হঠাৎ যদি চাঁদ ধ্বংস হয় তাহলে কি হবে???
হঠাৎ যদি চাঁদ ধ্বংস হয় তাহলে কি হবে???
আজকের এই মডার্ন ওয়ার্ল্ডে চাঁদকে আমরা তেমন ভাবে গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু আপনি এই কথাটা জেনে হয়ত অবাক হবেন যে, চাঁদ ছাড়া পৃথিবীতে লাইফের অ্যাসিস্ট্যান্টকে ভাবা অসম্ভব। মানুষ থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি প্রাণিই যারা পৃথিবীতে বাস করে তাদের সকলেরই অস্তিত্ব কিন্তু চাঁদের কারণেই।
তো চলুন আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা এই বিষয়টিকে জেনে নিই। যে চাঁদ আমাদের লাইফে কেন এবং কী ভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেনইবা চাঁদ এতটা গুরুত্বপূর্ণ। আর এই পোষ্টের শেষে আমি আপনাকেই চাঁদ সম্বন্ধে একটি অবাক করা তথ্য দিতে চলেছি। তো অবশ্যই পোস্টটি স্কিপ না করে সম্পূর্ণ করার জন্য অনুরোধ করছি।
পোস্ট সূচীপত্র: হঠাৎ যদি চাঁদ ধ্বংস হয় তাহলে কি হবে??
- চাঁদ না থাকলে প্রাণীকুলের ওপর কি প্রভাব পড়বে
- কিভাবে চাঁদ পৃথিবীর অন্য স্পিডকে কম করে
- চাঁদ না থাকলে প্রাণীকুলের ওপর কি প্রভাব পড়বে
- মন্তব্য
চাঁদ ধ্বংস হলে পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়বে
যদি পৃথিবীর চারদিকে চাঁদ না থাকত,তাহলে আজ এই পৃথিবী ইউনিভার্সের এক আলাদাই জায়গাতে অবস্থান করত। কিন্তু পৃথিবীতে শুরু থেকেই চাঁদ ছিল না। আসলে আজ থেকে প্রায় চার বিলিয়ন বছর আগে অর্থাত পৃথিবী তৈরি হওয়ার কিছু বছর বাদের কথা। এই সময় পৃথিবীতে কোনও ধরনের সলিড পদার্থ ছিল না। এবং এই পৃথিবীতে কোনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল না।
পৃথিবী ছিল একটি জ্বলন্ত গ্যাসের পিন্ড। ঠিক এই সময়ে মার্শ অর্থাৎ মঙ্গল গ্রহের আকারের একটি অবজেক্ট পৃথিবীর ওপর আছড়ে পড়ে যার ফলে প্রচুর মাত্রায় লাভা এবং ধুলো স্পেসে ছড়িয়ে পড়ে। গ্র্যাভিটির কারণে সময়ের সাথে সাথে এই লাভা এবং ধূলিকণাগুলি একে অপরের সাথে যুক্ত হতে শুরু করে এবং তা পৃথিবীর চারদিকে পাক খেতে থাকে। আর এই সকল লাভা এবং ধূলিকণাগুলি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে একসাথে মিলে তৈরি হয় আমাদের চাঁদ।
এ বার আপনি হয়তো ভাবছেন যে চাঁদের সাথে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার বা না থাকার কী সম্পর্ক রয়েছে তাই না? ওয়েল চাঁদ যদি পৃথিবীর রোটেশনাল স্পিডকে কম না করত তাহলে আজ পৃথিবীতে 1 দিন সমান সমান 8 ঘণ্টা হত অর্থাৎ 4 ঘণ্টা দিন এবং 4 ঘণ্টা রাত হত। এর ফলে পৃথিবী সানলাইট কে ঠিকমতো গ্রহণ করতে পারতো না। যার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা সবসময় মাইনাস হয়ে থাকত ৷ আর এত কম তাপমাত্রায় H2 কোনওদিনই তরল জলের আকার নিতে পারত না।
মানে এই যে পৃথিবীতে জীবন বা লাইফ তো হতই কিন্তু তা মাইক্রো অরগ্যানিজ্ এর আকারে বরফের নীচে থাকত। চাঁদ না থাকার ফলে পৃথিবীর রোটেশনাল স্পিড আজকের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি হত। যার ফলে পৃথিবীতে সবসময় প্রায় 200 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিতে বাতাস বইত। আর এর ফলে পৃথিবীর ভূ পৃষ্ঠে থাকা জীবদের সারভাইভ করতে পারা মুশকিল হয়ে যেত।
আরো পড়ুনঃ পৃথিবীর রহস্যময় অজানা তথ্য
কিভাবে চাঁদ পৃথিবীর অন্য স্পিডকে কম করে
বিষয়টিকে সহজ ভাবে বোঝার জন্য আপনি মনে করুন যে, আপনি একটি নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে থেকে ঘুরছেন। তো এক্ষেত্রে আপনার ঘোরার স্পিড অনেক বেশি হবে তাই না? কিন্তু এরই বিপরীতে যদি আপনার হাতে কোনও ভারী অবজেক্টকে ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং আপনাকে আবার যদি ঘুরতে বলা হয় তো এক্ষেত্রে আপনি খুব বেশি স্পিডে করতে পারবেন না।
তাই তো গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স এর কারণে পৃথিবী এবং চাঁদের সাথেও ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটে থাকে। চাঁদ আমাদের পৃথিবীর অক্ষকে অর্থাৎ অ্যাক্সেসকে স্টেবল রাখে। যদি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে পৃথিবী এবং চাঁদ একে অপরের কাছে অবস্থান না করত তাহলে, সময়ের সাথে সাথে পৃথিবীর অ্যাক্সেস পরিবর্তন হয়ে যেত বৃহস্পতি এবং মঙ্গলের কারণে।
আর এর ফলে পৃথিবী থেকে আবহাওয়া এবং জলবায়ু একেবারেই হারিয়ে যেত। কোনও জায়গায় বছরের পর বছর বৃষ্টিপাত হত আবার কোনও জায়গায় বছরের পর বছর গ্রীষ্মকাল থাকত আবার কোনও জায়গায় শীতকাল। আর এর ফলে কৃষিকাজ প্রায় অসম্ভব হয়ে যেত। মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের সবসময় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালিয়ে বেড়াতে হত।
চাঁদ না থাকলে প্রাণীকুলের ওপর কি প্রভাব পড়বে
যে সময়ে চাপ তৈরি হয়েছিল সেই সময়েই চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছে অবস্থান করত। আজকের তুলনায় প্রায় তিনগুণ কাছে অবস্থান করত। আর এই কারণের জন্য সেই সময় চাঁদের গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স এত বেশি ছিল যে সমুদ্রে অনেক বিশালাকার ঢেউ তৈরি হত। আর যেমনটি আপনি জানেন যে পৃথিবীতে প্রাণের আবির্ভাব সব থেকে প্রথমে জলেই হয়েছিল।
প্রাণকে বা সে লাইফকে জল থেকে তুলে ভূমিতে বা মাটিতে আনার কাজ এই চাঁদি করেছিল। চাঁদের কারণে ওঠা বড় বড় ঢেউ জলের গভীরতম স্থান থেকে লাইফকে মাটিতে ভূমিতে তুলে এনেছিল। আজ আমরা চাঁদকে বাদ দিয়ে লাইফের কল্পনাও করতে পারব ঠিকই। কিন্তু যদি চাঁদ না থাকত তাহলে হয়তো কল্পনা করার জন্য আজ আমরা বেঁচে থাকতে পারতাম না।
পৃথিবীতে খাদ্য শৃঙ্খলকে চালানোর জন্য চাঁদের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চাঁদের আলোয় ছোট ছোট জীবরা খাদ্যের খোঁজে সমুদ্রের গভীর স্থান থেকে উপরে উঠে আসে। আবার এই ছোট ছোট জীবদের তৃতীয় শ্রেণির খাদকরা খায়। আর এই তৃতীয় শ্রেণির খাদকদের আবার চতুর্থ শ্রেনীর খাদকরা খায়। আর এইভাবে চাঁদ সমুদ্রের এবং ভূমিভাগের রাতের খাদ্য শৃঙ্খলকে চালাতে সাহায্য করে। তো যদি চাঁদ না থাকে তাহলে পৃথিবীতে অবস্থিত সকল অর্গানিজমের বেঁচে থাকাটা খুবই মুশকিল হয়ে পড়বে।
পৃথিবীর কন্ডিশন পরিবর্তন হতে শুরু করবে, পৃথিবীর এক স্টেবিলিটি হারিয়ে যাবে যার ফলে পৃথিবীতে তাপমাত্রার পরিবর্তন হতে শুরু করবে। আর এর ফলে প্রতিটি প্রাণীদের জলবায়ু হিসাবে পালিয়ে বেড়াতে হবে প্রচুর তাপমাত্রায়। প্রাণীরা তাই প্রচুর তাপমাত্রায় প্রাণীরা বিলুপ্ত হতে শুরু করবে। কিন্তু সকল ঘটনাগুলি ঘটার আগেই এক বিশাল ধ্বংসাত্মক দৃশ্য আপনি দেখতে পাবেন। যেমনটি আপনি জানেন যে চাঁদের আকর্ষণের ফলে ধোঁয়া তৈরি হয়। তাই না?
তো হঠাৎ যদি চাঁদ ভ্যানিশ হয়ে যায় তাহলে জলের উপর থেকেই আকর্ষণ হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার ফলে পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে অর্থাৎ সমুদ্রে এবং বড় নদীতে বিশালাকার ঢেউ ওঠা শুরু হবে এবং যার ফলস্বরূপ তৈরি হবে মহা সুনামি। আর এই সুনামির ফলে পৃথিবীর প্রায় 30% মানুষ অর্থাৎ যারা সমুদ্রের ধারে বসবাস করে তাদের প্রাণহানির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। বেশ কিছু দেশ এবং শহরগুলি জলে ডুবে যাবে। সমুদ্রের জীব এর খাদ্য শৃঙ্খল নষ্ট হয়ে যাবে। আর এই মহাবিনাশের পর পৃথিবীতে যারা বেঁচে থাকবে তাদের জীবন যাপন করাটা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।
যেমনটি আমি আপনাকে পোষ্টের শুরুর আগে বললাম যে চাপ সম্বন্ধে একটি অবাক করা ইনফরমেশন দেব। এই কথাটিকে জেনে আপনি সত্যিই অবাক হবেন যে পৃথিবীর রোটেশন স্পিড ধীরে ধীরে স্লো হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর রোটেশন স্পিড 17 মিলিসেকেন্ড আর হান্ড্রেডের রেটে স্লো হচ্ছে।এবার প্রশ্ন হল এই যে, কেন পৃথিবীর রোটেশন স্পিড স্লো হচ্ছে? তাই না? আসলে আমাদের চাঁদ পৃথিবী থেকে 3.78 সেন্টিমিটার হিসাবে দূরে সরে যাচ্ছে। আর এই কারণের জন্যই পৃথিবী রোটেশন স্পিড স্লো হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ মহাবিশ্ব এবং মানুষের তৈরি গ্রহ উপগ্রহ সম্পর্কে জানুন
মন্তব্য
তো বন্ধু এই পোস্টটি আপনাকে কেমন লাগল তা নীচে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন। পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে লাইক এবং শেয়ার অবশ্যই করবেন। আপনাদের সঙ্গে আবার কথা হবে নেক্সট পোস্টে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url