পেঁপে চাষ পদ্ধতি আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ

পেঁপে চাষ পদ্ধতি আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ

প্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামু আলাইকুম মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব আহ্নিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ সম্পর্কে। পেঁপে চাষের ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। পোস্টটি অবশ্যই গুরুত্বসহকারী প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন তাহলে সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। তো চলুন শুরু করা যাক।

ছবি

পোস্ট সূচিপত্র: পেঁপে চাষ পদ্ধতি আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ

  • ভূমিকা
  • পেঁপে চাষ পদ্ধতি, আধুনিক পদ্ধতিতে পেতে চাষ
  • পেঁপে চাষের জন্য চারা উৎপাদন ও জাত নির্বাচন করা
  • পেঁপে চাষের জন্য মূল জমি তৈরি করন
  • পেঁপের চারা রোপন পদ্ধতি
  • পেঁপে গাছের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ
  • মন্তব্য

ভূমিকা: পেঁপে চাষ পদ্ধতি আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ

আমাদের দেশে সবজির মধ্যে পেঁপে একটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি। পেঁপের জনপ্রিয়তা অনেক। কারণ পেঁপে সবজি এবং ফল দুইভাবেই খাওয়া যায়। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ পাকা পেঁপে এবং কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে হজমকারী উপাদান। যা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে সারা দেশে বাণিজ্যিকভাবে কম বেশি পেঁপে চাষ হয়ে আসছে। 

সবজি হিসেবে যেমন গ্রীন লেডি তেমনি পাকা পেঁপে হিসেবে রেড লেডি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত শাহী পেঁপে আমাদের দেশে অনেক বেশি চাষ হয়ে থাকে। সুপ্রিয় দর্শক আজকে পেঁপে চাষ‌ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

আরো পড়ুনঃ এই সার দিলে মাত্র ২০ দিনে পেঁপে গাছে ফল আসবে

পেঁপে চাষ পদ্ধতি, আধুনিক পদ্ধতিতে পেতে চাষ

আজকের পোস্টটি যারা বাণিজ্যিকভাবে গ্রীনেরি রেড লেডি পেঁপে চাষ করতে চান, এছাড়া যারা বাড়ির আঙিনায় দু একটি এই সকল জাতের পেঁপে চারা লাগাতে চান তাদের জন্য। সুতরাং পোস্টটি অবশ্যই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

পেঁপে চাষের জন্য চারা উৎপাদন ও জাত নির্বাচন করা

পেঁপে চাষ করার জন্য জায়গা নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। কেননা পেঁপে গাছ যেমন জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না তেমনি অতিরিক্ত শুষ্কতায় গাছ নেতিয়ে পড়ে। তাই বেলে-দোআঁশ মাটি তুলনামূলক উঁচু এবং মাঝারি উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। পেঁপে চাষের জন্য তাপমাত্রা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত 20 থেকে 30 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পেঁপে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়। 

এটি আদর্শ তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। 20 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নিচে গেলে যেমন পেঁপে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় তেমনি, 30 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপরে গেলেও পেঁপে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। এরপরে পেঁপে গাছের জাত নির্বাচন। পেঁপে গাছ সাধারণত আমরা তিন অবস্থায় দেখতে পাই। স্ত্রী-পুরুষ গাছ এবং হিজড়া গাছ। ভালো ফলনের জন্য জাত নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।। 

সবজি হিসেবে গ্রিন লেডি এবং ফল হিসেবে রেড লেডি এবং শাহী পেঁপে। পেঁপে ফলন তুলনামূলক হেক্টরপ্রতি 50 থেকে 70 মেট্রিক টন হয়ে থাকে। তাই বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য এই জাতটি নির্বাচন করা যেতে পারে। এরপরে চারা উৎপাদনের জন্য সুস্থ-সবল বড় সাইজের পেঁপে থেকে চারা উৎপাদন করা যেতে পারে। অথবা বীজের দোকান থেকে নির্দিষ্ট জাতের বীজ সংগ্রহ করে পলিথিন ব্যাগে চারা উৎপাদন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। 

কেননা বর্তমান সময়ে এই জাতের পরিবর্তে অন্য কোন জাতের বীজ ঢুকিয়ে দেওয়া হয় প্যাকেটে। সে ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত দোকানদারের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। পলিব্যাগে চারা তৈরি ক্ষেত্রে সমপরিমাণ বালি মাটি ও পঁচা গোবর মিশ্রণ দিয়ে ব্যাগ ভর্তি করতে হবে এবং পলিব্যাগ এর নিচে দুই থেকে চারটি ছিদ্র করতে হবে যাতে পানি শোষণ করতে পারে। এবার প্রতিটি পলি ব্যাগ দুইটি করে বীজ বপন করতে হবে।

পেঁপে চাষের জন্য মূল জমি তৈরি করন

মূল জমি জমি তৈরি করনের ক্ষেত্রে মাটির পিএইচ দেখতে হবে। মাটির ph সাড়ে 5 থেকে সাড়ে ৭ এর‌ মধ্যে হলে সে মাটিকে আদর্শ মাটি হিসেবে ধরা হয়। এর জন্য আপনারা পিএইচ মিটারের সাহায্যে সেটি সিলেক্ট করে নিতে পারেন। অথবা বেলে-দোআঁশ মাটি এই চাষের জন্য উপযুক্ত। এবার চারা রোপণের 15 থেকে 20 দিন পূর্বে গর্ত তৈরি করতে হবে। গর্তের সাইজ হবে দেড় ফিট বাই দেড় ফিট এবং গভীরতা হবে দেড় ফিট।  

প্রতিটি গর্তে 10 কেজি শুকনা গোবর 250 গ্রাম জিপসাম 500 গ্রাম টিএসপি 20 গ্রাম জিংক সালফেট 20 গ্রাম বোরিক অ্যাসিড ভালোভাবে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে এবং এক গর্ত থেকে আরেক গর্তের দূরত্ব হবে 2 মিটার। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করলে বর্গাকার তৈরি করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অনেক ভালো হয়।

পেঁপের চারা রোপন পদ্ধতি

পেঁপের চারা রোপন পদ্ধতি সাধারণত দেড় থেকে দুই মাস বয়সের চারা মূল জমিতে রোপণ উপযোগী হয়। এক গাছ থেকে আরেক গাছের দূরত্ব 2 মিটার এবং 1 মিটার দূরত্ব 45 সেন্টিমিটার থেকে 50 সেন্টিমিটার এবং নালার গভীরতা এক ফিট। এভাবে চাষ করলে বৃষ্টির পানি সহজেই মূল জমি থেকছ গড়িয়ে যাবে। এবং জলাবদ্ধতা তৈরি হবে না। 

চারা রোপণের উপযুক্ত সময় মূলত বিকেলবেলা। আপনারা বেড থেকে চারা তোলে বিকেলবেলা লাগাবেন অথবা নার্সারি থেকে ভাল মানে চারা সংগ্রহ করে বিকেল বেলায় রোপন করবেন। চারা রোপনের পর মাটি শুষ্ক থাকে ভালোভাবে শেচ দিতে হবে। আর সার প্রয়োগ করতে হবে। সাধারণত চারা রোপণের তিন মাসের মধ্যেই ফুল আসতে শুরু করে। এসময় প্রতিমাসে 50 গ্রাম ইউরিয়া এবং 50 গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে এবং ফুল হাসতে শুরু করলে সার প্রয়োগের মাত্রা দ্বিগুণ করতে হবে।

এরপর শেচ দিতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে 10 থেকে 15 দিন পর পর শেষ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং প্রতি মাসেই জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। সাধারণত একটি ডালে দুই থেকে তিনটি ফল আসে। ফল বড় করার জন্য একটি ফল রেখে বাকি ফলগুলো ছাড়াই করতে হবে। 

পেঁপে গাছের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ

পেঁপে গাছের সাধারণত ঝুলে পড়া ও কান্ড পচা রোগ পাতা কোকড়ানো মোজাইক রোগ এবং পোকার মধ্যে মিলিবাগ এই কয়েকটি রোগ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এজন্য রোগ দেখা দেওয়া মাত্রই জমি থেকে গাছ উপড়ে ফেলতে হবে এবং পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া প্রতি মাসে ছত্রাকনাশক এবং কীটনাশক স্প্রে করলে এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এরপরে ফল সংগ্রহ করতে পারবেন। একটি ফলের আকৃতি যখন বড় হবে এবং হলদে ভাব ধারণ করবে তখন আপনারা ফল হিসাবে সংগ্রহ করতে পারবেন পেঁপে।

আরো পড়ুনঃ ফেব্রুয়ারি মাসে সবজি চাষ পদ্ধতি ২০২৪

মন্তব্য: পেঁপে চাষ পদ্ধতি আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু আজকে আমরা আলোচনা করেছি, পেঁপে চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে । পোস্টটি যদি পূর্ণাঙ্গ পড়ে থাকেন তবে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কৃষি বিষয়ক আর্টিকেল লিখে থাকি। কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url