জাহান্নামের সাতটি দরজা ও পরিচয় জানুন
জাহান্নামের সাতটি দরজা ও পরিচয় জানুন
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। জাহান্নামের সাতটি ইফতার বা দরজা আছে। সেগুলোর নাম কি কি? প্রত্যেক স্তরের শাস্তি আলাদা আলাদা। কোন পাপের শাস্তি কোন স্তরে দেওয়া হবে। সে সম্বন্ধে আজ আমি আপনাকে জানাবো। তবে আমার পোস্টটি অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ভূমিকা
আমাদের পৃথিবীর স্বল্পস্থায়ী এই জীবনে শেষ নয়। মৃত্যুর পরবর্তী কালে আরও একটি জীবন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। যাকে আখিরাত বলা হয়। আখেরাতের জীবন মৃত্যুর পরে শুরু হবে এবং এর কোনও শেষ নেই। অনন্তকাল ধরে চলতেই থাকবে মানুষের আখেরাতের জীবন, চিরস্থায়ী আবাস স্থল আঁখিরাতে প্রথমে দুনিয়াতে করে আসা মানুষের কৃতকর্মের হিসাব নেওয়া হবে। ভালো কাজের বিনিময়ে চির শান্তির স্থান, জান্নাত। এবং খারাপ কাজের জন্য চির শাস্তির স্থান জাহান্নাম প্রদান করা হবে।
আখিরাতের প্রধান নয়টি স্তরের সর্বশেষ স্তর হলো জাহান্নাম। জাহান্নাম আরবি শব্দ। এর অর্থ শাস্তির স্থান, আগুনের গর্ত। তবে জাহান্নাম বলতে কেবল উত্তপ্ত স্থান নয়, তীব্র ঠান্ডাও জাহান্নামের আগুন। পৃথিবীর আগুন থেকে 70 গুণ উত্তপ্ত।জাহান্নামে মানুষ সর্বদা কষ্ট পেতে থাকবে এবং এর ভয়ঙ্কর শাস্তি থেকে মুক্তি নেই। জাহান্নামের খাদ্য হবে যাকম নামক কাঁটাযুক্ত ফল এবং পানীয় হিসাবে দেওয়া হবে রক্ত দুর্গন্ধযুক্ত রস। আল্লাহ তা আলা বলেছেন যে সব লোক তাদের রবকে অস্বীকার ও অমান্য করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।
তার আবাসস্থল হিসেবে অত্যন্ত খারাপ। সূরা মূলক আয়াত ৬ । আল্লাহ তা আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, আর তুমি কি জানো জাহান্নাম কী? তা শান্তিতে থাকতে দেয় না। আবার ছেড়েও দেই না যে চামড়াকে ঝলসে দেয়। 19 জন ফেরেশতা তার প্রহরী হবে। সূরা মুদাসির আয়াত 27 থেকে 30। অন্যত্র বলা হয়েছে, সে জাহান্নামে মরবেও না, আবার জীবিত হবে না সূরা আলা আয়াত 13। আবার অন্য এসেছে তারা যখন সেখানে নিক্ষিপ্ত হবে তখন তারা ক্ষিপ্রতার তর্জন গর্জন শুনতে পাবে এবং তারা উথাল পাথাল করতে থাকবে।
ক্রোধ আক্রোশে এমন অবস্থা ধারণ করবে, মনে হবে গায়ের গোঁসত ফেটে পড়বে সুরা মুলক আয়াত ৭-৮. মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, জাহান্নামে সাতটি স্তর আছে। প্রত্যেকটি স্তর বা দরজার জন্য আলাদা আলাদা তরল নির্ধারিত রয়েছে। সূরা হিজর আয়াত ৪. অর্থাৎ জাহান্নাম এর সাতটি স্তর রয়েছে। প্রতিটি জাহান্নামে রয়েছে ভয়ঙ্কর শাস্তি। বিভিন্ন অপরাধের জন্য আলাদা আলাদা শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
পোস্ট সূচীপত্র: জাহান্নামের সাতটি দরজা ও পরিচয় জানুন
- ১. জাহান্নামের এক নম্বর স্তর নারী
- ২.জাহান্নাম বা আগুনের গর্ত
- ৩. জাহান্নামের তৃতীয় স্তর জাহিন তথা কঠিন অগ্নিদাহ।
- ৪. জাহান্নামের চতুর্থ স্তর সাইড অর্থাৎ প্রচলিত আগুন
- ৫. জাহান্নামের পঞ্চম স্তর সাকার বা জলসা আগুন
- ৬. জাহান্নামের ষষ্ঠ স্তর উমা।
- ৭. জাহান্নামের সপ্তম স্তর হাবিয়া অর্থ গভীর গর্ত, অতল গহ্বর।
১.জাহান্নামের এক নম্বর স্তর নারী
প্রথম স্তর নার। তথা লেলিহান আগুন। আল্লাহ বলেন, সেটা আগুন যারা কুফরী করে আল্লাহ তাদের ওয়াদা করেছেন। সুরা হজ আয়াত ৭২. অনেক জায়গায় এই স্তরকে লাজা বলে সম্বোধন করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন না কখনওই নয়,এটা তো লেলিহান অগ্নি। জা দেহ হতে চামড়া খশে যাবে। জাহান্নাম ওই ব্যক্তিকে ডাকবে যে পৃষ্ঠ প্রদর্শন এবং মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, সম্পদ পুঞ্জীভূত এবং সংরক্ষিত করে রেখেছিল। সুরা মারিজ আয়াত 15- 18.
আরো পড়ুনঃ গীবত করার শাস্তি জানলে অবাক হবেন
২.জাহান্নাম বা আগুনের গর্ত
জাহান্নাম শব্দটি কুরআনে 7712 এসেছে। আল্লাহ তা আলা বলেন, নিশ্চয় জাহান্নাম গোপন ফাঁদ সুরানা বা আয়াত 21।
৩.জাহান্নামের তৃতীয় স্তর জাহিন তথা কঠিন অগ্নিদাহ।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আর যারা অবিশ্বাস করে এবং আমার আয়াত সমূহকে মিথ্যা মনে করে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী। সূরা মায়িদা আয়াত 10,
৪.জাহান্নামের চতুর্থ স্তর সাইড অর্থাৎ প্রচলিত আগুন
আল্লাহ বলেন, একদল লোক থাকবে জান্নাতে। আর এক দল জ্বলন্ত আগুনে সূরা সূরা আয়াত ৭
৫.জাহান্নামের পঞ্চম স্তর সাকার বা জলসা আগুন
মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তারা থাকবে জান্নাতি এবং তারা জিজ্ঞাসাবাদ করবে।অপরাধীদের সম্পর্কে তোমাদের কি শেষ আকারে নিক্ষেপ করা হয়েছে? তারা বলবে, আমরা নামাজের অন্তর্ভূক্ত ছিলাম না। আমরা অভাবগ্রস্তদের অনুদান করতাম না এবং সমালোচকদের সাথে সমালোচনায় নিমগ্ন থাকতাম। আমরা কর্মফল দিবসকে মিথ্যা মনে করতাম। পরিশেষে আমাদের নিকট মৃত্যু আগমন করল। ফলে সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাঁদের কোনও কাজে আসবে না। সূরা মুদাসির আয়াত 40-48.
৭.জাহান্নামের সপ্তম স্তর হাবিয়া অর্থ গভীর গর্ত, অতল গহ্বর।
আল্লাহ বলেছেন, আর যার পাল্লা হালকা হবে তার আবার হবে হাবিয়া আর তোমাকে কি সে জানাবে? হাবিয়া কি তাঁর প্রচলিত আগুন সুরা কারি আয়াত ৮-11. জাহান্নামের প্রধান স্তর সমূহের বিভিন্ন উপস্থিত রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির স্থান তৈরি করা হয়েছে। যেমন কাফের মুশরিক, সুদখোর, ঘুষখোর ব্যভিচার প্রভৃতি। প্রত্যেকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রয়েছে।
থাক নামক একটি রোদে জাহান্নামিদের রক্ত ঘাম পোঁজ প্রবাহিত হয়ে জমা হবে। তিন আতুল খাবারের নামে বিষ ও রক্তে পরিপূর্ণ স্থান জাহান্নামে রয়েছে। জাহান্নামিরা ক্ষুধা অনুভব করলে তখন তাদের তা খেতে দেওয়া হবে। তিন আতর খাবারের পাশে অবস্থিত সাউথ নামের।বিশাল হার রয়েছে এক শ্রেণির লোকেদের উপরে তুলে ফেলে দেওয়া হবে। আবার ওঠানো হবে।
আবার ফেলে দেওয়া হবে। এভাবেই শাস্তি চলতে থাকবে। যোগফল হযন নামক স্থানে রিয়া কারি ও অহংকারী দের শাস্তি প্রদান করা হবে। আল্লাহ ও তার রাসূলকে অবিশ্বাস অহঙ্কার করে এদের শাস্তি প্রদান করা হবে। আল্লাহ ও তার রাসূলকে অবিশ্বাসী কারীদের গায়ে নামক ভয়ঙ্কর স্থানে প্রেরণ করা হবে। এটাকে জাহান্নামের সবচেয়ে ভীতিকর ও ভয়ঙ্কর স্থান বলা হয়ে থাকে। অন্যান্য জাহান্নামিরা দিনে চারশ 12 এর থেকে আশ্রয় চাইবে।
আরো পড়ুনঃ গোপনে অশ্লীল ভিডিও দেখার চাইতেও দাড়ি কামানো ভয়ংকর পাপ
মন্তব্য
বস্তুত জাহান্নামের শাস্তির ভয়াবহতা মানুষের ধারণার বাহিরে। আল্লাহ তালা আমাদের পাপ কাজ থেকে বিরত রাখুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের বেশি বেশি নেক আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন। প্রিয় পাঠক বন্ধু পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এরকম আরো ইসলামিক পোস্ট পেতে মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url