ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি ইন্টারভিউয়ে যে ভুলগুলো করা যাবে না
ইন্টারভিউয়ে অকৃতকার্য হলে পাবলিক পরীক্ষার মত আবার দেয়ার সুযোগ থাকে না। আর সবচেয়ে স্মার্ট ও যোগ্য প্রার্থীকেও ইন্টারভিউ এর জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি হিসেবে অনেকগুলো বিষয়কে উল্লেখ করা যেতে পারে। যে বিষয়গুলো ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি হিসেবে পূর্ব থেকে গ্রহণ করতে হয়। নিম্নে ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অবহিত করা হলো।
পোস্ট সূচিপত্র: ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি ইন্টারভিউয়ে যে ভুলগুলো করা যাবে না
- অনুশীলন করতে হবে নীরব যোগাযোগের
- পোশাক পড়তে হবে প্রতিষ্ঠানের উপযোগী
- শুনুন
- অতিরিক্ত নয় জানা আছে যা তাই বলতে হবে
- বেশি বন্ধুত্ব ফল হবে না
- ব্যবহার করতে হবে সঠিক ভাষা
- বেশি আত্মবিশ্বাসী ভালো নয়
- প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে যত্নের সঙ্গে
- প্রশ্ন করুন
- অস্থির হবেন না
- দেরি করে ভাইবা যাওয়া
- পোশাকে অপরিপাটি
- অনাগ্রহ
- প্রস্তুতি ছাড়া ভাইভাই যাওয়া
- উত্তরের অপ্রাসঙ্গিকতা
- মুঠোফোন বেজে ওঠা
- প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে না জানা
- মন্তব্য
ইন্টারভিউ এর জন্য অনুশীলন করতে হবে নীরব যোগাযোগের
ইন্টারভিউ এর জন্য পোশাক পড়তে হবে প্রতিষ্ঠানের উপযোগী
প্রচলিত সাধারন পোশাক আপনার ইন্টারভিউ এর জন্য উপযুক্ত নয়। চাকরি প্রার্থীদের জানা উচিত ইন্টারভিউতে কোন পোশাকটি পরা উচিত। আপনি স্যুট পড়বেন কিনা তা নির্ভর করছে কোম্পানি রীতি-নীতি ও আবেদনকারীর পদবির ওপর। সবচেয়ে ভালো হয় ইন্টারভিউ এর আগেই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কেমন পোশাক পড়েছেন সেটা লক্ষ্য করে সে অনুযায়ী পোশাক পরলে।
শুনুন
ইন্টারভিউ এর শুরু থেকে তারা আপনাকে বিভিন্ন তথ্য দেবেন। সেগুলো মনোযোগ দিয়ে না শুনলে আপনি আপনার সুযোগ মিস করবেন। ভালো যোগাযোগ দক্ষতার আপনার অবশ্যই অন্য পক্ষের কথা শুনতে হবে এবং সময়মতো জানাতে হবে যে আপনি শুনছেন। আপনার ইন্টারভিউয়ের দিকে মনোযোগ দেয়া খুবই জরুরী।
আরো পড়ুন : চাকুরীর ইন্টারভিউতে সফল হওয়ার তিনটি পূর্ব শর্ত
ইন্টারভিউতে অতিরিক্ত নয় জানা আছে যা তাই বলতে হবে
প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলা ইন্টারভিউয়ের একটি বড় ভুল। ইন্টারভিউ কোন অজানা প্রশ্নের উত্তরে সম্পূর্ণ অসাম লগ্ন কথাবার্তা বলা একেবারেই অনুচিত। এতে আপনার চাকরির সম্ভাবনা নষ্ট হয়। ইন্টারভিউয়ের আগে সার্কুলার দেখে তাদের প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে পড়াশোনা করে নিতে হয়।
বেশি বন্ধুত্ব ফল হবে না
ইন্টারভিউ একটি পেশাদার বিষয় এতে ব্যক্তিগত কথাবার্তা বন্ধুত্ব ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। এতে সর্বশক্তিতে চাকরিতে আপনি কতটা যোগ্য প্রমাণ করতে হবে। এতে সবসময় মনে রাখতে হবে যে আপনিই একজন চাকরি প্রার্থী অন্য কেউ নন।
ইন্টারভিউ তে ব্যবহার করতে হবে সঠিক ভাষা
ইন্টারভিউতে আপনাকে অবশ্যই পেশাদারী ভাষা ব্যবহার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কোন অরুচি কথাবার্তা বিষয়। এতে বয়স বর্ণ ধর্ম রাজনীতি ও যৌন বিষয়ক অবমাননা করার বিষয় সবসময় এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলোর ব্যতিক্রম হলে সিগ্রি আপনাকে দরজার বাইরে চলে যেতে হবে।
ইন্টারভিউ তে বেশি আত্মবিশ্বাসী ভালো নয়
আচরণ আপনার চাকরির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইন্টারভিউতে আত্মপ্রত্যয় পেশাদারিত্ব ও বিনয়ের সমন্বয় থাকতে হবে। আপনি নিজের যোগ্যতা কে প্রমাণ করতে গিয়ে অতিরিক্ত কনফিডেন্ট হবেন না।
ইন্টারভিউ তে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে যত্নের সঙ্গে
প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর যত্নের সঙ্গে দেয়া টা ইন্টারভিউতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে কোন একটি মাসে বা বছরে কি করেছেন জিজ্ঞাসা করা হলো এ সময় আপনি যদি কোন কিছু মনে করতে না পারেন তাহলে আপনি একটি সুযোগ হারালেন। আর যদি এর সময়ে আপনার পড়াশোনা চাকরি এবং বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় বর্ণনা করেন তাহলে তা হবে চাকরির দিকে এক ধাপ অগ্রগতি।
প্রশ্ন করুন
ইন্টারভিউতে বেশিরভাগ সময় জিজ্ঞাসা করা হয় আপনার কোন প্রশ্ন আছে কি? সে বিষয়ে অধিকাংশ না বলে দেন। না বলার চেয়ে প্রতিষ্ঠান কোন বিষয়ে প্রশ্ন করাটাই ভালো। কি প্রশ্ন করবেন তার নিহিত আছে ইন্টারভিউ এর মধ্যেই। ইন্টারভিউয়ের ভিত্তিতে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করা ভালো এতে আপনি যে সম্পূর্ণ ইন্টারভিউ যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন তা বোঝাতে পারবেন।
ইন্টারভিউ তে অস্থির হবেন না
ইন্টারভিউতে যদি আপনার কথাবার্তায় মনে হয় প্লিজ প্লিজ আমাকে চাকরিটা দিন তাহলে আপনাকে নিঃসন্দেহে কম আত্মবিশ্বাসী মনে হবে। এতে আপনার চাকরির সম্ভাবনা বাড়বে না। আপনি যদি চাকরির জন্য উপযুক্ত হন তাহলে নিজের আচরণের মাধ্যমে বিশ্বাস করানোর দায়িত্ব আপনার।
ইন্টারভিউ তে যে ভুলগুলো করা যাবে না
কাঙ্খিত প্রতিষ্ঠানের একটি চাকরি কে না চায়। এমন একটি স্বপ্নে চাকরি বদলে দিতে পারে আপনার জীবনের সমৃদ্ধির পথ। শুরু হতে পারে আপনার পথ চলা। এত বড় যে উপলক্ষ এনে দিতে পারে সেই চাকরি সাক্ষাৎকারের জন্য অবশ্যই ভালো প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া উচিত। এজন্য একটু আলাদা করে চিন্তা করা যেতে পারে। কিভাবে নিজেকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা যায়? একটু উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দেয়া যায়, নিজের যোগ্যতা প্রমান দেয়া যায় সেটি নিয়ে আগে থেকেই ভেবে রাখতে হবে। কারণ অনেক ওরাধ্য যে সাক্ষাৎকার সেখানে যেকোনো অসতর্কতা সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে চাকরিপ্রার্থীর জন্য।
ইন্টারভিউ তে দেরি করে ভাইবা যাওয়া
চাকরি সাক্ষাৎকারে দেরিতে উপস্থিত হওয়ার কোন কোনো সুযোগ নেই। এখানে কোন অজুহাতের সুযোগ নেই। কারণ কর্মীর সময়ানুবর্তিতা প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেরি করে সাক্ষাৎকার দিতে যাওয়াটা একটা বড় ত্রুটি, সেখানে অজুহাত দেখানো আরো বড় ভুল। দেরি করে গেলে আপনার চাকরি না হওয়ার আশঙ্কায় বেশি তাই এ বিষয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
পোশাকে অপরিপাটি
চাকরি সাক্ষাৎকার মার্জিত পোশাকে পড়ে যাওয়া সাধারণ ভদ্রতা। সাক্ষাৎকারে গ্যাজুয়াল পোশাক পড়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। ফরমাল পোশাকে গেলে চাকরির প্রার্থীর কাজ করবে। কথায় আছে আগে দর্শনধারী তারপর গুনবিচারী। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীদের আপনাকে দেখে যদি পছন্দই না হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ কেন আপনার ভিতর অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের খোঁজ নিতে চাইবে?
আরো পড়ুন : আপনি কেন বড়লোক হতে পারেন না জানেন? বড়লোক হওয়ার টিপস
অনাগ্রহ
আপনার আবেদন দেখেই কিন্তু প্রতিষ্ঠান আপনাকে সাক্ষাৎকার দিতে ডেকেছে। আপনাকে নিয়ে তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু সেখানে সাক্ষাৎকার যারা নিচ্ছেন তাদের সামনে যদি আপনার অনাগ্রহ প্রকাশিত হয়ে পড়ে তাহলে কিন্তু সর্বনাশ। এটা ঠিক চাকরি প্রার্থীর ও চাকরি নিয়ে পছন্দ অপছন্দ থাকতে পারে। এমন হতে পারে হয়তো বেতন বা অন্য কোনো কারণে চাকুরী আপনার পছন্দের শীর্ষে নেই।
প্রস্তুতি ছাড়া ভাইভাই যাওয়া
ভাইভাই যাওয়ার আগে অবশ্যই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন। আপনাকে দু একটি প্রশ্ন করে ওরা বুঝেন যাবেন আপনার প্রস্তুতি কেমন। প্রস্তুতি ভালো না থাকলে আপনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সে কারণে প্রস্তুতিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি সম্পর্কে একটু পড়াশোনা করে যাওয়াই ভালো
উত্তরের অপ্রাসঙ্গিকতা
আপনি আমাদের সম্পর্কে কতটুকু জানেন অথবা আপনি এখানে কেন চাকরি করতে চান? সাক্ষাৎকার বোর্ডের কাছ থেকে এ দুটি প্রশ্নের মুখোমুখি চাকরি প্রার্থীরা হতেই পারেন। এসব প্রশ্নের কখনো অপ্রাসঙ্গিক উত্তর কিংবা অহেতুক প্রশংসা করা যাবে না।
মুঠোফোন বেজে ওঠা
সাক্ষাৎকার দেয়ার আগে নিজের মুঠোফোনটি বন্ধ রাখা উচিত। সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় পকেটে ফোন বেজে ওঠাটা অশোভনীয় ব্যাপার। এতে আপনার চরিত্রের উদাসীন ভাব ফুটে ওঠে।
প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে না জানা
যে প্রতিষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিতে এসেছেন সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এবং প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও ব্যবসায়িক সেগমেন্ট সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা জরুরী। সাক্ষাৎকার দিতে এসে যদি সেই প্রতিষ্ঠানের মৌলিক বিষয়গুলো বলতে না পারেন তাহলে সেটা বিপর্যয় কর।
দায়িত্ব সম্পর্কে না জানা
আপনি ফ্রেশার হলে যে পদের জন্য আবেদন করতে যাচ্ছেন সেই পদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা নিয়ে যাবেন। আপনি ওই পদের যোগ্য কিনা ভাইবা বোর্ড আপনাকে বাজিয়ে দেখতে পারে
মন্তব্য
সবাই একটি স্বপ্ন নিয়ে ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত হয়। অনেক স্বপ্ন দেখে যে আমি এই চাকরিটি পাব এবং আমার ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট করব। কিন্তু উপরোক্ত কারণগুলোর কারণে ইন্টারভিউতে সাকসেস হতে পারে না। উপরোক্ত কারণে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় ইন্টারভিউ বোর্ডেই। তাই অবশ্যই স্বপ্ন পূরণ করতে হলে এবং স্বপ্নের চাকরিটি পেতে হলে উপরোক্ত ভুলগুলো মোটেই করা যাবে না।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url