মহিলাদের নামাজে ২৬ টি মারাত্মক ভুল জেনে নিন
মহিলাদের নামাজে ২৬ টি মারাত্মক ভুল জেনে নিন
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম মোটিভেশন আইডির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা এবং স্বাগতম। মহিলাদের নামাজে ২৬ টি মারাত্মক ভুল যার কারণে মহিলাদের নামাজ হয় না। আজ আমার আলোচনাটুকু যাঁরা পড়ছেন তাঁরা আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। যদি কোনও ভাই এই পোস্টটি পড়েন তাহলে আপনার বন্ধুদের কে এই বিষয়গুলো জানার ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন। কয়েক মিনিট সময় ব্যয় হলেও বোনদের অসংখ্য ভুল সংশোধন হবে ইনশাল্লাহ। এই আলোচনাটি হানাফি শিক্ষা অবলম্বন করা হয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্র: নারীদের নামাজে ২৬টি মারাত্মক ভুল
১.নামাজের মধ্যে পা ফাঁক করে দাঁড়ানো মহিলাদের একটি ভুল। অনেক মহিলারা দু পায়ের মাঝে আঙ্গুল ফাঁক করে দাঁড়ায়। এটা ভুল। সঠিক হল নামাজে দাঁড়াবেন যেন দু পায়ের মাঝে আঙ্গুল ফাঁকা না থাকে৷
২.অনেকেই তাকবীরে তাহরিমার সময় দুই হাত চাদরের বাইরে বের করেন, এটা ভুল। সঠিক হল, চাদরের ভিতরে রেখেই দুই হাতের তালু কিবলার দিকে করে কাঁধ পর্যন্ত হাত তুলে আল্লাহ হুআকবর বলে সিনহার ওপর বাম হাতের তালুর ওপর ডান হাতের তালু রাখবেন।
৩.অনেক বোন তাক্ববির বলার সময় মাথাকে সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে নেয়৷ এটা করবেন না, বরং মাথা সোজা রাখবেন।
৪.রুকুতে পুরুষের মত বেশি ঝুঁকবে না। পিঠ ও সোজা করার প্রয়োজন নেই। বরং হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছলেই হল। হাত দিয়ে হাঁটু আঁকড়ে ধরবেন না। বরং হাতের আঙুলগুলি হাঁটুর ওপর মিলিয়ে রাখবেন এবং হাঁটুকে সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকিয়ে রাখবেন। পুরুষের মতো হাঁটুকে একদম সোজা করে রাখবেন না।
৫.মহিলারা পুরুষদের মতো খোলামেলা করে সেজদা করবেন না। বরং বাহু পাঁজরের সাথে পেট রানের সাথে রান পায়ের গোড়ালির সাথে এবং গোড়ালি মাটির সাথে লাগিয়ে রাখবেন। এবং উভয় পা ডান দিকে বের করে দেবেন।
৬.মহিলাদের জন্য হাতের তালু ও পায়ের তালু ছাড়া বাকি সমস্ত অঙ্গ সদর। সুতরাং এমন কাপড় পরিধান করবেন না যাতে এসব অঙ্গের সামান্যতম বেশি খুলে যায়। যেমন, এমন জামা পরিধান করবেন না। যাতে হাতের কনুই পর্যন্ত খোলা থাকে। তা হলে নামাজ হবে না। তেমনিভাবে মা বোনেরা নামাজের সময় এমন পাতলা কাপড় পরিধান করবেন না।
যার ভেতর দিয়ে শরীরের অঙ্গ সমূহ প্রকাশ পায়। এমন পাতলা কাপড় পরিধান করে নামাজ পড়লে নামাজ আদায় হবে না। বিশেষ করে অনেক বোনেরা পাতলা ওড়না গায়ে দিয়ে নামাজ পড়ে তাদের নামাজ হবে না। মোটা কাপড় বা ওড়না পরিধান করা জরুরি। যাতে সদর প্রকাশ না পায়। বর্তমানে বাজারে নামাজের জন্য সেলাই করা ড্রেস পাওয়া যায়। তাই নামাজের জন্য এটা ব্যবহার করাটা নিরাপদ।
আরো পড়ুনঃ রাসূল (স) সাতটি জিনিস ঘরে রাখতে বলেছেন,জানুন কি সেই জিনিস
৭.বোনেরা ফজরের নামাজ প্রথমত ওয়াক্তে আদায় করবেন আর অন্য চার ওয়াক্ত নামাজ যখন মসজিদের জামাত শেষ হবে তখন আদায় করা উত্তম। যেমন যোহর যদি 1:30 মিনিটে শুরু হয় মহিলারা 1:40 মিনিটে যোহর আদায় করবে। আর আসোর যদি পাঁচ টায় জামাত হয় মহিলারা ৫:১০ পড়বে ৷
৮.অনেক বোনেরা মনে মনে কেরাত পড়ে এটা ভুল। কারণ মনে মনে কোনও এবাদত নেই। এরা এমন আওয়াজে পাঠ করবেন যেন কমপক্ষে নিজের কানে শোনা যায়। আবার এমন আওয়াজে পরা যাবে না।যেন কেরাতের আওয়াজ অন্যের কানে পৌঁছে।
৯.রুকু থেকে কোমর সোজা করে দাঁড়ানো ওয়াজিব। তেমনি ভাবে দুই সিজদার মাঝখানে কোমর সোজা করে বসাও ওয়াজিব। অনেক বোনেরা রুকু ও দুই সিজদার মাঝে কোমর সোজা করে না। তাড়াহুড়ো করে নামাজ আদায় করে। তাদের ওয়াজিব তলব করার দরুন নামাজ হবে না।
১০.ফরজ বেতের দাঁড়িয়ে পড়া ফরজ। কেউ যদি এসব নামাজ কোনও সমস্যা না থাকার সত্বেও অলসতা বশত বসে বসে পড়ে তাহলে নামাজ হবে না। যে সমস্ত বোনেরা দাঁড়াতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও সামান্য কারণে বসে বসে এসব নামাজ আদায় করেছেন তাঁদের উক্ত নামাজগুলো পুনরায় আদায় করা ফরজ। কেউ দাঁড়াতে পারে না,কিন্তু লাঠিতে ভর দিয়ে কিংবা দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাদেরও উচিত ফরজ ও বেতের দাঁড়িয়ে আদায় করা। আর বাকি নামাজ দাঁড়িয়ে আদায় করা উত্তম। তবে বসে আদায় করলেও আদায় হবে। তবে বসে পড়লে সওয়াব পাবেন অর্ধেক। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, বসে নামাজ আদায়কারী দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করার অর্ধেক সওয়াব পাবে। সহিহ মুসলিম হাদিস নম্বর 735
১১.মহিলারা সাধারণত ঘরে নামাজ আদায় করে। তাদের উচিত এমন স্থানে নামাজে দাঁড়ানো যার আশেপাশে কোনো ধরনের ছবি ক্যালেন্ডার লিখিত কিছু না থাকে। এ সব থাকলে তা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন।
১২.অনেক বোন দোয়ায়ে কুনুত মুখস্থ জানেন না। তাঁদের উচিত বেতের নামাজের জন্য দোয়ায় কুনুত মুখস্থ করার চেষ্টা করা। আর যতদিন মুখস্থ না হয় ততদিন তারা দোয়ায়ে কুনুত এর জায়গায় পাঠ করতে পারেন "রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিন আজাবান্নার"।
১৩.অধিকাংশ নারীরা মিসোয়াক করে না। মিসয়াক করা যেমন পুরুষের জন্য সুন্নত, তেমনি ভাবে মহিলাদের জন্য ও সুন্নাত। কিন্তু অধিকাংশ বোনেরা এ সুন্নত আমলের ব্যাপারে খুবই উদাসীন।
১৪.অজু করার আগে নেলপলিশ থাকলে তা তুলে ফেলতে হবে, নতুবা ওযু হবে না। আর ওযু না হলে নামাজ হবে না।
১৫.ওযু করার সময় চুরি নাকফুল আংটি এসব নাড়াচাড়া করে পানি এসব অলংকারের নীচেও পৌঁছাতে হবে, নতুবা ওজু হবে না।
১৬.অনেক নারীরা হাতের অঞ্জলিতে পানি নিয়ে হাতের সামনের দিকে পানি গড়িয়ে দেয়। আর পিছনের দিকে ভেজা হাত মাথায় করে দেয়। এতে করে অযু সম্পন্ন হবে না।
১৭.অনেক নারীরা পা ধৌত করার সময় পায়ের আঙুলগুলি খেয়াল করে না৷ বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দ্বারা পা খিলাল করে নেবেন।
১৮.অযুর সময় কেবলার দিকে থুতু কফ কলির পানি ফেলবেন না।
১৯.এক হাতে মুখমন্ডল ধৌত করবেন না। গলা মাসের করবেন না।
২০.বাম হাতে কুলি করবেন না এবং ডান হাতে নাক পরিষ্কার করবেন না।
২১.মুখমণ্ডল ধৌত করার সময়। চোখ ঘরে বন্ধ করে রাখবেন না। বরং স্বাভাবিক রাখবেন।
২২.ঘরে যেসব বালতি টব ড্রামে পানি জমা করে রাখা হয়, তাতে ওজু হীন অবস্থায় কিংবা হায়েয অবস্থায় হাত বা আঙ্গুল চোবানোর ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। এ সব ছোট পাত্রে জমা করা পানিতে যদি আপনার আঙ্গুল ডোবান, তাহলে সে পানি ব্যবহৃত পানি হিসেবে গণ্য হয়ে যাবে। আর সে সে পানি দিয়ে আপনি ওজু বা ফরজ গোসল করতে পারবেন না। তবে কাপড় চোপড় জুতো করতে পারবেন।
২৩.একদিনের বাচ্চা হলেও তার প্রস্রাব নাপাক এবং তার বমি ও প্রস্রাবের মতো নাপাক৷ সুতরাং মা বোনেরা বাচ্চাদের প্রশাব ও বমি থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
২৪.রুকু সিজদায় অবস্থানরত সময়ে বালেগ মেয়েরা অট্টহাসি দিলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। তবে নামায ছাড়া অট্টহাসি দিলেও ভাঙবে না। তবে অট্টহাসি দেওয়া সুন্নতের খেলাপ। আমাদের প্রিয় নবীজী (স) মুচকি হাসতেন।
২৫.অনেক বোনেদের ধারণা যে করে অযুর পর মাথার কাপড় পড়ে গেলে ওজু ভঙ্গ হয়ে যায়। এটা ভুল ধারণা। ওজর পর মাথার কাপড় পড়ে গেলে অযু ভঙ্গ হয়না।
২৬.আর যাদের গোসল ফরজ হয়ে যায় তাদের অলসতা করে ফরজ গোসল করতে বিলম্ব করা ঠিক না। রাতে গোসল ফরজ হলে ওজু করে নেওয়া উচিত। গোসল করতে এত বেশি দেরি করা উচিত নয়। যার ফলে নামাজে ওয়াক্ত চলে যায়।
আরো পড়ুনঃ গোপনে অশ্লীল ভিডিও দেখার চাইতেও দাড়ি কামানো ভয়ংকর পাপ
মন্তব্য
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু, পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। কারণ বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে তারাও নামাজের বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারবে এবং তারা তাদের মা বোনদের এসব বিষয়ে অবগত করতে পারবে। সুতরাং অবশ্যই জনস্বার্থে পোস্টটি শেয়ার করবেন। এরকম হেল্পফুল পোস্ট পেতে মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url