হাঁপানি রোগের কারণ-শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ থেকে মুক্তির পাওয়ার উপায়

হাঁপানি রোগের কারণ-শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ থেকে মুক্তির পাওয়ার উপায়

সম্মানিত পাঠক আসসালামুয়ালাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজকে আমরা এই আর্টিকেল আলোচনা করব শ্বাসকষ্ট হাঁপানি রোগের কারণ সম্পর্কে। এছাড়াও শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আর্টিকেলটি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়বেন আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে চলেছে।

পোস্ট সূচীপত্র: শ্বাসকষ্ট হাঁপানি রোগের কারণ-শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ থেকে মুক্তির পাওয়ার উপায়

  • ভূমিকা 
  • হাঁপানি কী?
  • হাঁপানি কেন হয়?
  • হাঁপানি রোগের লক্ষণ
  • হাঁপানি রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিভাবে করবেন 
  • হাঁপানি রোগের চিকিৎসা
  • হাঁপানি রোগের চিকিৎসায় ইনহেলার ব্যবহার 
  • হাঁপানি রোগের জন্য এমডিআই প্রয়োগের কৌশল
  • ইনহেলারের মেয়াদ কত দিনের হয়ে থাকে 
  • জেনে রাখা জরুরী 
  • মন্তব্য

ভূমিকা: শ্বাসকষ্ট হাঁপানি রোগের কারণ-শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ থেকে মুক্তির পাওয়ার উপায়

বর্তমান সমাজে হাঁপানি এবং শ্বাসকষ্ট রোগে অনেকেই ভুগে থাকেন। হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট রোগের কারণ কি এই সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। এছাড়াও হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট হলে এর করনীয় এবং এর চিকিৎসা কি এ বিষয়ে আমরা অনেকেই অবগত নই। হাঁপানি এবং শ্বাসকষ্ট রোগ সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক কিছুই অজানা তথ্য জানতে পারবেন। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক। 

ছবি

হাঁপানি কী?

হাঁপানি হচ্ছে শ্বাসতন্ত্রের একটি প্রদাহ জনিত রোগ। হাঁপানি রোগ দীর্ঘমেয়াদী হয়ে থাকে। স্বাসতন্ত্রে যদি কোন প্রদাহ হয় তাহলে শ্বাসনালী ফুলে যায় এবং ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট বুকের মধ্যে শব্দ বুক চেপে ধরা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। এসবের সমন্বিত রূপ হচ্ছে হাঁপানি।

আরো পড়ুনঃ বমি কেন হয়- বমি থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়

হাঁপানি কেন হয়?

বিভিন্ন কারণে হাঁপানি রোগ হয়ে থাকে ডাক্তারি বাক্ষায় হাঁপানির কারণ সুনির্দিষ্ট করে বলা যায় না তবে কতগুলো বিষয় রয়েছে যেগুলো হাঁপানি রোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিষয়গুলো নিম্নোক্ত দেওয়া  হলো।

  • হাঁপানি রোগ বিভিন্ন ধরনের পশুর লোম ছত্রাক জনিত সমস্যার কারণে হাঁপানি হয়ে থাকে। 
  • বংশগত কারণে হাঁপানি রোগ হয়ে থাকে। 
  • কারখানার বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ সিগারেটের ধোঁয়া বায়ু দূষণ রং এর গন্ধ ঝাঁঝালো মসলা প্রভৃতির কারণে হাঁপানির আশঙ্কা থাকে।
  • শিশু বয়সে ও ছেলেদের হাঁপানি রোগ হয়ে থাকে মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক হলে এ রোগ বেশি হয়ে থাকে। 
  • বিভিন্ন ধরনের বেতন আসক ওষুধ হিরোইন প্রভৃতি ব্যবহারের কারণে হাঁপানি রোগ হয়। 
  • অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হওয়া মানসিক চাপ ইত্যাদির কারণে হাঁপানি তীব্রতা বেড়ে যায়। 
  • হাঁপানি রোগের আরেকটি অন্যতম কারণ হচ্ছে গরুর মাংস চিংড়ি ইলিশ মাছ বেগুন এসব খাওয়ার কারণে হাঁপানি হয় এবং হাঁপানের মাত্রা বেড়ে যায়।

হাঁপানি রোগের লক্ষণ

  • হাঁপানি রোগের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। যে বৈশিষ্ট্য গুলো দেখলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনারা হাঁপানি রোগ হয়েছে। এই পর্বে হাঁপানি রোগের লক্ষণগুলো জেনে নেব।
  • হাঁপানি রোগ হয়ে থাকলে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত হয়ে যায়। 
  • হাঁপানি রোগ হলে কাশি বা শুকনা কাশি হয়ে থাকে। 
  • দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। 
  • ঋতু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। 
  • হাঁপানি রোগ হলে শ্বাস প্রশ্বাসের সময় বুকে বাঁশির মতো আওয়াজ হয়। 
  • নাকে মুখে ধুলাবালি গেলে শ্বাসকষ্ট হয়। 

হাঁপানি রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিভাবে করবেন 

  • হাঁপানি রোগের পরীক্ষা নিরীক্ষা জন্য স্কিন প্রীক‌টেস্ট করতে হয়।
  • রক্ত পরীক্ষা করতে হয় রক্ত ও কফে ইয়োসিনোফিল সিরাম আইজি এর মাত্রা বেশি আছে কিনা তা নির্ণয় করতে হয়।
  • মেধা করলেন পরীক্ষা করতে হয় মেধাকলিন পরীক্ষার মাধ্যমে শ্বাসনালীর অতি সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা হয়। 
  • স্পাইরোমেট্রি বা ক্লোমেট্রি পরীক্ষা করতে হয় রোগীর শ্বাসনালীতে শ্বাস গ্রহণের সময় বাধা আছে কিনা তা নির্ণয়ের জন্য এটি করা হয়।

হাঁপানি রোগের চিকিৎসা

সম্মানিত পাঠক বন্ধু হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট রোগের সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা রয়েছে। যে চিকিৎসার মাধ্যমে হাপানি এবং শ্বাসকষ্ট রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই পর্বে আমরা হাঁপানি রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানব।

  • হাঁপানের চিকিৎসার জন্য নেবুলাইজার এর ব্যবহার বেশ ফলপ্রসু হয়ে থাকে হাঁপানির মাত্রা তীব্র হলে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় এই পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে যথাযথভাবে রোগীকে জীবাণুমুক্ত রাখা সম্ভব।
  • হাঁপানি রোগের জন্য বা হাঁপানি রোগের চিকিৎসায় আধুনিক পদ্ধতি হিসাবে ইনহেলার ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং উপকারী। এর মাধ্যমে অল্প ওষুধ প্রয়োগ করেই ভালো ফলাফল পাওয়া যায় খুব একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নাই।
  • সালবিউটামল‌‌ জাতীয় ওষুধ তাৎক্ষণিকভাবে শ্বাসনালির ছিদ্রপথ প্রসারিত করে এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের বাধা কমিয়ে দেয়।
  • chrom গ্লাইকেট এম আই নোট ফাইলিন ইত্যাদি প্রতিরোধক মূলক বা হাঁপানি রোগ প্রতিরোধক মূলক ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 
  • হাঁপানির আক্রমণ থেকে বাঁচতে অনেক সময় শিরায় স্টেরয়েডের ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়।

হাঁপানি রোগের চিকিৎসায় ইনহেলার ব্যবহার 

আমাদের দেশে হাঁপানি রোগের জন্য ইনহেলার ব্যবহার করা হয়। বেশ কয়েক ধরনের ইনহেলার ব্যবহার করা হয়। তারমধ্যে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ইনহেলার টি হচ্ছে এমডিআই বা মিটার্ড ডোজ ইনহেলার। এখানে ওষুধের তরল ক্ষুদ্র কণা (১-৫ মাইক্রোমিটার) অ্যারোসল আকারে ফুসফুসে প্রয়োগ করা যায়।

হাঁপানি রোগের জন্য এমডিআই প্রয়োগের কৌশল

হাঁপানি রোগের জন্য এমডিআই প্রয়োগের কৌশল রয়েছে। যে কৌশল গুলো ডাক্তাররা অবলম্বন করতে বলে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। ডোজ ইনহেলার প্রয়োগের বিভিন্ন ধাপ রয়েছে।

মিটার্ড ডোজ ইনহেলার প্রয়োগের ধাপগুলো নিচের মতো।

  • প্রথমে ইনহেলারের ঢাকনা খুলুন 
  • সোজা সামনের দিকে তাকানোর আগে চিবুক উঠিয়ে নিন। 
  • ধীরে ধীরে সাথ ত্যাগ করুন এবং বুকের সব বাতাস বের করে দিন। 
  • তারপর ইনহেলারের মাউথপিসটি দাঁতের ফাঁকে রেখে ঠোট দিয়ে চেপে ধরে থাকুন। 
  • এবার ধীরে ধীরে নিশ্বাস নিতে থাকুন এবং দৃঢ়ভাবে চাপ দিয়ে এরোসল ফুসফুসে নিয়ে যান। 
  • নিঃশ্বাসে বুক ভরে গেলে ইনহেলার থেকে মুখ সরিয়ে ফেলুন এবং ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড হাঁস বন্ধ করে রাখুন যেন ফুসফুসে শ্বাসনালীতে ওষুধ জমা না হয়ে থাকে। 
  • এবার স্বাভাবিক শ্বাস নিতে থাকুন এভাবে রোগীর এক টান ওষুধ নেয়া হয়।
  • দ্বিতীয়বার নিতে অন্তত পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর আগের মতই প্রক্রিয়াটি আবার করুন।
  • স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহারের পর মুখে পানি দিয়ে কুলকুচি করে নিন এবং পানি ফেলে দিন ভুলেও পানি পান করা যাবে না। এতে মুখে থাকা ওষুধ পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছড়ানোর আশঙ্কা কমে যাবে।

ইনহেলারের মেয়াদ কত দিনের হয়ে থাকে 

এম ডি আই ইনহেলার উৎপাদনের পর থেকে দুই বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। ব্যবহার করা শুরু করলে ছয় মাসের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। অতিরিক্ত গরম এবং তাপ থেকে ঠান্ডা এবং শুষ্ক স্থানে ইনহেলার রাখতে হবে ঘরে তাপমাত্রা ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখতে হবে। এমডিআই এর ডোজ কাউন্ট ছাড়া ইনহেলার কত ডোজ আছে সেটা দেখা বুঝা যায় না তাই ইনহেলারে কতটা দোষ ছিল এবং দিনে কত ডোজ নেওয়া হল সেদিকে হিসাব রাখতে হবে।

আরো পড়ুনঃ মানব দেহের ৩৫ টি জটিল রোগ সম্পর্কে জেনে নিন

জেনে রাখা জরুরী 

শ্বাসকষ্ট মানে কিন্তু হাঁপানি রোগ নয়। শ্বাসকষ্ট বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে রক্তশূন্যতা  হৃদরোগের কারণে হয়ে থাকে হাঁপানি কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। পৃথিবীতে প্রায় 24 কোটি হাঁপানি রোগী রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ প্রতিবছর হাঁপানির কারণে মারা যায়।

মন্তব্য: শ্বাসকষ্ট হাঁপানি রোগের কারণ-শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ থেকে মুক্তির পাওয়ার উপায়

সম্মানিত পাঠক বন্ধু হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট রোগকে মোটে ই অবহেলা করা উচিত নয়। এই আর্টিকেলে আগে বললাম প্রায় 24 কোটি হাঁপানি রোগী রয়েছে পৃথিবীতে এবং প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ প্রতি বছর হাঁপানির কারণে মারা যায়। তাই হাঁপানি রোগের ব্যাপারে অবশ্য সতর্ক থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

আমাদের শেষের কথা 

সম্মানিত পাঠক বন্ধু আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। আমরা প্রতিদিন নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। তাই নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url