ইসলামের পথে চলার উপায়, আল্লাহর পথে আসার উপায়

 ইসলামের পথে চলার উপায়, আল্লাহর পথে আসার উপায়

আমাদের জীবনের অনেক সময়ে দেখা যায় সে যখন আমরা কোনো বড় বিপদের হাতে পড়ি, তখন আমরা বেশি বেশি নামায কালাম এবং বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করি। তারপর  যখন বিপদ কেটে যায় তখন আমরা আবার নামায ছেড়ে দিই এবং আল্লাহকে ভুলে যাই। আবার অনেক সময় দেখা যায় কোনও এক বক্তার বক্তব্য শুনে মনটা নরম হয়ে যায় এবং তারপরে মনে হয় যে আজ থেকে নামাজ পড়ব। আর কখনো না মা ছাড়ব না। কিন্তু কিছুদিন যাবার পরে আমরা আবার আগের মতো হয়ে যায়।

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকে এই পোস্টটি করেছি, যারা আল্লাহর পথে চলে এবং যারা আল্লাহর পথে চলতে চায় তাদের জন্য এমন কিছু মানুষ আছে যারা নামাজ কালাম পড়তে চাই ভালো পথে চলতে চাই। কিন্তু কিছুদিন নামাজ পড়ার পরে আবার নামায ছেড়ে দেয় এবং আল্লাহর পথ থেকে সরে আসে। তাদের জন্য এই পোস্টটি অনেক উপকারে আসবে ইনশাল্লাহ। আমি এমন কিছু পদ্ধতি এবং এমন কিছু উপায় বলে দেবো যে পদ্ধতিগুলো কাজে লাগালে ইসলামের পথে টিকে থাকা অনেক সহজ হবে। আপনি যদি ইসলামের পথে চলতে চান, তাহলে সর্বপ্রথমে আপনার ভেতরে ইসলামের পথে চলার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: ইসলামের পথে চলার উপায় আল্লাহর পথে আসার উপায়

  • ইসলামের পথে আসতে হলে আপনাকে ইসলামিক মানসিকতা তৈরি করতে হবে
  • ইসলামিক মানসিকতা তৈরি তিনটি উপায়
  • আল্লাহর পথে আসার জন্য বাস্তব নজরে চিন্তা করতে হবে
  • মন্তব্য

ইসলামের পথে আসতে হলে আপনাকে ইসলামিক মানসিকতা তৈরি করতে হবে

প্রথম বিষয় হল ইসলামিক মানসিকতা গড়ার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন হল ইসলামী সাধারণ কিছু জ্ঞান অর্জন করা। কারণ ইসলাম সম্পর্কে যদি সাধারণ জ্ঞানটুকু না থাকে তাহলে ইসলামিক মানসিকতা কীভাবে তৈরি হবে? সাধারণ জ্ঞান বলতে ফরজ কি ওয়াজিব কি সুন্নত কী নফল কোন ধরনের গুণাহ গুলো কবিরা গুনাহ কোন ধরনের গুণাহ গুলো সগিরা গুনাহ এ বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে। এবং আল্লাহর রাসূল (স)কেমন মানুষ ছিলেন। এক কথায় একজন যোদ্ধা ইমানদার মুসলিম হতে গেলে সেই গুলোকে সর্বপ্রথম অর্জন করতে হবে। অনেকের ভিতরে এ ইসলামির সাধারণ জ্ঞানটুকুও নেই। এখন আসা যাক কী করলে ইসলামিক মানসিকতা তৈরি হবে। 

 আরো পড়ুনঃঈমানের সাতটি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন

ইসলামিক মানসিকতা এই তিনটি উপায়

আমি তিনটি উপায় বলব এই তিনটি উপায়ের ভিতরে তিন নম্বর উপায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই তিনটি উপায় এক সাথে মানতে হবে। 

১. নিজেকে প্রশ্ন করুন

প্রথম উপায় হল নিজেকে প্রশ্ন করুন। যেমন নিজেকে বলুন আমি কি আল্লাহর হুকুম না মেনে জান্নাতকে হারাব? আমি কি আর হুকুম না মেনে জাহান্নামে যাব? নিজেকে বলুন আচ্ছা আমি কেন আল্লাহর হুকুম মানবো না? আল্লাহর হুকুম না মানলে আমি কবরে ধরা পড়ব, হাসরে ধরা পড়ব, মিজানে ধরা পড়বো, পলসিরাতে ধরা পড়বো। আমি যদি দুনিয়ায় হাতে কাজ করে কোটি কোটি টাকা ইনকাম করি তারপরেও আমার জন্য আল্লাহর হুকুম ছাড় নেই। আর দুনিয়ার টাকা দুনিয়াতেই থেকে যাবো।

আমি কী করছি নিজের মনকে বলুন যে আমি যখন মারা যাবো তখনই আমল ছাড়াই আমি মারা যাব। এইরকম ধরণের যত চিন্তা ভাবনা করবে তত আপনার মনে ইসলামিক মানসিকতা তৈরি হবে৷ আসলে কোনো একটা চিন্তা যখন গভীরভাবে করা হয় বার বার করা হয় তখন সেই চিন্তাটা মনের ভিতর একটা ছাপ ফেলে। নিজেই পরীক্ষা করে দেখুন আপনি যেটা নিয়ে সব সময়ই ভাবেন সেটাই আমার কাছে বড় বলে মনে হয়।  তবে চিন্তা ভাবনাগুলো করতে হবে মন থেকে এবং চিন্তাভাবনা কোনওভাবেই কোনওদিন ছেড়ে দিলে হবে না। এই চিন্তা ভাবনা করেই যেতে হবে।

২. সব সময় ধর্মীয় শিক্ষা নিতে হবে

দ্বিতীয় উপায় হল আপনাকে সবসময় ধর্মীয় শিক্ষা নিতে হবে। সেটা কোনও বক্তার কাছে শুনতে পারেন৷ অথবা কোন হাদীস করতে পারেন। প্রতিদিন অল্প করে হলেও দশটা বিষয়ের ধর্মীয় শিক্ষা নেবেন। যত বেশি ধর্মীয় শিক্ষা নেবেন, তত ধর্মের প্রতি গুরুত্ব বাড়বে। এবং ধর্মের মানসিকতা তৈরি হবে। 

৩. আল্লাহর নিয়ামতকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে

দ্বিতীয় উপায় হল আল্লার নিয়ামতকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে। যেমন আল্লাহ সূর্য দিয়েছেন। পৃথিবীতে সূর্যের আলো যদি আমরা না পেতাম তাহলে মারা যেতাম। আল্লাহ আমাদের হাত পা দিয়েছে চোখ নাক কান মুখ সবকিছু দিয়েছে। আমাদের শরীর দিয়েছে। আল্লাহ আমাদের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পানি দিয়েছে। এই কথাগুলো নিয়ে সাধারণ ভাবে চিন্তা করতে হবে৷

আল্লাহর পথে আসার জন্য বাস্তব নজরে চিন্তা করতে হবে

বাস্তব নজরে চিন্তা দুই প্রকারেরঃ 

১।  কল্পনা নজরে চিন্তা করা।

আর এক প্রকার হল বাস্তব নজরে চিন্তা করা। কল্পনার নজর সব সময় উড়ে উড়ে যায়। আর বাস্তবের নজর সবসময় মনকে স্পর্শ করে যায়। যেমন মনে করুন, আপনার এখনও বিয়ে হয়নি। এখন আপনি চিন্তা করছেন আপনার বিয়ে হয়েছে এবং আপনার স্ত্রী আপনার কাছে সোনার হার চেয়েছে। তো আপনার বিয়ে এখনো হয়নি কিন্তু আপনি এখন বসে বসে চিন্তা করছেন। যে আপনার স্ত্রী আপনার কাছে সোনার হার চেয়েছে। কিন্তু আপনার কাছে অত টাকা নেই, তাহলে আপনার স্ত্রীর হারটা কী ভাবে দেওয়া যায়? এই চিন্তাটা হল কল্পনার চিন্তা। 

 ২। বাস্তব চিন্তা

এখন মনে করুন সত্যি সত্যি আপনার বিয়ে হয়েছে। আর বিয়েপরে সত্যিই আপনার স্ত্রী আপনার কাছে সোনার হার চেয়েছে। এইবারে এখন আপনি চিন্তা করছেন যে, আমার স্ত্রী হারটা আমি কিভাবে দেব। সে চিন্তাটা হল বাস্তব নজরে চিন্তা। তো আপনাকে কল্পনা চিন্তা করতে হবে না। বাস্তব চিন্তা করতে হবে মানে আপনি চিন্তা করছেন হ্যাঁ, আল্লাহ সবকিছু দিয়েছে আল্লাহর ইবাদত করা প্রয়োজন। এই চিন্তাটা হল বাস্তব চিন্তা। আর আপনি চিন্তা করছেন যে আল্লাহর হাত দিয়েছে তারপরে আপনি আপনার হাতের দিকে তাকালেন তাকিয়ে যে আপনি চমকে গেলেন সত্যি আমার হাত দিয়েছেন আল্লাহ।

কিন্তু হাত দিয়ে আমি অন্যায় কাজ কী ভাবে করেছি।আপনি যেন এই কথাটা ভেবে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। সত্যি এই হাত দিয়ে আমি অন্যায় কাজ কী ভাবে করেছি। আমি বলতে চাইছি, বাস্তবে পড়লে মানুষ যেমন চিন্তা করে ঠিক তেমন চিন্তা করতে হবে। উড়ু উড়ু চিন্তা বা উপরে উপরে চিন্তা করলে হবে না। যেমন যখন জাহান্নামের কথা চিন্তা করবেন তখন এমনভাবে চিন্তা করবেন যে সত্যি তো জাহান্নাম তো খুব কষ্ট জায়গা। আমি কীভাবে এই দুনিয়ার মোহে ওরে আল্লাহকে ভুলে খারাপ কাজ করছি। এমন ভাবে চিন্তা করুন যেন জাহান্নাম আপনি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন। আপনি এমন ভাবে চিন্তা করুন যে এই তো আর কিছুদিন পরেই সামনেই আমার মৃত্যু হয়ে যাবে।

আর মৃত্যুর পরেই সামনেই তো জাহান্নাম। দুনিয়াকেই ছোট করে দেখুন। অনেক দিন বাকি আছে অনেক বছর বাকি আছে এই চিন্তা ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন ভাবতাম যে আমার বয়স যখন 20 বছর হয়ে যাবে। তখন আমি কত বড় হয়ে যাব কিন্তু এখন আমি ভাবি জানি কবে বড় হলাম। অর্থাৎ সময় খুব তাড়াতাড়ি কেটে গিয়েছে। আপনি এখন ভাবছেন এখনও 30 বছর, 40 বছর, 50 বছর বাঁচবো। কিন্তু এই বছরগুলো কী ভাবে কেটে গিয়ে আপনি বৃদ্ধ হয়ে যাবেন। এবং দুনিয়ার রঙ তামাশায় পড়ে আপনার বয়স যে কখন বেরিয়ে চলে যাবে আপনি আন্দাজ করতে পারবেন না। আপনি কেন বাস্তব ভাবে ভাবতে পারবেন না? কারণ এই সবগুলোই  তো বাস্তব ।

 আরো পড়ুনঃ যাকাত এর গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নিন

মন্তব্য

প্রিয় পাঠক বন্ধু, আমরা অবশ্যই আল্লাহকে স্মরণ করব আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলব। আল্লাহকে কখনোই ভুলে যাব না। প্রিয় পাঠক বন্ধু পোস্টটি পরে ভালো লাগবে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url