জৈব এন পি কে সার কিভাবে তৈরি হয়
জৈব এন পি কে সার কিভাবে তৈরি হয়
প্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজকের এই পোস্টটি সবার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ দর্শক। আজকের এই পোস্টটিতে আমি বলবো কিভাবে আপনারা গাছের জন্য প্রধান তিনটি খাদ্য উপাদান অর্থাৎ জৈব এম পি কে সার বাড়িতে তৈরি করবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
এমপিকে অর্থাৎ নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম এবং ফসফরাস গাছের তিনটি মুখ্য উপাদান। গাছের শিকড় বৃদ্ধি কৌশলের মাধ্যমে গাছকে ছোট থেকে বড় করা এবং সে গাছে ফুল ফল ধরা তে সবচেয়ে বেশি যে উপাদানগুলো কাজ করে থাকে তা হল এন পি কে।
পোস্ট সূচিপত্র: জৈব এন পি কে সার কিভাবে তৈরি হয়
- এন পিকে সার তৈরি
- এন পিকে সার কীভাবে প্রয়োগ করবেন?
- মন্তব্য
এন পিকে সার তৈরি
পাঠক বন্ধু এখন যে NPK তৈরির কথা বলব তা হল ব্যালেন্স এনপিকে। নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম এবং ফসফরাস এই তিনটি উপাদান সমান ভাবে রয়েছে। মাঝখান থেকে শুরু করে ছাদ বাগান পর্যন্ত এমন কোনও ফুল ফলের গাছ নেই যেখানে এমপিকে ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ আপনারা সব গাছই এটি ব্যবহার করতে পারবেন। অর্গ্যানিক এন পি কে তৈরি করার জন্য প্রথমে লাগবে নাইট্রোজেনযুক্ত সার।
জৈব সারের মধ্যে নাইট্রোজেনের উপাদান সবচেয়ে বেশি রয়েছে। চা পাতাতে অর্থাৎ ব্যবহৃত চা পাতা কী ভাবে আপনারা চা পাতা সংগ্রহ করে নেবেন। প্রথমেই ব্যবহৃত চা পাতা আপনারা খুব ভাল ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নেবেন। তার পরেই চাপাতাগুলোকে কমপক্ষে 1-2 দিন প্রখর সূর্যের তাপে শুকিয়ে নেবেন। যাতে ডাস্ট করতে এটি কোনওরকম অসুবিধা না হয়। এর পরে নিতে হবে পটাসিয়ামযুক্ত সার। পটাশিয়াম যউক্ত সারের মূল উপাদান হল কলার খোসা। আপনারা কি ভাবে সংগ্রহ করবেন?
আরো পড়ুনঃ লাউ, মরিচ, বেগুন গাছ শুকিয়ে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার
আপনারা ব্যবহৃত কলার খোসা ফেলে না দিয়ে সেগুলোকে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে নেবেন। এবং পরবর্তীতে ব্লেন্ডারে কিংবা যে কোনও ভাবে এগুলোকে গুঁড়ো করে নেবেন। এরপরে নিতে হবে ফসফরাস যুক্ত সার অর্থাৎ সরিষার খোল, গুঁড়ো সর্ষের খোল। এগুলোতে ফসফরাসের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। আপনারা বাজার থেকে বা যে কোনোভাবে সংগ্রহ করে এটিকে গুঁড়ো করে নেবেন।এবার এই তিনটি উপাদান সমান ভাবে সংগ্রহ করবেন। আপনারা তিনটি পাত্রে পটাশিয়াম যুক্ত কলার খোসার গুঁড়া, ফসফরাস যুক্ত সরিষা, ফুলের গুঁড়া এবং নাইট্রোজেন যুক্ত চা পাতার গোড়া।
এই তিনটি উপাদান সমান পরিমাণে নিবেন । এবার এই তিনটি উপাদানকে একসঙ্গে অন্য একটি পাত্রে খুব ভালো ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। যেহেতু শুরুতে বলেছিলাম এটা ব্যালেন্স অর্থাৎ এই তিনটি উপাদান সমপরিমাণে নিতে হবে। এটি অর্গ্যানিক তাই সমপরিমাণ কমবেশি হল তেমন কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আপনার যদি রাসায়নিকভাবে এনপিকে সার তৈরি করতে চান সেক্ষেত্রে কিন্তু সমপরিমাণ নিলে কখনই হবে না।
কারণ ইউরিয়া ডিএপি এবং পটাশ এর তিনটি সারে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়ামের উপাদান ভিন্ন ভিন্ন অনুপাতে থাকে। এবার মিশ্রণ তৈরি হয়ে গেলে ৮থেকে ১০ ইঞ্চি টবে জন্য দেড় থেকে দুই চামচ পরিমাণে আপনারা এই জৈব এনপিকে সার ব্যবহার করতে পারবেন। ফুল গাছের ক্ষেত্রে এক চামচ পরিমাণ দেবেন। তবে ফল গাছের ক্ষেত্রে আরেকটু পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারেন। সবজি গাছের ক্ষেত্রে দেড় থেকে দুই চামচ।
কীভাবে প্রয়োগ করবেন?
প্রথমে গাছের চারপাশে মাটি ভালো হবে আলগা করে নিবেন। তারপর ছোট গাছের ক্ষেত্রে এক চা চামচ ভালো করে চারপাশে দিয়ে দিবেন। এরপরে দিবেন কম্পোস্ট সার। আপনি যেকোনো ধরনের কম্পোস্ট সার ব্যবহার করতে পারেন এবং গাছে ইচ্ছামত প্রয়োগ করতে পারেন। এরপরের দিবেন ডিমের গোড়া আপনারা ভালোভাবে ডিমের খোশাকে গুড়া করে দিবেন।
এটি প্রয়োগ করলে যেমন গাছে পোকা ধরে না ,তেমনি এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করে। মাসে এটি একবার ব্যবহার করলেই হবে। শুধুমাত্র জৈব এন পি কে সার যদি মাসে একবার ব্যবহার করেন তাহলে আর কোন সার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না।
আরো পড়ুনঃ লাউ পোঁচে যাওয়ার কারণ ও সমাধান
মন্তব্য
তো পাঠক বন্ধু, নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন জৈব এনপিকে সার কিভাবে তৈরি করতে হয়, কিভাবে গাছে প্রয়োগ করবেন এসব বিষয় সম্পর্কে। এসব বিষয়ে আর যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে, বা জানার যদি কোন ইচ্ছা আগ্রহ থেকে থাকে প্রয়োজন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন। আমি সেটার উত্তর দেওয়ার অবশ্যই চেষ্টা করব।
পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। বন্ধুরা যাতে এর সম্পর্কে ভালোভাবে বিস্তারিত জানতে পারে। এরকম কৃষি বিষয়ক আরো তথ্য পেতে আমাদের মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url