খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা

 খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা

প্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আমাদের কাছে অতি পরিচিত দুটি খাবার খেজুর ও কিশমিশ। সেমাই পায়েস কিংবা ইফতারের প্লেট এ কিশমিশ খেজুর ছাড়া চলেই না। কিন্তু আপনি জানেন কি খেজুর ও কিশমিশ খেলে কী ঘটে? আজ বলব খেজুর ও কিশমিশ একসাথে খেলে আমাদের শরীরে কী ঘটে সে সম্পর্কে। তবে অনুরোধ করব পোস্টটি সম্পূর্ণ টা পড়ার জন্য। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্র: খেজুর ও কিসমিসের উপকারিতা

  • কিসমিস ও খেজুর খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে
  • কিসমিস ও খেজুর খেলে এসিডিটির প্রকোপ কমে
  • কিসমিস ও খেজুর খেলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে
  • কিসমিস ও খেজুর খেলে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়
  • হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় কিসমিস ও খেজুর খেলে
  • কিসমিস ও খেজুরের অন্যান্য উপকারিতা সমূহ
  • অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার অসুবিধা সমূহ

কিসমিস ও খেজুর খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে

খেজুর ও কিসমিস একসাথে খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত খেজুর ও কিশমিশ খাওয়া শুরু করলে, দেহের ভিতরে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যার প্রভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই যাঁদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের রোজের ডায়েটে এগুলো থাকা উচিত।

কিসমিস ও খেজুর খেলে এসিডিটির প্রকোপ কমে

কিসমিস খেলে অ্যাসিড প্রকোপ কমে। কিশমিশে উপস্থিত পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শরীরে প্রবেশ করার পর রক্তে অ্যাসিডের মাত্রা কমতে সময় লাগে না। এক কথায় সার্বিকভাবে বলতে হয় কিশমিশ এর কোনও বিকল্প হয় না।

আরো পড়ুনঃ জলে ভেজা কিশমিস কতটা উপকারী জেনে নিন

কিসমিস ও খেজুর খেলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে

এ ছাড়াও কিসমিস ও খেজুর খেলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে। খেজুর ও কিশমিশ খাওয়ার ফলে শরীরের ভিতরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে,যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে রাতকানা সহ অন্যান্য চোখের রোগের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া অ্যানিমিয়া রোগের প্রকোপ কমে। 

কিশমিশে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রন যা শরীরে প্রবেশ করার পর লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তল্পতার মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না। নারীদের মধ্যে যে হারে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ বাড়ছে তাতে প্রত্যেকেরই কিসমিস খাওয়ার প্রয়োজন বেড়েছে সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। 

কিসমিস ও খেজুর খেলে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়

তাছাড়া ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায় খেজুরের ডায়েটারি ফাইবার, পট্যাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদান উপস্থিত। যার ফলে শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের কোষের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। তাই যদি একটু বেশি বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে চান তাহলে প্রতিদিন দুই থেকে তিন টি করে খেজুর খেতে ভুলবেন না।

হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় কিসমিস ও খেজুর খেলে

এছাড়াও কিসমিস খেজুর খেলে হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ডায়েটে ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত পটাশিয়াম হার্ট আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।

কিসমিস ও খেজুরের অন্যান্য উপকারিতা সমূহ

 তাছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি দূর করে। খেজুরে প্রচুর মাত্রায় প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা একাধিক রোগকে দূরে রাখার পাশাপাশি শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, এই ফলটিতে বেশ কিছু অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ রয়েছে। ফলে নিয়মিত খেজুর খেলে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পায়। এছাড়া হাড় শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে। কিশমিশে উপস্থিত ক্যালসিয়াম ও বোরন নামক উপাদান হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অল্প বয়সে যদি অস্টিওপোরোসিস বা অন্য কোনও হাড়ের রোগে আক্রান্ত হতে না চান তাহলে নিয়মিত এক মুঠো করে কিশমিশ খেতে ভুলবেন না। 

এছাড়া ক্যানসার দূরে থাকে। প্রতিদিন তিনটি করে খেজুর খেলে শরীরের ভিতরে কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যার প্রভাবে ক্যান্সার কোষের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমে। এছাড়া ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে। খেজুরে উপস্থিত ভিটামিন সি ও ডি ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে বলিরেখাও গায়েব হতে শুরু করে। ফলে ত্বক প্রাণবন্ত উজ্জ্বল হয়ে উঠতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এই ফলটিতে উপস্থিত অ্যান্টি এজিং প্রপাটিজ ত্বকের বয়স ধরে রাখতেও নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। 

এছাড়া নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমায়খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে নিয়মিত এই ফলটি খেলে বাওয়েল মুভমেন্টে মারাত্মক উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবে কোনো ধরনের পেটের রোগের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে না। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন তিনটি করে খেজুর খেলে শরীরের ভিতরে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে বদহজম, কোলাইটিস ও হেমোরয়েডের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে তো। সব শেষে একটাই কথা বলব। 

খেজুর ও কিশমিশ খেলে আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকার আছে। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকে। যেমন পটাসিয়াম, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার ইত্যাদি। কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরে রক্ত স্বল্পতা হয় না, যা অ্যানিমিয়া থেকে বাঁচতে সহায়তা করে। এতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে যা রক্ত গঠনে কার্যকর। কিশমিশে উপস্থিত তামা লাল রক্তকণিকা গঠনে সহায়তা করে। এটি খাওয়ার অনেক সুবিধা রয়েছে।

অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার অসুবিধা সমূহ

কিসমিস খাওয়ার অসুবিধা থাকলেও অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার অনেক অসুবিধা ও রয়েছে। যা আপনার অবশ্যই জানা উচিত। যেমন অনেকেরই কিশমিশ খেলে অ্যালার্জি হয়। যদি আপনারও এই ধরনের কোনও সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে কিশমিশ খাওয়া বন্ধ করুন। এ ছাড়া অতিরিক্ত বিস্ফোরণের ফলে শ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে৷ ডায়েরিয়া বমি জ্বরও দেখা যায়।

তাছাড়া কিশমিশে ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ প্রচুর পরিমাণে থাকে। এক্ষেত্রে যাদের ওজন বেশি এবং ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তারা কিশমিশ সীমিত পরিমাণে খেতে পারেন। এটি গ্রহণের ফলে ওজন বাড়তে পারে। এছাড়া বেসিক কিসমিস খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে তবে কিশমিশ কম খান। এটি টাইপ টু ডায়বেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। 

এছাড়া বেশি কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরে ক্যালরি বেড়ে যায় এবং ক্যালোরি বৃদ্ধির ফলে ওজনও বাড়তে পারে। আর ওজন এবং ক্যালোরি বৃদ্ধির ফলে ওজনও বাড়তে পারে। আর ওজন বাড়ার কারণে আপনি আরও অনেক রোগের শিকার হতে পারেন। এছাড়া কিশমিশে উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইডস রয়েছে। ফ্যাটি লিভার, লিভার ক্যান্সার, ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।

আরো পড়ুনঃ কোন কোন বাদাম খেলে ওজন দ্রুত বাড়ে জেনে নিন 

মন্তব্য

কিসমিস এবং খেজুরে  প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকার কারণে শরীরের জন্য খুবই উপকারী দুটি জিনিস। তবে মাত্রারিক্ত খাওয়ার ফলে এর সাইড ইফেক্ট ঘটতে পারে। তাই অবশ্যই নিয়ম মেনে খেজুর এবং কিসমিস খান। শরীরের উপকারিতার জন্য অতিরিক্ত খাবেন না। প্রিয় পাঠক বন্ধু পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এরকম আরো হেল্পফুল পোস্ট পেতে আমাদের মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url