মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা -মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক

মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা -মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক

সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করব মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। মসুর ডালের উপকারিতা আমাদের কাছে অনেকেরই অজানা। তাই মসুর ডাল নিয়ে এই আর্টিকেল আলোচনা করতে চলেছি। সম্মানিত পাঠক মসুর ডালের উপকারিতার পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। এসব নিয়ে এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। সুতরাং অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন আশা করি অনেক কিছুই জানতে পারবেন।

পোস্ট সূচীপত্র: মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা -মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক

  • ভূমিকা 
  • মসুর ডালে কি কি ভিটামিন রয়েছে 
  • মসুর ডালের বিভিন্ন ধরনেরৎউপকারিতা
  • মসুর ডালের ক্ষতিকর দিকসমূহ
  • মসুর ডাল দিয়ে তৈরি করা কিছু খাবার 
  • মন্তব্য

ভূমিকা: মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা -মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক

সারা পৃথিবী জুড়েই মসুর ডাল খুব একটি জনপ্রিয় পানিজাতীয় খাবার। মসুর ডাল দিয়ে নানা রকম মুখরোচক এবং রুচিসম্মত খাবার তৈরি করা হয়। মসুর ডালকে প্রোটিনের আধার বলা হয়। এজন্য আর মাংসর পরিবর্তে মুসুর ডাল খাওয়া হয়। মসুর ডাল খেতে সুস্বাদু তাছাড়াও এতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কিন্তু মসুর ডাল আবার বেশি পরিমাণে খেলে এর ক্ষতির কারণও হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- মসুর ডাল স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে উপকারী। তবে বেশি পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস, হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই মসুর ডালের উপকারিতা এবং অপকারিতা উভই জেনে রাখা ভালো।

আরো পড়ুনঃ আম খাওয়ার উপকারিতা-পাকা আম এ কি কি ভিটামিন আছে

মসুর ডালে কি কি ভিটামিন রয়েছে 

মসুর ডাল বিভিন্ন রকম ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। মসুর ডালে বিভিন্ন রকম ভিটামিন পাওয়া যায়। যেমন- এই ডালে রয়েছে খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি।

ছবি

মসুর ডালের বিভিন্ন ধরনেরৎউপকারিতা

মসুর ডালের রয়েছে একাধিক উপকারিতা। মসুর ডালকে ক্যালোরি এবং প্রোটিনের অনন্য সমন্বয় হিসাবে ধরা যায়। যা স্বাস্থ্যকর এবং সঠিক পুষ্টি প্রদানে কার্যকর হতে পারে। মসুর ডালের মতো উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খেলে হার্টের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও মসুর ডাল ফলেট (folate) এবং ম্যাগনেসিয়াম এর একটা বিরাট উৎস। যা হার্টকে অনেক শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। মসুর ডালে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা শরীরের সর্বত্র রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি প্রবাহ করতে সাহায্য করে 

  • মসুর ডালের ফাইবারে রয়েছে অনেক ধরনের উপকারিতা। মসুর ডাল শরীরে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া মসুর ডাল উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • মসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ। ফলে এটি হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের জন্য মসুর ডাল একটি আদর্শ খাবার।
  • মসুর ডালে রয়েছে উচ্চ মাত্রার দ্রবণীয় ফাইবার। যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এটা শরীরের কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দিয়ে ধমনীকে পরিষ্কার রাখে।
  • মসুর ডাল খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়।
  • মসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই কারণেই মসুর ডাল ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ক্যান্সার এবং হৃদরোগ ইত্যাদির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

মসুর ডালের ক্ষতিকর দিকসমূহ

  • মসুর ডালে ভালো মন্দ দুটো দিক রয়েছে। মসুর ডাল বেশি পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে উপকার না হয়ে অপকারই হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
  • মসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তাই ডায়েট লিস্টে এই খাবার রাখলে শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। মসুর ডাল খেলে শারীরিক ব্যায়ামের অভাব হলে অতিরিক্ত প্রোটিনের ফলে শরীরে ফ্যাট হিসেবে জমতে শুরু করে। এতে করে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
  • মসুর ডাল শরীরে গাউট বা ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে পিউরিন থাকে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সুতরাং কোনো ব্যক্তি যদি বাতের ব্যথায় ভোগেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে তার মসুর ডাল খাবেন না।
  • মসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লেকটিন। এই উপাদান শরীরের হজমশক্তিকে দুর্বল করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যদি কোনো ব্যক্তি আইবিএস-এর মতো রোগে ভুগে থাকেন, তাহলে মসুর ডাল খাওয়ার ফলে তার স্বাস্থ্য অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।

এছাড়াও অধিক পরিমাণে মসুর ডাল খেলে কিডনির সমস্যার মত ভয়াবহ রোগ হতে পারে। আপনার যদি প্রচুর পরিমাণে ডাল খর অভ্যাস থাকে তাহলে আপনার কিডনির সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা খুব দ্রুত বাড়বে। এ ছাড়া মসুর ডালে অক্সালেটের পরিমাণ বেশি হওয়ায় এই খাবার বেশি পরিমাণে খেলে কিডনিতে পাথর তৈরি করে। তাই দৈনিক ৩০ থেকে ৬০ গ্রামের বেশি মসুর ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।

প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে মসুর ডাল খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা তৈরি হতে পারে। মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এই খাবার গ্যাসের সমস্যা তৈরি করার পাশাপাশি অ্যাসিডিটির সমস্যাও তৈরি করে।

মসুর ডাল দিয়ে তৈরি করা কিছু খাবার 

মসুর ডালে চচ্চড়ি থেকে শুরু করে ডালনা, নিরামিষ, পিঁয়াজু, ডালপুরি, ডালের স্যুপ, আম ডাল, পুঁই ডাল, পাট পাতার ডাল ইত্যাদি অনেক জনপ্রিয়। মসুর ডাল দিয়ে এসব খাবার অনেকেই তৈরি করে খায়।

মন্তব্য: মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা -মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক

সম্মানিত পাঠক বন্ধু শুধুমাত্র মসুর ডাল নয় সবকিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই শরীরের ক্ষতির কারণ থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই সব কিছু নিয়মমাফিক খেতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে সব কিছুই হুমকির কারণ হতে পারে। তাই অবশ্যই নিয়ম করে মসুর ডাল ছাড়াও বিভিন্ন খাবার খেতে হবে। তাহলে আমরা সুস্থ থাকতে পারবো। 

আরো পড়ুনঃ কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা-কাঁঠালে কি কি ভিটামিন পাওয়া যায়? 

আমাদের শেষের কথা 

সম্মানিত পাঠক বন্ধু, আশা করি এই আর্টিকেলটি থেকে অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন। আমরা নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই নিয়মিত আমাদের আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url