শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া ৮টি উপায়
শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া ৮টি উপায়
সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আমাদের ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। আজকে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব শিশুর জ্বর কমানোর আটটি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আশাকরি এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি অনেক কিছুই জানতে পারবেন। যা আপনার ক্ষেত্রে অনেক কাজে আসবে। সুতরাং আর্টিকেলটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
পোস্ট সূচীপত্র: শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া ৮টি উপায়
- সূচনা
- জ্বর কি?
- কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে ?
- শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
- শিশুর-প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর কমানোর ৮টি ঘরোয়া উপায়
- মন্তব্য
সূচনা: শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া ৮টি উপায়
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আমাদের আশেপাশে এবং আমাদের ছেলে মেয়ে যারা ছোট শিশু রয়েছে তারা অনেক সময় হঠাৎ করে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। শিশুদের এই জ্বর কেন হয় কি জ্বর হয় এবং এই জ্বর থেকে রক্ষা পাওয়ারি বা উপায় কি? এই সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আর্টিকেলটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও চিকিৎসা
জ্বর কি?
অনেক মানুষের শরীরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা প্রায় আটানব্বই ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে। এই স্বাভাবিক তাপমাত্রা যে যদি এক ডিগ্রী বা তার বেশি তাপমাত্রা হয়ে যায় তাহলে তাকে জোয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জোয়ার সাধারণত কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে এটি সংক্রমণের ধরনের ওপর নির্ভর করে।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে ?
জোয়ার জটিল কোন সমস্যা না হলেও মাঝে মাঝে এই সমস্যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই জ্বরের লক্ষণ কেমন সেই অনুযায়ী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। যেমন-
১. শিশুদের ক্ষেত্রে
শরীরে তাপমাত্রা যদি অতিরিক্ত হয় বা অতিরিক্ত জোয়ার হয়ে থাকে তাহলে ছোট শিশুর জন্য এটি বিপদজনক হতে পারে। শূন্য থেকে শুরু করে চার মাস পর্যন্ত শিশুর মলদ্বারের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি যদি হয়ে থাকে তাহলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়াও যদি তিন থেকে ছয় মাস বয়সী কোন শিশুর মলদ্বারে তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা ৩৯° সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যায় তাহলে তাদেরকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ছয় মাস থেকে দুই বছর বয়সী শিশুর মলদ্বারের তাপমাত্রা যদি ১০২° ফারেনহাইট চেলসিয়াস এর উপরে হয়ে যায় তাহলে একদিনের বেশি স্থায়ী হয়ে থাকে। এছাড়া ও যদি অন্যান্য কোন উপসর্গ থাকে যেমন ফুসকুড়ি কাশি বা ডায়রিয়া তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
২. প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে
শিশুদের মতই কিছু কিছু জ্বর রয়েছে যেগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সমান ঝুঁকিপূর্ণ। ১০৩° ফারেনহাইট বা ৩৯° বা তার বেশি যদি জ্বর হয় তাহলে জ্বর তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও যদি জোয়ারের সাথে ফুসকুড়ি ঘন ঘন বমি শ্বাসকষ্ট প্রচন্ড মাথা ব্যথা খিচুনি ভাব হয়ে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার জরুরী।
শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু জ্বরের পাশাপাশি ভাইরাল জ্বরও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। হঠাৎ করেই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে ঘরের শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও। অনেক সময় চিকিৎসকের কাছে যাওয়া লাগলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘরে বসেই জ্বর কমানো যায় কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে।
শিশুর-প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর কমানোর ৮টি ঘরোয়া উপায়
১. প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় জিনিস পান করতে হবে
শরীরে যখন জ্বর হয় তখন শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি গরম থাকে। এর ফলে শরীরকে ঠান্ডা করার চেষ্টায় শরীর ঘামতে বাধ্য করে। এত করে শরীর থেকে অনেক তরল পদার্থ বের হয়ে যায়। শরীরের অনেক তরল পদার্থ বের হয়ে যাওয়ার ফলে ডিহাইড্রেশনের সৃষ্টি হয়। তাই জ্বর হলেই অবশ্যই পানি পানির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলের রস যেমন লেবুর রস ডাবের পানি ইত্যাদি প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের ও পান করাতে হবে।
২. শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম প্রয়োজন হয়
আপনার শরীরের ভাইরাস বিভিন্ন ধরনের সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। তাই যতটা সম্ভব বিশ্রাম এবং ঘুম প্রয়োজন। যদি সারাদিন বিছানায় শুয়ে না থাকতে পারা যায় তাহলে যতটা সম্ভব শারীরিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও প্রতি রাতে 8 থেকে 9 ঘন্টা বা তারও বেশি ঘুমানো প্রয়োজন।
৩. ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ ব্যবহার করা
অনেক সময় সাধারণ জ্বরের চিকিৎসার জন্য ওষুধের প্রয়োজন হয় না। তবে ওষুধের প্রয়োজন না হলেও অতিরিক্ত জ্বর কমাতে ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধগুলির মধ্যে আইবুপ্রোফেন, অ্যাসিটামিনোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন, অ্যাসপিরিন ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
সে ক্ষেত্রে অবশ্যই শিশুদের বা প্রাপ্তবয়স্কদের চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কখনোই ওষুধ দেয়া উচিত নয়। বিশেষ করে শিশুদের অ্যাসপিরিন দেওয়া মোটেও উচিত নয়। বেশিরভাগ বয়সের শিশুদের অ্যাসিটামিনোফেন দেয়া হয়। তবে এর পরিমাণ অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ানো উচিত।
৪. হালকা আরামদায়ক পোশাক পরিধান করা
একজন ব্যক্তির যদি জ্বর হয়ে থাকে তাহলে সে খুব সহজেই গরম এবং ঠাণ্ডা অনুভব করতে পারে। তাই ভারী জামা কাপড় শরীর থেকে তাপ বেরোতে বাধা প্রদান করে ফলে শরীরে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তাই শিশু বা প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জ্বর হলেই আরামদায়ক হালকা বিশেষ করে সুতি জামা কাপড় পরানো উচিত।
৫. শিশু বা প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর হলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো প্রয়োজন
শরীরে অক্সিডেস্টিভ স্ট্রেস কমে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরে এই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমানোর জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন। হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে সেটা জ্বরের পাশাপাশি সর্দি এবং জাতীয় রোগের বিরুদ্ধে কার্যকরী হতে পালন করে।
৬. শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর হলে উষ্ণ পানিতে গোসল করানো
শিশু বা প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর হলে অবশ্যই উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করানো উত্তম। কেননা উষ্ণ গরম পানি শরীরে তাপমাত্রা কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উষ্ণ গরম পানি দিয়ে গোসল করলে বেশি শিথিল হয় এবং শরীর প্রশমিত হয়। এটি মানসিক চাপ থেকে মুক্ত করে শরীরে শক্তি সরবরাহ করে।
৭. অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে
কিছু ভাব প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর হলে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। কেননা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খনিজ সমৃদ্ধ খাবার ভিটামিন অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। একটি শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত জ্বর কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া মুরগি বা কোন সবজির স্যুপ রোগের সাথে লড়াই করতে এবং শরীরের তাপমাত্রা কমাতে শক্তি এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
৮. স্পঞ্জ গোসল
শিশু বা প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরে তাপমাত্রা কমাতে স্পঞ্জ গোসল একটি খুব ভাল কৌশল। যা শিশুদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা অসুস্থতার কারণে বিছানায় শয্যাশায়ী। একটি স্পঞ্জ বা তোয়ালে ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে বাড়তি পানি নিংড়ে ফেলে দিয়ে শরীরের উপরিভাগ পরিষ্কার করা বা ঠাণ্ডা করতে ব্যবহার করা হয়।
মন্তব্য: শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া ৮টি উপায়
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আমাদের প্রত্যেকেরই বাড়িতে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক লোক রয়েছে। অবশ্যই আমাদেরকে তাদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের যদি জ্বর হয় তাহলে অবশ্যই উপরের পদ্ধতি গুলো আমরা অবলম্বন করব। তাহলে জ্বর থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
আমাদের শেষের কথা
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটি আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল হিসেবে বিবেচনা করছেন। সম্মানিত পাঠক আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। এছাড়াও নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url