চোখের যত্ন কিভাবে নিবেন-চোখের সমস্যার সমাধানে করণীয়

চোখের যত্ন কিভাবে নিবেন-চোখের সমস্যার সমাধানে করণীয়

সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। সম্মানিত পাঠক আজকে আলোচনা করব চোখের যত্ন কিভাবে নিবেন সেই সম্পর্কে। চোখের সমস্যা সমাধানে করণীয় কি সেই বিষয়ে বিস্তারিত এই আর্টিকেল আলোচনা করব। আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সুতরাং আর্টিকেলটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

ছবি

চোখের যত্নে করণীয়

আমাদের শরীরের অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে চোখ। তাই এই চোখকে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ আমাদের শরীরের এই অঙ্গকে সব ধরনের ঝুঁকি এবং বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য নিম্নে কিছু টিপস আলোচনা করব।

১.খাদ্যাভ্যাস

আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে চোখ। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি। চোখের সমস্যা এড়াতে হলে ছোটবেলা থেকে নিয়মমাফিক খাদ্য অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরী। ছয় মাস পর্যন্ত শিশুর জন্য মায়ের দুধই যথেষ্ট। ছয় মাস পর থেকে ধীরে ধীরে বাড়তি খাবার অভ্যস্ত করতে হবে শিশুদের। বাড়তি পুষ্টিকর খাবার শাকসবজি যেমন-পাকা পেঁপে, গাজর এবং মওসুমি ফল পরিমিত পরিমাণে খাওয়াতে হবে। পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রেও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের ধরন প্রায় একই। ছোট মাছ, সবুজ শাকসবজি এবং মওসুমি ফল চোখের জন্য বিশেষ উপকারী।

২.পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম ও বিশ্রামের ব্যবস্থা 

আমাদের শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে ভালো রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমাতে হবে এবং বিশ্রাম প্রয়োজন হয়। কিন্তু ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী এর ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। সারাদিন পরিশ্রম করতে হলে পরিশ্রমের সময় বা কায়িক পরিশ্রমের সময় এক ঘন্টা পরপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট বিশ্রাম নেওয়া উচিত। 

এটা শুধু চোখই নয়, পুরো শরীরের বিশ্রাম হয়ে যায়। কম্পিউটারের কাজের ক্ষেত্রে কিছু রুলস অবলম্বন করা উচিত। যেমন প্রতি ২০ মিনিট পর পর ২০ সেকেন্ড করে বিরতি নিতে হবে এবং বিরতি চলাকালীন কমপক্ষে কম্পিউটার থেকে বিশ ফিট দূরে বিশ্রাম নিতে হবে। ফলে চোখের যেমন বিশ্রাম হবে তেমন ঘাড় ও পিঠের ব্যথা থাকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

আরো পড়ুনঃ পেট ব্যথার কারণ-পেট ব্যথা প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়

৩.টেলিভিশন ও কম্পিউটারের মনিটর থেকে চোখের দূরত্ব বজায় রাখা 

কম্পিউটারে কাজ করার সময় কম্পিউটার থেকে কত দূরে অবস্থান করতে হবে সেটা মনিটরের উপর নির্ভর করে। সাধারণত কম্পিউটারের মনিটর থেকে চোখের দূরত্ব তিন ফিট হওয়া উচিত এবং টেলিভিশনের মনিটর থেকে ১০ ফিট দূরত্ব রাখা উচিত। অনেক সময় দেখা যায় শিশুরা খুব কাছ থেকে টেলিভিশন দেখে থাকে এমনটি যদি হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

৪.তীব্র রোদ ও ইনফেকশন থেকে বাঁচার উপায়

তীব্র রদের সময় তীব্র রোদে থাকলে চোখ সুস্থ হয়ে যায় এবং চোখের অস্বস্তিত্ববোধ হতে পারে। তবে অবশ্যই রোদে ঘন ঘন চোখের পলক ফেললে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রশি থেকে চোখকে রক্ষা করার জন্য অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। তবে যারা পাওয়ার চশমা ব্যবহার করেন তারা ফটো সান ব্যবহার করতে পারেন। 

খাবার ও ধুলাবালির মাধ্যমেও এলার্জি ভাইরাল ইনফেকশন হতে পারে সে ক্ষেত্রে সানগ্লাস ও ছাতা ব্যবহার করতে হবে এবং বাইরে থেকে এসে চোখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ভাইরাল ইনফেকশন যদি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আক্রান্ত ব্যক্তিকে সচেতন হতে হবে এবং রুমাল বা অন্যান্য আলাদা জীবন মুক্ত জিনিস সাথে রাখতে হবে যাতে অন্যদের চোখে সংক্রমণ না হয়।

৫.চোখ ভালো রাখতে কন্টাক্ট লেন্সের ব্যবহার করা

বর্তমান সময়ে চশমার পরিবর্তে কন্টাক্ট লেন্সের ব্যবহার খুবই হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে রোগের চোখের প্রয়োজনের চিকিৎসক ভাব ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও প্রসাধনী সামগ্রী হিসেবে কন্টাক্ট লেন্সের ব্যবহার করলে অবশ্যই চিকিৎসা উপ পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত। 

চিকিৎসকের পরামর্শ এবং নির্দেশনায় অনুযায়ী ব্যবহার এবং ব্যবহার শেষে জীবন মুক্ত করে সলুশানে ডুবিয়ে লেন্স সংরক্ষণ করতে হবে। তবে চোখ যদি লাল হওয়া পানি পড়া ময়লা জমা ও অন্যান্য বিভিন্ন জাতীয় উপসর্গ দেখা দিয়ে লেন্স ব্যবহার করা যাবে না এবং দ্রুত চিকিৎসা করে পরামর্শ নিতে হবে।

৬. কিভাবে বুঝবেন চোখের সমস্যা হয়েছে?

চোখের সমস্যা হয়েছে সেটি বোঝার প্রাথমিক উপায় হচ্ছে চোখের দৃষ্টি কমে যাওয়া। আপনার চোখের দৃষ্টি কমে গেলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার চোখের কোন সমস্যা হয়েছে। সাধারণত চোখ থেকে পানি পড়া ময়লা জমার চোখের ব্যথা লাল হওয়া এসব উপসর্গের ভিত্তিতে চোখের সমস্যা হয়েছে সেটা বোঝা যায়।

চোখের বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা

ছবি

চোখের বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। অভি কচিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনমতেই আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত হবে না। চোখের জন্য আই ড্রপ খোলার এক মাসের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে এরপর সেটা ফেলে দিতে হবে। বছরে কমপক্ষে হলেও একবার চোখের পরীক্ষা এবং যেকোনো সমস্যায় অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা আবশ্যক।

নিয়মিতি চোখের যত্ন নিতে আরো কিছু টিপস

  • চোখ ভালো রাখতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
  • চোখের নিচে কালো দাগ পড়লে আলু কিংবা শসার টুকরো চোখের উপর দিয়ে দশ মিনিট চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিতে হবে।
  • চোখ ভালো রাখতে অবশ্যই বেশি বেশি সবুজ শাক-সবজি খেতে হবে সাথে খাবারের পাশাপাশি সালাদ খেতে হবে।
  • বাইরে থেকে ঘরে ফিরে অবশ্যই পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে।
  • অবশ্যই ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।

সম্মানিত পাঠক বন্ধু চোখ যেহেতু আমাদের অমূল্য সম্পদ তাই চোখকে বিভিন্ন ভাইরাস এবং সমস্যা থেকে বাঁচাতে হলে ভালো রাখতে হলে আমাদের এই টিপস গুলো অবশ্যই মেনে চলুন।

 আরো পড়ুনঃ নার্ভের বিভিন্ন সমস্যা-নার্ভের সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়

মন্তব্য: চোখের যত্ন কিভাবে নিবেন-চোখের সমস্যার সমাধানে করণীয়

সম্মানিত পাঠক বন্ধু আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আমাদের দেওয়া টিপস গুলো মেনে চললে অবশ্যই আপনি আপনার চোখকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস থেকে। আমাদের এই আর্টিকেলটি পরে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। আর নিয়মিত আর্টিকেল করতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url