনো উৎপাদন হয়ে উঠেনি।
আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং a to z
তেলাপিয়া মাছ ভালোভাবে চাষ করলে ৩০০ থেকে ৩৫০ কেজি উৎপাদন হয়। শিং মাছের ক্ষেত্রে উৎপাদন একটু কম, শিং মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদিত হয় এছাড়াও কৈ, মাগুর, পাঙ্গাস ইত্যাদি মাছ বিপুল পরিমাণে উৎপাদিত হয়। বায়োফ্লক ট্যাংকে কয়টি মাছ পাওয়া যায় সে বিষয়ে আপনি নিশ্চয়ই একটি পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ খরচ
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ খরচ কেমন হয় এ তথ্য জানার জন্য যদি আপনি আর্টিকেলটি পড়া শুরু করেন তাহলে আপনাকে স্বাগতম। আজ আমি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ খরচ কেমন হয় এ বিষয়ে তথ্য জানাবো। একটি ১০ হাজার লিটারের বায়োফ্লক প্রজেক্ট করতে কেমন টাকা খরচ হবে সেটির একটি হিসাব আমি আপনাকে দিব। ১০ ফিট বাই ১০ ফিট একটি বায়োফ্লক হাউজে পানি ধরে ১০ হাজার লিটার।
এই ১০০০০ লিটার বায়োফ্লক হাউজ বানাতে এবং অন্যান্য সরঞ্জাম কিনতে খরচ হবে প্রায় ২২ থেকে ৩০ হাজার টাকা মতো। বায়োফ্লকে বাতাস দেওয়ার জন্য আপনাকে একটি aerator কিনতে হবে যার দাম পড়বে ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা। প্রজেক্টটি দেখাশোনা করার জন্য একটি লোক রাখতে হবে চার মাসের জন্য তার বেতন লাগবে আনুমানিক ২০ হাজার টাকা। ১০০০০ লিটার একটি বায়োফ্লক প্রজেক্টে প্রাথমিক খরচ পড়বে প্রায় ৪৯ থেকে ৫৬ হাজার টাকার মতো।
আরো পড়ুনঃ শতক প্রতি মাছ ছাড়ার নিয়ম
এবার দশ হাজার লিটার প্রজেক্ট এর জন্য প্রথমে যা লাগবে তা হচ্ছে প্রোবায়োটিক ৫০০ গ্রাম প্রোবায়োটিকের দাম প্রায় ১৫০০ টাকা। এরপরে যেটি লাগবে সেটি হচ্ছে মোলাসেস, দশ হাজার লিটার প্রজেক্ট এর জন্য মোলাসেস লাগবে ৬ কেজি যার দাম ২১০ টাকা। এরপরে লাগবে এক কেজি ক্যালসিয়াম কার্বনেট যার দাম ৫০ টাকা এবং আরো লাগবে ১২ কেজি লবণ যার দাম ১৫০ টাকা। এবার কিনতে হবে পোনা।
যে পোনা গুলো এক কেজিতে ৫০০ থেকে ৮০০ পিচ ধরে ওই সাইজের পোনা ছয় হাজার পিস কিনতে হবে। শিং মাছের ওই সাইজের ছয় হাজার পিস পোনার দাম পড়বে ১২ হাজার টাকা। ৬০০০ পিস মাছের চার মাসে খাবার লাগবে ২০ হাজার টাকার। চার মাসে মোটরের বিল বাবদ আসবে ১২০০ টাকা এছাড়াও আনুষঙ্গিক খরচ ১০০০ টাকা। সর্বমোট এ খাতে খরচ আসবে ৩৬১১০ টাকা মত। তাহলে আপনি নিশ্চয় বুঝে গেছেন বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ খরচ কত হতে পারে।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ট্রেনিং
আপনি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ট্রেনিং কোথায় করবেন তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। আপনার জন্য খুশির খবর এই যে আমি এই আর্টিকেলে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ট্রেনিং কোথায় করবেন সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। মৎস অধিদপ্তরের অধীনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারিভাবে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ট্রেনিং দেওয়া হয়। আপনি যদি ঢাকায় বসবাস করেন তাহলে আপনার সুবিধার্থে ঢাকার মধ্যে একটি ট্রেনিং সেন্টারের ঠিকানা দিলাম, রোড নাম্বার- ১৯, বাড়ি নাম্বার- ৯০, সেক্টর নম্বর- ১৪, উত্তরা ঢাকা।
আরো পড়ুনঃ আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্স দাম কত বাংলাদেশ
এছাড়াও অনলাইনে অনেক বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের বই পাওয়া যায়। সেখান থেকে আপনি বই সংগ্রহ করে পড়তে পারেন। ইউটিউবে সার্চ দিলেও আপনি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন। আপনি ইচ্ছে করলেই এ সমস্ত জায়গা থেকে ট্রেনিং নিয়ে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি নিশ্চয় বুজতে পেরেছেন বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ট্রেনিং কোথায় করবেন এবং বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে।
উপসংহার
আপনি যদি নতুন উদ্যোক্তা হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই এ বিষয়ে ভালোভাবে
ট্রেনিং নিয়ে তারপর বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে হবে। আমি এই আর্টিকেল জুড়ে
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য কি কি লাগে সে সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত
ভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।
আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন এবং আপনি যে তথ্য খুঁজছিলেন তা যদি পেয়ে থাকেন তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ।24079
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url