কমলা গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছে কি কি সার প্রয়োগ হয়

কমলা গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছে কি কি সার প্রয়োগ হয় 

সম্মানিত পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম। আমাদের মোটিভেশন আইটি ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আপনাদের সাথে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে কমলা গাছের পরিচর্যা বিষয় নিয়ে। এই আর্টিকেলে কমলা গাছের পরিচর্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং আর্টিকেলটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে আপনি কমলা চাষ করতে পারবেন এবং কমলা গাছের পরিচর্যা করতে পারবেন। 

পোস্ট সূচীপত্র: কমলা গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছে কি কি সার প্রয়োগ হয় 

  • ভূমিকা 
  • কমলা কোথায় কোথায় চাষ করবেন 
  • কমলার ছাড়া রোপন পদ্ধতি
  • কমলার চারা গাছে সার দেওয়ার পদ্ধতি
  • কমলা গাছের প্রুনিং বা ডাল ছাঁটাইকরণ
  • কমলা গাছের রোগবালাই ও চিকিৎসা
  • ফল সংগ্রহ
  • মন্তব্য

ভূমিকা: কমলা গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছে কি কি সার প্রয়োগ হয় 

ছবি

সম্মানিত পাঠক বন্ধু কমলা আমাদের দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল। আমাদের দেশে বর্তমানে কমলা চাষের প্রবণতা ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক চাষীরা তারা কমলা চাষ করে অনেক লাভবান হচ্ছেন। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তিতে অনেকে কমলা চাষ করছেন। আবার অনেকেই কমলা চাষ কমলা গাছের পরিচর্যার বিষয়ে অবগত নয়। সুতরাং আপনি যদি কমলা চাষ করতে চান তাহলে আপনার জন্য এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে। এমনভাবে এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে যেখানে আপনি কমলা গাছের পরিচর্যা এ টু জেড সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন দেরি না করে শুরু করি।

আরো পড়ুনঃ পেঁপে চাষ পদ্ধতি আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ

কমলা কোথায় কোথায় চাষ করবেন 

সম্মানিত পাঠক বন্ধু মাস্টার টেবিলে ফল হিসেবে কমলার বিকল্প নেই। কমলাপাল টিভি ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। অনেকে রয়েছে যারা জমিতে কমলা চাষ করে থাকেন। এছাড়াও যাদের জমি নেই তারা বাসা বাড়ির ছাদে কমলা উৎপাদন করতে পারেন। টবে বা ড্রামে কমলা চাষ করার সঠিক পদ্ধতি এবং পরিচর্যা জানা অত্যন্ত জরুরী।

কমলার ছাড়া রোপন পদ্ধতি

টব বা ড্রামে কমলা চাষ করতে চাইলে এর জন্য সর্বনিম্ন ১৮/১৮ ইঞ্চি সাইজের টপ বা ড্রাম ব্যবহার করতে হবে। তবে এর থেকে ছোট টবে বা ড্রাম  কমলা চাষ বা কমলার চারা রোপন করা যাবে না। একটি টবে ধারণকৃত মাটির ওজন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কেজি হতে হবে।

কমলার চারা গাছে সার দেওয়ার পদ্ধতি

১৮/১৮ ইঞ্চি মাপের একটি টবের মাটি তৈরি এর সময় মাটির সঙ্গে গোবর বা কম্পোস্ট ০৯ কেজি, ইউরিয়া সার ২০০ গ্রাম, টিএসপি ১৫০ গ্রাম, এমওপি সার ১২০ গ্রাম, জিংক সালফেট ১৫ গ্রাম ও বোরিক এসিড ১৫ গ্রাম হারে সার মিশিয়ে নিতে হবে।

সারগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে নেয়ার পর ১৫ থেকে ২০ দিন পরে গাছ রোপণ করতে হবে। এছাড়া গাছের বৃদ্ধি সঠিক মাত্রায় রাখতে প্রতি মাসে অন্তত একবার করে এক চা-চামচ পরিমাণ NPK / মিশ্র সার এবং ৬০০ গ্রাম গোবর ২.৫ লিটার পানিতে গুলিয়ে টবের গাছের গোড়া থেকে ৫ ইঞ্চি দূরে ঠেলে দিতে হবে। এটি গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

কমলা গাছের প্রুনিং বা ডাল ছাঁটাইকরণ

গাছের সঠিক পরিমাণ এবং ভালো ফলন পেতে অবশ্যই গাছ সঠিকভাবে ছাঁটাই করতে হবে। কমলা গাছে ফল ধরে আগ পর্যন্ত গাছকে ধীরে ধীরে ছাঁটাই করে নির্দিষ্ট আকার আনতে হবে। গাছ বড় হলে ২ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত সব ডাল ছেঁটে দিতে হবে। ছাঁটাইয়ের পর ডালের কাটা অংশে বোর্দো পেস্টের প্রলেপ দিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় গাছে একসঙ্গে প্রচুর ফল আসে। এ কারণে ফলের আকৃতি বড়  হয় না। এর জন্য প্রতিটি ফলের গুচ্ছে দুটি করে সুস্থ সবল ফল রেখে বাকি ফলগুলো ছেঁটে দিতে হবে।

কমলা গাছের রোগবালাই ও চিকিৎসা

কমলা গাছের লিভ মাইনার রোগ

কমলা গাছের লিভ মাইনার একটি মারাত্মক ক্ষতিকারক পোকা। এই পোকা গাছের ছোট ছোট কচি লতা পাতা গুলোকে খেয়ে ফেলে। এছাড়া এ প্রকার আক্রমণ গাছের পাতা গুলোতে আকাবাকা সুরঙ্গের মতো দাগ সৃষ্টি করে। এ অবস্থায় আক্রমণকৃত পাতাগুলোকে ছিঁড়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এছাড়াও হলুদ ফাঁদ তৈরি করে এই পোকা দমন করা সম্ভব। কিন্তু আক্রমণের পরিমাণ অতিরিক্ত হলে লিফ মাইনার পোকা দমন করতে কিনালাক্স-২ এমএল প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এই ওষুধটি প্রতি ২০ দিন অন্তর অন্তর গাছে স্প্রে করলে এ ধরনের পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

কমলা গাছের ড্যাম্পিং অফ রোগ

কমলা গাছে ড্যাম্পিং রোগ হলে গাছের গোড়া পচে যায়। এই রোগটি সাধারণত বর্ষার সময় বেশি দেখা দেয়। এছাড়া অতিরিক্ত পানি শেষ দেওয়ার কারণেও এই সমস্যাটি হয়ে থাকে। এটি দূর করতে রেডোমিল্ড গোল্ড ২ গ্রাম ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছের গোঁড়ায় স্প্রে করতে হয়।

কমলা গাছের গেমোসিস রোগ

কমলা গাছের গেমোসিস রোগ একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগ হলে গাছের কান্ড ও পাতা বাদামি বর্ণ ধারণ করে। গাছের কান্ডগুলো মাঝ বরাবর ফেটে যায়। ফাটা স্থান থেকে কস বের হতে থাকে। এই রোগটির প্রাদুর্ভাবের ফলে গাছটি ওপর কাণ্ড শুকিয়ে মারা যেতে পারে। তাই কমলা গাছে এই রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত ডালের অংশটি কেটে ফেলে দিতে হবে। কাটা অংশে বর্ধক পেস্ট এবং মিশ্রণ লাগিয়ে দিতে হবে। বোর্দো পেস্ট তৈরি করার জন্য ১৫০ গ্রাম চুন ও ৮০ গ্রাম তুঁতে আলাদা আলাদা পাত্রে নিয়ে পরবর্তীতে এক লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন।

 আরো পড়ুনঃ লাউ গাছের পরিচর্যা ও সার প্রয়োগ পদ্ধতি

ফল সংগ্রহ

কমলা ফল পরিপক্ক হলে সঙ্গে সঙ্গে রং বদলাতে শুরু করে। ভালোভাবে পাকার পর ফল সংগ্রহ করলে ফল সুস্বাদু ও মিষ্টি হয় এবং দীর্ঘদিন ফল সতেজ থাকে।

মন্তব্য: কমলা গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছে কি কি সার প্রয়োগ হয় 

সম্মানিত পাঠক বন্ধু তবে বা ড্রামে কমলা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে নিশ্চয় অবগত হতে পারলেন। টবে কমলা চাষের সঠিক পদ্ধতি ও পরিচর্যা মেনে চাষ করতে পারলে ভালো ফলন আশা করা যায়। সুতরাং আশা করব অবশ্যই নিয়ম মেনে কমলা চাষ করবেন এবং লাভবান হবেন। 

শেষের কথা 

সম্মানিত পাঠক বন্ধু আশা করি কমলা চাষের বিষয় নিশ্চয়ই ভালোভাবে বুঝতে এবং জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত কৃষি বিষয়ক আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url