মেডিটেশনের উপকারিতা কি - কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়

সুস্থতা আমাদের সবারই কাম্য। সুস্থ থাকতে হলে মেডিটেশনের উপকারিতা কি? তা জানতে হবে। মেডিটেশনের উপকারিতা কি জানতে পারলে, আপনি সুস্থ শরীর, সুস্থ মন ও সুন্দর জীবন পাবেন। আমরা সুস্থ থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করে থাকি, কিন্তু আমরা অনেকেই মেডিটেশনের উপকারিতা কি এবং কিভাবে মেডিটেশন করতে হয় তা জানিনা।
মেডিটেশনের উপকারিতা কি - কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়
মেডিটেশনের উপকারিতা কি ও কিভাবে মেডিটেশন করতে হয় সেটা জানা থাকলে আমাদের জীবনযাত্রা আরো সুন্দর হবে। চলুন তাহলে আজকে আমি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো মেডিটেশনের উপকারিতা কি এবং কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মেডিটেশনের উপকারিতা কি - কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়

মেডিটেশনের উপকারিতা কি

মেডিটেশনের উপকারিতা কি? মেডিটেশনের উপকারিতা এক কথায় বলে শেষ করা যাবেনা। সুস্থ শরীর ও সুস্থ সমৃদ্ধশালী মন সবারই কাম্য। মেডিটেশন এক ধরনের ধ্যান এ ধ্যান প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট করলে, আপনার শরীরে ও মনে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন, যেগুলো আপনার সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য খুবই প্রয়োজন। আমরা আমাদের কর্মের মাধ্যমেই আমাদের জীবনকে সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে পারি যার কারনে পৃথিবীটা অনেক সুন্দর হয়ে ওঠে। প্রতিদিন মেডিটেশন করলে মানুষের চেতনা জগতে অনেক পরিবর্তন আসে। তাহলে চলুন মেডিটেশনের উপকারিতা কি এবং মেডিটেশন করলে আমাদের শরীরে ও মনে কি কি ধরনের পরিবর্তন আসে সেগুলো জেনে নিই।

  • দেহ এবং স্নায়ুর শিথিলায়ন। 
  • মনকে বাস্তবতায় নিয়ে আসা। 
  • মনোযোগ বৃদ্ধি করা। 
  • মস্তিষ্কের ব্যবহার ব্যবহার বাড়িয়ে দেওয়া। 
  • মন ও আত্মাকে কেন্দ্রভুত করা ইত্যাদি। 

মেডিটেশনের উপকারিতা কি সেগুলো আপনি নিশ্চয়ই বুজতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়লে, মেডিটেশনের উপকারিতা কি এবং কিভাবে মেডিটেশন করতে হয় সেটা আরো ভালো হবে বুঝে যাবেন এবং আপনার জীবনে যদি তা বাস্তবায়ন করেন তাহলে আপনার জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি এবং সুস্থতা সবকিছুই পরিপূর্ণ হয়ে যাবে।

কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়

কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়? সেটা আমরা অনেকেই জানিনা। কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়, আপনি যদি না জানেন, তাহলে আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন আমি আজ আপনাকে জানাবো কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়। আপনার সুবিধার জন্য মেডিটেশন করার সঠিক দশটি নিয়ম বর্ণনা করছি।

প্রস্তুতি নেওয়াঃ আপনাকে মেডিটেশন করার পূর্বে প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনার শরীর এবং মনকে রিলাক্স করতে হবে।
বিশ্বাসঃ মেডিটেশন করার ক্ষেত্রে আপনাকে বিশ্বাস রাখতে হবে যে আপনি কি করছেন, বিশ্বাস ছাড়া সম্পূর্ণ হবে না।
নিজস্ব ভাষার ব্যবহারঃ আপনি যখন মেডিটেশন করবেন, তখন অবশ্যই আপনাকে নিজের ভাষায় তা করতে হবে।
সময় সীমা নির্ধারণ করাঃ মেডিটেশন করার সময় আপনি কখনোই সময় সীমা নির্ধারণ করবেন না।
আসনঃ মেডিটেশনের জন্য আসন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, মেরুদন্ড সোজা করে আসন গ্রহণ করতে হবে।
হাতের পজিশন সঠিক রাখাঃ হাতকে সোজা করে হাতের তালু উপর দিকে রেখে, ধ্যান বা জ্ঞান মুদ্রায় রাখতে হবে।
অনুভবঃ মেডিটেশন করার সময় বাস্তবতা নিয়ে ভাবতে হবে, কাল্পনিক কিছু নিয়ে ভাবা মানে সময় নষ্ট।
অন্বেষণ বা খোঁজাঃ নিজের ভেতরের প্রতিভাকে খুঁজে তা বাস্তবে রূপ দিতে হবে।
মোবাইল ফোন ব্যবহার বা হেডফোন ব্যবহারঃ আমরা মোবাইল ফোনে মেডিটেশন শেখার প্রথম দিকে হেডফোন ব্যবহার করে থাকি, শেখার পরে হেডফোন ছাড়া মেডিটেশন করা ভালো।
চিন্তা মুক্তঃ অনেকে ভাবেন মেডিটেশন করা মানে নিজেকে চিন্তামুক্ত করা আসলে এটা ভুল ধারণা। মেডিসিন করে নিজেকে চিন্তা মুক্ত করার চেষ্টা করা আর সময় নষ্ট করা একই কথা তাই নিজেকে চিন্তা মুক্ত করার চেষ্টা না করে, নিজের চিন্তাকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়াই মেডিটেশনের আসল উদ্দেশ্য।

এ দশটি নিয়ম পড়ার পরে আপনি হয়তো বুজতে পেরেছেন কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়।

মেডিটেশন কেন করে

মেডিটেশন কেন করে? সে উত্তর দিতে গেলে প্রথমেই বলব আধুনিক বিশ্বে মানুষের শরীর ও মনকে শিথিল ও কেন্দ্র ভূত করার জন্য মেডিটেশন জরুরী নিয়মিত মেডিটেশন বা ধ্যান করলে শরীর স্বাস্থ্য, মন ভালো থাকে, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়, যার কারনে মানুষ ব্যক্তিগত জীবনে এবং কর্মজীবনে সফলতা পায় এবং নিজের কাজকর্ম গুলো খুব আনন্দের সঙ্গে করতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ শরীর সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য যা আপনিও জানেন না?

আপনি যদি নিয়মিত মেডিটেশন করেন, আপনার জীবন বদলে যাবে আপনি প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসী ও কর্মক্ষম মানুষের উঠবেন এতে করে কোন সন্দেহ নাই। আপনার জীবনের সফলতা খুব সহজে আপনার হাতে ধরা দিবে। বড় বড় সকল ব্যক্তিদের জীবনী পড়লে দেখা যাবে তারা সবাই নিয়মিত মেডিটেশন করেন। তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বুজতে পারছেন মানুষ মেডিটেশন কেন করে।

মেডিটেশন করার নিয়ম গুলো কি

মেডিটেশন করার নিয়ম গুলো কি? জানার আগে জানব, মেডিটেশন এর উপকারিতা কি? নিয়মিত মেডিটেশন করলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়নি, ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ে, মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকে, মানসিক দুশ্চিন্তা দূর হয় এবং শরীরের বিভিন্ন রকম রোগ বালাই দূর হয়। তাই মেডিটেশন করার নিয়ম গুলো কি তা সঠিক ভাবে জানতে হবে। তাহলে চলুন মেডিটেশন করার নিয়ম গুলো কি জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ ৯ উপায়ে কিভবে সুন্দর হওয়া যায় - রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায়

  • প্রথমতঃ মেডিটেশন করার জন্য নিরিবিলি একটি জায়গা নির্বাচন করুন, তারপর আপনার মোবাইল ফোনটি অফ করে দিন, এবার ঢিলাঢালা পোশাক পরিধান করুন, পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় মাদুর বিছিয়ে সঠিক ভাবে আসন গ্রহণ করুন।
  • দ্বিতীয়তঃ খুব তাড়াতাড়ি ঘটে গেছে এরকম কোন আনন্দময় স্মৃতি মনে করুন, চোখ বন্ধ করুন। নাক দিয়ে দম নিন, এবং মুখ দিয়ে দম ছাড়ুন এরকম ভাবে দশ বার করতে থাকুন।
  • তৃতীয়তঃ এবার দম স্বাভাবিক ভাবে নিতে থাকুন আর ভাবুন আপনার শরীর শিথিল হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে দম নিন এবং আস্তে আস্তে দম ছাড়ুন খেয়াল রাখবেন দম নেওয়ার চাইতে ছাড়ার সময়টা যাতে বেশি হয়।
  • চতুর্থতঃ দম স্বাভাবিক ভাবে নিতে থাকুন আর খেয়াল করুন কিভাবে বাতাস নাক দিয়ে ঢুকে ফুসফুস পর্যন্ত যাচ্ছে, আবার ফুসফুস থেকে বাতাস কিভাবে নাক দিয়ে বেরিয়ে আসছে এভাবেই ধ্যান করতে থাকুন। এভাবে সারাদিনের কাজের পরিকল্পনা করা এবং রাগ, ক্ষোভ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মেডিটেশন করার নিয়ম গুলো কি, সেগুলো এখানে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হলো।

কখন মেডিটেশন করতে হয়

কখন মেডিটেশন করতে হয়? বিশেষজ্ঞদের মতে মেডিটেশন করতে হয়, সকাল বেলা। ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে, এ সময় মেডিটেশন করার ফলে, আপনার শরীরকে ও মনকে ব্যায়াম করার জন্য প্রস্তুত করে ফেলবে। মেডিটেশন দিনে দুই বার করা উচিত এতে করে শরীর ও মনের সমস্ত ধরনের ক্লান্তি ও মানসিক দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায় শরীর ও মন প্রফুল্ল হয়ে ওঠে আর যখনই আপনার শরীর ও মন সতেজ থাকবে, তখন আপনি অনেক প্রশান্তি নিয়ে আপনার সারাদিনের কাজ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য তৈরি হয়ে যাবেন। কখন মেডিটেশন করতে হয় সেটা আপনি বুজতে পেরেছেন।

মেডিটেশনের জন্য সঠিক সময় কোনটা

মেডিটেশনের জন্য সঠিক সময় কোনটা? দিনের যে কোন সময় আপনি মেডিটেশন করতে পারেন। আপনার সুবিধা অনুযায়ী আপনার চারপাশে যখন নিরিবিলি নিস্তব্ধতা অনুভব করবেন, তখনই আপনি ধ্যান করতে পারেন। মেডিটেশনের জন্য সঠিক সময় কোনটা? সেটা হচ্ছে সকাল বেলা ও সন্ধ্যে বেলা। 

আরো পড়ুনঃ চুল ঘন করার উপায় ৭ দিনে - চুল পড়া বন্ধ করার উপায়

সকাল চারটা থেকে পাঁচটা ও সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাতটা এই সময়টা মেডিটেশন করার জন্য সঠিক সময় কারন এ সময় চার দিকটা খুব শান্ত থাকে, শরীরের ইন্দ্রিয় গুলো সজাগ থাকে এবং মেডিটেশনে খুব সহজেই মনোনিবেশ করা যায়। আর্টিকেলটি পড়ে এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনি বুজতে পেরেছেন মেডিটেশনের উপকারিতা কি ও কিভাবে মেডিটেশন করতে হয়।

উপসংহার

সবশেষে একটা কথাই বলব যে, সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে এবং মেডিটেশন বা ধ্যান করতে হবে। মেডিটেশনের উপকারিতা কি এবং কিভাবে মেডিটেশন করতে হয় সে বিষয়ে জানার পরে আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন খুব তাড়াতাড়ি শুরু করবেন, এটা না ভেবে আপনি আজ থেকেই মেডিটেশন শুরু করতে পারেন।

আশা করি আর্টিকেলটিতে মেডিটেশন বা ধ্যান সম্পর্কিত সমস্ত কিছু জানতে পেরেছেন। মেডিটেশনের উপকারিতা কি এবং কিভাবে মেডিটেশন করতে হয় তা বুজতে পেরেছেন। তাহলে আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানান ধন্যবাদ।24079

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url