হযরত মুসা আঃ এর আল্লাহকে করা চারটি প্রশ্ন সম্পর্কে জানুন

হযরত মুসা আঃ এর আল্লাহকে করা চারটি প্রশ্ন সম্পর্কে জানুন

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। তুর পাহাড়ের উপর হযরত মূসা আঃ এর সাথে মহান আল্লাহ তালার প্রায় কথোপকথন হত। এমন একটি দিন মুসা নবীর সাথে আল্লাহ তা আলার কথা হচ্ছিল। এসময় হযরত মূসা আলাইহিস সালামের মনে কিছু প্রশ্ন জেগে উঠল। তখন হযরত মুসা আঃ মহান আল্লাহকে চারটি প্রশ্ন করলেন যার উত্তর মহান আল্লাহ তাআলা মূসা নবী কে দিয়েছেন।

পোস্ট সূচিপত্র: হযরত মুসা আঃ এর চারটি প্রশ্ন সম্পর্কে জানুন

১.সর্বপ্রথম সেখানে গিয়ে মূসা আঃ আল্লাহ তাঁকে প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহ আপনি কত যত্ন করে মানুষকে বানিয়েছেন। তাহলে কেনই বা আবার তাদেরকে মৃত্যু দেন?

তখন আল্লাহ তাআলা মূসা আঃ কে ফসল ফলানোর আদেশ দিলেন। হযরত মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর নির্দেশ মতো তাই করলেন। তিনি প্রচুর পরিমাণে গম উৎপাদন করলেন। কিছুদিন পর যখন ফসল পেকে গেল তখন তিনি ফসল থেকে দানা বের করলেন এবং খোসা আলাদা করলেন। তখন আল্লাহ তা আলা হযরত মূসা আঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে মূসা তুমি নিজ হাতে ফসল ফলালে তাহলে আবার নিজ হাতে ফসল কেন কেটে ফেলেছ?

আর ফসল যখন কেটে ফেলেছ তাহলে এই ফসলের খোসা আলাদা কেন করছ? তখন জবাবে হযরত মূসা আঃ বলেন, যদি ফসল খোসা থেকে আলাদা না করি তাহলে তো আমি খেতে পারবো না। আল্লাহতালা জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এই পদ্ধতি কোথায় শিখেছো? মুসা আঃ বললেন, আপনার কাছ থেকে শিখেছি। আল্লাহ তাআলা বললেন আমি তোমাদের যা শিখিয়েছি তা নিজে কেন ব্যবহার করব না? আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং মৃত্যু দেয়। যাতে আমি বুঝতে পারি যে কার রূপ কেমন? এমন কথা শুনে হযরত মূসা ইসলাম বলেন, রুহ কি সবার এক হয় না? 

আরো পড়ুনঃ রাসূল (স) সাতটি জিনিস ঘরে রাখতে বলেছেন,জানুন কি সেই জিনিস

মহান আল্লাহ্ তাআলা বললেন পৃথিবীতে দুই ধরনের রুহ হয়। কারও রুহ পবিত্র আবার কেউ বা নিজ রুহকে কলুষিত করে ফেলেছে। আর মৃত্যুর পর আমি এই রূপ দেখেই জান্নাত জাহান্নাম নির্ধারণ করব। তুমি যেমন গম থেকে খোসা আলাদা করো আমি তেমনই অপবিত্র থেকে পবিত্র আলাদা করে ফেলি। তুমি যেমন নির্ধারিত সময়ের পরে ফসল উত্তোলন করো, আমিও ঠিক তেমনই নির্ধারিত সময়ের পর রুহ থেকে দেহ আলাদা করে ফেলি। মৃত্যু তোমাদের কাছে কষ্টের কারণ হলেও এটি ন্যায়পরায়ণ আদম সন্তানের জন্য পুরস্কার পাবার একমাত্র মাধ্যম। 

২.হযরত মূসা আঃ আল্লাহ তাকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেন। মুসা আঃ বলেন হে আল্লাহ এই পৃথিবীতেই আপনি কাকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন? মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, আমি সেই ব্যক্তিকে সবথেকে বেশি পছন্দ করি, যার হাতে ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সে তার ক্ষমতাকে ব্যবহার করে না, সাথে সাথে প্রতিশোধ নেয় না এবং ধৈর্য ধারণ করে। 

কেননা এই একই গুণ গুলো আমার মধ্যে রয়েছে। তোমরা যত পাপ করো আমি যদি সাথে সাথে তার প্রতিশোধ নিতাম তাহলে সারা পৃথিবীতে কোনো মানব সম্প্রদায় বেঁচে থাকত না। তেমনি করে পৃথিবীতে এমন অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি আছেন যাঁরা সাথে সাথে প্রতিশোধ না নিয়ে অপেক্ষা করে। আমি পৃথিবীর বুকে সেই ব্যক্তিদের সবথেকে বেশি ভালোবাসি।

৩.হযরত মূসা আঃ আরো জানতে চাইলেন, হে আল্লাহ এই পৃথিবীতেই সবথেকে জ্ঞানী ব্যক্তি কে? আল্লাহ তাআলা বললেন যে ব্যক্তির জ্ঞান পিপাসা কখনও শেষ হয় না। আর যে ব্যক্তি তাঁর অর্জিত জ্ঞান নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেয়, সে আমার কাছে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী।

৪.হযরত মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহ র কাছে আরও জানতে চাইলেন, হে আল্লাহ এই পৃথিবীতে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি কে? মহান আল্লাহ তা'আলা উত্তরে বলেন এই পৃথিবীতে সবথেকে ধনী ব্যক্তি সেই যার নিজের কাছে যতটুকু আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। অর্থাৎ আরও চাই আরও চাই করে হা হুতাশ না করে। যতটুকু আছে ততটুকু নিয়ে আল্লাহর কাছে সন্তুষ্টি আদায় করে। সেই পৃথিবীতে সবচাইতে ধোনী ব্যক্তি সুবাহানাল্লাহ। হযরত মূসা আঃ আল্লাহর কথাগুলি শুনে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করলেন।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন মুসলিমদের প্রথম প্রতিরোধ বদরের যুদ্ধের ইতিহাস

মন্তব্য

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু অবশ্যই আমরা আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলব। আল্লাহর পছন্দের পাত্র হব। সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু পোস্ট পড়ে ভাল লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এরকম আরো হেল্পফুল ইসলামিক পোস্ট পেতে মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url