শীতকালের তিনটি আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
শীতকালের তিনটি আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজ আমি আলোচনা করবো এই শীতকালে আল্লাহর রাসূল (স.) এর দেখানো শেখানো তিনটি আমল সম্পর্কে। যে তিনটি আমল সাহাবীদেরকে করতে বলেছেন এবং আমাদেরকেও করতে বলেছেন। এই তিনটি আমল সম্পর্কে আমি আপনার সাথে বিস্তারিত আজকে আলোচনা করব। তবে অনুরোধ করব পোষ্টটি অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
পোস্ট সূচীপত্র: শীতকালের তিনটি আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- ভূমিকা
- শীতকালে রোজা রাখা শীতকালের একটি আমল।
- শীতকালের একটি নতুন আমল হলো তাহাজ্জুদ পড়া
- শীতকালে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো
ভূমিকা
হজরত আবু হোরায়রা থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অন্যন্য যদি কোনও বান্দা তীব্র শীতের সময় বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ এলাহ নেই। আজকের দিনটি কতো শীতল হে আল্লাহ আপনি আমাকে যামহাড়ির জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিন। তখন আল্লাহ তা আলা জাহান্নাম কে লক্ষ্য করে বলেন, আমার এক বান্দা তোমার জাহান্নাম থেকে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছে। আমি তোমাকে সাক্ষ্য রেখে বলছি আমি তাকে মুক্তি দিলাম। সুবহানাল্লাহ। সাহাবীরা তখন বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাম হাড়ির কি?
জবাবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যামহাড়ির হল জাহান্নামের এমন একটি ঘর যেখানে কাফির নিক্ষেপ করা হবে এবং শীতের তীব্রতায় তারা বিবর্ণ হয়ে যাবে৷ শীতকালে এই সময় মানুষ চাইলে খুব সহজেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেন। শীতকালে আল্লাহর প্রিয় পাত্র হওয়ার আমল যে তিনটি আমল রাসূল (সা.) নিজে করতেন সেই তিনটি আমল আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করছি।
আরো পড়ুনঃ জাহান্নামের সাতটি দরজা ও পরিচয় জানুন
১. শীতকালে রোজা রাখা শীতকালের একটি আমল।
এক নম্বর আমল হল শীতকালে রোজা রাখা। রোজা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উত্তম একটি মাধ্যম। শীতকালের রোযা স্বল্প সময় অর্থাৎ শীতকালে রোযা পালনের মোক্ষম সুযোগ। কারণ শীতকালে রোজাকে বিনা পরিশ্রমে নেকী লাভের মাধ্যম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং শীতকালে দিন অনেক ছোট থাকে। আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন শীতকালের রোজা হচ্ছে বিনা পরিশ্রমে যুদ্ধলব্ধ মালের অনুরূপ। তিরমিজি শরীফের হাদীসে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া বুখারী শরীফের এক হাদীসে বলা হয়েছে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সালাম বলেন, আল্লাহর ওয়াস্তে যে ব্যক্তি একদিন রোযা রাখল আল্লাহতালা প্রতিদান স্বরূপ জাহান্নাম এবং ওই ব্যক্তির মাঝখানে 70 বছরের দূরত্ব সৃষ্টি করে দিবেন। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ শহীদ হাদিস) তাই আমরা এই শীতের মৌসুমে বেশি বেশি রোজা রাখার চেষ্টা করব। বিশেষ করে হিজরী মাসের 13,14,15 তারিখের এই তিনটি রোজা অবশ্য রাখার চেষ্টা করব। পাশাপাশি প্রতি সোমবার এবং বেস্পতিবার যেহেতু হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রাখতেন,তাই এই দিনে রোজা রাখার চেষ্টা করব।
২. শীতকালের একটি নতুন আমল হলো তাহাজ্জুদ পড়া
দ্বীনি ভাইবোনেরা দুই নম্বর যে আমল করতে বলব সেটা হল তাহাজ্জুদ পড়া। শীতকালের রাত অনেক লম্বা হয়। কেউ চাইলে পূর্ণরূপে ঘুমিয়েও আবার শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়তে সক্ষম হবে। এদিকে ঘুমের যেমন কোনও কমতি ব্যাঘাত হবে না, অন্যদিকে মহান রাব্বুল আলামীন, আল্লাহ তা আলার একটি ইবাদত আদায়ের পবিত্র অভ্যাস গড়ে উঠবে।
তাই শীতকালে অবশ্যই কাজটির আমরা অভ্যাস করতে পারি। আল্লাহ তা আলা মুমিনদের সম্বন্ধে বলেন, তাদের পাঁশ্য শয্যা থেকে আলাদা থাকে তারা তাদের পালন কর্তাকে ডাকে ভয়েও আসায় এবং আমি তাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে তাঁরা ব্যায় করে। সুরে সেজদাতে বলা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আয়াতে আল্লাহ তা আলা বলেন, তারা রাতের সামান্য অংশই নিদ্রায় যেত। এটি সুরা জারিয়াতের 17 নাম্বার আয়াত থেকে নিয়েছি৷
৩. শীতকালে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো
এছাড়া সর্বশেষ সোজা আমলের মধ্যে আপনারা করতে পারেন শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে। শীত নিবারনের জন্য সবার পোশাক থাকে না। দ্বিনী ভাইবোনেরা খাদ্য ও পুষ্টি বাসস্থানের অভাবে অনেকেই শীতে মানবেতর জীবন যাপন করে। সাধ্যমত তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের ঈমানী একটি দাবি। হাদিসে বর্ণিত আছে, আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, কোন মুমিন যদি অন্য মুমিনের ক্ষুধায় অন্ন জোগায়।
তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে জান্নাতের ফল আহার করাবেন বা খাওয়াবেন। কোনো মোমিন যদি অন্য কোনও মুমিনের পিপাসায় পানি পান করায় তাহলে, কঠিন কিয়ামতের সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে সিল করা জান্নাতি পানীয় পান করাবেন। আর যদি কোনো মুমিন যদি অন্য কোনও বস্ত্রহীন মুমিনকে বস্ত্র পরিধান করায় তাহলে মহান আল্লাহ তাঁর আত্মাকে জান্নাতের সবুজ বস্ত্র পরিধান করেন। তিরমিজি শরীফের একটি হাদিস সুবহানাল্লাহ।
আরো পড়ুনঃ ইসলামের পথে চলার উপায়, আল্লাহর পথে আসার উপায়
শেষের কথা
প্রিয় পাঠক বন্ধু, আশা করি পোস্টটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন। আমরা শীতকালে অবশ্যই এই আমলগুলো করার চেষ্টা করব। আপনার নিকট আত্মীয় স্বজন যারা আছে তাদেরকে আমার করার কথা বলুন। এরকম আমলের পোস্ট গুলো আমরা প্রত্যেকদিন দিয়ে থাকি। তাই প্রতিদিন আমাদের মোটিভেশন আইটির সাথে থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url