ইসলামে কোন নারিকে বিয়ে করা উত্তম-মেয়েরা কোন ছেলেদেরকে বিয়ে করতে চায়?
ইসলামে কোন নারিকে বিয়ে করা উত্তম-মেয়েরা কোন ছেলেদেরকে বিয়ে করতে চায়?
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আসসালামুয়ালাইকুম। ইসলাম ধর্ম হলো মুসলমানদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামের বিধি-বিধান অনুযায়ী চলাফেরা করতে হয়। সেক্ষেত্রে জীবনের একটি অন্যতম ফরজ দিক হচ্ছে বিয়ে করা। ইসলাম ধর্ম বিয়েকে ফরজ করেছে। সব নারী বা পুরুষকে বিয়ে করতে ইসলাম ধর্মে নিষেধ করা হয়েছে। ইসলাম ধর্মে কোন নারীকে বিয়ে করা উত্তম বা কোন ছেলেদেরকে বিয়ে করতে চাই মেয়েরা এই বিষয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং অবশ্যই শেষ পর্যন্ত জানতে হলে আর্টিকেলটি পুরোটাই পড়বেন।
পোস্ট সূচিপত্র: ইসলামে কোন নারিকে বিয়ে করা উত্তম-মেয়েরা কোন ছেলেদেরকে বিয়ে করতে চায়?
- ভূমিকা
- বিয়ের জন্য চারটি বিষয় জানা জরুরী
- যে নারীকে বিয়ে করার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে
- বিয়ের জন্য মেয়েরা যেমন ছেলে পছন্দ করে
- মন্তব্য
ভূমিকা: ইসলামে কোন নারিকে বিয়ে করা উত্তম-মেয়েরা কোন ছেলেদেরকে বিয়ে করতে চায়?
বিয়ের মাধ্যমে নারী-পুরুষের জীবনের মধু সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হাদিসে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে বিয়ের জন্য আদেশ করেছেন। একজন পুরুষের কন্যা নির্বাচনের ক্ষেত্রে চারটি বিষয়ের উপর নজর রাখা জরুরী। আর এর মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে দ্বীনদার। হাদিসে এসেছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নির্দেশনা দিয়েছেন- চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদের বিয়ে করা হয়-চলুন জেনে নেয়া যাক কোন চারটি বিষয়।
আরো পড়ুনঃ নারীদের জাহান্নামে যাওয়ার কারণ
বিয়ের জন্য চারটি বিষয় জানা জরুরী
- তার সম্পদ
- তার বংশমর্যাদা
- তার সৌন্দর্য
- তার দ্বীনদারী
হাদিসে এসেছে-
সুতরাং তুমি দ্বীনদারীকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (বুখারি ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, মুসনাদে আহমাদ ৯৫২৬)
যে নারীকে বিয়ে করার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে
হাদিসে এসেছে একজন পুরুষ একজন মেয়েকে স্ত্রীরূপে বরন করার জন্য অবশ্যই চারটি দিক খেয়াল রাখতে হবে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশ ও দ্বীনদারী। এ গুণ চারটির মধ্যে সর্বশেষে উল্লেখ করা হয়েছে দ্বীনদারী ও আদর্শবাদিতার গুণ। আর এ গুণটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সবার আগে গণ্য করা হয়েছে এবং সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মূলকথা হলো- দ্বীনদারীর গুণসম্পন্না মেয়ে পাওয়া গেলেই যেন তাকে স্ত্রীরূপে বরণ করা হয়।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- বিয়ের জন্য কোন ধরনের মেয়ে উত্তম? উত্তরে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে স্ত্রীকে দেখলে স্বামী আনন্দ পায়, তাকে যে কাজের আদেশ করা হয় তা সে যথাযথ পালন করে এবং তার নিজের স্বামীর ধন মালের ব্যাপারে স্বামীর পছন্দের বিপরীত কোনো কাজই করে না- (মুসনাদে আহমাদ)
চারটি গুণের মধ্যে দ্বীনদার হওয়ার গুণটি গুরুত্বপূর্ণ শুধু তাই নয় এসবগুন যার মধ্যে নেই, অন্যান্য যতই গুণ থাক না কেন ইসলামের দৃষ্টি বিয়ের জন্য সে অগ্রাধিকার যোগ্য নয়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর আদেশ অনুযায়ী দ্বীনদার গুণ বঞ্চিতা নারী বিয়ে করা উচিত নয়।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের কেবল তাদের রূপ-সৌন্দর্য দেখেই বিয়ে করো না। কেননা এরূপ সৌন্দর্যই অনেক সময় তাদের ধ্বংসের কারণ হতে পারে। তাদের ধন-মালের লোভে পড়েও বিয়ে করবে না, কেননা এ ধনমাল তাদের বিদ্রোহী ও অনমনীয় বানাতে পারে। বরং তাদের দ্বীনদারীর গুণ দেখেই তবে বিয়ে করবে। বস্তুত (বিয়ের জন্য) একজন দ্বীনদার কৃষ্ণাঙ্গ দাসীও কিন্তু অনেক ভালো।’ (ইবনে মাজাহ, বাযযার, বায়হাকি)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব অবিবাহিত যুবককে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করে বিয়ে করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিয়ের জন্য মেয়েরা যেমন ছেলে পছন্দ করে
জীবনসঙ্গী নিয়ে মেয়েদের জীবনে অনেক প্রত্যাশা থাকে। পুরুষের এমন কিছু গুণ রয়েছে যে গুন গুলো তাদের মুগ্ধ করে এবং আকৃষ্ট করে। নিম্নের এসব বৈশিষ্ট্য একজন পুরুষের মাঝে থাকলে তাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করতে মেয়েদের খুব সহজ হয়। একজন পুরুষের মধ্যে মেয়েরা কোন কোন গুণগুলোকে খুঁজে সেগুলো জানা আছে কি? জানা থাকলে চলুন জেনে নেই কি সেই বৈশিষ্ট্য গুলো-
পরিণত
ছেলেমানুষি করে এমন স্বভাবের কোন পুরুষকে মেয়েরা বিয়ে করতে চায় না। কারণ তারা একটি আস্থা ও ভরসার পাত্র খুঁজে পেতে চাই। সেটি খুঁজে পেলে তার জীবন সঙ্গী করা খুব সহজ হয়। তাই আবেগের বসতি চঞ্চল জীবনসঙ্গী মেয়েরা চায় না। বরং তারা পুরুষের মধ্যে খোঁজেন পরিণতমনস্কতা। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, এমন পুরুষই তাদের বেশি পছন্দ।
যোগাযোগ রাখা
মেয়েরা তাদের জীবনসঙ্গী হিসেবে এমন একজন পুরুষ চাই যেখানে যোগাযোগটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য যোগাযোগ ধরে রাখা জরুরি। যদি সেই পুরুষটি সব ধরনের সমস্যা অনুভূত এবং উপলব্ধি করতে পারেন তাহলে এমন পুরুষ মেয়েরা হাতছাড়া করতে চায় না। মেয়েরা এমন পুরুষ চায় যে তার সব সময় খোঁজ খবর নিবে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে সব সময় যোগাযোগ করবে।
প্রতিশ্রুতি
মেয়েরা প্রতিশ্রুতি নিতে খুব পছন্দ করে। অনিশ্চয়তার দোলাচলে তার দুলতে চায় না। তাই তারা এমন পুরুষকেই পছন্দ করে যে কথা দিয়ে কথা রাখে। জেতার হাজারো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
সমস্যার সমাধান
মানসিক দিক দিয়ে শক্তিশালী পুরুষকে মেয়েরা সবচাইতে বেশি অগ্রাধিকার দেয়। যে পুরুষের কাছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান পাওয়া যায় জীবনসঙ্গী হিসেবে তাকে বেছে নেওয়া যায়। যে পুরুষ গুলো মেয়েদের সমস্যার সমাধান করতে এগিয়ে আসে তাদের বেশি পছন্দ করে মেয়েরা।
মন দিয়ে কথা শুনলে
মেয়েরা এমন ছেলেদের ভালবাসে বা পছন্দ করে যারা তাদের কথাকে মূল্যায়ন করে গুরুত্ব দেয় এবং মন দিয়ে তাদের কথা শোনে। তাইতো মন দিয়ে কথা শুনলে তাকে মন দিতে দেরি করে না তারা। কোনো পুরুষ মন দিয়ে কথা শুনলে নিজেকে তার চোখে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে মেয়েরা।
আরো পড়ুনঃ মহিলাদের নামাজে ২৬ টি মারাত্মক ভুল জেনে নিন
মন্তব্য: ইসলামে কোন নারিকে বিয়ে করা উত্তম-মেয়েরা কোন ছেলেদেরকে বিয়ে করতে চায়?
সম্মানিত পাঠক বন্ধু ইসলাম ধর্ম হচ্ছে মুসলমানদের জন্য একটি পবিত্র ধর্ম এবং পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। ইসলাম ধর্মে যেমন আদেশ করেছে তেমনি মুসলমানদের পালন করা উচিত। আপনারা খুঁজে বের করা উচিত এমন জীবনসঙ্গী যার মধ্যে ইসলামে নির্দেশনার গুণগুলো রয়েছে। সুতরাং অবশ্যই আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে চালিত করবেন।
আমাদের শেষের কথা
সম্মানিত পাঠক বন্ধু আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আমরা নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ক আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই আমাদের সাথে থাকতে হলে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url