পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

কলা একটি পুষ্টিকর খাবার। কলা যেমন পুষ্টিকর খাবার তেমনি সুস্বাদু। কলা কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় এবং থাকা অবস্থায় খাওয়া যায়। দুই অবস্থায় খেলেও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অনেকে মনে করেন কলাতে প্রচুর ক্যালরি থাকে। তাই ডায়েটের জন্য কলা ভালো না। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। এবং পাকা কলার মধ্যে গুনাগুনের পরিবর্তন হয়। আমরা আজকে পোষ্টের মাধ্যমে জানবো কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এবং কলা খাওয়ার সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে। তো অনুরোধ করব পোষ্টটি সম্পন্ন পড়ার জন্য।

ছবি

পোস্ট সূচীপত্র: পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

  • পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা
  • বিভিন্ন রোগের জন্য কলা
  • কলা কখন এবং কিভাবে খেতে হবে
  • কলা খাওয়ার অপকারিতা
  • মন্তব্য

পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা

১. কাঁচা অবস্থায় কলার রং সবুজ থাকে। তবে পাকার সঙ্গে সঙ্গে কলার রং হলুদ হয়ে যায়। কলার রং হলুদ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর পুষ্টিগুণ বদলে যায়। কলায় কেমন উপাদান গুলোর পরিমাণ উপস্থিত আছে তার রং দেখেই বোঝা সম্ভব।

২. কাচা কলাই অর্থাৎ সবুজ রঙের ফলাই রেজিস্ট্যান্ট স্টার্ট এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে এবং শর্করা কম থাকে। কাঁচা কলায় রয়েছে অ্যামিনো এসিড, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এর মত উপাদান থাকে।

৩. কাঁচা কলা পাকার সঙ্গে সঙ্গে শর্করার পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই পাকা কলায় অর্থাৎ হলুদ কলায় শর্করা বেশি থাকে। পাকা কলায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণও বেশি থাকে

৪. কলা বেশি পাকার কারণে খয়রি রং ধারণ করলে সেই কলায় শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। যত বেশি রং ধারণ করে তত বেশি শর্করা বেড়ে যায়।

৫. সম্পূর্ণ খয়রি কলার অর্থ হচ্ছে সেটি অতিরিক্ত পাকা কলা। খয়রি কলাই সবথেকে বেশি সরকার ও এক এন্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর মাত্রায় থাকে।

আরো পড়ুনঃ চিনি খাওয়ার উপকারিতা। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অপকারিতা জেনে নিন

বিভিন্ন রোগের জন্য কলা

আমরা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কোন ফল খেতে নিষেধ করি না। শুধুমাত্র পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে খেতে বলা হয়। ডায়েটের জন্য একজন রোগীর ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম যদি ফল থাকে তাহলে তা অর্ধেক কলা খাওয়া যেতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের জন্য পাকা কলা খাওয়া খুবই উপকারী। পাকা কলায় ফাইবারের পরিমাণ বেশি মাত্রায় থাকায় পেট পরিষ্কার করতে খুবই কার্যকরী। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের পাকা কলা খাওয়া উচিত। 

এছাড়াও পাতলা পায়খানার জন্য কাঁচা কলা খাওয়া বেশ উপকারী। কাঁচা কলাই থাকে পটাশিয়াম মিনারেল এর মত উপাদান যা পেটের সমস্যা দূর করে। তাই পেট খারাপ করলে বা পাতলা পায়খানা হলে কাঁচা কলা খাওয়া জরুরি। কলায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, মিনারেল ও ভিটামিন পাওয়া যায়। তাই যাদের রেনাল ফেলিওর নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে তাদের কলা খাওয়া উচিত নয়। যাদের শরীর কাঠামো রোগাটে, বা ওজন কম ডাক্তাররা তাদেরকে কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

কারণ কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি অন্যান্য ফলের তুলনায় কলায় ক্যালরি বেশি থাকে। তাই ডাক্তাররা কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের ডায়েটে বেশি কার্বোহাইড্রেট রাখা উচিত নয়। তাই এর পরিবর্তে কলা খেতে পারেন। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে পাকা কলা খেতে পারেন। যদি পেট খারাপ হয় তাহলে পাকা কলার পরিবর্তে কাঁচা কলা খাবেন। কাঁচা কলাই ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে বলে খেলে হজম ভালো হয়। এছাড়াও পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করে কাঁচা কলা। তাই পটাশিয়ামের অভাবে ভোগলে বা হাইপো ক্যালরি নিয়েই ভুগলে নিয়মিত কলা খেতে হবে।

কলা কখন এবং কিভাবে খেতে হবে

কলাতে যেমন বিভিন্ন প্রকারের ভিটামিন রয়েছে তেমন কলা খাওয়ার নিয়মের ক্ষেত্রেও ভিটামিনের পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই কলা খাওয়ার নিয়ম রয়েছে কলা কখন কিভাবে খেতে হবে সেগুলো নিয়ে এখন আলোচনা করব। অতিরিক্ত খাবারের সঙ্গে কলা না খাওয়াই ভালো খাবার খাওয়ার কমপক্ষে এক ঘন্টা পরে কলা খেতে হবে। যেহেতু কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে তাই অন্যান্য খাবারের একঘন্টা পর কলা খেলে শরীরে খুব সহজে ফাইবার গ্রহণ করতে পারে। অনেকে রয়েছেন যারা সরাসরি কলা খেতে পছন্দ করেন না। সে ক্ষেত্রে কলা দিয়ে বিভিন্ন প্রকার খাবার বানিয়ে খেতে পারেন।

কলা খাওয়ার অপকারিতা

কলা খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কলা খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে। নিম্নে আমরা জানবো কলা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।

১. কলা খেলে নিদ্রা সমস্যা হতে পারে তাই রাতের পরিবর্তে দিনের বেলা কলা খাওয়া ভালো।

২. কলার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। এরমধ্যে সাগর জাতীয় কলা ঠান্ডা লাগার কারণ হতে পারে। তাই যদি ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব মনে হয় বা ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে কলা না খাওয়াই উত্তম। অবশ্যই কলা পরিমান মত খেতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রেও এই নিয়মটি মেনে চলা উচিত।

৩. কলা খেলে বা অতিরিক্ত কলা খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই অবশ্যই পরিমাণমতো নিয়ম মেনে কলা খেতে হবে।

৪. অতিরিক্ত কলা খেলে দাঁতের সমস্যা হতে পারে। কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুগার ও কার্বোহাইড্রেট। তাই অতিরিক্ত কলা খেলে দাঁতের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

আরো পড়ুনঃ নিমপাতা খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন। নিমপাতা খাওয়ার নিয়ম।

মন্তব্য: পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

সম্মানিত পাঠক বন্ধু আমরা এই আর্টিকেল আলোচনা করলাম কলা খাওয়ার নিয়ম, কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকলে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন। সম্মানিত পাঠক বন্ধু, আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল লিখে থাকি। নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url