লিচু খেলে কি কি উপকার হয়-লিচু খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

লিচু খেলে কি কি উপকার হয়-লিচু খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আমরা আজকে আলোচনা করব লিচু খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা সম্পর্কে। লিচু খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি লিচু খাওয়ার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। এমনই কিছু অজানা তথ্য নিয়ে এই আর্টিকেলে হাজির হয়েছি। নিশ্চয়ই আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনার জন্য খুবই উপকারী হবে। সুতরাং অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

পোস্ট সূচিপত্র: লিচু খেলে কি কি উপকার হয়-লিচু খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

  • ভূমিকা 
  • লিচু খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা 
  • লিচুর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো
  • মন্তব্য

ভূমিকা: লিচু খেলে কি কি উপকার হয়-লিচু খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

লিচু হলো গ্রীষ্মকালীন একটি ফল। বাজারে লিচু উঠতে শুরু করেছে। গ্রীষ্মকালীন এই রসালো ফল খুব কম সময়ের জন্য আসে। স্বাদ ও গন্ধের জন্য লিচু অনেকের কাছেই প্রিয় একটি ফল। শুধু স্বাদই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর এই ফল। লিচু খেতে পছন্দ করেনা এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। লিচু নানা রকম অসুখের থেকে আমাদেরকে দূরে রাখে । লিচু খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি লিচুর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেগুলোর ফলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক লিচু খাওয়ার উপকারিতা এবং ক্ষতিকর দিক সমূহ নিয়ে।

আরো পড়ুনঃ গরমে শরীর সুস্থ রাখার উপায় জেনে নিন

লিচু খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা 

ছবি

লিচু আমাদের অনেক স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু একটি খাবার। এ লিচু খুব অল্প সময়ের জন্য বাজারে আসে। লিচু খাওয়ার অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে। চলুন দেরি না করে উপকারিতা গুলো জেনে নেই-

লিচু খেলে হাড় ভালো থাকে 

লিচুতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ এবং কপার। এসব উপাদান হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে থাকে। অনেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিচু খেলে হাড়ের ভঙ্গুরতা কমে। সেইসঙ্গে হ্রাস পায় অস্টিওপোরোসিস ও ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনাও। তাই হাড় ভালো রাখতে হলে লিচুর সময়টাতে লিচু খেতে পারেন।

লিচু খেলে কিডনি ভালো থাকে 

শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে কিডনি। এই কিডনি ভালো রাখা আমাদের খুবই জরুরী বিষয়। তাই কিডনি ভালো রাখতে হলে অবশ্যই খাবারের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। কিডনি ভালো রাখে লিচু। লিচুতে পর্যাপ্ত পানি এবং পটাসিয়াম থাকার কারণে তা কিডনিতে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এই ফল ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্বও কমায়। এর ফলে কিডনির ক্ষতির ঝুঁকি অনেক কমে যায়।

লিচু ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার

লিচু ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার। লিচুতে পাওয়া যায় ভিটামিন সি, কে, ই এবং বি৬। এতে আছে রাইবোফ্লাভিন এবং নিয়াসিনও। গ্রীষ্মকালে আপনি নিয়মিত লিচু খেলে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি৬ এর দশ শতাংশ পাবেন। এই ভিটামিন রক্তে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে। সেইসঙ্গে আপনাকে রক্ষা করে প্রদাহজনিত রোগ থেকে।

লিচু খেলে শরীরের বিভিন্ন ব্যথা দূর হয়।

শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করতে লিচু খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। লিচু একটি কার্যকরী ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে শুনতে অবাক লাগলেও এটি সত্য কথা। এটি খেলে কমে প্রদাহ। সেইসঙ্গে এটি টিস্যুর ক্ষতি প্রতিরোধ করে।

লিচু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে লিচু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গ্রীষ্মকালীন এই সুমিষ্ট ফল শরীরের বিভিন্ন রকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর অলিগোনল ভাইরাসকে বাড়তে বাধা দেয়। তাই গরমের এই সময়ে নিয়মিত লিচু খেলে বাঁচতে পারবেন সর্দি ও সাধারণ ফ্লু থেকে।

লিচু শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে

যারা ডায়েটে খাবার হিসেবে লিচু খাবার তালিকা রেখেছেন তারা খুবই বুদ্ধিমান এবং সঠিক কাজ করেছেন। কাওয়ালী শশুরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। আর যারা রাখেন নি তাদের ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো আপনি যদি শরীরের ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই খাদ্য তালিকায় লিচুর রাখতে পারেন। লিচুতে রয়েছে ক্যালরি যার ফলে ওজন বাড়ার ভয় থাকে না। আজ যুক্ত খাবার এই লিচু তাই এ লিচু দীর্ঘ সময় পেট ভরে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও নিয়মিত লিচু খেলে হয় যেমন শক্তি বৃদ্ধি পায়।

লিচু হার্ট ভালো রাখে

হার্ট ভালো রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে লিচু। লিচুতে থাকা অলিগোনল, যা নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে এই নাইট্রিক অক্সাইড। এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ভাসকুলার ফাংশন উন্নত করে। এর ফলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সহজ হয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত লিচু খেলে হার্টের অসুখের ঝুঁকি কমে প্রায় ৫০%।

আরো পড়ুনঃ কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা-কাঁঠালে কি কি ভিটামিন পাওয়া যায়? 

লিচুর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো-

লিচু খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি লিচু খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। লিচু খেলে যেমন আপনার শরীরের উপকারে আসবে তেমনি মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। চলুন আমরা নিম্নে জেনে নেই লিচু খাওয়ার বা অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো কি কি হতে পারে।

  • প্রয়োজনের অতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।  
  • অতিরিক্ত লিচু খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে।
  • লিচুতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, জরুরি ফ্যাটি এসিড নেই। ফলে বেশি পরিমাণে লিচু খেলে তা শরীরের স্বাভাবিক ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যায়।
  • খালি পেটে লিচু খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
  • অতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তের গ্লুকোজ কমে যায়।

সুতরাং সুস্বাদু হলেও ইচ্ছেমতো এই লিচু খাওয়ার সুযোগ নেই। তবে দিনে 10 থেকে 12 টি লিচু খাওয়া যেতে পারে। ১০ থেকে ১২টি লিচু খাওয়ার বেশি লিচু খেলে অবশ্যই অতিরিক্ত হয়ে যাবে। যার ফলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বয়স, শরীর, অসুস্থতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পরিমিতভাবে লিচু বা যেকোনো ফল খেতে হবে।

মন্তব্য: লিচু খেলে কি কি উপকার হয়-লিচু খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

সম্মানিত পাঠক বন্ধু লিচু গ্রীষ্মকালীন সুমিষ্ট একটি ফল। এই ফলটি খুব সীমিত সময়ের জন্য বাজারে আসে। এই ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং সুস্বাদু ফল হলেও অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যা আমরা এই আর্টিকেল পড়ে জানতে পারলাম। সুতরাং অবশ্যই আমাদের উচিত হবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত লিচু না খাওয়া। 

আমাদের শেষের কথা

সম্মানিত পাঠক আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আমরা নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনাদের উপকারী আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। তাই নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট অবশ্যই ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url