বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার ১৫টি জাদুকরী উপায়
বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার ১৫টি জাদুকরী উপায়
সম্মানিত পাঠক আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা। আপনি যদি একজন বিসিএস প্রার্থী হতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কেননা এই আর্টিকেলে আমি আলোচনা করব বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার 15 টি জাদুকরী উপায় নিয়ে। আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এমন কতগুলো টিপস শেয়ার করব যেগুলো মেনে চললে আপনার স্বপ্নের বিসিএস নির্ধারিত। তো চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
ভূমিকা: বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার ১৫টি জাদুকরী উপায়
বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বিসিএস ক্যাডার হওয়া। আর বিশেষ ক্যাডার হতে হলে বিসিএসে প্রিলিমিনারিতে প্রথমে আপনাকে পাস করতে হবে। বিসিএস পরীক্ষা বা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের স্বপ্নের অন্যতম চাকরি হচ্ছে বিসিএস ক্যাডার। তাই লেখাপড়া শেষ করার পর লক্ষ লক্ষ তরুণ বছর পর বছর বিসিএস প্রস্তুতি নিতে থাকে। কিন্তু বেশিরভাগই স্টুডেন্টটি বিসিএস এর প্রিলিতে পাস করতে পারে না।
কিন্তু বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাতে পাশ করা খুব একটা কঠিন ব্যাপার না। বিসিএস প্রিলিমিনারিতে পাস করার জন্য আপনাকে জানতে হবে কিভাবে পরিকল্পিতভাবে বিসিএস এর প্রস্তুতি করা যায় সে সম্পর্কে। সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর টেকনিক অনশন করলেই বিসিএস প্রিলিতে পাস করা সম্ভব। নিম্নে 15 টি জাদুকরি টেকনিক বা টিপস আলোচনা করব বিসিএস আপনাকে হার মানবেই ইনশাআল্লাহ।
১। বিসিএস প্রস্তুতির জন্য আত্মবিশ্বাসী হতে শিখুন
বর্তমানে হাজারো তরুণের এক প্রধান অধ্যাবসায় নাম হচ্ছে বিসিএস। ঔ বিসিএস পরীক্ষা সাফল্য শুধুমাত্র মেধাবীদের জন্য নয় বরং বিসিএস পরীক্ষায় সাফল্য তাদের জন্য যাদের বিসিএস প্রস্তুতির ব্যাপারে নিয়মিত এবং সিরিয়াস হয়ে থাকেন। বিসিএস পরীক্ষা যেহেতু দীর্ঘমেয়াদি একটি পরীক্ষা তাই সফল হতে হলে আপনাকে যে জিনিসটা প্রথমে দরকার সেটি হচ্ছে ধৈর্য। অনেক ধৈর্যের সাথে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং সাথে সাথে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে কেননা আপনি পরিশ্রম করলে সফল হবেনই। তাই আপনাকে এই বিশ্বাস রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ পড়াশোনা করার সঠিক সময় কোনটি? জেনে নিন
২। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য টার্গেট ঠিক করুন
বিসিএস প্রিলিমিনারি তে আপনাকে ২০০ নম্বর পেতে হবে এমন কোন কথা নয়। বিসিএস প্রিলিপাসের জন্য প্রয়োজন ১২০ থেকে ১৩০ নাম্বার পাওয়া। তাই সেই হিসাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। কারো পরামর্শ এবং কৌশল অন্ধভাবে বিশ্বাস করা যাবে না। সবার পরামর্শ এবং কৌশল শুনলেও সেগুলোর মধ্যেও আপনাকে সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত গুলোই অনুসরণ করতে হবে। এতে করে সফল হওয়া সম্ভব।
৩। বিসিএস সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিজের দুর্বলতার জায়গা খুঁজে বের করুন
বিসিএস এর যে সিলেবাস রয়েছে সেই সিলেবাস মনোযোগ সহকারে পড়ুন। সিলেবাস ধরে বিগত সালের প্রশ্নগুলি আপনি আপনার স্ট্রং জন এবং উইকজন খুঁজে বের করুন। উইকজন এবং স্ট্রং জন খুঁজে বের করে সেগুলোতে ফোকাস দিন। বিসিএস সিলেবাসে এমন কিছু ট্রপিক রয়েছে যেগুলো আপনি আগে থেকে জানেন বা আপনার ধারণা রয়েছে। আবার কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো আপনি একেবারে নতুন। তাই এই নতুন বিষয়গুলো আপনার নিজের মত করে সিলেক্ট করুন এবং নিজের মত করে পড়াশোনা বা প্রস্তুতি শুরু করুন।
৪। নিয়মিত পড়ার সহজ রুটিন তৈরি করুন
বিসিএস প্রস্তুতিতে অনেকেই খুব অবাস্তব রুটিন করে থাকে। বিসিএস প্রস্তুতির জন্য মূলত এমন রুটিন করা প্রয়োজন যা আপনি সহজেই অনুসরণ করতে পারবেন। একটি স্মার্ট রুটিন আপনাকে চাপমুক্ত রাখবে এবং অগোছালো পড়া চাপ থেকে রক্ষা করবে। মনে রাখবেন প্রিলি পরীক্ষা যতটা জ্ঞানের তার চেয়ে বেশি কৌশলের। তাই পরীক্ষার আগ পর্যন্ত পড়াশোনা বাদে অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দিন। পড়ার মধ্য নিজেকে বজায় রাখুন।
৫। বিগত বছরের ‘বিসিএস প্রশ্নব্যাংক’ ভালোভাবে অ্যানালাইসিস করুন
সিলেবাসের টপিক ধরে বিগত বছরের প্রিলি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো ভালোভাবে এনালাইসিস করুন। আপনি যে টপিক গুলো পড়ছেন সেই টপিক গুলো থেকে বিগত সালের টপিক গুলো কেমন সেগুলো ভালো করে এনালাইসিস করুন। তাছাড়া যে কোন একটি প্রকাশনী থেকে বই সংগ্রহ করুন যেটা আপনার কাছে খুব সহজ মনে হয় এবং বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান আয়ত্ত করার চেষ্টা করুন।
৬। সর্বপ্রথমেই বোর্ড বই গুলো পড়ে শেষ করুন
মাঝেমধ্যে দেখা যায় নতুনরা শুরুতে একটা ভুল করে বসে তা হল বিসিএস এর জন্য প্রয়োজনীয় বোর্ড বইগুলো না পড়ে গাইড পড়া শুরু করে। কিন্তু শুরুতেই নবম দশম শ্রেণীর সাধারণ গণিত উচ্চতর গণিত সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এই বই গুলো প্রিপারেশনের জন্য এবং রিটেনের জন্য হেল্প করবে।
৭। বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য আপনার পড়ার মধ্য থেকে ‘কীভাবে নোট করতে হয়’ শিখুন
বিসিএস ক্যাডার হতে হলে যে আপনাকে পৃথিবীর সবকিছু জানতে হবে বা অনেক বই আপনাকে পড়তে হবে এমন কথা নয় বরং আপনাকে অনেক কৌশলী হতে হবে। বিসিএস পরীক্ষার জন্য যে পড়াগুলো পড়বেন সেই পড়া গুলো থেকে কিভাবে নোট তৈরি করতে হয় তা শিখতে হবে। কারণ পড়া গুলো থেকে নোট তৈরি করতে পারলে আপনার বিসিএস এর প্রস্তুতি অনেকখানি এগিয়ে যাবে।
বিগত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো ভালোভাবে মেমোরিতে গেথে নিন। যে বিষয়গুলো খুব ভালো পারেন সেগুলো বারবার না পড়ে যে প্রশ্নের উত্তর গুলো ভুলে যান সেগুলো লাল কালি দিয়ে বার বার পড়ুন।
৮। কনফিউজিং তথ্যগুলোর আলাদা নোট তৈরি করুন
বিসিএস পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সিলেবাস বা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে পড়াশোনায় মনে রাখা খুব কঠিন। বিশেষ করে তারিখ এবং সংখ্যা সম্পর্কিত তথ্যগুলো খুব বিভ্রান্তিমূলক তথ্য। এগুলো আপনাকে বিভ্রান্তিতে ফেলে দিবে। তাই বিভ্রান্তিকর তথ্যগুলো ছোট ছোট নোট আকারে প্রস্তুত রাখুন অথবা আপনার পড়ার টেবিলে বাপের রুমের দেয়ালে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য কিছু চাট তৈরি বা গ্রাফ সারনে লাগে রাখতে পারেন। ফলে বারবার আপনাকে ভীষণ দেওয়ার সুবিধা হবে এবং পড়াগুলো আয়ত্তে আসবে।
৯। স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করে শব্দ করে পড়ুন
আপনি যা পড়বেন তা অবশ্যই স্পষ্ট ভাবে শুদ্ধ উচ্চারণে জোরে জোরে পড়বেন। পড়ার সময় কোন কনফিউশন রাখা যাবে না।। অনেক অনেক বই না পড়ে ভালো মানের অল্প কিছু বই কিনুন যা পড়ার পর বারবার রিভাইস দিবেন।
১০। পড়ার ফাঁকে অল্প সময় করে বিরতি নিন
একটানা না পড়ে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে অল্প অল্প করে বিরতি নিন। কিছু সময় বেরোতে দিয়ে পড়লে সেই পড়াটা অনেকদিন পর্যন্ত মনে থাকে। ধরুন আপনি ৩০ মিনিট পরে ৫ থেকে ১০ মিনিট মাথা খাটান কি পড়লেন বা মনে রাখার চেষ্টা করুন। এভাবে মাঝে মাঝে সময় একটু করে বিরতি নিন।
১১। ইংরেজী, গণিত প্রতিদিন প্র্যাকটিস করুন
বিসিএস এর মাথা ব্যথার প্রধান কারণ হচ্ছে ইংরেজি এবং গণিত বিষয়। এই দুইটি বিষয়ে আপনার নিয়মিত পড়ার রুটিনে রাখতে হবে। ইংরেজি এবং গণিত ভালো করে প্রিপারেশন নিলে প্রিলির পাশাপাশি রিটেন এক্সামেরও প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে যায়। সুতরাং অবশ্যই প্রতিদিন পড়া রুটিনে গণিত এবং ইংরেজি বিষয় রাখবেন। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও মানসিক দক্ষতা, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার এই সব সাবজেক্ট কেন্দ্রিক আপনার বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি নিতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ রাত জেগে পড়াশোনা করার পাঁচটি গোপন টিপস
১২। সংবাদপত্র পড়ার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে দুই ঘন্টা সময় বাঁচিয়ে রাখুন
বিসিএস প্রস্তুতির জন্য সংবাদমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ সাবজেক্ট। কেননা সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের আলোচনা করা হয়। দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার আপডেট পাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে আপনাকে সংবাদ মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে। প্রতিদিন অন্তত একটি বাংলা এবং একটি ইংরেজি সংবাদপত্র পড়তে হবে। প্রতিদিন পেপারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে সেগুলো মনে রাখার স্বার্থে অবশ্য নোট করে রাখতে হবে।
১৩। একটি ‘স্মার্ট-রিভিশন চক্র’ অনুসরণ করুন
একটানা ১২-১৩ ঘন্টা পড়লে বিসিএস এর সঠিক তথ্য নেওয়া যায় এমন কোন কথা নয়। আপনি কতক্ষণ পড়লেন তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আপনি কতটুকু পড়া মনে রাখতে পারেন সেটা। আপনার মেমোরির সর্বোচ্চ আউটপুট পেতে স্মার্ট রিভিশন চক্র ব্যবহার করতে হবে।
১৪। বিসিএস এর এক্সট্রা প্রস্তুতির গ্রুপ স্টাডি করতে পারেন
বিসিএস পরীক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সফলতার হাতিয়ার হচ্ছে গ্রুপ স্টাডি। একজন স্টুডেন্ট গ্রুপ স্টাডি থেকে যতটা পড়া অনুধাবন করতে পারবে সেই পরিমাণ পড়া অনুভব করতে পারবে না বই পড়ে। ভূপ স্টাডির জন্য আপনি অনলাইনে ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিতে পারেন।
১৫। যত পারেন বিসিএস মডেল টেস্ট দিন
আপনার চূড়ান্ত প্রস্তুতি যাচাই করতে যত পারেন বিসিএস এর মডেল টেস্টের পরীক্ষা দিন। বিসিএস মডেল টেস্টের পরীক্ষা অনলাইন অথবা অফলাইনে দিতে পারবেন। যত বেশি পরীক্ষা দিবেন তত আপনার বিসিএস এর প্রস্তুতি গাঢ় হবে বিষয়ভিত্তিক মডেল টেস্ট এর বিষয়ে আপনার দক্ষতা কেমন সে সম্পর্কে আপনি পূর্ণ ধারণা পাবেন।
মন্তব্য: বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার ১৫টি জাদুকরী উপায়
সম্মানিত পাঠক সম্মানিত বিসিএস প্রত্যাশী বন্ধু আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন। আশা করি উপরে টিপস গুলো যদি আপনি বিসিএস এর ক্ষেত্রে অ্যাপ্লাই করতে পারেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার বিসিএস এর বা স্বপ্নের বিসিএস এর গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন। সম্মানিত বিসিএস প্রত্যাশী বন্ধ। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই অন্যান্য বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। নিয়মিত পড়াশোনা বিষয়ক টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url