কি কি খাবার খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে জেনে নিন

কি কি খাবার খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে জেনে নিন

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশনাল আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজ বলব কী খেলে রক্তে প্লেটলেট বাড়ে। ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্টটি। তবে অনুরোধ করব পোস্টটি  সম্পূর্ণ পড়ার জন্য। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কি কি খেলে রক্তে প্লাটিলেন বাড়ে এবং প্লাটিলেট কি?

পোস্ট সূচিপত্র: কি কি খাবার খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে জেনে নিন

  • প্লাটিলেট কি?
  • কি কি খাবার খেলে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়ে
  • মন্তব্য

প্লাটিলেট কি?

প্লাটিলেট হল রক্তের কোষ, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। একজন সুস্থ মানুষের প্রতি একশ মিলিলিটার রক্তে প্লেটলেটের মাত্রা দেড় থেকে চার লক্ষ থাকা উচিত। প্লাটিলেটের ওপর নির্ভর করে মানুষের সুস্থ থাকা। আর তাই শরীরে প্লাটিলেটের অভাব হলে সহজে ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে। খুব সহজে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ নিয়মিত ভিটামিন বি12 খেলে শরীরের প্লাটিলেটের পরিমান বাড়ে। যে কোনও আমিষ খাবারেই  ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে থাকে। ডেঙ্গুর কারণেই প্লাটিলেটর মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে৷ জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভাসে কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে এই প্রোটিনের মাত্রা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়।

আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খাবেন কি খাবেন না জেনে নিন

কি কি খাবার খেলে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়ে

রক্তে কমে যাওয়া প্লেটলেটের পরিমাণ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কিছু খাবারের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কোন খাবারগুলো খেলে প্লেটলেটের পরিমাণ বাড়তে পারে। যেমন হচ্ছে পেঁপেঃ পেঁপে পাতা, পেঁপে, পাতার রস, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তে কমে যাওয়া প্লাটিলেটের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পাকা পেঁপের জুস ও প্লেটলেটের পরিমাণ বাড়াতে পারে। এর জন্য কারও রক্তে প্লেটলেটের পরিমাণ কমে গেলে তাঁকে প্রতিদিন তাজা পেঁপে পাতা বেটে রস বের করে এক চামচ করে দু বেলা খাওয়ানোর পাশাপাশি পাকা পেঁপের জুস খেতে দিতে পারেন। 

তাছাড়া মিষ্টি কুমড়োর বীজ। মিষ্টি কুমড়োতে রয়েছে রক্তে প্লাটিলেটে তৈরির উপাদান। ভিটামিন E রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে নিয়মিত মিষ্টি কুমড়ো খেতে পারেন। মিষ্টি কুমড়োর বীজে রয়েছে প্লাটিলেট বৃদ্ধিকারী উপাদান। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার কারণে রক্তে প্লেটলেট কমে গেলে তাকে নিয়মিত মিষ্টি কুমড়োর বীজ খেতে পারেন। এ ছাড়া পালং শাক। পালং শাকে রয়েছে ভিটামিন কে। তাই পালং শাক রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাদ্য হিসেবে আপনি পালং শাকে বেছে নিতে পারেন। 

এতে প্লাটিলেট এবং কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়া লেবুর রস লেবুর রসে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে খুবই সহায়ক। এছাড়া এতে থাকা ভিটামিন সি প্লেটলেট কে ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাই ডেঙ্গু রোগীকে লেবুর সরবত খাওয়ানো উচিত। এছাড়া বিটের রস বিটের রস মুক্ত রেডিকেলের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে এবং ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে দ্রুত প্লেটলেট বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাই বিটের রস খেতে পারেন। তাছাড়া ডালিম অনেকের কাছে ডালিম ফলটি খুবই প্রিয়। 

ডালিমের রস রক্তে প্লেটলেটের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর আইরন। এছাড়াও ডালিমের রসে থাকা ভিটামিন শরীরের দুর্বলতা দূরীকরণ ও কাজ করে। তাই রোগীকে প্রতিদিন একশ 50 মিলিলিটার ডালিমের জুস খেতে দিন। এই অভ্যাস দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চালু রাখুন। তারপর নিজেই দেখবেন পরিবর্তন। এছাড়া ব্রকোলি ভিটামিন কে দারুণ উৎস ব্রোকলি যা রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তে প্লাটিলের বাড়াতে প্রতিদিন খাবারে অবশ্যই ব্রোকলি রাখবেন। 

এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও নানা উপকারী খনিজ রয়েছে। তাছাড়া ডাবের পানি। ডাবের পানিতে খনিজ ও ইলেক্ট্রোলাইট আছে, যা ডেঙ্গু জন্য খুবই দরকারি। তা ছাড়া অ্যালোভেরার রস। অ্যালোভেরাতে রয়েছে রক্ত বিশুদ্ধ করার ক্ষমতা। এছাড়া রক্তে যে কোনও জীবাণু সংক্রমণ রোধ করতেও অ্যালোভেরা কার্যকরী। তাই ডেঙ্গু রোগীর রক্তের প্লেটলেটের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে তাঁকে নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস পান করাতে পারেন। এছাড়া আমলকি। 

আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই যদি ডেঙ্গু রোগীরা নিয়মিত আমলকি খান, তাহলে তাঁদের রক্তের প্লাটিলেট ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পানি ও তরল খাবার খাওয়া। কারণ ডেঙ্গু জ্বর হলে রোগীকে প্রতিদিন কমপক্ষে আড়াই লিটার পানি পান করা উচিত। জ্বরের কারণে রোগী শুধুমাত্র পানি পান করতে ইচ্ছে করে না। তাই দেহের পানির চাহিদা পূরণে রোগীকে বাড়িতে বানানো ফলের জুস, ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। 

খেয়াল রাখতে হবে ডেঙ্গু রোগের হজমশক্তি অনেকাংশ কমে যায় বলে বমি ও পেটে ব্যথা হতে পারে। রোগীর যকৃতে অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হয়ে রক্তে এসজিপিটি পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাই রোগীকে বাড়তি মশলা ও তেল চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়ানো ভালো৷ তবে তার খাবার পর্যাপ্ত আমিষ উপাদান থাকা জরুরি। এর জন্য তাঁকে মাছ মুরগির দুধ, ডিম প্রভৃতি উপকরণে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে দিতে হবে।

মন্তব্য

ডেঙ্গু জ্বরের কারণে সাধারণত রোগীর রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যায়। তাই রক্তের প্লাটিলেটর পরিমাণ বাড়ানো খুবই জরুরি হয়ে পড়ে। রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য উপরোক্ত খাবার গুলো অবশ্যই খাওয়াতে হবে। এই খাবারগুলো অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার এবং রক্তের প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ কিডনি ভালো আছে না খারাপ আছে কিভাবে বুঝবেন

শেষের কথা

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু। আশা করি পোস্টটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন। এরকম হেলথ বিষয়ক নানা টিপস পেতে মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url