অনিয়মিত মাসিকের ১৭টি কারণ-অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা
অনিয়মিত মাসিকের ১৭টি কারণ-অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা
সম্মানিত পাঠক আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজকে আমরা এই আর্টিকেলে আপনার সাথে আলোচনা করব অনিয়মিত পেরিয়ডের(মাসিকের) কারণ সম্পর্কে। অনিয়মিত মাসিক কি? অনিয়মিত মাসিকের কারণ এবং অনিয়মিত মাসিকের প্রতিকার বা প্রতিরোধ সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। এছাড়াও এর ওষুধ সম্পর্কেও আলোচনা করব। আশা করি পোস্টটি আপনার জন্য খুব হেল্পফুল হবে। সুতরাং চলুন শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচীপত্র:অনিয়মিত মাসিকের ১৭টি কারণ-অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা
- সূচনা
- পিরিয়ড কি
- অনিয়মিত পিরিয়ডের প্রভাব
- কেন অনিয়মিত মাসিক(পিরিয়ড)হয়
- অনিয়মিত মাসিক(পিরিয়ড)হলে করণীয়
- অনিয়মিত মাসিকের(পিরিয়ড)জন্য সুষম খাবার
সূচনা:অনিয়মিত মাসিকের ১৭টি কারণ-অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা
মেয়েদের নিয়মিত মাসিক হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু মাসিক যদি অনিয়মিত হয় তাহলে দুশ্চিন্তার বিষয়। অনিয়মিত মাসিকের ফলে নারীদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি থাকে। অনিয়মিত পিরিয়ড(মাসিক) একেবারেই পিরিয়ড বন্ধ হওয়া পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের (POS) জন্য হয়ে থাকে। এছাড়াও আরও অনেক কারণ রয়েছে, যার জন্য পিরিয়ড নিয়মিত হয় না, অনিয়মিত হয়ে থাকে। তবে এই সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা জানুন-কমলায় কোন ভিটামিন থাকে
পিরিয়ড কী।
সম্মানিত পাঠক আমরা এই পর্বে জানবো অনিয়মিত পিরিয়ড কি? মেয়েদের প্রতি চন্দ্রমাস পর পর হরমোনের প্রভাবে মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনি পথে বের হয়ে আসে তাকেই পিরিয়ড বা ঋতুচক্র বলে।
অনিয়মিত পিরিয়ডের প্রভাব
নিয়মিত অনিয়মিত মাসিকের প্রভাব রয়েছে। তবে অনিয়মিত মাসিকের প্রভাব এর জন্য স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে যায়। স্বাভাবিক মাসিক চলাকালীন সময় মেয়েদের পেটব্যথা, পিঠব্যথা, বমি বমি ভাব হতে পারে। আর যাদের ঋতুচক্র প্রতি মাসে হয় না বা অনিয়মিত হয়ে থাকে যেমন, দুই মাস আবার কখনও চার মাস পর পর হয়, তখন তাকে অনিয়মিত পিরিয়ড বলে। অনিয়মিত পিরিয়ডের ফলে নারীদের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। আরো যেমন,
- বেশি সময় ধরে রক্ত যাওয়া
- বন্ধ্যত্ব
- মানসিক অশান্তি
- বেশি পরিমাণ বা চাকা চাকা রক্তপাত
- এক মাসে বেশি, আরেক মাসে কম রক্ত যাওয়া
- দাম্পত্যজীবনে অশান্তি
- অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভ
কেন অনিয়মিত মাসিক(পিরিয়ড)হয়?
মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে। চলুন সেই কারণগুলো এবার জেনে নেই।অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক একেবারেই পিরিয়ড বন্ধ হওয়া পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের জন্য হয়ে থাকে। তবে অনিয়মিত মাসিকের আরও অনেক কারণ আছে, যার জন্য মাসিক (পিরিয়ড) নিয়মিত হয় না। যেমন:-
১.ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহণ যেমন, অতিরিক্ত ২.কফি পান করা,
৩.অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা ও কাজের চাপ
৪.স্ট্রেস নেওয়া,
৫.অপরিচ্ছন্ন থাকা,
৬.অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা,
৭.মদ্যপান বা ধূমপান করা
৮.পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম
৯.অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া
১০.যৌনবাহিত রোগ থাকা
১১. থাইরয়েড ও হরমোনের তারতম্য
১২.শরীরের ওজন অতিরিক্ত কম বা বেশি হওয়া
১৩.অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতায় ভুগা
১৪.জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি (বড়ি, ইনজেকশন, ইমপ্লান্ট ইত্যাদি ব্যবহার করা)
১৫.অতিরিক্ত শরীরচর্চা করা
১৬.রোগ নিরাময়ে হরমোনজাতীয় ওষুধ সেবন
১৭.দুগ্ধদানকারী মা
সাধারণত মধ্যবয়সী নারীদের মধ্যে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। এর পেছনের মূল কারণটি হলো হরমোন। আবার কোন মহিলা যদি লম্বা সময় স্ট্রেসে থাকে তাহলে অনেকেরই মাসিক দেরিতে হতে পারে।
এ ছাড়া একজন নারী যখন অন্তঃসত্ত হয়ে পড়ে কিন্তু তা সে জানে না। তারপর থেকে তার মিসক্যারিজ বা গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনায় সাধারণ পিরিয়ডের তুলনায় আরো বেশি কিছুদিন বেশি রক্তপাত হতে পারে যার কারণ হিসেবে দেরিতে মাসিক হওয়াকেই দায়ী করে থাকেন চিকিৎসাকেরা।
ওজন কম হওয়ার কারণে সময় মতো মাসিক বা পিরিয়ড নাও হতে পারে। তাছাড়াও মাঝে মাঝে কিছুদিন বন্ধ থাকতে পারে। জরায়ুতে টিউমারের মতো এক ধরনের বৃদ্ধি হলো ফাইব্রয়েডস। এগুলো পিরিয়ডের স্বাভাবিক চক্রকে বাধা প্রদান করে।
নিয়মিত মাসিক না হওয়ার কারণ হিসেবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি দায়ী। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। যেমন- পিল, প্যাঁচ, ইনজেকশন । এগুলো ব্যবহার করলে পিরিয়ড দেরিতে হয় বা পরিবর্তন হওয়াটাই স্বাভাবিক।
ঠাণ্ডা, সর্দি, গলার ইনফেকশন মনোনিউক্লিওসিস- এ ধরনের সমস্যার কারণে পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে। ছাড়াও যদি কোন বড় স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন, থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের থাকে তাহলে এই কারণেও পিরিয়ড দেরিতে হতে দেখা যায়।
অনিয়মিত মাসিক(পিরিয়ড)হলে কি করনীয়
নিয়মিত মাসিক হলে শরীর হরমোনের ব্যালেন্স ঠিক থাকে। কিন্তু অনিয়মিত মাসিকের কারণে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তাই এ বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ গরমে শরীর সুস্থ রাখার উপায় জেনে নিন
অনিয়মিত মাসিকের (পিরিয়ড) জন্য সুষম খাদ্য
মাসিক (পিরিয়ড) শুরু হওয়ার ১০ দিন আগে থেকেই শাকসবজি, সালাদ, টক দই, ফল খেতে হবে। পিরিয়ড এক বা দুই সপ্তাহ আগে শুরু হলে গাজর, কলা, আপেল, পেয়ারা, শসা খেতে পারেন। কিন্তু অবশ্যই অল্প অল্প করে খেতে হবে। যাদের পিরিয়ড(মাসিক) চলছে তারা দুধ খেতে পারেন। তবে অবশ্যই চা, কফি, তরল পানীয়, তেলজাতীয় খাবার ও ডিমের কুসুম পিরিয়ড চলাকালীন সময় পরিহার করতে হবে। অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দূর করতে হলে অবশ্যই খাবার পরিবর্তনের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শেষের কথা:অনিয়মিত মাসিকের ১৭টি কারণ-অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা
সম্মানিত পাঠক পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ে থাকলে আশা করি বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি। আর্টিকেলটি আশা করি আপনার খুব উপকারে এসেছে বা আসবে। সম্মানিত পাঠক অবশ্যই পোস্টটি জনস্বার্থে শেয়ার করবেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url