কোন সময় দোয়া কবুল হয়, দোয়া কবুলের ১৭টি বিশেষ সময়
কোন সময় দোয়া কবুল হয়, দোয়া কবুলের ১৭টি বিশেষ সময়
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই স্বাগতম। আজকে আমি আপনার সাথে আলোচনা করব দোয়া কবুলের সময় সম্পর্কে। কোন কোন সময় দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়? এরকম ১৭ টি বিশেষ সময় রয়েছে, যে সময়গুলোতে দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা তাড়াতাড়ি দেওয়া বান্দার দোয়া কবুল করে নেন। আজকে এই বিশেষ সম্পর্কে আলোচনা করব। তবে অনুরোধ করবো পোস্টটি সম্পন্ন করার জন্য তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন।
পোস্ট সূচীপত্র: কোন সময় দোয়া কবুল হয়, দোয়া কবুলের ১৭টি বিশেষ সময়
- ভূমিকা
- কোন সময় দোয়া কবুল হয়
- মন্তব্য
- শেষের কথা
ভূমিকা: কোন সময় দোয়া কবুল হয় দোয়া কবুলের ১৭ টি বিশেষ সময়
১৭টি সময়ে দোয়া করলে সেই দোয়া কবুল হয়। আল্লাহতালা সেই সময় খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না। সেই সময়গুলো কখন কখন তা জানতে হলে পোস্টটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুনির্দিষ্ট কিছু সময়ের কথা হাদিসে উল্লেখ করেছেন। যে সময়গুলো দোয়া করলে আল্লাহ তা আলা নিশ্চিতভাবে বান্দার দোয়া কবুল করেন। তো চলুন ঝটপট শুরু করা যাক। কোন কোন সময় গুলোতে দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা খালি হাতে ফেরান না। আল্লাহ তায়ালা বান্দার দোয়া কবুল করেন।
আরো পড়ুনঃ শীতকালের তিনটি আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
কোন সময় দোয়া কবুল হয়, দোয়া কবুলের ১৭টি বিশেষ সময়
১.এক রাতের শেষ তৃতীয়াংশে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন প্রত্যেক দিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের রব সবচেয়ে নীচের প্রথম আসমানের নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমাকে ডাকো। আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কে আছে আমার কাছে চাও, আমি তোমাকে দান করব। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। (বুখারি)
২.আজান ও ইকামত এর মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজান ও ইকামত এর মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয়না। (আবু দাউদ)
৩.জুমার দিনের দোয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন দিনে একটি সময় আছে যে সময়টা কোনো মোমিন নামাজ পড়া অবস্থায় চাই এবং আল্লাহর কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করে। আল্লাহ অবশ্যই সেই চাহিদা পূরণ করবেন এবং তিনি তার হাত দিয়ে ইশারা করে। সে সময়ে সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন। (বুখারি) তিনি আরো বলেন তা হল, ইমাম যখন মসজিদে প্রবেশ করেন সে সময় থেকে সালাদ শেষ হওয়ার সময় পর্যন্ত। কেউ বলেছেন, দুই খুতবার মাঝে কেউ আবার জোর দিয়ে বলেছেন তা হল আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টা আল্লাহই ভালো জানেন।
৪.শেষ সময়ে দোয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে সময়টাতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে কাছে যায় তা হল সেজদার সময়। সুতরাং তোমরা তখন আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাও। (মুসলিম হাদীস)
৫. ফরজ নামাজের পরে দোয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন রাতে সেজদার সময় এবং ফরজ নামাজের পরে দোয়া কবুল হয়। (মুসলিম)
৬. কদরের রাতের দোয়া। রাসূল (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরের রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগে জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (বুখারী হাদীস)
৭. বৃষ্টি হওয়ার সময়ের দোয়া। রাসূল (স.) বলেছেন, দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয় না। এক আজানের সময়ে দোয়া আর বৃষ্টি বর্ষণের সময়ের দোয়া। (আবু দাউদ)
৮. আরাফাতের দিনের দোয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া কখনও ফিরিয়ে দেওয়া হয় না৷ যখন রোজাদার ব্যক্তি ইফতার করে, ন্যায়পরায়ন শাসক, নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া। (মুসনাদে আহমদ তিরমিযী)
৯. জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনে দোয়া। রাসুল সালাম সালাম বলেছেন অন্যান্য সময়ের চাইতে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের দোয়া উত্তম।
১০.শেষ রাতের যে কোনও একটি সময়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রাতে এমন একটি সময় আছে যে সময়টাতে কোনও মুসলিমের এমনটা হয় না যে সে এই পৃথিবী কিংবা পরকালের জীবনের জন্য আল্লার কাছে কিছু চাইলে ও আর তাকে দেওয়া হল না। আর এটা প্রতি রাতে ঘটে। মুসলিম ( 5712)
আরো পড়ুনঃ নারীদের জাহান্নামে যাওয়ার কারণ
১১. জিহাদের মাঠে শত্রুর মুখোমুখি হলে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জিহাদের মাঠে শত্রুর মুখোমুখি হলে সেই ব্যক্তি যদি দোয়া করে সেই দোয়া কখনও ফিরিয়ে দেওয়া হয় না অথবা খুবই কম ফিরিয়ে দেয়া হয়।
১২. অনুপস্থিত মুসলিম ভাই বা বোনের জন্য অন্তর দিয়ে উৎসারিত দোয়া। এমন কোনও বিশ্বাসী বান্দা নেই যে তার অনুপস্থিত কোনো ভাইয়ের জন্য দোয়া করে। আর ফেরেস্তারা বলে না, তোমার জন্য তা হোক। (মুসলিম হাদিস)
১৩.মুসাফির অবস্থায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনজনের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না সন্তানের জন্য পিতা মাতার দোয়া, রোজাদার ব্যক্তি দোয়া ও মুসাফির এর দোয়া। (বায়হাকী তিরমিযী)
১৪. মজলুম ও নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া। মজলুমের দোয়া এবং বদ দোয়া দুটোই আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ ।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাল্লাম বলেছেন, মজলুমের দোয়া থেকে সবসময় সতর্ক থেকো। কেননা মজলুমের দোয়া ও আল্লার মধ্যে কোনো পর্দা বা আশ্রয় থাকে না। (সহীহ বুখারী)
১৫.রাতেরবেলা ঘুম থেকে জেগে উঠলে। উবাইদা ইবনুল সামান্য থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যে কেউ রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগে আর বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লাশারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু অহুআলা কুল্লি সাইন ক্বদির।(বুখারী ও মুসলিম হাদিস) আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবর আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা এবং এরপর বলে আল্লাহুম্মাগ ফিরলি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন এবং আল্লাহর কাছে চাই। তাহলে তার ডাকে সাড়া দেওয়া হবে এবং সে যদি ওজু করে সালাত আদায় করে তাহলে তার সালাত কবুল করা হবে। (সহীহ বুখারী)
১৬.জমজমের পানি পান করার সময়। যাবীর (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জমজম পানি হলো তার জন্য, যার জন্য এটি পান করা হয়। (ইবনে মাজাহ 3062) অর্থাৎ জমজমের পানি খাবার সময় আল্লাহর কাছে যা চাওয়া হয় তা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
মন্তব্য:কোন সময় দোয়া কবুল হয় দোয়া কবুলের ১৭ টি বিশেষ সময়
মুসলমানের উচিৎ এ সময় ও দিনক্ষণ গুলিতে বেশি বেশি তোওবা ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নিজের একান্ত চাহিদাগুলো পূরণে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লিখিত দিন ও সময়ে দোয়া ইস্তেগফারসহ দোয়া করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
আরো পড়ুনঃ মহিলাদের নামাজে ২৬ টি মারাত্মক ভুল জেনে নিন
শেষের কথা
প্রিয় পাঠক বন্ধু এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের জানাতে চেয়েছি যে কোন কোন সময় গুলোতে দোয়া কবুল হয়, সে সময় গুলো সম্পর্কে। তো আশা করি আমার এই পুরো আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা বুঝতে পেরেছেন, সেই সময় গুলো। আপনারা অবশ্যই উপরুক্ত সময় গুলোতে আল্লাহর কাছে চাইবেন, ইনশাআল্লাহ নিরাশ হবেন না। এরকম আরো ইসলামিক পোস্ট পেতে আমাদের মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন। আমরা নিয়মিত ইসলামিক পোস্ট করে থাকি ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url