আদা খাওয়ার উপকারিতা-প্রতিদিন কতটুকু আদা হওয়া উচিত

আদা খাওয়ার উপকারিতা-প্রতিদিন কতটুকু আদা হওয়া উচিত 

সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজকে আপনাদের সামনে নিয়ে হাজির হয়েছি আদা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আদা খাওয়ার অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। এছাড়া আদা খাওয়ার নির্দিষ্ট পরিমাণও রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত এই আর্ট জেলা আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

ছবি

সূচনা:আদা খাওয়ার উপকারিতা-প্রতিদিন কতটুকু আদা হওয়া উচিত 

আদা এমন একটি মসলা যা সব দেশেই পাওয়া যায়। প্রথমদিকে এসিআই জন্মালেও এটি পৃথিবী জুড়ে এখন ছড়িয়ে পড়েছে এবং এর জনপ্রিয়তা অনেক। আদা আমাদের দেশের প্রায় সব বাসায় পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরিতে এবং রেসিপি রান্না করতে আধা ব্যবহার করা হয়। আদা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো আদা খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা সম্পর্কে। এবং প্রতিদিন আমাদের কতটুকু পরিমাণ আদা খাওয়া উচিত এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

আরো পড়ুনঃ জাম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা- অতিরিক্ত জাম খেলে কি ক্ষতি হয়

আদা খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা

আদা ক্যান্সার দূরে রাখে

ক্যান্সার হচ্ছে জীবন ধ্বংসকারী একটি রোগ। এই জীবন ধ্বংসকারী রোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই আদা খেতে হবে। কেননা আদা ক্যান্সার দূরে রাখে। আদা নিয়ে অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, আদা ক্যান্সারের মূল ধ্বংস করতে পারে। ৬-শোগাওল আদার এমন একটি উপাদান যা স্তন ক্যান্সার কোষের মূল কারণকে নির্মূল করতে পারে। আদা খেলে স্তন ক্যান্সারের স্টেম সেল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় বা সেগুলো বৃদ্ধি কমে আসে।

আদা ওজন কমাতে কাজ করে

আদা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। আপনার ওজন কমানোর জন্য ডায়েট কন্ট্রোলের খাবার হিসেবে আদা রাখতে পারেন। আদতে রয়েছে জিঞ্জেরল এবং শোগাওল নামক দুই উপাদান। এই দুই উপাদান শরীরের জৈবিক ক্রিয়াকলাপে সাহায্য করে। এই উপাদানগুলো বিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। 

বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরিতে আদার গুঁড়া বা আদা বাটা ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে আদা কাঁচা ও খেতে পারেন। প্রতিদিন সকালে উঠে খালি পেটে আদা-পানি পান করতে পারেন। শুধুমাত্র আদা খেলেই ওজন কমবে এমন কথা না, সেইসঙ্গে আপনাকে সঠিক খাবার খেতে হবে ও পর্যাপ্ত ব্যায়াম করতে হবে। 

আদা মর্নিং সিকনেস দূর করে

যারা গর্ভবতী নারী রয়েছেন তাদের প্রথম তিন মাস মর্নিং ফিটনেস দেখা দিতে পারে। বারবার বমি বমি ভাব শরীর ক্লান্ত হওয়া বমি হওয়া এ অবস্থাগুলো সৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে অসুস্থ থাকেই। সামান্য আদা চিবিয়ে খেলে এ ধরনের সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আদা খাবেন। কেননা অতিরিক্ত আদা খেলে গর্ভাবস্থায় মিসক্যারেজের কারণ হতে পারে আদা।

তাছাড়া অনেক ব্যক্তি রয়েছে যাদের গাড়িতে উঠলে বা সমুদ্রে গেলে বমি হয়। এ ধরনের সমস্যা দূর করতে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া যারা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এমন রোগীদের ক্ষেত্রেও বমি বা বমি বমি ভাব দূর করতে কাজ করে এই উপকারী মসলা।

আদা ‌অ্যাসিডিটি দূর করে

আদা এসিডিটি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যাদের এসিডিটির কারণে বুক জ্বালাপোড়া করে তারা নিশ্চয়ই জানেন এটা কতটা অস্বস্তিদায়ক বিষয়। এই অস্বস্তিদায়ক বিষয় দূর করতে হলে আদা খেতে হবে। পেটের অ্যাসিড খাদ্যনালীতে উঠে এলে এসিডিটির সমস্যা দেখা দেয় তখন এ কারণে বুক ও গলায় জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয় এবং কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু খাবার অ্যালকোহল এবং জেনেটিক কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। 

ছবি

এই এসিডিটি দূর করার জন্য ওষুধ কাজ না করলে তখন আপনি কি করবেন? তখন এই সমস্যার সমাধান করতে আদা খেতে হবে এতে অনেকটাই উপশম পাওয়া সহজ হবে। আদা খেলে অতিরিক্ত এসিডিটির উৎপাদন কমে যায় এবং পেট আরাম থাকে। বকবো গলা জ্বালাপোড়া হলে কাঁচা বা চিবিয়ে খান। তাছাড়া চাও মধুর সঙ্গে আদার রস মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে এসিভিটি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকটাই সহজ।

আদা ইনফেকশনের ভয় কমায়

আদা তে রয়েছ জিঞ্জেরল নামক উপাদান যা ইনফেকশনের আশংকা দূর করার জন্য পরিচিত। এই উপাদান নিরাময় প্রক্রিয়া দ্রুত করার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে দেয় না। আদা খেলে কিছু ইনফেকশনের ভয় দূর হয়। সাধারণ কিছু ইনফেকশন এবং ভাইরাসের ক্ষেত্রে আদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। যেমন ঠান্ডা কাশি। প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে তিন কাপ গরম পানির সাথে আদা মিশিয়ে খেলে বিভিন্ন ধরনের ফ্লু দূর করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবে। এছাড়াও আধা পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।

অতিরিক্ত আদা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক

পৃথিবীজুড়ে অসংখ্য মানুষ রয়েছে যারা বিভিন্ন রোগের নিরাময় হিসেবে আদা ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত আদা খাওয়ার ফলে অনেক অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতিরিক্ত আদা খেলে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়। আদা কাঁচা, গুঁড়া করে, রান্না করে নানাভাবেই খাওয়া যায়। এই মসলা কিছু পরিচিত অসুখের ঘরোয়া সমাধান হিসেবেও কাজ করে। প্রতিদিন আদা খেতে শুরু করলে কী হতে পারে? এটি অতিরিক্ত খাওয়া কি ক্ষতিকর? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

অতিরিক্ত আদা খাওয়ার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। অতিরিক্ত আদা খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দিতে পারে হৃদযন্ত্রের গতি বেড়ে যাওয়া। দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া এবং অনিদ্রাও হতে পারে অতিরিক্ত আদা খাওয়ার ফলে। তাই হৃদ যন্ত্র ভালো রাখতে হলে অবশ্যই আদা খাওয়ার বিষয় সতর্ক থাকতে হবে।

কতটুকু পরিমান আদা খাওয়া উচিত 

অনেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন মানুষ দৈনিক ৫ গ্রাম পর্যন্ত আদা খেতে পারবেন। ওজন কমানোর জন্য মাত্র ১ গ্রাম আদা খাওয়ায় যথেষ্ট। যারা গর্ভবতী, তারা দৈনিক ২.৫ গ্রাম পর্যন্ত আদা খেতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ লিচু খেলে কি কি উপকার হয়-লিচু খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

আমাদের শেষের কথা 

সম্মানিত পাঠক আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আদা খাওয়ার উপকারিতা এবং অতিরিক্ত আদা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আরো জানতে পারলেন দৈনিক কতটুকু পরিমাণ আদা খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে। সম্মানিত পাঠক আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url