হঠাৎ মৃত্যু ভালো নাকি খারাপ জেনে নিন
হঠাৎ মৃত্যু ভালো নাকি খারাপ জেনে নিন
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামু আলাইকুম মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। হঠাৎ ইন্তেকাল ভালো নাকি খারাপ? আল্লাহ তা আলা পবিত্র কুরআনে বলেন, প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্ধারিত সময় রয়েছে। যখন তাদের নির্ধারিত সময়ে এসে যাবে তখন তা এক মুহূর্ত আগেও যেতে পারবে না। এক মুহূর্ত বিলম্ব করতে পারবে না। বন্ধুরা পত্রিকার পাতা উল্টালে অথবা সংবাদ মাধ্যমগুলোতে চোখ রাখলে আমরা বর্তমানে সর্বত্রই দেখতে পাই।
সবখানে দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যুর খবর, সড়ক দুর্ঘটনা, লঞ্চডুবি কারখানায় আগুন, কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন এমনকি নানা ধরনের দুর্ঘটনায় হঠাৎ মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিন যোগ হয় 100/100 মানুষের নাম।বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির জরিপ অনুযায়ী, 2019 সালে শুধুমাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় দেশ জুড়ে মারা গেছে 7855 জন মানুষ এবং আহত হয়েছেন 13,330 জন মানুষ। দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় 19 জানুয়ারি 2020 সালের রিপোর্ট অনুসারে যা আগের বছরের চেয়ে 8.07% বেশি। আকস্মিকভাবে মৃত্যুর এই ধারাটি কেবল সড়ক দুর্ঘটনার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়।
সারা বিশ্বে প্রতিদিন ব্রেন স্ট্রোক, হার্ট, এট্যাক লো ব্লাড সার্কুলেশন। অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া হয় স্কুলের ফেডারেশনের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণেও আকস্মিক বা হঠাৎ মৃত্যুর হার বেড়েই চলছে। অন্যদিকে মধ্য প্রাচ্যের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল সমূহে বোমা, গ্যাস, বোমা, হাইড্রোজেন, বোমা সহ বিভিন্ন ধরনের আধুনিক গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহারের কারণে ও শিশু সহ সাধারন বেসামরিক লোকজনের আকস্মিক মৃত্যুর হার দ্রুত বাড়ছে।
সড়ক দুর্ঘটনা, বিমান দুর্ঘটনা, অগ্নিকাণ্ড, গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার। জটিল রোগ উপসর্গ, বিশেষ রোগ বা অন্য যে কোনও ভাবে হঠাত্ মৃত্যু হোক না কেন এভাবে যারা মৃত্যুবরণ করেন তাদের কেউ কেউ নিদারুণ কষ্ট পেয়ে মারা যায়। আবার কেউ মারা যায় কোনও কষ্ট ছাড়াই ঘুমের মধ্যে।
পোস্ট সূচিপত্র: হঠাৎ মৃত্যু ভালো নাকি খারাপ জেনে নিন
- ভুমিকা
- হঠাৎ মৃত্যু ভালো নাকি খারাপ ?
ভুমিকা
মৃত্যু যে ভাবেই হোক জন্মিলে মরিতে হবে এটা চিরন্তন সত্য। আল্লাহ তা আলা বলেন, সকল জীবকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। সূরা আল ইমরান আয়াত 185। প্রখ্যাত মসজিদের ইমাম তাবারানি রহমতুল্লা আলির মতে কোন কোন মুসলিম মনীষী এই মত পোষণ করেন যে আকস্মিক মৃত্যু বেড়ে যাওয়া হল কেয়ামতের একটি আলামত। তারা মনে করেন মানুষের মৃত্যু হতে পারে যে কোনো সময় যে কোনো মুহূর্তে।
হঠাৎ মৃত্যু ভালো নাকি খারাপ ?
বন্ধুরা জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং সেটা আমাদের আখেরাতের অনন্ত জীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের ক্ষেত্রেও দুনিয়ার জীবনে আপনি যতটা ভালো প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন, আপনার আখিরাতের জীবন ততটাই সুখ সমৃদ্ধি হবে। এ কারণে মনীষীরা বলে তোমরা অবসরকে কাজে লাগাও। মে কোন মৃত্যুর ফেরেশতা তোমাদের দুয়ারে আসতে পারে। যে কোনও সময়ে কত শত মানুষের হঠাৎ করে মারা যায়। বিনা রোগে বিনা যুদ্ধে কোনও দুর্ঘটনা ছাড়াই সুস্থ সবল মানুষটা হঠাৎ করে চলে যান না ফেরার দেশে। হঠাৎ ঘুমের ঘোরে অথবা শেষ হয় লুটিয়ে থাকা অবস্থায় কোনো নোটিশ ছাড়া হ্যাঁ, বন্ধুরা এ ভাবে মানুষের মৃত্যু হয় নেককার মোমিন পাপী ফাসিক সবারই। তবে এখানে প্রশ্ন হল, হঠাৎ করে মারা যাওয়া কি কোন ধরণের আজাব বা শাস্তি? আকস্মিক মৃত্যু হলে সেই মানুষটা অনেক সময় তাওবা করার সুযোগ পায় না। আবার হয়তো মৃত্যু যন্ত্রনা ও হয় না। ইমাম আবু দাউদ এবং আহমদ ইবনে হাম্বল রহঃ এর মতে, মোমিন বান্দার জন্য আকস্মিক মৃত্যু এক ধরনের রহমত স্বরূপ, কেননা দ্রুত মৃত্যুর কারণে একজন মুমিন বান্দা তার স্থায়ী নিবাস জান্নাতের পথে যাত্রা শুরু করতে পারে। পক্ষান্তরে পাপীদের জন্য আকস্মিক মৃত্যু এক ধরনের আজাব স্বরূপ, কেননা হঠাত মৃত্যুবরণ করার কারণে সে নিজের পাপ কাজ করার জন্য অনুতপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ পায় না। পুনরায় পাপ কাজ না করার অঙ্গীকার করার সুযোগ পায় না। আল্লাহর দরবারে তওবা করার সুযোগ পায় না। আখিরাতের জীবনের জন্য একটু প্রস্তুত হওয়ার সময় পায় না সে আল্লাহর সামনে নেক আমল নিয়ে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পায় না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা আলা বলেন, তুমি তার উপর হঠাৎ আজাব আসার পূর্বে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ উত্তম বিষয়সমূহের অনুসরণ করো। যে কেউ অস্বীকার করেবে তারা কেয়ামতের দিন বলবে হায় আফসোস, আমি তো আল্লাহর প্রতি আমার কর্তব্যে অবহেলা করেছি এবং আমি পরকালকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম অথবা বলবে, আল্লাহ যদি আমাকে পথ প্রদর্শন করতেন তবে অবশ্যই আমি হয়তো প্রাপ্তদের মধ্যে একজন হতাম। অথবা আজাব প্রত্যক্ষ করার সময় যেন তারা এ কথা না বলে। যদি কোনওভাবে একবার দুনিয়ায় ফিরে যেতে পারে, তবে আমি অবশ্যই সৎ কর্ম পরায়ণ হয়ে যাব। সূরা যুমার আয়াত 55 থেকে 58। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময় আকস্মিক মৃত্যু থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইতেন। তিনি আল্লাহর দরবারে দোয়া করে বলতেন, হে আল্লাহ। আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই দারিদ্রতা হতে, অসুস্থতা হতে আকস্মিক মৃত্যু হতে এবং আপনার অসন্তুষ্টি হতে। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হঠাৎ মৃত্যু এবং আকর্ষণিক মৃত্যু প্রদান হতে বাঁচিয়ে রাখুক আমিন।
আরো পড়ুনঃ গোপনে অশ্লীল ভিডিও দেখার চাইতেও দাড়ি কামানো ভয়ংকর পাপ
শেষের কথা
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু, আমরা অবশ্যই আল্লাহর আদেশ এবং আল্লাহর নিষেধ মেনে চলবো। আল্লাহর দেখানো পথে চলাফেরা করব এবং পরকালে জান্নাত লাভ করব ইনশাআল্লাহ। পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমলনামায় নেকী নিবেন। এরকম আরো ইসলামিক পোস্ট পেতে আমাদের মোটিভেশন আইটির সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url