ঘামাচি হলে কি করবেন, ঘামাচি দূর করার উপায় জেনে নিন

ঘামাচি হলে কি করবেন, ঘামাচি দূর করার উপায় জেনে নিন

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আমরা এই আর্টিকেলে আজকে আলোচনা করব ঘামাচি সম্পর্কে। ঘামাচি কি ঘামাচি কেন হয় ঘামাচি হলে করণীয় ঘামাচি থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব। আর্টিকেলটি পরে অবশ্যই আপনি উপকৃত হতে পারবেন। তাই আর্টিকেলটি পুরো পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।

ছবি

পোস্ট সূচীপত্র: ঘামাচি হলে কি করবেন, ঘামাচি দূর করার উপায় জেনে নিন

  • ঘামাচি কী?
  •  ঘামাচি কেন হয়?
  • ঘামাচির প্রকারভেদ
  • ঘামাচি থেকে স্বস্তি পেতে কয়েকটি ঘরোয়া টিপস
  • মন্তব্য

ঘামাচি কী?

ঘামাচি আমরা সবাই চিনি। ঘামাচি হচ্ছে একটি চর্মরোগ জাতীয় সমস্যা। ঘাম থেকে এর সৃষ্টি এর জন্য এর নাম দেওয়া হয়েছে ঘামাচি। ঘামাচি ত্বকের উপরে ছোট ছোট ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দানার মত হয়ে থাকে। আমাদের ত্বকে গরমের সময় লালবর্ণ ধারণকৃত ছোট ছোট দান আর ন্যায় প্রকাশ পেলে আমরা তাকে ঘামাচি বা র‍্যাশ বলে থাকি।

 ঘামাচি কেন হয়?

আমাদের ত্বকের গ্রন্থির সাথে এক ধরনের জীবাণু থাকে। গরমের দিনে স্বাভাবিকভাবে এই ধর্মগ্রন্থি থেকে ঘাম বের হয়। তাই ঘামের সাথে ধুলাবালি জমে এবং ত্বকের মৃত কোষ কোষে যখন ধুলাবালি জমে তখন ধর্মগ্রন্থি থেকে স্বাভাবিকভাবেই ঘাম নিঃসরণ হয় তখন স্টেফ এপিডারমাইডিস-এর সংস্পর্শে এসে ঘামাচির উৎপত্তি হয়।

ঘামাচির প্রকারভেদ

ঘামাচি সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। সেগুলো হলো-

১. মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা (Miliaria Cristalina)

মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা (Miliaria Cristalina) এই ধরনের ঘামাচি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে থাকে। এ ঘামাচি তেমন কোন উপসর্গ দেখা যায় না এটি ত্বকের উপরে এপিডারমিস থেকে হয়ে থাকে।

২. মিলিয়ারিয়া রুব্রা (Miliaria Rubra)

অন্যান্য গোলাপ থেকে এই ঘামাচি অত্যন্ত যন্ত্রণা করে। মিলি আরিয়া রুবরা এই ঘামাচির জন্য আমাদের শরীরে যন্ত্রণা হয়। শরীরে যখন ধুলোবালি জমে ধর্মগ্রন্থির বন্ধ হয়ে আবদ্ধ হয়ে যায় তখন ঘামাচি কে মিলিয়ারিয়া ব্রুরার হিসেবে ধরা হয়। তোকে পানির ফোটা থাকলে বা লাল লাল পচুরি থাকলে বুঝতে হবে যে আপনাকে এই ঘামেচি হয়েছে।

৩. মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা (Miliaria Profunda)

মিলিয়ারিয়া ত্রিস্টালিনা এর মতই মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা এই ঘামাচিটি হয়ে থাকে। এটিরও তেমন কোন উপসর্গ থাকে না। এটি একটি স্বাভাবিক ঘামাচি।

আরো পড়ুনঃ ফুসফুস সুস্থ রাখতে যা করবেন। ফুসফুস পরিষ্কার রাখার উপায়।

ঘামাচি থেকে স্বস্তি পেতে কয়েকটি ঘরোয়া টিপস

আমাদের হাতে অনেক কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো দিয়ে আমরা ঘামাচি যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারি। সে উপাদান গুলো দিয়ে আমরা যাদু করি জিনিস তৈরি করতে পারি। এই যে আমরা কিছু টিপস জেনে নেই।

১) বরফ

ঘামাচি থেকে উপকার পেতে বা স্বস্তি পেতে যেসব স্থানে ঘামাচি হয়েছে সেই জায়গাগুলোতে বরফ ঘষতে হবে ঠান্ডা পানিও দিতে পারেন এতে অনেক আরাম পাবেন।

২) মুলতানি মাটি

ঘামাচির জন্য মুলতানি মাটির পেস্ট খুবই উপকারী। এই পেস্ট তৈরি করতে চার থেকে পাঁচ টেবিল চা চামচ মুলতানি মাটি দুই থেকে তিন টেবিল চা চামচ গোলাপ জল ও পানি প্রয়োজন। ঘামাচির জায়গায় এই পেস্টটি দুই থেকে তিন ঘন্টা লাগিয়ে রাখতে হবে। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর দেখবেন কয়েক দিনের মধ্যে ঘামাচি ভালো হয়ে গেছে।

৩) লেবুর রস

ঘামাচির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে লেবুর রস। লেবুর রসে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ঘামাচি দূর করতে সাহায্য করে। ঘামাচি থেকে উপকার পেতে হলে আপনাকে তিন থেকে চার দিন লেবুর রস মিশ্রিত পানি পান করতে হবে।

৪) বেকিং সোডা

বেকিং সোডা নামটি শোনে হয়তো অবাক হবেন। কিন্তু বেকিং সোডা ঘামারির জন্য খুবই উপকারী। এক কাপ ঠান্ডা পানিতে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা গুলিয়ে একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ভিজিয়ে টা ভালো করে নিংড়ে নিয়ে ঘামাচির স্থানে লাগালে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

৫) নিমপাতা

নিমপাতা একটি বহুমুখী উপকারী জিনিস। নিম পাতা বিভিন্ন রকম রোগ বালাইয়ের ক্ষেত্রে কাজে লাগে। নিম পাতার উপকারিতা অনেক। বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে মতই নিম পাতা ঘামাচি জন্যই খুবই উপকারী। নিম পাতায় রয়েছে anti ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ঘামাচি নিরাময় খুবই কার্যকর। নিম পাতার পেস্ট ঘামাচির স্থানে লাগাতে হবে। চার থেকে পাঁচ দিন ব্যবহার করলে ঘামাচি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৬) ফিটকিরি

সেভিং বা লোশন এর বিকল্প হিসেবে ফিটকিরি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ঘামাচির কাজে ফিটকিরি ব্যবহার করা হয় এটা সবাই জানে না। নামাজী থেকে পরিত্রাণ পেতে ফিটকিরি মিশ্রিত পানি পরিষ্কার কাপড় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে গোসল করলে উপকার পাওয়া যায়।

৭) অ্যালোভেরা জেল

ঘামাচি থেকে উপকার পেতে বা ঘামাচি থেকে মুক্তি পেতে হলে, আপনারা এলোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। এলোভেরার পাতা থেকে এলোভেরা বের করে তার প্রলে শরীরে লাগিয়ে নিতে হবে। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে দেখবেন ঘামাচি থেকে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

৮) চন্দন

ঘামাচি থেকে রক্ষা পেতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে চন্দন। চন্দন গোলাপ জলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ঘামাচির স্থানে কয়েক দিন লাগালে ঘামাচি ভালো হয়ে যায়। চন্দনে রয়েছে ম্যাজিকাল রেমেডি। এই পেজটি বানাতে লাগবে চন্দন বাটা ধনেপাতা বাটা। চন্দনা ধনে পাতা একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে এবং ঘামাচির স্থানে লাগাতে হবে। এতে করে অনেক উপকার পাওয়া যায়। ধনে পাতায় রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক গুণ। চন্দন ঘামাচি জ্বালা ও চুলকানি দুটাই কমায়।

৯) লাউ

লাউ একটি ঠান্ডা সবজি। নামাজের জন্য লাউ বেশ উপকারী। ঘামাচি জন্য লাউকে আগুনে ঝলসে নিয়ে তারপর লাউ থেকে রস বের করে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

১০) বেসন

আমাদের হাতের কাছে সবারই বেসন আছে। বেসনের সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ঘামাচির উপরে প্রলেপ লাগিয়ে দিলে ঘামাচি থেকে আরাম পাওয়া যাবে। ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ নবজাতকের ত্বকের যত্ন নেওয়ার ২০টি উপায়

মন্তব্য: ঘামাচি হলে কি করবেন, ঘামাচি দূর করার উপায় জেনে নিন

সম্মানিত পাঠক আশা করি পুরো পোস্টটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন ঘামাচি কি ঘামাচির থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। তাই নিয়মিত আর্টিকেল করতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url