লাউ গাছ থেকে বেশি ফলন পাওয়ার গোপন টিপস
লাউ গাছ থেকে বেশি ফলন পাওয়ার গোপন টিপস
প্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইডির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আশা করি আপনি ভালো আছেন। আজকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যতিক্রমধর্মী পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আপনারা যারা লাউ চাষ করছেন অল্প সময়ে মাত্র 20 থেকে 25 দিনে প্রচুর ফলন পেতে চান তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সার তৈরি করার পদ্ধতি বলব এবং এমন কিছু পরিচর্যার কথা বলব যে গুলো হয়তো কখনও শোনেননি। আর যে পরিচর্যা গুলো করতে পারলে কিন্তু বেশ ভাল পরিমানে ফলন হবে।
সেইসাথে এমন কিছু টেকনিক বলব যেগুলো হয়তো আগে শোনেন নি৷ যার ফলে আপনাদের লাউ টিকে যাবে এবং প্রচুর পরিমাণে ফলন পাবেন। এর পাশাপাশি এমন কিছুর সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো এবং এর প্রয়োগ পদ্ধতি বলবো যে, আপনি সঠিক নিয়মে যদি প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে আপনাদের কাছগুলোতে সুস্থ সবল এবং অল্প সময়ে প্রচুর স্ত্রী ফুল আসবে। তাই পুরো পোস্টটি অবশ্য শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচীপত্র: লাউ গাছ থেকে বেশি ফলন পাওয়ার গোপন টিপস
- লাউ গাছের জন্য সার তৈরি করার নিয়ম
- লাউ গাছে সারটি কতদিন পরপর দিবেন
- লাউ গাছ ছোট অবস্থায় কি কি সার দিবেন
- মন্তব্য
লাউ গাছের জন্য সার তৈরি করার নিয়ম
শুরুতে একটি পাত্র নিয়ে নেবেন। আপনারা যে কোনও পাত্র নিতে পারেন। এবার নিতে হবে একটি সব্জির খোসা কিংবা ফলের খোসা। আপনারা ফল খাওয়ার পর কিংবা ফল নষ্ট হয়ে গেলে সেগুলি ফেলে দেন। এখন থেকে ফেলে দেবেন না। এবার ছোট ছোট টুকরা করে এগুলোকে কেটে নিতে হবে। অনেকে বলেন, ফলের খোসায় আবার কি আছে। যেগুলো গাছের জন্য দরকার হয়। ফলের খোসা কিংবা সবজির খোসায় প্রচুর পুষ্টি গুণাগুণ রয়েছে যা গাছের জন্য নাইট্রোজেন ফসফরাস, পট্যাশিয়াম সহ বিভিন্ন মেট্রো ও মাইক্রো পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
সবগুলো খোসা কেটে নেবেন। কেটে নিয়ে অবশ্যই এর সাথে কিছু উপাদান মেশাতে হবে। এর পর এতে পানি মিশিয়ে নেবেন। কতটুকু পানি মেশাবেন? এ ক্ষেত্রে আপনারা চেষ্টা করুন যেন সবগুলো খোসা খুব ভালোভাবে পানির নিচে ডুবে থাকে। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নেবেন যাতে সব খোসাগুলো খুব ভাল ভাবে ভিজে যায় । এর সাথে নিতে হবে এক মুঠো ব্যবহার করা চা পাতি। অর্থাৎ চা ব্যবহার করার পর যে পাতা রয়েছে সেগুলো ফেলে না দিয়ে অবশ্যই এক মুঠো দিয়ে দেবেন। এর মধ্যে এবারে দিতে হবে আরেকটি উপাদান।
এটি হল কম্পোস্ট কিংবা পচা গোবরসার। আপনার হাতে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করতে পারেন। আপনারা চেষ্টা করুন তিন মুঠো পরিমাণ এই গোবর সার কিংবা কম্পোস্ট ব্যবহার করার জন্য। যেটি গাছের জন্য খুবই ভাল। তবে আপনি এই নিয়মে যদি প্রয়োগ করেন তাহলে অবশ্যই খুব ভালো একটি উৎস সার হবে। এবারে খুব ভাল করে এই তিনটি উপাদানকে মেশাতে হবে। আর চেষ্টা করুন কিছুক্ষণ ধরে ঠিক ভাবে মেশানোর জন্য। তবে ভালো সার তৈরি করতে গেলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এর সাথে মিশাতে হবে কিছু পরিমাণ গুড়।
আপনারা চেষ্টা করুন যে কোনও মল আছে সেটা গুড় কিংবা নরমাল গুঁড়ো এক চামচ দিয়ে দেওয়ার জন্য৷ এতে করে গাঁজন প্রক্রিয়া কিংবা পচন প্রক্রিয়া খুব দ্রুত হবে। মাত্র 20 থেকে 25 দিনের মধ্যে কিন্তু এই সারটি খুব ভাল ভাবে তৈরি হয়ে যাবে। যদি পারফেক্ট ভাবে তৈরি করতে চান তাহলে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নেবেন। নাড়াচাড়া করা হয়ে গেলে চেষ্টা করবেন এটাকে রেখে দেওয়ার জন্য। কী ভাবে রাখবেন? এ জন্য অবশ্য একটি পলিথিন যার ভিতরে যেন বাতাস বা কোনো ফোঁটা থাকে সেটিই লক্ষ্য করবেন। এবার খুব ভালোভাবে এটাকে আটকে দেবেন।
আপনারা যদি চান অবশ্যই বদ্ধ পাত্র ব্যবহার করতে পারেন। যাতে মুখ আটকে রাখা যায়। 20-25 দিন রাখে দিন যাতে করে সবজি খোসা এবং অন্যান্য সারগুলো খুব ভালভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সার হয়। 25 দিন অপেক্ষা করার পর দেখতে পারবেন আপনার সারগুলো কিন্তু হয়ে গেছে। তো এই সারের মধ্যে কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। নাইট্রোজেন ফসফরাস, পট্যাশিয়াম সেইসাথে ম্যাক্রো ও মাইক্রো পুষ্টি উপাদান এগুলো কিন্তু শুকনো শুকনো হয়ে যাবে। কোনও সমস্যা নেই দেওয়ার পূর্বে এগুলোকে হালকা ভিজিয়ে গাছের গোড়ায় দিয়ে দিতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ মরিচের গাছে প্রচুর ফলন পাওয়ার গোপন টিপস জেনে নিন
লাউ গাছে এই সারটি কতদিন পরপর দেবেন
এটি দেওয়ার ক্ষেত্রে সপ্তাহে একবার দেবেন। এর সাথে যদি পারেন আপনারা চেষ্টা করুন সরিষার খৈল দুই দিন ভিজিয়ে রেখে এর সাথে দেওয়ার জন্য। এই সরিষার খোল ভেজানোর পর যে উপাদানটা থাকবে সেটি অবশ্যই কিছু পরিমাণে সাথে মিশে যদি দেন তাহলে এর কার্যকারিতা আরও বেড়ে যায়। এবং যে কোনও গাছে এটি প্রয়োগ করা যায়। বিশেষ করে লাউগাছে প্রয়োগ করলে অল্প সময়ে ভালো ফলন হবে। অনেকে বলেন, আমাদের লাগছে প্রচুর পরিমাণে ছোট ছোট কচি লাউ আসছে কিন্তু ছোট থাকা অবস্থায় নষ্ট হয়ে যায়।
এ জন্য কী করবেন?
এ লাউয়ের বাচ্চাগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য পলিথিন দিয়ে এগুলোকে আলতো করে ঢেকে দেবেন। এতে করে মাছি পোকার উপদ্রব কমবে এবং সুস্থ সবল লাভ পাবেন। এছাড়াও গাছে প্রচুর ফলন পেতে অবশ্যই চেষ্টা করুন লাউ গাছের গোড়ার দিকে যে বয়স্ক পাতা রয়েছে সেগুলো কেটে দেওয়ার জন্য। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গাছের গোড়া থেকে পাতাগুলো কেটে দিলে নতুন শাখা বের হবে এবং সেই শাখাগুলো থেকে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ফল আসবে। অর্থাৎ আগের যে নতুন ডগা বের হবে সেগুলোর পুষ্টি উপাদান সরবরাহ হবে। আপনি এই কাজগুলি অবশ্যই করবেন। এতে করে সুস্থ সবল লাউ পাবেন। এছাড়া অতিরিক্ত পাতা হলে সেই পাতাগুলো কেটে দেবেন। এতে কোন ক্ষতি হবে না।
লাউগাছ ছোট অবস্থায় কি কি সার দিবেন
অনেকে বলেন ছোট অবস্থায় গাছে কী কী সার দিতে হয়। লাউ গাছে সার দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই চেষ্টা করুন লাউ গাছের চারপাশে মাটি ঠিক যে ভাবে আলগা করে দেওয়ার জন্য। এবার কী কী সার দেবেন, চলুন জেনে নেই। শুরুতে আপনারা মাটি আলগা করার পরে যে সারটি দিয়ে দেবেন সেটি হল ব্যবহার করা চা পাতা।
অবশ্যই ফেলে না দিয়ে সেগুলোকে রোদে শুকিয়ে তারপর ব্যবহার করতে হবে। তবে সরাসরি গাছে না প্রয়োগ করে চেষ্টা করুন রোদে শুকিয়ে দেওয়ার জন্য। লাউ গাছের চারপাশে একমুঠ পরিমাণ দিয়ে দিলেই যথেষ্ট ৷ আর মনে রাখবেন, জৈব সার আপনি বেশি ব্যবহার করলেও কাছে কোনও ক্ষতি হবে না। তবে অতিরিক্ত করলেও আবার কোনও লাভ নেই।
মন্তব্য
আপনারা সঠিক নিয়মে লাউ গাছে সারটি প্রয়োগ করুন। এর পাশাপাশি আপনার এমওপি সার বা লাল সার অনেকে বলে থাকেন এটি দিয়ে দিতে পারেন। এতে দিলে গাছের দ্রুত লাউ আসতে সাহায্য সহযোগিতা করে। এর পাশাপাশি কাছে অবশ্যই নিয়মিত পানি দেবেন। পানি দেওয়ার ক্ষেত্রে বিকেলের দিকে পানি দেওয়ার চেষ্টা করুন। এভাবে আপনি যদি সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাহলে আপনি লাউ গাছে প্রচুর ফলন পাবেন।
আরো পড়ুনঃ সারা বছর চাষ করা যায় এমন শাকসবজি
শেষের কথা
প্রিয় পাঠক বন্ধু অবশ্যই আমার উপরের দেখানো পদ্ধতিটি অবলম্বন করুন। আপনারা অবশ্যই লাউ গাছে ভালো ফলন পাবেন। আশাকরি পোস্ট পড়ে আপনার অনেক ভালো লেগেছে। পোস্টটি অবশ্যই বন্ধুত্বের সাথে শেয়ার করবেন। এরকম আরো অনেক হেল্পফুল পোস্ট পেতে মোটিভেশন আইটির সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url