নারীদের জাহান্নামে যাওয়ার কারণ
নারীদের জাহান্নামে যাওয়ার কারণ
প্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। নারীদের 15 টি ভুলের কারণে নামাজ পরেও তাদের জাহান্নামে যেতে হবে। নারীরা নামাজ পড়ে রোজা রাখে। পর্দা করে যত নেক আমল করুকনা কেন তার পরেও তারা জাহান্নামে যাবেন। যদি এই 15 টি কাজ করে থাকেন। অথচ নারীদের জান্নাতে যাওয়া অনেক সহজ। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মেয়েরা চারটি কাজ করলে সহজে জান্নাতে যেতে পারবে।
কোন চারটি কাজ করলে নারীরা সহজে জান্নাতে যেতে পারবে।
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে
- রমজান মাসে রোজা রাখলে
- সতীর্থের হেফাজত করলে
- স্বামীর খেদমত ও স্বামীর কথা মতো চললে
শুধুমাত্র এই চারটি কাজ যে নারী করবে এমন নারীর জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে। সে যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে সুবহানাল্লাহ।( সুনানে তিরমিজি ও তাবরানী) শরিফ এসেছে। কিন্তু বড় আফসোসের ব্যাপার হল আজকের সমাজে অনেক নারীরা রয়েছেন যারা নেককার পরেশগার অনুগত।
কিন্তু তার পরেও নারীদের কিছু ভুলভ্রান্তির কারণে তারা জাহান্নামে যাবেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ 99 জন নারীর মধ্যে একজন নারী জান্নাতে যাবে। আর বাকিরা সবাই জাহান্নামে যাবে। সম্মানিত পাঠক নারীদের জাহান্নামে হওয়ার 15 টি কারণ এক এক করে বলছি, তবে অনুরোধ করবো পোস্টটি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়বেন।
আরো পড়ুনঃ গীবত করার শাস্তি জানলে অবাক হবেন
পোস্ট সূচীপত্র: নারীদের জাহান্নামে যাওয়ার কারণ সমূহ
১. নামাজ ছেড়ে দেওয়া।
ফজরের নামাজ কাজা করা। নারীদের মধ্যে অনেকেই ফজরের নামাজ কাজা করে ফেলেন।অনেক মেয়েরা চার ওয়াক্ত নামাজ পরে আর ফজরের নামাজ কাজা করে। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাজের প্রতি অনেক তাগিদ দিয়েছেন। এমনকী তিনি বলেন, ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ গোটা দুনিয়া থেকে উত্তম।
২. নারীরা জাহান্নামে যাওয়ার দুই নম্বর কারণ হল যাকাত না দেওয়া।
অনেক নারীরাই যাকাত দেওয়ার ব্যাপারে উদাসীন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, টাকার যেমন যাকাত আছে।তেমনই স্বর্ণ রুপা ও গহনার ও যাকাত রয়েছে। স্বর্ণের হিসাবে যার 7.5 ভরি স্বর্ণ যার কাছে আছে তাকে যাকাত দিতে হবে। 40 ভাগের এক ভাগ রূপার হিসাবে যার সারে বায়ান্ন তোলা রূপা আছে তাকেও যাকাত দিতে হবে।
অথচ দেখা যায় একজনের 10 20 ভরি অথবা এর চেয়েও বেশি স্বর্ণ এবং রুপার গহনা আছে তার পরেও যাকাত দেয় না। যাকাত না দিলে এই গহনাগুলো ওই কেয়ামতের ময়দানে সাপ হয়ে ধ্বংস করবে। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ওই সাপের একফোঁটা লালা যদি পৃথিবীতে পরে তাহলে পৃথিবী বিশ্বে তামা হয়ে যেত। কোনও কিছুই জন্ম নিত না।
এখন ভেবে দেখুন কেমন বিষধর সাপ তাঁকে দংশন করবে। আর গচ্ছিত সম্পদগুলো আগুন জ্বালিয়ে পিঠের উপর ছুঁরে মারা হবে। আর বলা হবে, স্বাদ গ্রহণ করো এই তোমার ধন সম্পদ যার যাকাত তুমি দাওনি। নারীদের উপরে যাকাত ফরয। শুধু স্বামীর যাকাত দিলে চলবে না। বরং নারীর নিজের সম্পদেরও যাকাত দিতে হবে।
৩. নারীরা জাহান্নামী হওয়ার তিন নম্বর কারণ হল ফরোজ গোসল না করা।
অনেক নারী আছেন যাদের গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও গোসল করেন না। আবার ঐ অবস্থায় চলাফেরা করেন, নামাজ পর্যন্ত পড়ে না । এই অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে জাহান্নাম ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না। এইজন্য গোসল ফরজ হওয়ার সাথে সাথেই গোসল করে নিতে হবে।
৪. নারীরা জাহান্নামী হওয়ার চার নাম্বার কারণ হল নেল পলিশ লাগানো
অনেক মেয়েরা নেলপলিশ লাগিয়ে থাকেন। অনেকেই আবার নেলপলিশ লাগানো অবস্থায় ওযু করে নামাজ আদায় করে। অথচ নেল পলিশ লাগানোর ফলে ওজু হয় না। ওজু না হলে নামাজ ও হয় না। ওই অবস্থায় নামাজ আদায় করা হয়, যা মারাত্মক গুনাহের কাজ। নেল পলিশ লাগানোর ফলে গোসল হয় না। গোসল দিলেও শরীর নাপাক থেকে যায়।
৫. নারীরা জাহান্নামী হওয়ার পাঁচ নম্বর কারণ হল নারীরা বেপর্দায় চলাফেরা করে
অধিকাংশ নারী আছেন যারা বেপর্দায় চলাফেরা করেন। মুখ খুলে চুল খুলে চলে। নারীদের চুল পুরুষেরা দেখলে গুনাহে কবীরাহ হয়ে থাকে। ওই নারীকে যে পুরুষ দেখবে সে যেনা করছে। ওই পুরুষগুলো যতোটা গুণাহ করছে প্রত্যেকটা গুনাহের অংশ ওই নারীকেও নিতে হবে। যারা চুল খুলে অন্য পুরুষদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে চলাফেরা করে তারা জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ 500 বছরের রাস্তার দূর থেকেও পাওয়া যায়। তার মানে হল তারা এতটাই দূরবর্তী জাহান্নামে থাকবে।
৬. নারীরা জাহান্নামী হওয়ার ছয় নম্বর কারণ হল কৃপণতা করা।
অধিকাংশ নারীরা কৃপণ হয়ে থাকে। অনেক সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দান করেন না। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দানকারী আল্লাহর নিকটতম, জান্নাতের নিকটতম। মানুষেরও নিকটতম এবং জাহান্নাম থেকেও দূরে থাকবে। আর যারা দান করেন না তারা আল্লাহর থেকে দূরে থাকবে। জান্নাত থেকে দূরে থাকবে মানুষের থেকেও দূরে এবং জাহান্নামের নিকটতম হবে।
৭. নারীরা জাহান্নামী হওয়ার সাত নম্বর কারণ হল কোরবানি না করা
যে সব নারীর উপরে যাকাত ফরয হয় তাদের জন্য কোরবানিও করা অজীব হয়। অধিকাংশ নারীরা স্বামীর উপর নির্ভর হয়ে থাকে। নিজের উপর কোরবানি অজীব জেনেও কোরবানি করে না। এসব ব্যাপারে কোনো খোঁজখবর রাখে না। তারা জাহান্নামে যাবে।
৮. নারীরা জাহান্নামে যাওয়ার আট নম্বর কারণ হল গীবত করা
অনেক নারীর স্বভাব গীবত করা। যেমন তারা কয়েকজন একসাথে হলে কথা না বলে থাকতে পারে না। তাদের বিষয়বস্তু হল গীবত করা। গীবত করতে করতে তারা জাহান্নামের দরজায় পৌঁছে যায়। যারা গীবত করে তাদেরকে মৃত ভাইয়ের গোস্ত খাওয়ার সমান তুলনা করা হয়েছে।
৯.নারীরা জাহান্নামী হওয়ার নয় নম্বর কারণ হল বিধর্মীদের পথ অবলম্বন করা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যারা বিধর্মীদের কালচার গ্রহণ করে সে কালচার মোতাবেক চলে তারা জাহান্নামী। এখনকার অনেক নারীকেই দেখা যায় বিধর্মীদের কালচার গ্রহণ করে তাদের আদর্শ মেনে নেয়৷ অথচ আদর্শ মানতে হবে হযরত ফাতিমার।
১০.নারীরা জাহান্নামী হওয়ার দশ নম্বর কারণ হল অহংকার করা।
যদি কোনও নারীর পিতা ধনী হয় এবং তার চেহারা যদি সুন্দর হয় তখন সে এতটাই অহঙ্কারী হয়ে ওঠে যে তার সামনে কোনো নারীর সুনাম করলে সে বরদাস্ত করতে পারে না। অথচ আল্লাহ তা আলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, আমি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি। আর এই মাটিতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব। তারপর মাটি থেকেই তোমাদেরকে তুলে আনব। তাই এই সৌন্দর্যের অহংকার কোনো কাজে আসবে না। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে ঢুকতে পারবে না।
১১. দর্শক নারীরা জাহান্নামে হওয়ার 11 নম্বর কারণ হল অবহেলা করা।
নারীদের আরও একটি বিষয় হল অবহেলা। অধিকাংশ নারীরা তাদের স্বামীর কাছে অনেক আবদার করে থাকে। স্বামীরা তাদের স্ত্রীর আবদার কীভাবে পূরণ করছে সেদিকে খবর রাখে না। স্বামী বৈধ ভাবে নাকি অবৈধভাবে তাদের আবদার পূরণ করছে সে ব্যাপারেও তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। এটাও জাহান্নামে যাওয়ার একটি কারণ।
১২. নারীরা জাহান্নামী হওয়ার 12 নম্বর কারণ হল স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হওয়া
স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হওয়া যাবে না। যেসব নারীরা স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে তারা জাহান্নামে যাবে। স্বামীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে হবে এবং স্বামীকে ভালোবাসতে হবে। পরিপাটি হয়ে স্বামীর সামনে যেতে হবে। স্বামীর মন যাতে খুশি হয় এমন কাজ করতে হবে।
১৩. দর্শক নারীরা জাহান্নামী হওয়ার 13 নম্বর কারণ হল মিথ্যা কথা বলা।
মিথ্যা বললে অবশ্যই জাহান্নামে যেতে হবে। মিথ্যা কথা বললে কখনও জান্নাতে যাওয়া যাবে না। সে নারী হোক বা পুরুষই হোক।
১৪.নারীরা জাহান্নামী হওয়ার ১৪ নম্বর কারণ হল কাউকে মন্দ নামে ডাকা।
কোন মানুষকে মন্দ নামে বা ব্যঙ্গ করে ডাকা যাবেনা । আল্লাহ তা আলা বলেন, হে ঈমানদারগণ দ্বারা তোমরা একে অন্যের ভৎসনা করোনা। কাউকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করোনা। মন্দ নামে ডাকলেই ঐ অবস্থায় যদি মৃত্যুবরণ করে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
১৫. নারীরা জাহান্নামী হওয়ার সর্ব শেষ 15 নম্বর কারণ হল লোক দেখানো আমল করা
অনেক নারীরাই লোকদেখানো আমল করে। অনেকেই তার শাশুড়ির ভয়ে কিংবা লোকে কী বলবে এটা ভেবে আমল করে। সেখানে আল্লাহর ভয় থাকে না। আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকে না। যার ফলে তার আমলের খাতা শূন্য হয়ে যাবে। সুতরাং।লোকদেখানো আমল করা যাবে না। বরং আল্লাহর ভয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় আমল করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মহিলাদের নামাজে ২৬ টি মারাত্মক ভুল জেনে নিন
মন্তব্য
এই 15 টি ভুলভ্রান্তির কারণে অধিকাংশ নারীরাই জাহান্নামী হবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি নারী হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই এই কাজগুলো থেকে বিরত থাকবেন। যদি এগুলোর কোনও একটি আপনার মধ্যে থাকে তাহলে জাহান্নাম ছাড়া উপায় নাই। তবে আপনি যদি এই কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে পারেন৷ অবশ্যই আপনি জান্নাতি হবেন। এতে কোনও সন্দেহ নেই। আর হা আপনার মা আপনার বোন অথবা আপনার আত্মীয়স্বজনদের অবশ্যই পোস্টটি পড়ে শোনাবেন।
যাতে তারাও সতর্ক হতে পারে৷ সম্মানিত পাঠক আপনি যদি পুরুষ হয়ে থাকেন তবে আপনার মা আপনার বোন আপনার স্ত্রী কিংবা আপনার আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা নারী রয়েছেন তাদেরকে অবশ্যই পোষ্টটি পড়ে শোনাবেন। যাতে করে তারাও সতর্ক হয়ে যান। জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাকতে পারেন এবং জান্নাতের পথে ধাবিত হতে পারেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url