পিরিয়ডের সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার
পিরিয়ডের সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার
সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজকে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব মেয়েদের একটি কমন সমস্যা পিরিয়ডের সময়ের সতর্ক থাকার বিষয়ে। পিরিয়ডের সময় মেয়েদের অনেক সতর্ক থাকতে হয়। বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এই আর্টিকেল আলোচনা করব মেয়েদের পিরিয়ডের সময় যেসব সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার সেই বিষয়ে।
পোস্ট সূচীপত্র: পিরিয়ডের সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার
- ভূমিকা
- পিরিয়ডের সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার
- পিরিয়ডের সময় যে খাবারগুলো খাওয়া উচিত
- পিরিয়ডের সময় যেসব খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত
- মন্তব্য
ভূমিকা: পিরিয়ডের সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার
প্রতিটি নারীর জন্য সবচেয়ে কঠিন দিনগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পিরিয়ডের দিন। এ সময় মেয়েদের অর্থাৎ পিরিয়ডের সময় মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। যদিও এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তবে কিছু অভ্যাস অস্বস্তিকে আরো বাড়িয়ে তুলে এবং শরীরের হোমিও স্ট্রেস বন্ধ করে দিতে পারে।
তাই পিরিয়ডের সময় মেয়েদের কিছু ভুল করা যাবে না। যে ভুলগুলো সম্পর্কে অনেকেই জানে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক পিরিয়ডের সময় যে বিষয়গুলোতে সরকার কথা অবলম্বন করা দরকার সে বিষয়গুলো সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ অনিয়মিত মাসিকের ১৭টি কারণ-অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা
পিরিয়ডের সময় বেশি বেশি পানি পান করতে হবে
পিরিয়ডের সময় শরীরকে হাইড্রেট রাখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মেয়েরাই এ সময় বারবার বাথরুম যাওয়ার ভয়ে পানি কম পান করে থাকে। সুতরাং এজন্য পর্যাপ্ত হাইড্রেশন পিরিয়ডের সময় এবং মাথা ব্যথার উপশম দেখা দেয়। তাই শরীরের হাইড্রেশনের মাত্রা বজায় রাখতে অবশ্যই প্রাণীর পাশাপাশি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
একই ন্যাপকিন বার বার ব্যবহার না করা
মেয়েদের পিরিয়ডের সময় একই ন্যাপকিন বারবার ব্যবহার না করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। যেহেতু একটি ন্যাপকিন পুরো দিন ব্যবহার করে তাই বিষাক্ত সিনড্রোম ঝুঁকি বাড়ায় ন্যাপকিন। এছাড়াও জমিতে চুলকানি এবং ব্যাকটেরিয়া উপক্রম বাড়তে পারে। তাই এ সমস্যা এড়াতে তিনবার ন্যাপকিন পরিবর্তন করতে হবে। দিনে তিনবার ন্যাপকিন পরিবর্তনের ব্যাপারে সক্রিয় থাকতে হবে।
রোজা রাখা বা অনেক সময় ধরে অনাহারে থাকা
পিরিয়ডের সময় পিরিয়ডের দিনগুলোতে মেয়েদের রক্তপাত হয়। তাই এ সময় শরীরকে দুর্বল করে দেয়। পিরিয়ডের সময় রোজা রাখা বা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধার্ত এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়াও ভিটামিন পানি যেমন ক্যালসিয়াম সহ শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি সরবরাহ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। খাদ্য তালিকায় অবশ্যই পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করতে হবে। কারণ এ সময় ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার না খেলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
ঘনঘন ব্যথা নাশক (পেইনকিলার) খাওয়া
পিরিয়ডের সময় অনেক মেয়েদের পেট ব্যথা করে। তাই পিরিয়ডের সময় স্ক্রাফট নিয়ন্ত্রণে ব্যথা নাশক ও ওষুধের উপর নির্ভর হয়ে পড়ে অনেকেই।আইবুপ্রোফেনের মতো ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ (NSAIDs) এর অতিরিক্ত ব্যবহার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা ছাড়াও অন্যান্য অনেক জটিলতার কারণ হতে পারে। সুতরাং শুধুমাত্র ব্যথানাশক ওষুধের উপর নির্ভর না করে, পিরিয়ডের অস্বস্তি কমাতে হিট থেরাপি, মৃদু ব্যায়াম বা ভেষজ প্রতিকারের মতো বিকল্প পদ্ধতিগুলো ঠিক করুন।
দেরি করে ঘুমানো
ঘুমানোর ব্যাপারে পিরিয়ডের সময় অবশ্য সতর্ক থাকতে হবে। পীরের সময় অনিয়মিত ঘুমালে বা অনিয়মিত ঘুমার কারণে হরমোনের ভারসাম্য ব্যাহত করতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব পিরিয়ডের সময় মেয়েদের ক্লান্তি মেজাজের পরিবর্তন এবং ইসক্রাম কে তীব্র করতে পারে। সুতরাং পিরিয়ডের সময় অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হয়। সেক্ষেত্রে আরামদায় বিছানা এবং শান্ত সুষ্ঠু পরিষ্কার কক্ষ নির্বাচন করতে হবে তাহলে ঘুম ভালো হবে।।
ওয়াক্সিংয়ের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া
পিরিয়ডের সময় মেয়েদের অক্সিন সংবেদনশীলতা এবং ব্যথার মাত্রা বাড়িয়ে তুলে। এ সময় মেয়েদের হরমোন উঠানামা করে ত্বককে আরো সংবেদনশীল করে তোলে। ওয়াক্সিং সেশনের সময় অস্বস্তি বাড়ায়। অস্বস্তি কমাতে এবং আরও ভালো ফল পেতে পিরিয়ডের আগে বা পরে এটি করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত চিনি এবং ক্যাফেইন খাওয়া
পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত চিনি বা ক্যাফেন খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত চিনি বা ক্যাফিন খেলে পেটের সমস্যা হয়ে থাকে এবং হরমোনের ওঠার আমার সমস্যা বাড়তে থাকে। যদিও পিরিয়ডের সময় এ ধরনের খাবার খাবার চাহিদা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাস্থ্যের সাথে কোন রকম আপোষ না করে তৃষ্ণা চাহিদা মেটাতে হবে। সেজন্য ভেষজ চা, ডার্ক চকোলেট এবং ফলের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
পিরিয়ডের সময়ের খাবার
পিরিয়ডের সময় খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কেননা পিরিয়ডের সময় কোন কোন খাবার শরীরের জন্য উপকারী এবং কোন কোন খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আমরা এই পর্বে জানব পিরিয়ডের সময় কোন খাবারগুলো খাওয়া যাবে এবং কোন খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা এ বিষয়ে।
পিরিয়ডের সময় যে খাবারগুলো খাওয়া উচিত
পানি: পিরিয়ডের সময় প্রচুর পানি পান করা উচিত।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার: পিরিয়ডের সময় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন: মাছ, মাংস, ডিম, কলিজা, বিভিন্ন ধরনের শাক, তরমুজ, কালো জাম, খেজুর ইত্যাদি খেতে হবে।
ফল: পিরিয়ডের সময় ফল জাতীয় খাবার যেমন:ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন, পেয়ারা, আমড়া, আমলকি, লেবু, জলপাই, জাম্বুরা, পাকা টমেটো, কামরাঙা, পাকা পেঁপে, আনারস এ ধরনের খাবার খেতে হবে।
সবুজ শাক-সবজি: আয়রন ও বি ভিটামিনে পরিপূর্ণ।
কলা: কলা হচ্ছে পটাশিয়াম ও ভিটামিনের ভালো উৎস। তাই পিরিয়ডের সময় অবশ্যই কলা খাওয়া উচিত।
প্রোটিন: পিরিয়ডের সময় খাদ্য তালিকায় ডাল, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা জানুন-কমলায় কোন ভিটামিন থাকে
পিরিয়ডের সময় যেসব খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত
পিরিয়ডের সময় যেসব খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত তার মধ্যে রয়েছে, কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার, কোল্ড ড্রিঙ্ক, জাঙ্ক ফুড, এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার। পিরিয়ডের সময় হালকা এবং হজমের যোগ্য খাবার খাওয়া ভালো যেমন সুজি, খিচুড়ি ইত্যাদি।
মন্তব্য: পিরিয়ডের সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার
যেহেতু পিরিয়ডের সময় মেয়েদের শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন হয় সেহেতু অবশ্যই খাবারের বিষয়ে এবং মানসিক এবং শারীরিক বিষয়ে খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরী। যদিও এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তারপরেও এর প্রভাব পড়ে শরীরে এবং মানসিকভাবে। তাই অবশ্যই মানসিক এবং শারীরিক বিষয়গুলোতে নজর দেওয়ার অত্যন্ত জরুরী সাথে সাথে খাবারের বিষয়েও নজর দেওয়া জরুরী।
শেষের কথা
সম্মানিত পাঠক আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি। অবশ্যই মেয়েদের পিরিয়ডের সময় এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন। সম্মানিত পাঠক আমরা নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস দিয়ে থাকি। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয় টিপস পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন প্রতিদিন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url