অনলাইন ইনকাম কি? অনলাইনে ইনকাম করার সহজ ৮টি উপায়
অনলাইন ইনকাম কি? অনলাইনে ইনকাম করার সহজ ৮টি উপায়
সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম।বর্তমান বিশ্বে লাখ লাখ মানুষ অনলাইন থেকে ইনকাম করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। অনলাইন ইনকামের বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ে আসুন।
পোস্ট সূচিপত্র: অনলাইন ইনকাম কি? অনলাইনে ইনকাম করার সহজ ৮টি উপায়
- সূচনা
- অনলাইন ইনকাম কি?
- অনলাইন ইনকামের প্রকারভেদ
- অনলাইনে ইনকামের স্বরূপ
- কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করা যায়
- অনলাইনে ইনকাম করার সহজ ৮টি উপায়
- শেষের কথা
সূচনা:অনলাইন ইনকাম কি? অনলাইনে ইনকাম করার সহজ ৮টি উপায়
বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রযুক্তির উপরে নির্ভরশীল। এই প্রযুক্তি ও অনলাইন নির্ভর মানুষের মানসিকতা ইন্টারনেটে ইনকামের বহু পথ খুলে দিয়েছে। মানুষ খুব সহজেই একটা ভালো পরিমাণের অর্থ অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারছে। বর্তমান বিশ্বের এবং বাংলাদেশের অনেক মানুষ এখন অনলাইনে ইনকামের উপর নির্ভরশীল।
আপনি চাইলেই খুব সহজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্লাটফর্মে ইনকাম করতে পারবেন। আপনি কি অনলাইনে ইনকাম করতে চান? যদি আপনার উত্তর হ্যাঁ হয় তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
এই আর্টিকেলে আমরা অনলাইন ইনকাম এর আদ্যোপান্ত নিয়ে আলোচনা করবো। সাথে সাথে অনলাইনে আয়ের সেরা ১০টি উপায় আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। আপনি যদি এই সেক্টরে নতুন হন, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে অনেক সহায়তা করবে।
অনলাইন ইনকাম কি?
বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে ইন্টারনেট কে কাজে লাগিয়ে নিজের মেধা দিয়ে ইনাকাম করছে অনেকেই। তাদের এই ইনকামকেই অনলাইন ইনকাম বলে। অন্যভাবে বলতে গেলে আপনার মেধাকে অনলাইনে বিভিন্ন বায়ারের কাছে বিক্রি করার মাধ্যমে ইনকাম করাকে অনলাইন ইনকাম বলা হয়। আমরা আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অনেক শুনেছি। অনলাইন ইমকাম নিয়ে অনেক অনেক কথা প্রচলিত আছে। এদের মধ্যে বেশীরভাগ মিথ্যা। কিছু স্বার্থবাদী মানুষ কখনোই চায় না যে অন্য কেউ সফল হোক। যাইহোক, অনলাইন ইনকাম যদিও সহজ কোন বিষয় না তবে ধৈর্য, মেধা, সময় এবং ইচ্ছা শক্তি থাকলে খুব সহজেই অনলাইন ইনকাম করা সম্ভব। যা অনেকেই করছে।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কি?? ফ্রিল্যান্সিং গাইডলাইন সম্পর্কে জেনে নিন
অনলাইন ইনকামের প্রকারভেদ
অনলাইন ইনকাম সাধারণত দুই প্রকার।
1.অ্যাক্টিভ ইনকাম(Active income)
2.প্যাসিভ ইনকাম(Passive income)
অ্যাক্টিভ ইনকাম(Active income)- অ্যাক্টিভ ইনকাম বা সক্রিয় ইনকাম যা আমরা চাকরী নামে জানি। অ্যাক্টিভ ইনকাম এমন একটি বিষয় যা আপনাকে সময়ের মাধ্যমে বেতন দেয়। অর্থাৎ ধরুন আপনি একটি যেকোনো দোকানে কাজ করেন। সেখানে আপনাকে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। এর মধ্যে আপনি যদি কোন দিন ছুটি নেন তাহলে আপনার বেতন থেকে সে দিনের টাকা কেটে নেওয়া হয়। তার মানে হলো আপনি যতক্ষণ কাজ করবেন ততক্ষণ বেতন পাবেন। আর যতক্ষণ কাজ করবেন না ততক্ষণের বেতন পাবেন না।
এই বিষয়টা অনেকটা দিনমজুর এর মতো। এরকম ব্যবস্থা যেমন অফলাইনে আছে তেমনি আবার অনলাইনে আছে। এরকম অনলাইন মার্কেটপ্লেসে এমন কতগুলো কাজ রয়েছে যেগুলো আপনার অ্যাক্টিভ ইনকাম এর মধ্যে পড়ে। যেমন- কন্টেন্ট রাইটিং বা গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ। এই কাজ গুলো করার জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত আপনার মেধা খাটাতে হবে ও সময় এবং শ্রম দিতে হবে। আপনাকে সব সময় একটিভ থাকতে হবে।
প্যাসিভ ইনকাম- প্যাসিভ ইনকাম অনেক জনপ্রিয় একটি ইনকামের ব্যবস্থা। অনলাইনে যারা একটিভ তারা এটাকে প্ল্যান বি হিসেবে ধরে। তারা ফ্রীলান্সিং এর পাশাপাশি প্যাসিভ ইনকামের জন্য ইনভেস্ট করে। প্যাসিভ ইনকাম সাধারণত এমন একটি সিস্টেম যেখানে আপনাকে শুরুর দিকে মেধা, টাকা এবং সময় ইনভেস্ট করতে হয়। তারপর সেখান থেকে ইনকাম আসতে থাকবে আপনাকে আর কাজ করতে হবে না। যেমন, শেয়ার মার্কেটের কথাই ধরুন, সেখানে আপনি মার্কেট যাচাই বাছাই করে শেয়ার কেনার পর, বসে থাকা ছাড়া আপনার আর কোন কাজ নেই।
অনলাইনে ইনকামের স্বরূপ
অনলাইনে ইনকাম করার বিষয়টি আজ থেকে ১০ বছর আগে যতোটা কঠিন ছিল, এখন ঠিক ততটাই সহজ হয়েছে। ধীরে ধীরে সারা বিশ্ব প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপান্তরিত হয়েছে। বিভিন্ন সমস্যার কারনে আজ থেকে ১০ বছর আগেও অনলাইনে ইনকাম করার বিষয়টি কেউ ভাবতে পারতো না। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজকে সত্যি হয়েছে । বর্তমানে অনলাইন থেকে, শুধুমাত্র অনলাইন থেকেই টাকা ইনকাম করে অনেক পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
বর্তমান আধুনিক বিশ্বে এখন অফিস আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রায় সব সেক্টরেই অধিকাংশ কাজ অনলাইনে হচ্ছে। আগে যদি আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যেতেন তাহলে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজে গিয়ে ভর্তি হতে হত। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে যুগে আর যেতে হয় না বাড়িতে ঘরে বসেই ভর্তির কাজ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে।
চাকরির ক্ষেত্রেও সেম সিস্টেম। বর্তমানে চাকরির ক্ষেত্রে চাকরির দরখাস্ত আর অফিসে গিয়ে দিয়ে আসতে হয় না। অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরির জন্য আবেদন করা যাচ্ছে। হলে অনলাইনে ইনকামের বহু সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কাজগুলো করার জন্য শুধুমাত্র একটি ডিভাইস দরকার।
অনলাইনে ইনকামের ক্ষেত্রে শুরুতেই আপনি লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন না। তবে আপনার যদি ধৈর্য থাকে, এবং আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট কাজে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারেন, সেক্ষেত্রে অনলাইন থেকে অনেক বড় পরিমানের একটা অর্থ প্রতিমাসে ইনকাম করা সম্ভব।
কিভাবে আপনি অনলাইনে ইনকাম করবেন?
অনলাইন ইনকাম এর বিষয়টি বর্তমানে বাংলাদেশে আমাদের নতুন সমাজের কাছে নতুন একটি বিষয়। কিন্তু এটা আমাদের কাছে নতুন একটা বিষয় হলেও গোটা বিশ্বে স্বাধীনভাবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ কিন্তু কম বেশি সব পেশায় পাওয়া যায়। তাছাড়াও অনলাইন ইনকাম এর জন্য আপনার তেমন কিছুই প্রয়োজন হবে না।
আপনার মেধাকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই কোনো কাজে দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন। এবং সেটা থেকে নিয়মিত ইনকাম করতে পারেন। আপনি ছেলে মেয়ে, ছাত্র, চাকরিজীবী যাই হন না কেন, আপনি এই সেক্টর থেকে অবশ্যই আয় করতে পারবেন। আপনি একজন ছাত্র বা ছাত্রী হয়ে থাকলে আপনার পড়ালেখার খরচ যদি আপনি নিজেই চালাতে পারবেন সেটা কি মন্দ হবে? অবশ্যই না।
প্রতিদিন আপনারা অনেক সময় ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইত্যাদিতে ব্যায় করে থাকেন। চাইলে এই সময় গুলো কে কাজে লাগিয়ে, শুধু চ্যাটিং আর নিউজফিড ঘুটে নষ্ট না করে এখান থেকেও আয় করা সম্ভব। এছাড়াও পড়া লেখার ফাঁকে বা অবসর সময়টাকে কাজে লাগিয়ে যদি এই কাজগুলো করেন তাহলে, দেখবেন সময়টাও নষ্ট হচ্ছেনা এবং পাশাপাশি কোনো খারাপ কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখা যাচ্ছে।
অনলাইনে ইনকামের মাধ্যমে আপনি যখন নিজের খরচ নিজেই জোগাড় করবেন, তখন দেখবেন আপনার নিজের ভেতরে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছে। অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করছে। সুতরাং অবশ্যই আপনি চেষ্টা করবেন কাজের ভেতরে থেকে পড়া চালিয়ে যাওয়ার। তেমন কিছু লাগবেনা অনলাইন ইনকাম শুরু করতে।
অনলাইনে ইনকামের জন্য শুধু একটি ডিজিটাল ডিভাইস, ইন্টারনেট সংযোগ এবং কাজ করার ইচ্ছা এতোটুকুই প্রয়োজন। অনলাইন থেকে কিভাবে কি করবেন তার বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলো:
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং শেখার ২০টি উপায়-ফ্রিল্যান্সিং ২০২৪ কিভাবে শিখবেন?
অনলাইন থেকে ইনকাম করার সহজ ৮টি উপায়
অনলাইন থেকে ইনকাম করতে কে না চায় বলুন ।সবারই ইচ্ছে থাকে অনলাইন থেকে কিছু ইনকাম করার। অনলাইন ইনকামের প্ল্যাটফর্ম অনেক আছে। কিন্তু তার মধ্যে ভালো এবং খারাপও আছে আজকের এই পোস্টে এমন ১০টি অনলাইন ইনকামের সহজ উপায় জানব। যেগুলো থেকে আপনি অনেকটা নিশ্চিন্তে আয় করতে পারবেন। বর্তমানে অনলাইনে ইনকামের অসংখ্য মাধ্যম আছে। যেখান থেকে আপনি সহজে ইনকাম করতে পারবেন। এর মধ্যে থেকে সেরা ৮টি উপায় নিচে দেয়া হলোঃ
১। ফ্রিলান্সিং (Freelancing) করে আয়
অনলাইনে ইনকামের যে পদ্ধতিতে সবথেকে বেশি মানুষ ইনকাম করে সেটি হলো ফ্রিলান্সিং। বাংলদেশের বেকারত্ব নিরসনে এই খাতটি অনেক বড় ভুমিকা পালন করছে। সাথে সাথে অনেক দক্ষ মানুষ এই সেক্টরে কাজ করে আমাদের দেশকে রিপ্রেসেন্ট করছে বিশ্বের দরবারে।
আসলে বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশ জানতোই না যে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ বলে একটা দেশ আছে। সেসব দেশ দেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করছে আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সারগণ।সেই সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণে রেমিটেন্স বাংলাদেশের নিয়ে আসছে তারা। তাই এই ফ্রিলান্সিং এ কাজ করে আপনিও টাকা আয় করার পাশাপাশি গৌরবেরও অংশীদার হতে পারবেন।
এখন আসি কিভাবে শুরু করবেন এই কাজ। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই। আপনি ঘরে বসেই আপনার কাজ করতে করতে পারবেন। আপনার ক্লায়েন্ট হবে বিভিন্ন দেশের। সবার প্রথমে আপনার দরকার একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর দক্ষতা। হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং (Graphics Design), হতে পারে ফটো এডিটিং (Photo Editing), হতে পারে ওয়েব ডিজাইনিং (Web Design), ওয়েব সাইট মেকিং (Website Making), কপি রাইটিং (Copywriting), কন্টেন্ট রাইটিং (Content Writing), লোগো ডিজাইন (Logo Design), ইত্যাদির উপর।
এসবের যেকোনো একটি কাজে আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। আপনি যদি একাধিক কাজে দক্ষ হন সেক্ষেত্রে আপনার টাকা ইনকামের সুযোগ আরো বেশি হয়ে যাবে। কাজ শেখার পর আপনাকে প্রথমে বিভিন্ন ফ্রিলান্সিং সাইটে (যেমন- Freelancer, Upwork, Fiver, ইত্যাদি) আপনার সঠিক তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এর পরে আপনি কোন কোন কাজে দক্ষ ও পারদর্শী সেই কাজগুলোকে ওই সাইটে মেনশন করে দিতে হবে।
তবে একটা বিষয় আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে, বর্তমানে অনলাইন ইনকাম এর সাইট অনেক আছে। কিন্তু সঠিক ও ভালো মানের সাইট খুব একটা নেই। তাই যেকোনো সাইটে কাজ শুরু করার আগে অবশ্যই ভালো ভাবে সাইটটিকে আপনাকে দেখে নিতে হবে।যদি সব কিছু দেখে আপনার কাছে ভালো বলে মনে হয়, কেবল তাহলেই আপনি সেই সাইটে কাজ করা শুরু করবেন।
তারপর, আপনি যে কাজে দক্ষতা অর্জন করেছেন, তা প্রমানের জন্য আপনার পূর্বেই সম্পাদিত কোনো কাজ থাকলে সেটা পোর্টফোলিও আকারে ওই সাইটে সাজিয়ে রাখতে হবে। এতে করে আপনার ক্লায়েন্ট এসে আপনার পোর্টফলিও দেখে যদি আপনাকে পছন্দ করে তাহলে সে আপনাকে কাজে নিয়োজিত করবে।
এক্ষেত্রে প্রথমেই আমাদের পরামর্শ থাকবে অবশ্যই আপনি ভালো একটা পোর্টফলিও তৈরি করবেন। কারন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন হিসাবে ওই পোর্টফোলিও গুলোই আপনাকে কাজ পেতে সহায্য করবে। প্রথম প্রথম আপনার কাজ পেতে অসুবিধা হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার পরিচিত যদি ফ্রিলান্সার থাকে তার সাহায্য নিতে পারেন।
তার ওই রেফারেন্সের মাধ্যমে কাজ পেয়ে আপনার প্রথম ক্লায়েন্ট যখন আপনাকে ভালো একটা রিভিউ দিবে, তখন দেখবেন আপনার কাজের অভাব হবে না।
২। ব্লগিং (Blogging) করে আয়
ব্লগিং করে ইনকাম বেশ পুরাতন মাধ্যম। কিন্তু এটা অনেক কার্যকরী একটা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে বেশ ভালো পরিমাণ একটা অর্থ প্রতি মাসেই ইনকাম করা সম্ভব। ব্লগিং মূলত একটি ডিজিটাল নিউজ পেপার এর মতো। আপনি আপনার মন মতো যেকোনো একটি বিষয় নিয়ে লিখবেন। যে ব্যক্তির ওই বিষয়টি জানার প্রয়োজন আছে সে এসে পড়বে।
আপনি এখন যে লেখাটি পড়ছেন এটিও একটি ব্লগ। হেম লগ ইন টি আমি করেছি। অতএব বুঝতেই পারছেন বিষয়টা কি কেমন। লেখালেখি যদি আপনি আগ্রহী থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই এখান থেকে ইনকাম করতে পারেন।
আপনার যে বিষয়ে আগ্রহী, জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা বেশি সে বিষয়ে ব্লগিং করলে সেটা সবথেকে বেশি ভালো হয়। তাই আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয় বা নিশ (nich)নিয়ে কাজ করতে পারেন। অনলাইনে নিশ(niche) বলতে মূলত নির্দিষ্ট কিছু বিভাগকে বোঝায়। যেমন, খেলাধুলা, টেকনোলজি, আইন, রান্না, জীবনী, ভ্রমন, ইত্যাদি। উদাহরণ স্বরূপ ভ্রমনের ক্ষেত্রে। আপনি কোনো এক জায়গায় ভ্রমনে গিয়ে সেখানে কি কি আপনার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো, সেটি নিয়ে একটি বিস্তারিত ব্লগ লিখে ফেলতে পারেন।
এখন মূল বিষয় হলো যে, আপনি কোথায় লেখা লিখি করবেন। এক্ষেত্রে সব থেকে ভালো হয় আপনি যদি একটি ব্লগ সাইট নিজে বানিয়ে নিয়ে সেখানে লিখতে পারেন। এখন অনেক সহজে কোনো খরচ ছাড়াই ব্লগ সাইট বানানো যায়। তবে ফ্রি সাইটগুলোতে মানুষের বিশ্বাস কম রয়েছে। তাই আমাদের পরামর্শ থাকবে প্রথমে কিছু টাকা খরচ করে ডোমেন কিনে হোস্টিং ঠিক করে আকর্ষণীয় একটি সাইট তৈরি করুন। এরপর আপনার ওয়েবসাইটে লেখা লেখি শুরু করুন। দেখবেন বেশ ভালো ফল পাচ্ছেন।
একটি ডট কম ডোমেন কিনবেন(অন্যের না নিতে পারেন) সাথে এক জিবি হোস্টিং এবং একটি ফ্রি থিম। এই তিনটা জিনিসই আপনার ব্লগিং শুরু করার জন্য যথেষ্ট আর কিসের প্রয়োজন নেই। এগুলো কমপ্লিট করতে আপনার তিন হাজার টাকা মতো খরচ হতে পারে। এইভাবে খরচ করে ব্লগিং করলে আপনার ব্র্যান্ডিংটা ভালো হবে। এবং ইনকাম এর পরিমানও অনেক বেশি হবে ফ্রি সাইটের তুলনায়। আর ভবিষ্যতে আপনার সাইট এর দামও অনেক বেশি হবে। ক্ষেত্র বিশেষে একটি ভালো সাইটের মূল্য কয়েক লক্ষ্য টাকা পর্যন্ত হয়ে যায়।
আর ফ্রি সাইট গুলোর ক্ষেত্রে আপনাকে পুরো ডোমেইন দিবে না গুগল। সেক্ষেত্রে আপনি পাবেন সাব ডোমেইন। এভাবে ব্লগ সাইট তৈরীর ক্ষেত্রে আপনি খুব সহজেই একটি ব্লগস্পট দিয়ে ১০ মিনিটেই একটি ব্লগসাইট খুলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি মোবাইল এবং কম্পিউটার উভয়ের মাধ্যমেই কাজ করতে পারেন। তাই যারা মোবাইলে অনলাইন ইনকামের কথা ভাবছেন, তাদের জন্যও এটি একটি সেরা সুযোগ হতে পারে।
তবে এতো কিছুর পাশাপাশি যদি আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর কিছুটা ধারনা থাকে তাহলে কিন্তু আপনি খুব সহজেই আপনার সেই ব্লগে প্রচুর পরিমাণে ট্রাফিক বা ভিজিটর আনতে পারবেন। যেটার মাধ্যমে আপনি কিন্তু খুব সহজেই আপনার ইনকামের পরিমাণ বহুগুণে বাড়িয়ে ফেলতে পারবেন।
৩। ইউটিউবিং(YouTube )করে আয়
বাংলাদেশের অনেক বড় বড় ইউটিউবার আছে। এদের কারো কারো এক মাসের ইনকাম ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। চাইলে আপনিও কিন্তু ইউটিউব ভিডিও বানিয়ে ইনকাম করা শুরু করতে পারেন। এই ভিডিও বানাতে আপনার ক্যামেরা না থাকলেও চলবে। অনেক বড় বড় ইউটিউবার রয়েছে যারা মোবাইল দিয়ে তাদের প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল। তারপরে সফল হওয়ার পরে দামী দামী সব ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করেছে।
আপনার কন্টেন্ট যদি ভালো হয়, ভিউয়ার্সদের চাহিদা মোতাবেক যদি আপনি কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি সফল হবেন। তবে এক্ষেত্রে একটি ছোট্ট টিপস দেই আপনাদের। আপনারা যদি সত্যিই প্রফেশনালভাবে ইউটিউবে কাজ করতে করতে চান তাহলে, আপনাকে ভিডিও এবং অডিও এডিটিং খুব ভালো করে শিখতে হবে।
আপনার ইউটিউব কনটেন্ট তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করার পরে সর্বনিম্ন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূরণ হয়ে গেলে আপনি ইউটিউবে মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এরপরে প্রতিটা ভিডিওতে মনিটাইজেশন অ্যাক্টিভেট করে নিলেই আপনার ইনকাম শুরু হয়ে যাবে।
৪। ভিডিও দেখে অনলাইন ইনকাম
অনলাইনে ইনকামের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ভিডিও দেখে অনলাইন ইনকাম করা। আপনারা হয়তো অনেকে জানেন না যে বিষয়টি আসলে কি। ভিডিও দেখেও কি অনলাইনে ইনকাম করা সম্ভব? হ্যাঁ সম্ভব যেটা হয়তো আপনি জানেন না। বর্তমানে এমন কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনাকে প্রতিদিন ভিডিও দেখার জন্য পেমেন্ট করা হবে।
তবে মনে রাখবেন বর্তমানে অনলাইনে ভিডিও দেখে ইনকামের উদ্দেশ্যে আপনাকে ভিডিও দেখিয়ে অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা পেমেন্ট করে না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে সাধারনত এই ধরনের ওয়েবসাইটগুলো বিভিন্ন ধরনের চটকদারী বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আপনাকে চেষ্টা করবে। তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনাকে ভিডিও দেখিয়ে আয় করার ফাঁদে ফেলার। একটা ভীষণ মনে রাখবেন যে ভিডিও দেখিয়ে খুব বেশি একটা পেমেন্ট দেয় না কোন ওয়েবসাইট।
যখনই দেখবেন কোনো ওয়েবসাইট অনেক বেশি পেমেন্ট করার কথা বলছে তখন আপনাকে বুঝতে হবে এটা ফেক।
৫। ওয়েবসাইট (Website) বানিয়ে আয়
আপনি হয়তো জেনে থাকবেন একটি ভালো ওয়েবসাইটের দাম লাখ লাখ টাকা। আপনিও চাইলে এরকম একটা ওয়েবসাইট বানাতে পারেন। সেই ওয়েবসাইটটাকে দাঁড় করিয়ে একটা ভালো মানের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করতে পারবেন। ওয়েবসাইট বানানো পানির মত সহজ। কিন্তু যে সাইট গুলো খুব সহজে বানানো যায়, সেগুলোর তেমন কোনো চাহিদা থাকে না। তবে আপনার সাইটে যদি প্রচুর পরিমান ট্রাফিক থাকে, সেক্ষেত্রে একটা মোটা অংকের অর্থ পাবেন।
যে সাইট গুলো বেশি দামে বিক্রি হয়, সেগুলো দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার দ্বারা তৈরি করা হয়। তাই আপনি যদি একজন ভালো ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ডিজাইনিং করে ওয়েবসাইট বানিয়ে ওয়েবসাইট দাঁড় করিয়ে একটা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করার অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
৬। ড্রপশিপিং(Dropshipping) এর মাধ্যমে আয়
অনলাইন ইনকামের একটি অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ড্রপশিপিং (Dropshipping)। ড্রাপশিপিং হল অনলাইন জগতে ব্যবসার একটি মাধ্যম যেখানে খুব সহজে ইনকাম শুরু করা সম্ভব। কিন্তু ড্রাপশিপিং কি চলুন উদাহরণ সহ বুঝিয়ে দেয়।
মনে করুন, আপনার এলাকায় পরিচিত একজন ব্যক্তি, কোনো একটা পন্য তৈরি করে সেটা বাজারে ৪০০ টাকায় বিক্রি করে। আপনি বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে দেখলেন যে, সেই পন্যটিই শহরে বড় বড় মার্কেটে অথবা কোনো ই-কমার্স সাইটে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এরকম দেখবেন একজন সবজি ব্যবসায়ী সবজি কৃষকদের থেকে ৫ টাকা কেজি মূলে কিনে বড় বাজারে সবজিগুলো ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। সেক্ষেত্রে আপনি সেই ব্যবসাটি করার জন্য নিজেই একটা বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পারেন। যেখানে আপনি সেই পণ্যটা তাদের কাছে ৫০০ টাকায় কিনে ১০০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
এতে করে আপনি পণ্যটি থেকে ৫০০ টাকা লাভ করতে পারছেন অথবা যদি পণ্যটি ১৫০০ টাকায় বিক্রি করেন তাহলে ১০০০ টাকা লাভ করতে পারছেন।এটিই মুলত ড্রপশিপিং (Dropshipping)। আপনার এলাকায় যদি এরকম কোনো সুযোগ থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার এই সুযোগটি কাজে লাগানো উচিত।
৭। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) করে আয়
অনলাইন থেকে ইনকাম করার একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইড হল এফিলিয়েট মার্কেটিং। বর্তমান বিশ মার্কেটিং খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।বাংলাদেশেও আস্তে আস্তে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর সংখ্যা বাড়ছে। অনলাইন থেকে ইনকামের এটি একটি সহজ মাধ্যম। কিন্তু এ বিষয়ে অনেকের স্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণে এই সেক্টরে কাজ করার আগ্রহ জাগছে না। আসুন বিষয়টা খুব সহজে বুঝে নেই।
বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার ই-কমার্স (E-Commerce) সাইট রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনেক আবার সারা বিশ্বে পন্য ডেলিভারি দিয়ে থাকে। এইসব ই-কমার্স (E-Commerce) সাইটে প্রত্যেকটাতে এক একটা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) নামে সেকশন রয়েছে। আপনি সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে খুব সহজেই তাদের মেম্বার হয়ে যেতে পারেন। তারপর আপনার একটা গ্রুপ তৈরি করতে হবে।
এখন ওই নির্দিষ্ট ই-কমার্স (E-Commerce) সাইট থেকে আপনি বিভিন্ন পন্যের বিস্তারিত বিবরণ সহ বিভিন্ন গ্রুপে পাঠাতে পারেন। যদি কেউ আগ্রহী হয়ে থাকে তাহলে সেই লিংকে ক্লিক করে এবং সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ একটা কমিশন আপনি পাবেন।
সে ক্ষেত্রে আপনার কমিশনের জন্য কিন্তু পণ্যের দাম বাড়বে না আপনি যে পণ্যটি কিনলেন সেটি সেটাই দাম থাকবে কিন্তু সে কমিশন পাবে তার মাধ্যমে বিক্রি হলো তাই। তবে এ ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং সর্ম্পকেও সুস্পষ্ট ধারনা থাকতে হবে।
৮। অনলাইনে পড়িয়ে (Online Teacher) আয়
আমাদের বাড়ির আশেপাশে অনেককে দেখবেন তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোচিং পড়াচ্ছেন। অথবা বাজারে কোন কোচিং সেন্টার খুলে সেখানে স্টুডেন্টদের পড়াচ্ছেন। এভাবে পড়িয়ে মাসে 50 হাজার টাকা ইনকাম করে থাকেন অনেকে। কিন্তু বাসায় গিয়ে পড়ানোর জন্য অনেক টাকা ব্যয় হয়।
সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে ঘরে বসেই ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস করাতে পারবেন। বর্তমানে অনলাইনে যুগের অনেকেই বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস করিয়ে অনেক অর্থ উপার্জন করছে। আপনি চাইলে অনলাইনে এই সেক্টর থেকেও এভাবে ইনকাম করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার জনপ্রিয় ১৩টি প্ল্যাটফর্ম
শেষের কথা: অনলাইন ইনকাম কি? অনলাইনে ইনকাম করার সহজ ৮টি উপায়
সম্মানিত পাঠক আশা করি অনলাইনে ইনকামের বিভিন্ন সাইট সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আশাকরি পোস্টটি পড়ে সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছেন এবং ভালো লেগেছে। তো আপনার যদি কোন সেক্টরে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনিও শুরু করুন আপনার অনলাইন ক্যারিয়ার। পোস্টটি অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url