অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম-কিভাবে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হয়
অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম-কিভাবে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হয়
সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। অ্যাসাইনমেন্ট হচ্ছে ছাত্র জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এই অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম জানাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম না জানা থাকলে পরীক্ষায় তেমন ভালো নাম্বার পাওয়া যায় না। তাই সবার আগে এসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম গুলো জানতে হবে। সম্মানিত পাঠক এই পর্বে এসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র: অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম-কিভাবে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হয়
- ভূমিকা
- অ্যাসাইনমেন্ট কি?
- অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে যা যা প্রয়োজন
- অ্যাসাইনমেন্টের কভার পেজ
- অ্যাসাইনমেন্ট কভার পেজ স্কুলের জন্য
- অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নমুনা নিয়ম
- অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম
- অ্যাসাইনমেন্ট তৈরির আগে যে বিষয়গুলো জানা অবশ্যই জরুরী
- উপসংহার
ভূমিকা: অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম-কিভাবে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হয়
ছাত্র জীবন বলেন বা ছাত্রী জীবনী বলেন অ্যাসাইনমেন্ট কম বেশি সবাইকে লিখতে হয়।। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এমন কোন সপ্তাহ ছিল না যে সে সপ্তাহে অ্যাসাইনমেন্ট ছিল না। অ্যাসাইনমেন্ট হলো পড়াশোনার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের মেধা যাচাই এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে থাকেন। তাই অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজ আমরা সেসব নিয়মাবলী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃ বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার ১৫টি জাদুকরী উপায়
অ্যাসাইনমেন্ট কি?
সম্মানিত পাঠক প্রথমেই আমরা জানবো আসলে অ্যাসাইনমেন্ট জিনিসটা কি। আমরা আগেই বলেছি পড়াশোনার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে অ্যাসাইনমেন্ট। এটা বাড়ির প্রতিদিনের কাজের মত একটি কাজ। কারণ বাড়িতে বসে ছাত্র ছাত্রীরা অ্যাসাইনমেন্ট লিখে থাকেন। শিক্ষকরা যেকোনো একটি বিষয়ের উপর অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে থাকেন। সেই বিষয়ের উপর ছাত্র-ছাত্রীরা গবেষণা করে অ্যাসাইনমেন্ট লিখে থাকেন। অ্যাসাইনমেন্ট টপিক এর উপর ভিত্তি করে তারা প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত উপস্থাপন করে থাকে। এর সাথে লিখিত বিষয়বস্তু থাকে এবং কখনো কখনো ব্যবহারিক বিষয় ও থাকে।
অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে যা যা প্রয়োজন
অ্যাসাইনমেন্ট এর উপস্থাপন খুব সুন্দর হতে হয়। তাই সুন্দর উপস্থাপনের জন্য অ্যাসাইনমেন্টের বেশ কিছু জিনিসপত্র প্রয়োজন হয় যেমন-
- A4 সাইজের অফসেট কাগজ।
- কালো বলপেন।
- নীল রঙের সাইনপেন
- মার্জিন করার জন্য পেনসিল ও স্কেল।
- অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়ের বই।
- ইন্টারনেট, খবরের কাগজ বা অন্য কোন উপায়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে থাকলে তার কাগজপত্র ইত্যাদি।
অ্যাসাইনমেন্টের কভার পেজ
অ্যাসাইনমেন্ট কভার পেজ লেখার নিয়ম হিসেবে নিম্নে দুই ধরনের কভার পেজ দিলাম। অ্যাসাইনমেন্টের জন্য কভার পেজ সুন্দরভাবে লেখা খুব জরুরী। এসাইনমেন্টের কভার পেজটি খুব সুন্দর করে লিখতে হয়। প্রথমে লিখতে হবে প্রতিষ্ঠানের নাম। তারপর ক্রমান্বয়ে নিজের নাম, শ্রেণী, শাখা, রোল নাম্বার, বিষয়, বিষয় শিক্ষকের নাম, বিভাগ, তারিখ ইত্যাদি লিখতে হবে।
অ্যাসাইনমেন্ট কভার পেজ স্কুলের জন্য
অ্যাসাইনমেন্ট এই বিষয়গুলো খুব সুন্দর ভাবে অক্ষরে অক্ষরে স্পষ্ট করে লিখতে হয়। তবে হাতে না লিখে কম্পিউটার দিয়ে ডিজাইন করেও লেখা যায়। তাতে করে কভার পেজটা আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় হবে। খাতার উপরে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের লোগো দেওয়া উচিত। অ্যাসাইনমেন্ট যদি খুব বড় করে লিখতে হয় তাহলে অনেকগুলো বিষয়ের সাথে একসাথে তাহলে কবার পেজের পরে সূচিপত্র দেওয়া যেতে পারে। এতে করে পাঠকের নির্ধারিত বিষয়টি খুঁজে পেতে সহজ হয়।
অ্যাসাইনমেন্ট সাধারনত তিনটি ভাগে লিখতে হয়।
- প্রথম ভাগে ভূমিকা দিতে হয়
- দ্বিতীয় ভাগে মূল অংশ
- এবং সর্বশেষ ভাগে উপসংহার দিতে হয়।
অ্যাসাইনমেন্টের ভুমিকা অংশে অ্যাসাইনমেন্টের নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত একটি ধারণা দিতে হয়। এই অংশটি পড়ে মূলত পাঠক পুরো বিষয়টির উপর স্বচ্ছ একটি ধারণা পাই। কাজেই এটি হতে হবে সহজ এবং বোধগম্য।
ভূমিকার পরে শুরু হবে অ্যাসাইনমেন্টের মূল অংশ। মূল অংশে বিষয়বস্তুর উপর বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া থাকে। খুব সুন্দর এবং সাবলীল ভাষায় পুরো বিষয়বস্তুটি উপস্থাপন করতে হবে। এমন ভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন শিক্ষক বা পাঠক সহজেই বিষয়টির উপর পূর্ণ ধারণা লাভ করতে পারে। এসাইনমেন্টের মূল অংশে প্রয়োজনীয় তথ্য সুন্দর হবে সাজানো থাকতে হবে।
অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা প্রকাশ পায় এবং কে কত সুন্দর ভাবে অ্যাসাইনমেন্ট উপস্থাপন করতে পেরেছে সেটাতে তার দক্ষতা প্রকাশ পায়। সুতরাং এই বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। অ্যাসাইনমেন্ট এর সর্বশেষ অংশ হচ্ছে উপসংহার। অ্যাসাইনমেন্টের ওপর ইতি টানতে হয় এই উপসংহার অংশে। বিষয়টির ফলাফল সম্পর্কে বলে শেষ করতে হয়।
অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নমুনা নিয়ম
সম্মানিত পাঠক আমরা উপরের অংশে জানতে পারলাম অ্যাসাইনমেন্ট লেখার বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন এবং পর্বগুলো সম্পর্কে। এবার আমরা একটি নমুনা অ্যাসাইনমেন্ট লিখে দেখাবো। চলুন একটি নমুনা অ্যাসাইনমেন্ট লিখা যাক। এই এসাইনমেন্টটি লেখা হল খুব সংক্ষিপ্ত আকারে বোঝার সুবিধার্থে। সাধারণত অ্যাসাইনমেন্ট গুলো আরো বড় হয়।
অ্যাসাইনমেন্ট নমুনা
মানবকল্যাণ স্কুল এন্ড কলেজ
শিক্ষার্থীর নাম: অনন্যা
শ্রেণী: ৭ম শ্রেণী
শাখা: ক
রোল: ০২
বিষয়: গ্রাহস্থ অর্থনীতি
বিষয় শিক্ষকের নাম: ম্যাডাম টুম্পা
তারিখ: ১১-০৫-২০২৪
বিষয়ের শিরোনাম: লাল শাক রান্নার পদ্ধতি
লাল শাক হচ্ছে একটি সবজি জাতীয় খাবার। লাল শাকে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। লালশাক প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। আজ আমরা লাল শাক রান্না করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
লাল শাক রান্না করার ক্ষেত্রে প্রথমে লাল শাকের ডাঁটি কেটে আলাদা করে নিতে হবে। লাল শাক কাটা হয়ে গেলে তারপর পানি পরিষ্কার নিরাপদ পানি দিয়ে লাল শাক ভালোভাবে কয়েকবার ধরে নিতে হবে। শাক বাসার সময় অবশ্যই পোকা যাতে না থাকে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। লাল শাক ধোয়ার পর পানি ভালো হবে নিংড়ে নিতে হবে।
নিংড়ানোর জন্য অবশ্যই ছাঁকনি ব্যবহার করা যেতে পারে। লালশাক রান্নার জন্য চুলায় কড়ায়ে দিতে হবে। লালশাক কুচিগুলো পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে এবং পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর অতিরিক্ত পানি থাকলে তা ফেলে দিতে হবে। লাল শাক সিদ্ধ হয়ে গেলে কড়াইতে তেল গরম করে তাতে সিদ্ধ লাগছে লাল শাক দিয়ে সামান্য হলুদ মরিচ পেঁয়াজ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। লালশাক ভালোভাবে মিশে গেলে নামিয়ে নিতে হবে।
পরিশেষে বলা যায় উপরোক্ত পদ্ধতিতে লাল শাক রান্না করলে লাল শাকের পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে এবং রান্না খুব সুস্বাদু হবে।
অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম
- অ্যাসাইনমেন্ট লিখার সময় খাতাতে অবশ্যই পেন্সিল দিয়ে মার্জিন টানতে হবে।
- অ্যাসাইনমেন্ট ডান দিক থেকে লিখতে হয়। বাম দিক থেকে লিখলে অসুবিধা নেই কিন্তু আদর্শ অ্যাসাইনমেন্ট লেখা সব সময় এক পাশেই হয়।
- অ্যাসাইনমেন্ট ছোট ছোট বাক্যতে লিখতে হবে
- অ্যাসাইনমেন্ট লিখার ক্ষেত্রে পরিচিত শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
- লিখায় কোন কাটাকাটি করা যাবেনা।
- অ্যাসাইনমেন্ট খাতার সুন্দর উপস্থাপনের জন্য নীল কালি দিয়ে পয়েন্টগুলোকে ভালোভাবে লিখতে হবে।
- অ্যাসাইনমেন্টের শেষে একটি খালি কাগজ সংযুক্ত করতে হবে।
অ্যাসাইনমেন্ট তৈরির আগে যে বিষয়গুলো জানা অবশ্যই জরুরী
অ্যাসাইনমেন্টের মূল টপিক ভালোভাবে বুঝতে হবে। তার জন্য প্রশ্নটি আগে ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। অন্য কারো দেখে দেখে এসাইনমেন্ট তৈরি করা উচিত নয়। কারণ অ্যাসাইনমেন্ট লিখার উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীর বুদ্ধিবৃত্তি মেধা চিন্তা চেতনা এবং সৃজনশীলতার উদ্ভব ঘটানো। কারোর দেখে দেখে অ্যাসাইনমেন্ট লিখলে তার মেধাবী কাজ পায় না। কারো দেখে অ্যাসাইনমেন্ট লিখলে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে না। অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে অবশ্যই স্টাইলিশ অক্ষর পরিত্যাগ করতে হবে। অ্যাসাইনমেন্টের সবগুলো অক্ষরের মাপ একই থাকতে হবে। নিয়মকানন মেনে অ্যাসাইনমেন্ট লিখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ পড়া মনে রাখার সহজ উপায়গুলো জেনে নিন
উপসংহার: অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম-কিভাবে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হয়
সম্মানিত পাঠক এ পর্যন্ত ছিল আজকে অ্যাসাইনমেন্ট লেখার সংক্ষিপ্ত নিয়মাবলী। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম সম্পর্কে আর কোন সমস্যা থাকবে না। আর্টিকেলটি পরে যদি বুঝতে কোন সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
আমাদের শেষের কথা
সম্মানিত পাঠক আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়মাবলী সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেয়েছেন। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আমরা নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। তাই নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url