মানবদেহের ৮টি অজানা তথ্য
মানবদেহের ৮টি অজানা তথ্য
আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন আমাদের কাতুকুতু কেন হয় ? এবং মানুষের দুধের দাঁত ভেঙে সেখানে নতুন এবং মজবুত দাঁত কোথা থেকে আসে? আমাদের ক্যাপস বা হেঁচকি কেন হয়? সেই সময়ে কেউ আমাদের কথা কী কেউ মনে করে? আর আঙুল ফোটালে আওয়াজ কেন হয়? আপনার মনে এ ধরনের প্রশ্ন কী কোনদিন এসেছে?
আমাদের বডি মাঝে মধ্যে অদ্ভুত ধরনের আচরণ করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা জানতে পারি না যে কেন আমাদের দেহ এ রকম অদ্ভুত আচরণ করছে। এবং এর পেছনের কারণ কি। তো চলুন আজ আমরা জানবো শরীরে এমন একটি অদ্ভুত আচরণের ব্যাপারে এবং তার পেছনে সাইন্স এর ব্যাপারে৷ আর এই আটটি অদ্ভুত আচরণকে আপনার অবশ্যই জেনে রাখা উচিত।
পোস্ট সূচীপত্র: মানবদেহের ৮টি অজানা তথ্য
- আমাদের কাতুকুতু কেন হয়?
- দুধের দাঁত পড়া এবং নতুন দাঁত গজানো
- আপনার হাত এবং পায়ের নখ তৈরি হয় কী ভাবে?
- আঙ্গুলকে ভাজ করলে আওয়াজ হয় কেন?
- আমাদের কাপস বা হেঁচকি কেন হয় ?
- শীতকালে স্কিন কেন রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে যায়, এবং পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়?
- জ্বর কালীন আমাদের শরীরে উষ্ণতা বা গরম কোথা থেকে আসে?
- জলকে মুখ উঁচু করে পান করলে কেন আমরা বেশি পরিমাণে জলপান করতে পারি।
আমাদের কাতুকুতু কেন হয়?
আচ্ছা আমরা নিজেদেরকে কাতুকুতু দিতে পারি না কেন? কাতুকুতু ভাব প্রথমত, আমাদের ড্রেসের কারণে হয়। ড্রেসের সুতোর কারণে হয়। দ্বিতীয় হল যখন কেউ আমাদেরকে ধীরে ধীরে এবং বারবার ছুঁয়ে। আর তখন আমরা অদ্ভুতভাবে ছটফট করতে শুরু করি এবং হাসতে শুরু করি। কাতুকুতু সাধারণত শরীরের সেই অংশগুলি হয় যে অংশগুলিকে আমরা খুব একটা বেশি টাচ করি না। যেমন পায়ের পাতা, ঘাড়, গলা বগল। যখন কেউ আমাদেরকে কাতুকুতু দেয়,তখন শরীরের সেই অংশটি আমাদের ব্রেনে সিগন্যাল দেয়।
আমাদের ব্রেন মনে করে যে, কাতুকুতু দেওয়া জিনিসটি বা ব্যক্তি আমাদের জন্য বিপদজনক। যার কারণে আপনার শরীর সেটাকে সরানো এবং নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। কাতুকুতুর সময় হওয়া হাসি আসলে আনন্দের হাসি হয় না, আপনাকে টাচ্ করা জিনিস বা ব্যক্তিকে ভয় দেখানোর এবং দূরে সরানোর চিৎকার হয়। আর আমরা নিজেদেরকেই এজন্য কাতুকুতু দিতে পারি না। কারণ কাতুকুতু দেওয়ার সময় আমাদের ব্রেন আমাদের হাতকে চিনে ফেলে। আর ব্রেন সেটি আইডেন্টিফাই করে যে এটা আমাদের জন্য বিপজ্জনক না। এজন্য আমরা নিজেকে কাতুকুতু দিতে পারি না।
আরো পড়ুনঃ কম বয়সে চুল সাদা হওয়ার কারণ ও সমাধানের উপায়
দুধের দাঁত পড়া এবং নতুন দাঁত গজানো
মানুষের শৈশবের দাঁত মানে দুধের দাঁত ভেঙে সেখানে নতুন এবং মজবুত দাঁত কেন এবং কোথা থেকে আসে? বিট বা দুধের দাঁত জন্মের আগে থেকেই আমাদের মধ্যে থাকে। জন্মের কয়েক মাস পর ধীরে ধীরে দাঁত মাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসতে শুরু করে৷ প্রথম দাঁতগুলি ছোট ছোট এবং সংখ্যায় অনেক কম থাকে। এই দাঁতগুলি শিশুকে বলতে এবং নরম খাবার খাওয়ার জন্য সাহায্য করে এবং আপনার স্থায়ী ও মজবুত দাঁত কে গজানোর জায়গা বানানোর কাজ করে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো যে নতুন মজবুত দাঁতগুলি মুখে আসে কোথা থেকে? অ্যাকচুয়ালি আপনার মুখে আগে থেকেই কুশি থাকে ফুলগুলি আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে মজবুত হয়ে আপনার দাঁতের আকারে বেরিয়ে আসে। মানুষের এই দাঁত কেবলমাত্র একবারই গজায়। কিন্তু আপনি কি জানেন যে একটি কুমির সম্পূর্ণ জীবনে প্রায় ৫০ বার তাঁর দাঁতকে বদলায়।
আপনার হাত এবং পায়ের নখ তৈরি হয় কী ভাবে?
আর আঙুলের নখের নীচের অংশটি কালো হয়ে যায় কেন? নখ তৈরির কারণ হল আমাদের আঙ্গুলে অবস্থিত প্রোটিন সেলস। এই প্রোটিন সেলগুলি আঙ্গুলের পাশে এসে শক্ত হয়ে যায়। এবং ধীরে ধীরে কঠিন প্রোটিন সেলগুলি নখের আকারে বেরিয়ে আসে। নখের কাজ হল আপনার আঙুলের ডগায় কোনো ধরনের আঘাত থেকে বাঁচানো। আঙ্গুলের বেশি কাজ ওয়েদার চেঞ্জ, কেমিক্যালের জিনিস ব্যবহার করা অথবা কম জল পান করার কারণে আঙুলের নখের কাছের অংশটি কালো হয়ে যায়। এই ব্ল্যাক জায়গাটি আপনি টমেটো বা অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে ঠিক করতে পারেন।
আঙ্গুলকে ভাজ করলে আওয়াজ হয় কেন?
দেখুন আমাদের হাড়ের জয়েন্টে কিছুটা খালি জায়গা থাকে। এই খালি জায়গাগুলো তরল অস্থি মজ্জা দিয়ে ভর্তি থাকে। তো যখন আপনি আঙুল ফোটান বা টানেন তখন এই দুই হারের মাঝে কিছুটা ফাঁকা জায়গা বের হয়। এতে একপ্রকার নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় এবং সেই ফাঁকা জায়গায় হাড়ের মজ্জায় ঢুকে যায়। হঠাৎ করে এভাবে তরল ঢোকার ফলেই সেই শব্দ সৃষ্টি হয়। আঙুল টানাটানি বা ফোটানোর সঙ্গে শরীরের হাড়ের ক্ষয়ের কোনও সম্পর্ক নেই।
আঙুল ফাটানোর অভ্যাস অনেক বিস্তৃত। যদি ক্ষতিকারকই হত তাহলে এ নিয়ে অনেক রিপোর্ট পাওয়া যেত। তাই হাড়ের সমস্যা বা বাতের সঙ্গে আঙ্গুল ফোটানোর কোনও সম্পর্ক নেই। তো যদি সারাদিন মোবাইল চালানোর পর আপনার আঙুলে করে অনুমতি আসে তো একটু আধটু আঙুল ফুটিয়ে নিতে পারেন তাই না।
আমাদের কাপস বা হেঁচকি কেন হয় ?
শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় সাধারণত আপনার লঞ্চ আয়তনে ছোট এবং বড় হতে থাকে। আর লঞ্চেই আকারে ছোট এবং বড় করানোর জন্য নিচে অবস্থিত ডায়াফ্রাম সাহায্য করে। যা আপনার পেটের উপরিভাগে অবস্থিত। তাড়াহুড়ো করে খেলে বা খুব বেশি হাসলে আপনার পেটে ডায়াফ্রামকে স্পর্শ করতে শুরু করে। যার ফলে ডায়াফ্রামে জ্বালাভাব শুরু হয়।
আর এর কারণে ডায়াফ্রাম আপনার সঙ্গে বেশি করে অক্সিজেন ভরতে শুরু করে। অক্সিজেন ভরার কারণে আপনার স্বর্ণালী থেকে আওয়াজ আসতে শুরু করে। এটি ঠিক করার জন্য আপনি ঠান্ডা জল খেতে পারেন। কিছুক্ষণ নিজের শ্বাসপ্রশ্বাসকে বন্ধ করে রাখতে পারেন অথবা এর জন্য চিনি বা মিষ্টি জাতীয় কোনও জিনিস রাখতে পারেন।
ত্বক কেন রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে যায়, এবং পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়?
বছরে একবার স্কিন ঝরে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার, পর্ণমোচী বৃক্ষদের হয়। এই প্রক্রিয়ায় আপনার বডি পুরনো এবং ডেড স্কিন গুলিকে ঝরিয়ে দিয়ে নতুন স্কিন তৈরি করে। কোনও কেমিক্যালের সংস্পর্শে এলে বেশি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে অ্যালার্জির কারণে বেশি এবং শীঘ্রই স্কিন ঝরতে শুরু করে। আর ঠাণ্ডায় আপনার পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ হল, আপনার এই শুকনো স্কিন এর সবথেকে নীচের স্কিন। আমাদের শরীরের সব থেকে কঠিন স্কিন হয়।
শীতকালে জল এবং ধুলো বালি লাগার কারণে এবং বারবার শুকিয়ে যাওয়ার কারণে এই শক্ত স্কিন আপনার দেহের চাপের কারণে ফাটতে শুরু করে। এটি ঠিক করা খুবই সহজ। এই সময় পায়ের এই অংশটি ময়েশ্চার চায়। তো ময়েশ্চার যে ক্রিম বা গরম জল আপনার এই সমস্যা ঠিক করে দেয়। গরম জল দিয়ে পা ধুলে আপনার পায়ের স্কিন নরম হবে এবং ময়েশ্চারের ক্রিম বা তেল দিয়েও আপনার পা নরম হবে। যার ফলে ধীরে ধীরে আপনার পায়ের ফাটা আপনার পায়ের ফাটা স্কিন ঝরে নতুন স্কিম বেরিয়ে আসবে।
জ্বর কালীন আমাদের শরীরে উষ্ণতা বা গরম কোথা থেকে আসে?
জ্বরের সময়ে আপনার সম্পূর্ণ শরীর গরম হয়ে যায়। আপনার শরীরের ভেতরে চলে বিশাল যুদ্ধ। মানে বডিতে চলার রিঅ্যাকশনস আশেপাশের অনেক চেঞ্জ হওয়ার কারণে বা ঠান্ডার কারণে। আর ঠান্ডার কারণে বহু ধরনের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া পরিবেশে ভেসে বেড়ায় খাদ্য জল এবং বাতাসের মাধ্যমে। এই ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াগুলি আপনার শরীরে প্রবেশ করে। এই ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচানোর জন্যে আপনার শরীরের ইমিউন সিস্টেম এই জীবাণুগুলো সাথে লড়াই করতে শুরু করে।
এই কারণেই আপনি টায়ার্ড ফিল করেন এবং আপনার শরীর গরম হতে শুরু করে। শরীরে উষ্ণতা জীবাণুকে মারার কাজ করে। আপনি কি জানেন যে সামান্য জ্বর হলে ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কারণ ওষুধ প্যারাসিটামল আপনার শরীরকে ফোর্স ফলে ঠান্ডা করার চেষ্টা করে। এই কেসে আপনি জুস বা আদা বা শিউলি ফুলের পাতার রস করে খেতে পারেন এবং রেস্ট করতে পারেন। এতে আপনার জ্বর ভালো হয়ে যাবে।
জলকে মুখ উঁচু করে পান করলে কেন আমরা বেশি পরিমাণে জলপান করতে পারি।
খাবার বা জল খাওয়ার সময় কিছুক্ষণের জন্য সেই খাদ্য বা জল আমাদের মুখে থাকে। যেখানে আমাদের মুখের স্যালাইভা খাবার ও জলের সাথে মিশে যায়। আর এই স্যালাইভা খাদ্যে বা জলে অবস্থিত ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। কিন্তু স্যালাইভার কারণে খাদ্য বা জল কিছুটা গাঢ় হয়ে যায়। যার কারণে আমাদের পেট শীঘ্রই ভরে যায়। কিন্তু মুখ উঁচু করে জল খেলে জল মুখের মধ্যে কিছুক্ষণ থাকার সময় পায় না। যার কারণে জলে অবস্থিত ব্যাকটেরিয়া সরাসরি পেটে চলে যায়। যার কারণে আমাদের গ্যাস বা বদহজমের মতো সমস্যা হতে পারে। ডক্টরস বলে যে জলকে গ্লাস বা বোতলে মুখ লাগিয়ে আস্তে আস্তে পান করা উচিত।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পাঁচটি উপায়ে চোখের জ্যোতি বানান ঈগলের মত
মন্তব্য
তো বন্ধু এই পোস্টটি আপনাকে কেমন লাগলো কমেন্ট বক্সে আমাকে অবশ্যই জানাবেন। বন্ধুদের জানানোর স্বার্থে পোস্টটি অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এরকম আরো হেল্পফুল পোস্ট পেতে আমাদের মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url