তীব্র গরমে নবজাতকের যত্ন কিভাবে নিবেন-গরমে শিশুর যত্ন

তীব্র গরমে নবজাতকের যত্ন কিভাবে নিবেন-গরমে শিশুর যত্ন

সম্মানিত পাঠক আসসালামুয়ালাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। সম্মানিত পাঠক এই তীব্র গরমে নবজাতকের যত্ন কিভাবে নিবেন সেই বিষয়ে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন তাহলে দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক। অনুরোধ করব অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন। 

ছবি

পোস্ট সূচিপত্র: তীব্র গরমে নবজাতকের যত্ন কিভাবে নিবেন-গরমে শিশুর যত্ন

  • ভূমিকা 
  • শিশুদের গ্রীষ্মকালীন রোগ-বালাই
  • তীব্র গরমের শিশু ও নবজাতকদের ক্ষেত্রে করণীয় 
  • নিরাপদ পানি ও পানিজাতীয় খাবার
  • গরমে শিশুর জন্য সুষম খাবার
  • শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা
  • শিশুর পোশাক
  • মন্তব্য

ভূমিকা: তীব্র গরমে নবজাতকের যত্ন কিভাবে নিবেন-গরমে শিশুর যত্ন

গ্রীষ্মের এই অসণীয় গরম থেকে রক্ষা পেতে প্রাপ্তবয়স্করাও একটু পরপর চোখে মুখে ঝাপসা দেখছে। কৃষ্ণা লাগছে ঘনঘন রোদে বের হতে ছাতা সঙ্গে রাখছে চশমা ব্যবহার করছে কাজ করতে করতে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু শিশু নবজাতকদের বেলায় কি হচ্ছে? শিশুগত ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না যে রোদে এবং গরমে তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। তাই গরমের সময় তাদেরকে বিভিন্ন রোগবালার হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে, বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। চলুন জেনে না না যাক এই গরমে শিশুদের কিভাবে যত্ন নেওয়া যায় সেই বিষয়ে।

আরো পড়ুনঃ শিশুর যত্নে পুষ্টিকর খাবার-কিভাবে শিশুর খাদ্যাভ্যাস তৈরি করা যায়

শিশুদের গ্রীষ্মকালীন রোগ-বালাই

বছরের সবচেয়ে গরম এবং উষ্ণতম মাস হচ্ছে এপ্রিল মাস। এ মাস যারা শিশু বা নবজাতক রয়েছে তাদের জন্য খুব ভয়াবহ একটি মাস। এপ্রিলে শিশুরা সাধারণত ডায়রিয়া সহ নানা ধরনের চর্মরোগ, ভাইরাস জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়।

 এসময় হাসপাতালে রোগীর উপচে পড়া ভীড় থাকে। গরমের সময় বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস গুলো বেশি পরিমাণে জন্মায় এজন্য শিশুদের এই ধরনের সময় রোগবালাই বেশি হয়। এছাড়া, “চর্মরোগ ছোয়াঁচে হওয়ায় ছড়ায় বেশি। গরমের জন্য বাচ্চাদের বাইরে বড়দেরও এটি হচ্ছে।”

গরমে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস, প্যারাসাইটজনিত রোগ বাড়ে। কারণ তাপমাত্রার সাথে এগুলোর সংক্রমণ বৃদ্ধির একটি সম্পর্ক আছে। এছাড়াও এই তীব্র গরমে শিশুদের ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার বাইরেও বাংলাদেশে এইসময় চিকেন পক্স বা জলবসন্ত, রুবেলা, মাম্পস, স্ক্যাবিস বা খোঁসপাচড়া ইত্যাদি রোগ বেড়ে যায়।

তীব্র গরমের শিশু ও নবজাতকদের ক্ষেত্রে করণীয় 

এই সময় অতিরিক্ত রোদ থেকে শিশুদের সাবধানে রাখা উচিৎ। কেননা রোদের শিশুদের নিয়ে গেলে পানি ফলতা দেখা দিতে পারে। শিশুদের খেলাধুলা যাতে কোন ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য “শিশুদের জন্য ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা” রাখতে হবে।

নিরাপদ পানি ও পানিজাতীয় খাবার

গরমের সময় শিশুদের বা নবজাতকদের শরীরে যাতে পানিশূন্যতা দেখা না দেয়, তাই গরমের সময় তরল খাবারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তবে ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের পানি পান করানোর কোনও প্রয়োজন নেই। তাদেরকে এসময় “আর্টিফিশিয়াল মিল্ক না দিয়ে ব্রেস্ট ফিডিং” করানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা।

ছবি

যেসব শিশুদের বয়স এক থেকে দুই বছর, তাদের জন্য দৈনিক চার কাপ ও স্কুলে যায় এমন শিশুদের ।প্রতিদিন  আট কাপ পরিমাণ পানি পান করা উচিৎ। এছাড়া, যারা প্রাপ্তবয়স্ক শিশু, তাদেরকে এ সময় ফল, ফলের শরবত, সালাদ ইত্যাদি খাওয়ানো উচিৎ। যেমন, তরমুজ। তরমুজের ৬০-৭০ শতাংশই হল পানি।

গরমে শিশুর জন্য সুষম খাবার

গরমের সময় শিশুদের সুষম খাদ্য প্রদান করার নির্দেশ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। সুষম খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের খাবার রয়েছে যেগুলো নিয়মিত রাখতে বলেন ডাক্তাররা। মূলত, একটি শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ইত্যাদি সঠিক পরিমাণে থাকা জরুরী।

তাই, এসময় শিশুদেরকে মৌসুমি ফলমূলের পাশাপাশি সহজে হজমযোগ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়াতে হবে। যেমন- দুধ, ডিম, ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি।

শিশুদের জন্য আরামদায়ক ঘর

শিশুদের জন্য আরামদায়ক ঘর নিশ্চিত করার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেখানে এই তীব্র গরম প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরা হাঁসফাঁস হয়ে উঠে সেখানে শিশুদের জন্য অবশ্যই আরামদায়ক ঘর নিশ্চিত করতে হবে। এই গরমের সময় শিশুর যাতে হিটস্ট্রোক না হয়, সেজন্য ঘরে প্রাকৃতিকভাবেই আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কিছু পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। আনন্দ ঘরের জন্য অবশ্যই সকল দশটার পর ঘরের জানালা দরজা বন্ধ করে দিতে হবে। 

কারণ রোদ গরম হয়ে গেলে ঘরের যাইতে বাইরের বাতাস গরম থাকে। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর সন্ধ্যার সময় ঘরে জানালা দরজা খুলে দিতে হবে। ঘরের বিভিন্ন কোণে গামলার মাঝে বরফ রেখে যদি পানি রাখা হয়, তাহলে রুমগুলো থেকে আস্তে আস্তে তাপমাত্রা কমে যাবে। ঘরের জানালাগুলোয় শাড়ি বা কাপড় ভিজিয়ে রাখতে হবে। এটা তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাহলে ঘর ঠান্ডা হবে। আর ঘর আরামদায়ক হলে শিশুরা নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারে।

শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা

গরমের সময় বিভিন্ন রোগে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই বিভিন্ন রং থেকে শিশুদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই গরমের সময় শিশুর পরিছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। সময় মত শিশুদেরকে সাবান দিয়ে নিয়মিত গোসল করাতে হবে এবং গোসলের পর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। এই সময় শিশুদের অবশ্যই ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে। কারণ ধুলাবালিতে খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে।

আর অতিরিক্ত গরমের কারণে শিশু বারবার ঘেমে গেলে অবশ্যই একটি পাতলা কাপড় বা গামছা দিয়ে বারবার তার ঘাম মুছে দিতে হবে। কারণ ঘাম যদি শরীরেই শুকিয়ে যায়, তাহলে তা থেকে শিশুদের জ্বর হতে পারে।

শিশুর পোশাক

গরমের সময় নবজাতক বা শিশুর অবশ্যই পোশাকের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। গরমকালে শিশু কী ধরনের পোশাক পরছে, সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। গরমের সময় শিশুদেরকে ঢিলেঢালা পাতলা সুতি কাপড় পরানোর ও নবজাতকদেরকে কাপড়ে মুড়িয়ে না রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। সবচেয়ে ভালো হয় শিশুদের সাদা কাপড় পরালে।কারণ শিশুর শরীরে র‍্যাশ এড়াতে বা ঘামাচির কষ্ট লাঘব করতে এটা খুব সহায়ক।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চার বুদ্ধির বিকাশে দশটি জরুরি খাবার

মন্তব্য: তীব্র গরমে নবজাতকের যত্ন কিভাবে নিবেন-গরমে শিশুর যত্ন

সম্মানিত পাঠক বন্ধু গরমের সময় নবজাতক বার শিশুদের অনেক কষ্ট হয়ে থাকে। শিশুরা যাতে আরাম আয়েশা পরামর্শে থাকতে পারে সেই বিষয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাহলে এখানে ধরনের রোগ বালাই এবং বিভিন্ন ধরনের কষ্ট থেকে শিশুরা আরাম পাবে। 

আমাদের শেষের কথা 

সম্মানিত পাঠক আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক কিছু জানতে পারলেন। পরে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। নিয়মিত আমাদের আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url