প্রেসার লো হলে কি করবেন? প্রেসার লো হলে ১৫টি কাজ বাধ্যতামূলক।
প্রেসার লো হলে কি করবেন? প্রেসার লো হলে ১৫টি কাজ বাধ্যতামূলক।
সম্মানিত পাঠক আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশন আইডির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আমরা এই আর্টিকেল আলোচনা করব প্রেসার লো হলে কি করবেন সে সম্পর্কে। প্রেসার লো হলে কিছু করণীয় কাজ রয়েছে। যে কাজগুলো অবশ্য করণীয়। কি সেই কাজগুলো?? এ আর্টিকেলে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
পোস্ট সূচীপত্র: প্রেসার লো হলে কি করবেন? প্রেসার লো হলে ১৫টি কাজ বাধ্যতামূলক।
- ভূমিকা
- লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণ
- লো প্রেসারের বা নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণসমূহ
- লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ হলে করণীয় বা প্রতিকার
- প্রেসার স্বাভাবিক রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
ভূমিকা: প্রেসার লো হলে কি করবেন? প্রেসার লো হলে ১৫টি কাজ বাধ্যতামূলক।
বর্তমান সময়ে অনেক প্রচলিত একটি রোগ হল উচ্চ রক্তচাপ। এই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে আমরা অনেকেই সচেতন কিন্তু নিম্ন রক্তচাপ হলে কি করব আমরা?? নিম্ন রক্তচাপ সম্পর্কে আমরা সচেতন নই। নিম্ন রক্তচাপের ক্ষেত্রে আমরা তেমন কোন গুরুত্ব দেয় না। গরমে অনেকেরই প্রেসার হাই বা প্রেসার লো হয়ে যায়। বা উচ্চ রক্তচাপ বা নিম্ন রক্তচাপ দেখা দেয়। ঘামের মাধ্যমে শরীরে পানি শূন্যতা তৈরি হয় এবং সেই থেকে মানবদেহে রক্তচাপের একটা স্বাভাবিক মাত্রা দেখা দেয়।
সাধারণত একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ ১২০/৮০ হওয়া উচিত। এর উপরে বা নিচে গেলেই উচ্চ রক্তচাপ বা নিম্ন রক্তচাপে পরিণত হয়। উচ্চ রক্তচাপ বা নিম্ন রক্তচাপ দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ এর আশেপাশে থাকে তাহলে একে প্রেসার লো বলা হয় বা নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়। অনেকেই প্রেসার নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন যে আমার প্রেসার লো হলো কি হাই হলো এই নিয়ে। তবে লো প্রেসার যদি দীর্ঘ মেয়াদী হয় তবে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। চলো নিজেই আমরা জেনে নেই লো প্রেসারের কারণ লক্ষণ এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে। পোস্টটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
আরো পড়ুনঃ পেট ব্যথার কারণ, পেট ব্যথা হলে করণীয়। কেন পেটে ব্যথা হয় ?
লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণ
নির্দিষ্ট কোন একটি কারণে প্রেসার লো হয় না। প্রেসার লোয়ের নানা রকম কারণ হতে পারে। নিম্নে আমরা জেনে নিব প্রেসার লয়ের বা নিম্ন রক্তচাপের কারণ কি কি?
১. শরীরে পানিশূণ্যতা
লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপের একটি অন্যতম কারণ হলো শরীরের পানি শূন্যতা। গরমে শরীর ঘেমে যে পানি ঝরে সেখান থেকে পানি শূন্যতা তৈরি হয়। এবং শরীরের পানি সুন্দর যার কারণে প্রেসার লো হয়ে যায়।
২. সঠিক খাবার না খাওয়া
সঠিক খাবার না খাওয়ার কারণে নিম্ন রক্তচাপ হয়। লো প্রেসারের একটি অন্যতম কারণ সঠিক খাবার না খাওয়া। সময় মত আর সঠিকভাবে খাবার না খেলে নিম্ন রক্তচাপ হয়ে থাকে।
৩.অতিরিক্ত পরিশ্রম
অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে নিম্ন রক্তচাপ হয়ে থাকে। শরীরের পরিশ্রম অসহনীয় হয়ে পড়লে লো প্রেসার হতে পারে।
৪. দুশ্চিন্তা
লো প্রেসারের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো দুশ্চিন্তা। দুশ্চিন্তার কারণে প্রেসার লো হতে পারে আবার প্রেসার হাইও হতে পারে।
৫.রক্তশূণ্যতা
শরীরের রক্ত কমে গেলে বা রক্তশূন্যতা দেখা দিলে প্রেসার লো হয়।
৬.অপর্যাপ্ত ঘুম
প্রেসার লো এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো অপর্যাপ্ত ঘুম। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে প্রেসার লো হয়। সুস্থ থাকতে হলে একজন মানুষকে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হয়।
৭. অপুষ্টি
শরীরের অপুষ্টি জনিত কারণে স্পেশাল হয়।
৮.ডায়রিয়া
ডায়রিয়ার সময় অধিক বমি হলে প্রেসার লো হয়।
০৯.বদহজম
বদহজম হলে প্রেসার লো হতে পারে।
১০. গর্ভাবস্থা
প্রেসার লো হয়ে থাকে গর্ভাবস্থায় থাকলে। গর্ভবতী মায়েদের প্রথম ৬ মাস হর মনের প্রভাবে প্রেসার লো হয়। পরবর্তী সময়ে এটা ঠিক হয়ে যায়।
১১. রক্তপাত
১২.অন্যান্য
এছাড়াও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির সমস্যা শরীরের তাপমাত্রার তারতম্য হার্টের সমস্যা নার্ভের সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত থাকা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ইত্যাদির কারণে প্রেসার লো হয়ে থাকে। এছাড়াও বেশ কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে ও প্রেসার লো হতে পারে।
লো প্রেসারের বা নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণসমূহ
প্রেসার লো হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। প্রেসার লো বা নিম্ন রক্তচাপের অবস্থা বুঝা যায় বেশ কিছু লক্ষণ দেখলে। যে লক্ষণ গুলো সব চিহ্নিত করতে অনেক সহজ হয় চলুন জেনে নেই কি কি সেই লক্ষণগুলো।
*মাথা ঘোরানো অনুভূত হওয়া।
কোন জায়গায় বসে হঠাৎ করে দাঁড়ালে মাথা ঘুরে ওঠে বা মাথা চক্কর দেয় আর সময় হীন হয়ে যাওয়া।
মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
*চোখে অন্ধকার বা ঝাপসা দেখলে বুঝতে হবে প্রেসার লো হয়ে যায়।
*বমিভাব হওয়া।
*শারীরিক বা মানসিক অবসাদ।
*খুব বেশী তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া।
*ঘনঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া।
* হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
* প্রস্রাব কমে যাওয়া।
* অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদ কম্পন হওয়া।
লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ হলে করণীয় বা প্রতিকার
প্রেসার লো হলে বা নিম্ন রক্তচাপ হলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। নিচের দেওয়া নিয়ম গুলো অনুসরণ করলে দ্রুত এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। নিম্নে আমরা জেনে নেব লো প্রেসারের করণীয় বা লো প্রেসার হলে কি করতে পারি।
*প্রেসার হলে খাবার স্যালাইন খাওয়া
লো প্রেসার বা প্রেসার কম হলে প্রথমে আপনাকে খাবার স্যালাইন খেতে হবে। খাবার স্যালাইন শরীরের পানি শূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার রক্ষা করে যা প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। সুতরাং খাবার স্যালাইন হচ্ছে সবচেয়ে উপকারী ও তাৎক্ষণিক ফলদায়ক লো প্রেসার এর ক্ষেত্রে।
*লো প্রেসার হলে গ্লুকোজ খেতে হবে
লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ হলে গ্লুকোজ খেতে হবে। নিম্ন রক্তচাপের ক্ষেত্রে গ্লুকোজের উপকার পাওয়া যায়।
* লবণ জাতীয় খাবার খাওয়া
লো প্রেসার হলে বা নিম্ন রক্তচাপ হলে লবণ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। লবণ জাতীয় খাবারের সোডিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধি করতে ৬ হতে পারে। তাই উপরোক্ত লক্ষণ গুলো দেখা দিলে লবণযুক্ত খাবার খেয়ে রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়াও লবণ পানি পান করতে পারেন। আধা কেজি পানিতে দুই চা চামচ লবণ মিশিয়ে প্রতিদিন দুই গ্লাস করে পান করলে প্রেসার অনেকটাই স্বাভাবিক থাকে।
*প্রেসার হলে দুধ ও ডিম খেতে হবে
লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ হলে, লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দুধ ও ডিম সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে হাঁসের ডিম অধিক কার্যকরী।
*কফি খেতে পারেন প্রেসার লো হলে
কফি প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন সকালে নাস্তার সাথে এক কাপ কফি খেতে পারেন তাহলে প্রেসার নরমাল থাকবে। চকলেট ও ক্যাফিন জাতীয় খাবার খাবার তালিকায় রাখতে পারেন।
*লো প্রেসারের জন্য কিশমিশ খেতে হবে
লো প্রেসার হলে কিসমিস খেতে হবে। প্রেসার লয়ের ক্ষেত্রে কিসমিস প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। তবে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম রয়েছে। এক কাপ পানিতে ৩০ থেকে ৪০ টা কিসমিস সারারাত ভিজিয়ে রেখে পর দিন খালি পেটে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত খেলে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
*মধু ও বাদাম খেতে হবে
প্রেসার বাড়াতে মধু ও বাদাম খুবই কার্যকর। মধু দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায় এবং কাঠবাদাম ও চিনা বাদামও আপনারা খেতে পারেন।
প্রেসার লো হলে ১৫টি কাজ বাধ্যতামূলক।
*নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে
প্রেসার স্বাভাবিক রাখার জন্য ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসার স্বাভাবিক রাখতে হলে আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম হার্টের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। শরীরের লো প্রেসারের লক্ষণ দেখা দিলেই পরিশ্রম করতে হবে।
*তাজা শাক-সবজি খেতে হবে
নিম্ন রক্তচাপ দূর করতে অবশ্যই আপনাকে সাক-সবজি খেতে হবে। শাকসবজি নিম্ন রক্তচাপ দূর করতে অধিক কার্যকরী। কারণ ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতির জন্য আপনার শরীরে নিম্নচাপ ও রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। তাই ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করতে হলে অবশ্যই শাকসবজি নিয়মিত খেতে হবে। তাছাড়া শাকসবজিতে থাকে ফলিক অ্যাসিড যা প্রেসার স্বাভাবিক রাতে সহযোগিতা করে।
আরো পড়ুনঃ কেন ঘনঘন জ্বর হয়-ঘনঘন জ্বরের ১৫টি কারণ জেনে নিন
প্রেসার স্বাভাবিক রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
প্রেসার স্বাভাবিক রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিসে শেয়ার করছি। যেসব ওষুধ খেলে রক্তচাপ কমে সে সকল ওষুধ খাওয়াতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এই সময় আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। তাছাড়া কোথাও অনেকক্ষণ ধরে বসে থাকলে অবশ্যই ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াতে হবে। হঠাৎ করে একবারে উঠে দাঁড়ানো ঠিক হবে না।
সে ক্ষেত্রে আপনার মাথার চক্কর দিতে পারে। মাথা ঘুরে উঠতে পারে। ফলে আপনি পড়ে যেতে পারেন। নিম্ন রক্তচাপের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। সুনির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা দিলে ঘরে রয়েছে এর প্রতিকার। কোন উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসা প্রয়োজন পড়ে, যাদের দীর্ঘমেয়াদি এ সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
শেষের কথা
সমান্ত পাঠক বন্ধু আমরা এই আর্টিকেল আলোচনা করলাম প্রেসার লো হলে করণীয় সম্পর্কে। আশাকরি পোস্টটি সম্পন্ন পড়েছেন এবং সম্পূর্ণ পড়ে পোস্টটি বুঝতে পেরেছেন। আপনার যদি এই প্রবলেম হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই উপরে নির্দেশনা কোন মেনে চলবেন। বন্ধুদের যদি হয়ে থাকে তবে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। সম্মানিত পাঠক আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে চিকিৎসা বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url