কুরবানীর ঈদ কোন মাসের কত তারিখে হবে-কুরবানীর ঈদ ২০২৪
কুরবানীর ঈদ কোন মাসের কত তারিখে হবে-কুরবানীর ঈদ ২০২৪
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন। ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে অনুষ্ঠিত হবে? এই প্রশ্নটি সবার মনে নিশ্চয়ই ঘুরপাক খাচ্ছে। সবে মাত্র ঈদুল ফিতর শেষ হলো। তাই এখন অনেকেরই জানার চাহিদা যে ঈদ উল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ কোন মাসের কত তারিখে হবে? ঈদের সময় জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
কেননা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রতিবছরে দুটি ঈদ হয় তার মধ্যে একটি হল ঈদুল আযহা। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের জন্য দুইটি ঈদ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম ঈদুল ফিতর এবং দ্বিতীয় হল ঈদ-উল আযহা। সম্মানিত পাঠক আজকে ঈদুল আযহা নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। তাই ঈদুল আযহা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের পোস্টটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
পোস্ট সূচিপত্র: কুরবানীর ঈদ কোন মাসের কত তারিখে হবে-কোরবানির ঈদ ২০২৪
- সূচনা
- ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ
- ঈদুল আযহার তারিখ যেভাবে নির্ধারণ করা হয়
- মুমিনদের জন্য কোরবানি এবং ঈদুল আযহার গুরুত্ব
- কোরবানি কিভাবে এলো?
- ঈদুল আযহার কুরবানি করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী
- উপসংহার
সূচনা: কুরবানীর ঈদ কোন মাসের কত তারিখে হবে-কোরবানির ঈদ ২০২৪
সম্মানিত পাঠক বন্ধু মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বছরে দুইটি ঈদের মধ্যে ঈদুল ফিতর ইতিমধ্য শেষ হয়ে গেছে। এখন এবছর বাকি রয়েছে ঈদ উল আযহা। তাই ঈদুল ফিতর শেষ হবে না হতেই অনেকেরই জানতে ইচ্ছে করে যে ঈদুল আযহা কোন মাসে কত তারিখে হবে এ বিষয়ে। আমরা এই আর্টিকেলে এই বিষয়টা নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন দেরি না করে শুরু করি।
আরো পড়ুনঃ কুরবানী করার শর্তাবলী-কিভাবে কুরবানী করতে হয় জেনে নিন
ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ
প্রতিটা ঈদ আরবি মাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হয়ে থাকে এবং সেই ক্যালেন্ডার থেকে ইংরেজি মাসের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সেই হিসেবে অনুযায়ী ২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহা মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলো ২০১৬ জুন অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং বাংলাদেশে হতে পারে ১৭ জন।
(সম্প্রতি ৫ বছরের ঈদুল আযহার ক্যালেন্ডার)
২০২২ সালের ১০ জুলাই রবিবার ঈদুল আযহা ২০২৩ সালের ২৯ জুন বৃহস্পতিবার ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার ঈদুল আযহা ২০২৪ সালের ১৭ জুন সোমবার ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের ৬ জুন শুক্রবার ঈদুল আযহা ২০২৬ সালের ২৭ মে বুধবার ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
(বি:দ্র-চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল)
ঈদুল আযহার তারিখ যেভাবে নির্ধারণ করা হয়
আরবি হিজরী বর্ষপঞ্জি অনুসারে ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে 12 তারিখ পর্যন্ত তিন দিন চলে। এই তিন দিনকে বলা হয় “ইয়াওমুল আযহা” বা “ঈদের দিন”। ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদে কুরবানি করা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব ইবাদত। হিজরী চন্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান হয়ে থাকে। দিনের দিক দিয়ে গণনা করলে সর্বোচ্চ ৭০ দিনে ব্যবধান থাকে।
মুমিনদের জন্য কুরবানী এবং ঈদুল আযহার গুরুত্ব
ঈদুল আযহা এবং কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব এবং ইবাদত। এই উৎসব মুমিন মুসলমানদের জীবনে অনেক গুরুত্ব বহন করে। মুমিনদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য এবং ইবাদত হলো মহান আল্লাহ তাআলার নক্ষত্র লাভ করা। মহান আল্লাহতালা নির্দেশনা অনুযায়ী কুরবানী করা মহান আল্লাহ তা'আলা নৈকট্য লাভের একটি অন্যতম মাধ্যম।
কোরবানি করার মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের সম্পদ, জান-মাল আকাঙ্ক্ষা সবকিছু আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে। কোরবানি করার মাধ্যমে মুসলমানদের অন্তরের হিংসা বিদ্বেষ কৃপণতা দূর করে এবং আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য শ্রদ্ধাশীল করে তোলে।
কুরবানী কিভাবে এলো?
মহান আল্লাহ তা'আলা কুরবানীকে ওয়াজিব করার পিছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা রয়েছে। সেই ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহতালা কোরবানি ওয়াজিব করেছেন। কোরবানির ঈদ-পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবী হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও হযরত ইসমাইল (আ.)এর অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের স্মৃতি বহন করে।
হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তাঁর প্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.)কে কোরবানি করার জন্য প্রস্তুতি নিলেন। কিন্তু আল্লাহর রহমতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। এরপর থেকে কুরবানীর প্রথা চালু হয়। এই ঘটনা থেকে মুমিনরা শিক্ষা লাভ করে যে, আল্লাহর জন্য সবকিছুই ত্যাগ করা যায়।
ঈদ সম্পর্কে বর্ণিত হাদিস
رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ الْمَدِينَةَ وَلَهُمْ يَوْمَانِ يَلْعَبُونَ فِيهِمَا، فَقَالَ: مَا هَذَانِ الْيَوْمَانِ؟ قَالُوا: كُنّا نَلْعَبُ فِيهِمَا فِي الْجَاهِلِيّةِ، فَقَالَ رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: إِنّ اللّهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهُمَا: يَوْمَ الْأَضْحَى، وَيَوْمَ الْفِطْرِ.
হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হিজরত করে মদীনায় আসলেন তখন, মদীনাবাসীর দুটি উৎসব ছিল। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি দিবস কী? (কী হিসেবে তোমরা এ দু’দিন উৎসব পালন কর?) তারা বলল, জাহেলিয়াত তথা ইসলামপূর্ব যুগে আমরা এ দিনদুটিতে উৎসব পালন করতাম।
তখন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তোমাদেরকে এ দুটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন-ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১১৩৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১৫৫৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২০০৬)
ঈদুল আযহার কুরবানি করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী
- মুসলমান হওয়া
- বালেগ হওয়া
- পূর্ণবয়স্ক হওয়া
- সুস্থ হওয়া
- নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া
নিসাব পরিমাণ সম্পদ মানে হল, যেই সম্পদের মূল্য সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বারো মণ রূপা বা এর সমপরিমাণ সম্পদ। কুরবানি করা ঈদুল আযহার দিন সূর্য উদয় থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত কুরবানি করা বৈধ।
আরো পড়ুনঃ ঈদুল ফিতরের ফজিলত-ঈদের দিনে করণীয় কী?
উপসংহার: কুরবানীর ঈদ কোন মাসের কত তারিখে হবে-কোরবানির ঈদ ২০২৪
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ঈদুল আযহা তারিখ এবং ঈদুল আযহা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন। আর্টিকেলটি যদি আপনার নিকট তথ্যবহুল এবং প্রয়োজনীয় মনে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ইসলামিক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। তাই নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url