দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়-মানসিক টেনশন দূর করার ঔষুধ
দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়-মানসিক টেনশন দূর করার ঔষুধ
সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আজকে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব মানসিক চিন্তা দূর করার উপায় নিয়ে। মানসিক টেনশন দূর করার ওষুধ কি কি এই নিয়ে আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই হেল্পফুল হবে। সুতরাং আর্টিকেলটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র: দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়-মানসিক টেনশন দূর করার ঔষুধ
- ভূমিকা
- দুশ্চিন্তার অর্থ কি
- মানসিক টেনশন/দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়
- মানসিক টেনশন/দুশ্চিন্তা দূর করার খাবার
- মানসিক টেনশন/দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য নিয়মিত ব্যয়াম
- দুশ্চিন্তা মুক্ত নতুন জীবন নিয়ে বইয়ের কিছু নির্দেশনা
- মানসিক চিন্তার চিকিৎসা -
- দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য ডাক্তারি পরামর্শ
- মন্তব্য
ভূমিকা: দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়-মানসিক টেনশন দূর করার ঔষুধ
সুপ্রিয় পাঠক আপনি হয়তো একজন স্টুডেন্ট অথবা চাকরি প্রত্যাশী। তোমার হয়তো সামনে পরীক্ষা অথবা ইন্টারভিউ বা কোন লাইভ চেঞ্জিং ইভেন্ট রয়েছে। তোমার চিন্তা ভাবনা হয়তো আকাশচুম্বী কিন্তু তোমার এই ভেবে দুশ্চিন্তা হয় যে “সব ঠিক ঠাক ভাবে না হলে কি হবে!” দুশ্চিন্তা একেকজন কে একেকভাবে প্রভাবিত করে। তুমি যদি দুশ্চিন্তা কাটাতে পারো এবং তুমি যদি খুব দ্রুত দুশ্চিন্তার সাইকেল থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসতে পারো তাহলে তুমি দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণে একজন দক্ষ।
কিন্তু সিচুয়েশনটা যদি এমন না হয় এবং দুশ্চিন্তা যদি আপনার পার্সোনাল বা প্রফেশনাল লাইফের উন্নতির প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় তাহলে, তোমার প্রফেশনাল সাইকোলজিক্যাল হেল্প লাগতে পারে। সম্মানিত পাঠক এই দুশ্চিন্তা নিয়ে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।
আরো পড়ুনঃ মানসিক রোগ কি ?এর লক্ষণ -মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
দুশ্চিন্তার অর্থ কি
দুশ্চিন্তার অর্থ হচ্ছে এই যে যখন কোন ঘটনা বাস সিচুয়েশনের কথা মনে আসলে তোমার ভয় হয় হাত-পা ঘামে শরীর কাঁপে এবং সেগুলো যদি প্রতিদিনের কাজ অর্থাৎ তোমার প্রোডাক্টিভিকে বাধাগ্রস্ত করে তাহলে তুমি দুশ্চিন্তাতে ভুগছো।
মানসিক টেনশন/দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়
মানসিক টেনশন/দুশ্চিন্তা দূর করার খাবার
দুশ্চিন্তা আমাদের প্রায় সবার মাঝেই ঘটে থাকে। দুশ্চিন্তা একটি কমন সাধারণ ব্যাধি। মানুষের জীবন যাপনের ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা অর্থাৎ মানসিক টেনশন আসবেই। কিন্তু সেসব টেনশন দূর করার জন্য অবশ্যই আপনাকে চিন্তা ভাবনা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা দূর করার কিছু খাবার রয়েছে। যে খাবারগুলো আপনি নিয়মিত খেলে আপনার দুশ্চিন্তা দূর করা সম্ভব। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই খাবারগুলো কি কি?
ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার
দুশ্চিন্তা দূর করার একটি অন্যতম খাবার হচ্ছে ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার। শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব হয় তাহলে মানুষ ডিপ্রেশনে চলে যায় বা দুশ্চিন্তার দিকে চলে যায়। ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করতে আপনি এই খাবারগুলো খেতে পারেন যেমন- স্যামন,টুনা খাওয়া যেতে পারে।এছাড়াও কমলালেবু, চিজ,দধি, ডিমের কুসুম,গরুর দুধ ইত্যাদি খাবার তোমার ডেইলি ডায়েট রুটিনে রাখলে ভিটামিন-ডি এর অভাব পূরন হবে।
ডার্ক চকলেট
মানসিক টেনশন দূর করার জন্য ডার্ক চকলেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা ডার্ক চকলেট রয়েছে ফ্লেভনয়েড যা মস্তিষ্কে নিউরো-ইনফ্লামাশেন এবং সেল-ডেথ কমাতে সাহায্য করে।এছাড়াও ডার্ক চকলেটে টিপটোফ্যান আছে। যেটা মস্তিষ্কে সেরাটনিনের মত মুড-ইনহ্যান্সিং নিউরোট্রান্সমিটার সঞ্চারন করতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি
সম্মানিত পাঠক গ্রিন টি আমরা সবাই চিনি। এমনকি অনেক মানুষ আছে যারা নিয়মিত গ্রিন টি পান করে। মানসিক টেনশন দূর করার জন্য গ্রিন টি একটি অন্যতম খাদ্য উপাদান। গ্রিন টি তে রয়েছে থিয়ানিন নামের আ্যমিনো এসিড, যেটাতে আ্যন্টি-আ্যনজাইটি ইফেক্ট আছে। গ্রিন টি পান করলে মেজাজ শান্ত এবং স্হিতিশীল হয়।
বিভিন্ন ধরনের বাদাম
মানসিক টেনশন দূর করার জন্য বাদাম একটি অন্যতম খাদ্য উপাদান। কাজুবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই যেটা মুড ডিজ-অরডারে সাহায্য করে।
মানসিক টেনশন/দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য নিয়মিত ব্যয়াম
মানসিক টেনশন বা দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। একটা হাত বুকে, এবং আরেক টা হাত পেটে রেখে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে হবে। শ্বাস গ্রহনের সময় পেট প্রসারিত হবে এবং শ্বাস গ্রহণ শেষে মুখ দিয়ে শ্বাস ত্যাগ করতে হবে। এই ব্যায়াম টা ১০ মিনিট করলেই যথেষ্ট। অবশ্যই আপনাকে মাংসপেশী গুলো শিথিল করতে হবে। দুশ্চিন্তা করাএ সময় তোমার চোয়াল দৃঢ় হয়ে আছে কিনা লক্ষ্য করতে হবে। হাত মুষ্টিবদ্ধ থাকলে ছেড়ে দিন। মাঝে মাঝে আপনি চোখ বন্ধ করে নিজেকে খুব সুন্দর কোন জায়গাতে কল্পনা করুন এবং রিলাক্স নিন।
দুশ্চিন্তা মুক্ত নতুন জীবন নিয়ে বইয়ের কিছু নির্দেশনা
১. বর্তমানে অবস্থান করা
দুশ্চিন্তা নিয়ে বইয়ের প্রথম নির্দেশনা হল বর্তমানে অবস্থান করা। অতীতে যদি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সেই অতীতের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কথা চিন্তা না করে বর্তমানে ভালো থাকা। কেননা অতীতের কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকলে সেগুলো চিন্তা করলে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ দুই জায়গাতে খারাপ কিছু ঘটতে পারে এই ভেবে বর্তমানের সময়টাকে নষ্ট করা বা বর্তমান থেকে দূরে থাকা ঠিক নয়। ধরুন তুমি হয়তো জব করছ। বর্তমানে হয়তো তোমার কাঁধে অনেক দায়িত্ব ভর করেছে।
নতুন চাকরি নিয়েই তুমি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছো। কিন্তু চাকরি চলে যায় এই চিন্তায় তোমার প্রোডাক্টিভিটি কমে যাচ্ছে এবং এই কারণে আসলে তুমি কর্মজীবনে ভালো পারফরম করতে পারছ না। সে ক্ষেত্রে তুমি চিন্তা কর যে তোমার চিন্তা ভাবনা কি যুক্তিযুক্ত? চাকরি যদি আসলেই চলে যায় তাহলে কি তোমার ব্যাকআপ রয়েছে তোমার সেভিংস রয়েছে? এই ধরনের সেল্ফ হেল্প প্রশ্ন নিজেকে করে সিচুয়েশনের জন্য প্রস্তুত করতে পারো।
২. খারাপ চিন্তা ভাবনা থেকে মনকে আলাদা ভাবে ব্যস্ত রাখা
বইয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দুশ্চিন্তা দূর করার একটি অন্যতম উপায় হল খারাপ চিন্তা ভাবনা থেকে মনকে আলাদা কোনো ভালো চিন্তা ভাবনায় ব্যস্ত রাখা। এক্ষেত্রে আপনি শখের একটি কাজ করতে পারেন তাছাড়া ব্যায়ামও ব্যস্ত থাকতে পারেন। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে এই ব্যায়াম। তাই অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন।
৩. নিয়ন্ত্রণের বাইরের ইভেন্ট গুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা না করা
বইয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরের যেসব ইভেন্ট রয়েছে সেই ইভেন্টগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা না করা। তোমাকে নিয়ে কে কি ভাবছে সেটার উপর তোমার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সুতরাং যেটার উপর তোমার কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করাই উত্তম। নিজেকে প্রশ্ন করুন যে এই চিন্তা-ভাবনা কি আসলেই তোমার সময় এবং মনোযোগের যোগ্য কিনা। যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ে তোমার সেই সময়ে কোপ-আপ করার সক্ষমতা তোমাকে সফলতার দিকে নিয়ে যাবে।
৪. সব সময় নিজের জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা
দুশ্চিন্তা থেকে একটি মুক্তি পাওয়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে সব সময় নিজের জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। জীবনে কি কি পেলাম কি কি পেলাম না এসব চিন্তা ভাবনায় প্রকাশ করা উচিত নয়। জীবনকে মানসিক শান্তির মাধ্যমে গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই জীবনকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে হবে।
মানসিক চিন্তার চিকিৎসা -
বিনোদন
মানসিক চিন্তার চিকিৎসা হিসেবে এবং সুস্থতার প্রতীক হিসেবে বিনোদনকে গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে। এমন প্রকল্প নেওয়া যা আত্ম-বিশ্বাস চাঙ্গা করে এবং গঠনমূলক অবদান রাখে।
জীবনধারা সামলানো
দুশ্চিন্তার চিকিৎসা হিসেবে কয়েকটি কৌশল আছে যার মধ্যে একটি দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমর্থক ওষধ হলো জীবনধারা সামলানো। নিজের জীবনধারাকে সামলাতে পারলে মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
সহায়ক গোষ্ঠী
মানসিক টেনশন বা দুশ্চিন্তা চিকিৎসা হিসেবে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে সহায়ক গোষ্ঠীর মাঝে সুখ দুঃখ বিনিময় করা বা ভাগাভাগি করে নেওয়া। কেননা এসব গোষ্ঠীর মাঝে নিজের দুঃখ কষ্ট শেয়ার করলে নিজের দুশ্চিন্তা এবং মানসিক টেনশন অনেকটাই কমে যায়।
আরো পড়ুনঃ এইডস এর লক্ষণসমূহ কি কি-এইডস আক্রান্ত রোগীর খাবার
দুশ্চিন্তা দূর করার ওষুধ
যদিও দুশ্চিন্তা দূর করার নির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই তারপরেও এই দুশ্চিন্তা নিরাময় করার জন্য কিছু বিধান দেওয়া যেতে পারে। দুশ্চিন্তা বা মানসিক চিন্তা সম্পর্কিত সমস্যাগুলো মোকাবেলার জন্য ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা এবং পাকস্থলী-সম্পর্কিত অসুখগুলির চিকিৎসা করার প্রতি ওষুধ প্রয়োগের লক্ষ্য হতে পারে। তারপরও ডাক্তারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন এইসব ওষুধ খাওয়ার জন্য।
- সিপলার ৪০ এম জি ট্যাবলেট (Ciplar 40 MG Tablet)
- ম্যানোপ্রোলল ৪০ এম জি ট্যাবলেট (Manoprolol 40 MG Tablet) ...
- ইন্ডেরাল ৪০ এম জি ট্যাবলেট (Inderal 40 MG Tablet) ...
- ইন্ডেরাল এল এ ৪০ এম জি ট্যাবলেট (Inderal La 40 MG Tablet) ...
দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য ডাক্তারি পরামর্শ
নিয়মিত কথা বলা একটা দারুণ চাপ প্রশমনকারী হতে পারে। পেশাদারগণ শক্তি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে এবং চাপ কমাতে কগনিটিভ বেসড থেরাপি (সিবিটি) এবং মাইন্ডফুলনেস-বেসড স্ট্রেস রিডাকশন (এমবিএসআর)-এর মত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন।
মন্তব্য: দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়-মানসিক টেনশন দূর করার ঔষুধ
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আশা করি আর্টিকেলটি বুঝতে আপনার কোন অসুবিধা হয়নি। কেননা আমরা স্টেপ বাই স্টেপ এ আর্টিকেলে দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় সমূহ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। সম্মানিত পাঠক আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url