পা ফাটা কিভাবে দূর করা যায়? পা ফাটা দূর করার উপায়
পা ফাটা কিভাবে দূর করা যায়? পা ফাটা দূর করার উপায়
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আমরা আজকে আর্টিকেলে পা ফাটা কিভাবে দূর করা যায় এবং পা ফাটা রোধ করার উপায় নিয়ে হাজির হয়েছে। আমরা এই আর্টিকেলে পা ফাটার কারণ বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি এই আর্টিকেল পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারবেন। সুতরাং অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
পোস্ট সূচীপত্র:পা ফাটা কিভাবে দূর করা যায়? পা ফাটা দূর করার উপায়
- ভূমিকা
- পা ফাটার কারণ
- পা ফাটা প্রতিরোধের উপায়
- পা ফাটা প্রতিরোধে কিছু ঘরোয়া উপায়
- পা ফাটা রোগ
- পা ফাটার ঔষধ
- মন্তব্য
ভূমিকা: পা ফাটা কিভাবে দূর করা যায়? পা ফাটা দূর করার উপায়
পা ফাটার সমস্যাটার সাধারণত শীতকালে বেশি হয়ে থাকে। শীত এলে অনেকের পা ফেটে যায়। পা ফাটার কারণে যে শুধু সৌন্দর্য নষ্ট হয় তা কিন্তু নয়। পা ফাটার কারণে অনেক ক্ষেত্রে অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে বা অনেক ধরনের রোগের লক্ষণ হিসেবে পা ফাটাকে ধরা হয়। এছাড়াও পা ফেটে যাওয়ার কারণে পায়ে ব্যথা হয় এবং চলাফেরা করতেও অসুবিধা হয়। পা ফাটা প্রতিকারের জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এগুলো স্থায়ী সমাধান নয়। তাই চলুন জেনে নেই পা ফাটা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান কি বলে।
পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ
পা ফাটার সমস্যাটা নতুন কিছু নয়। আপনি আমি সবাই পা ফাটার সমস্যার সম্মুখীন কোন না কোন সময় হয়ে থাকি বা হয়েছেন। ছেলে হোক বা মেয়ে হোক সবারই এ সমস্যাটা হয়ে থাকে। পা ফাটা দেখতে অনেক খারাপ লাগে। পা ফাটার সমস্যার কারণে মাঝে মাঝে জুতা পায়ে দিয়ে বাইরে বের হতে হয়। লোক লজ্জা এড়ানোর জন্য জুতা পরিধান করতে হয়। তাই আসুন এই পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণগুলো আসলে কি কি সেগুলো আগে জেনে আসি।
আরো পড়ুনঃ নাকের পলিপাস দূর করার উপায়-নাকের পলিপাসের ওষুধ
ডিহাইড্রেশন
পা ফাটার একটি অন্যতম কারণ হলো ডিহাইড্রেশন। শরীরে যখন পানিশূন্যতা হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই পা ফেটে যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত শুষ্ক পরিবেশে থাকার ফলেও পায়ের গোড়ালি ফেটে যেতে পারে।
শরীরে নিউট্রিশনের অভাব
শরীরে নিউট্রিশনের অভাব পা ফাটার একটু অন্যরকম কারণ। আমাদের ত্বকের পুষ্টির জন্য ভিটামিন বি ও সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই যখন শরীরে এই দুই ভিটামিন কমে যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই তা প্রকাশ পায় পায়ের চামড়া ফেটে যাওয়ার মাধ্যমে।
বাহ্যিক পরিবেশ
বাহ্যিক পরিবেশ পা ফাটার একটি অন্যতম কারণ দীর্ঘসময় ধুলোবালির মধ্যে কাজ করা, ক্ষেত খামারে কাজ করা এগুলোর কারণেও পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়৷
ব্যক্তিগত অভ্যাস
পা ফাটার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ব্যক্তিগত অভ্যাস। ব্যক্তিগত অভ্যাস যেমন দীর্ঘ সময় খালি পায়ে হাটা এটা একটি মানুষের অভ্যাস গত সমস্যা। খালি পায়ে দীর্ঘক্ষণ হাঁটার কারণে পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়। খালি পায়ে কাজ করলে তোকে ঘর্ষণের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায় যার ফলে পায়ের চামড়া ফেটে যায়। দীর্ঘক্ষণ জুতা না করা অথবা শক্ত জুতা পরাও পা ফেটে যাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে।
পা ফাটার জন্য দায়ী কিছু রোগ
পা ফাটার ক্ষেত্রে উপরোক্ত কারণগুলো দায়ী হওয়ার শর্তেও পা ফাটার জন্য কিছু রোগ রয়েছে। যে রোগ গুলোর জন্য পা ফেটে যায়। এ রোগ গুলা আমাদের খুব পরিচিত না আমরা সেভাবে এগুলোর ব্যাপারে কথাও বলি না। কিন্তু আমাদের যারা উচিত এই রোগ গুলো থেকে পা ফাটার সূচনা হয় বা পা ফাটা থেকে বিভিন্ন রোগের সূচনা হয়।
পামোপ্ল্যান্টার কেরাটোডার্মা
পামোপ্ল্যান্টার কেরাটোডার্মা রোগটি জিনবাহিত। পামোপ্ল্যান্টার কেরাটোডার্মা এই রোগের ক্ষেত্রে রোগীর পায়ের চামড়া পুরু ও শক্ত হয়ে যায়। পুরু ও শক্ত চামড়া খুব সহজেই ফেটে যায়। তাই পায়ের ফাটা জায়গা দিয়ে রক্ত বের হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে মূল সমস্যা হলো এই ফাটা জায়গা দিয়ে বিভিন্ন জীবাণু শরীরের মধ্যে ঢোকে। আর তা থেকেই শুরু হয় নানান ধরনের ইনফেকশন বা প্রদাহ।
সোরিয়াসিস
সোরিয়াসিস একটি অটো ইমিউন রোগ। এই রোগের ক্ষেত্রে ত্বকের উপরিভাগে চাকা চাকা হয়ে যায়। প্রচন্ড চুলকানি হয় ও চামড়া ওঠে। হাতের বা পায়ের তালুর চামড়া উঠে যায় এবং ভেতরের লালচে মাংসপেশি দেখা যায়।
পিটিরিয়াসিস রুব্রা পিলারিস
পা ফাটার কারণে পিটিরিয়াসিস রুব্রা পিলারিস এই রোগটি হয়ে থাকে। এটির ফলে জিনঘটিত, সোরিয়াসিসের মতো চামড়া উঠে যায় এবং চুলকানি হয়।
পা ফাটা প্রতিরোধের উপায়
আমরা এই পার্বে আলোচনা করব পা ফাটা প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে। আমরা এতক্ষণ জানলাম পা ফাটার কারণ এবং পা ফাটার কারণে কোন কোন রোগ হতে পারে সে সম্পর্কে। নিচে আলোচনা করব পা ফাটা প্রতিরোধের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে। চলুন জেনে নেই কি কি সেগুলো।
১. পা ফাটা প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই খালি পায়ে চলাফেরা করা থেকে বিরত থাকুন।
২. পা ফাটা প্রতিরোধার জন্য অবশ্যই নরম ও আরামদায়ক জুতা পরিধান করতে হবে।
৩. অবশ্যই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে, পা ফাটা প্রতিরোধ করতে হলে। যারা এসি রুমে বেশিরভাগ সময় থাকেন তাদের জন্য এই ধাপ আরও সতর্কতার সাথে পালন করতে হবে।
৪. পা ফাটা প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে গোসলের পরে বা পা ধোয়ার পরে ত্বকে ময়েশ্চারাইজ ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে হবে। আপনি চাইলে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলও মালিশ করতে পারেন। এতে করে রক্ত সঞ্চালনও ভালো হবে।
৬. পা ফাটা প্রতিরোধের আরেকটি অন্যতম উপায় হচ্ছে রাতে ঘুমানোর আগে পায়ে ভ্যাসলিন লাগিয়ে মোজা পরে ঘুমানো।
৭. পা ফাটা প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে শীতের শুরু থেকেই পায়ে মোজা ব্যবহার করার অভ্যাস করতে হবে। এর ফলে সুস্থ আবহাওয়া ও ধুলোবালি থেকে ত্বক রক্ষা পাবে।
আরো পড়ুনঃ বাত ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা-বাত কোথায় কোথায় হয়
পা ফাটা প্রতিরোধে কিছু ঘরোয়া উপায়
এবার আমরা জেনে নেই পা ফাটার রোধে কিছু ঘরোয়া উপায়। যে ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহারের মাধ্যমে পা ফাটা রোধ করা সম্ভব। এই উপায়গুলো ব্যবহার করলে পা থাকবে সুন্দর, মসৃণ এবং সাথে পা ফাটাকে রাখবে আপনার থেকে বেশ দূরে।
১. এক বালতি কুসুম গরম পানি নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন পানির তাপমাত্রা যেন আপনার সহনীয় হয় বা সহনীয় মাত্রায় থাকে। তারপর কুসুম গরম পানিতে কয়েক চিমটি লবণ মিশিয়ে আপনার পা ডুবিয়ে রাখুন। আধাঘন্টা পা ডুবিয়ে রাখার পরে পা উঠিয়ে নিন। এটা করে পায়ের চামড়া নরম হবে এবং সেই সাথে হাইড্রেটেড থাকবে।
২. একটি বাটিতে গ্লিসারিন ও গোলাপ জল সমপরিমাণে নিন। দুইটি উপাদানকে ভালোভাবে মিশিয়ে পায়ে লাগিয়ে সারারাত রাখুন। তারপর সকালে উঠে পা ধুয়ে ফেলুন। এতে করে গ্লিসারিন ত্বকে মুসলিম করবে। তাছাড়াও গোলাপ জলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের পুষ্টি যোগায় বা ত্বকের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে।
মন্তব্য:পা ফাটা কিভাবে দূর করা যায়? পা ফাটা দূর করার উপায়
আপনি একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই এবং আগে থেকে সচেতন থাকলে পায়ের গোড়ালি ফাটা রোধ করা সম্ভব। তাছাড়াও বিভিন্ন রকমের রোগ থেকে নিজের ত্বককে রক্ষা করা সম্ভব। তাই নিজের ত্বককে স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে অবশ্যই প্রতিদিন নিয়মিত প্রচুর পানি পান করুন। সাথে সাথে আপনার ত্বককে দিন সেই ভালোবাসা যে ভালোবাসা আপনার ত্বক আপনার থেকে আশা করে বা ডিজার্ভ করে।
শেষের কথা
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আমরা এই আর্টিকেল আলোচনা করলাম পা ফাটা রোধের বিস্তারিত আলোচনা। আশা করি পোস্টটি সম্পন্ন করে থাকলে বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি। সম্মানিত পাঠক পোস্টটি অবশ্যই জনস্বার্থে শেয়ার করবেন। নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন এবং বিউটি টিপস গুলো পড়ুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url