এইডসের কারণ ও লক্ষণ সমূহ-এইডস প্রতিরোধ করার ২০টি সহজ উপায়

এইডসের কারণ ও লক্ষণ সমূহ-এইডস প্রতিরোধ করার ২০টি সহজ উপায় 

প্রিয় পাঠক বন্ধু আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা। আমরা আজকে এই আর্টিকেল আলোচনা করব এইডস রোগের কারণ সম্পর্কে। এছাড়াও এইডস রোগ প্রতিরোধ করার কার্যকরী উপায় গুলো সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে চলেছে।

পোস্ট সূচিপত্র: এইডসের কারণ ও লক্ষণ সমূহ-এইডস প্রতিরোধ করার ২০টি সহজ উপায় 

  • ভূমিকা 
  • এইডস কি?
  • এইডসের কারণ সমূহ
  •  এইডস রোগের লক্ষণ 
  •  এইডস রোগের চিকিৎসা 
  • এইডস  প্রতিরোধের উপায় 
  • মন্তব্য

ভূমিকা: এইডসের কারণ ও লক্ষণ সমূহ-এইডস প্রতিরোধ করার ২০টি সহজ উপায় 

অনেকে রয়েছে যাদের কৈশোর যৌবন অথবা শৈশবের জীবন থমকে গেছে। সমাজে কিন্তু তারাও বেঁচে থাকতে চেয়েছিল কিন্তু বেঁচে থাকতে পারেনি জীবনযুদ্ধে তাদের পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। এইডস এর মত মরণ রোগ তিল তিল করে তাদের জীবনকে শেষ করে দিয়েছে। আমাদের কুসংস্কার যুক্ত সমাজ এই সমস্ত রোগকে এক ঘরে করে দিয়েছে কারণ তারা এইডস রোগে আক্রান্ত এ সমস্ত কুসংস্কারকে দূর করতে রোগ প্রতিরোধ এবং জনসেসতা বৃদ্ধি করতে হবে। 

ছবি

সেজন্য প্রতি বছর এক ডিসেম্বর পালিত হয় বিশ্ব এইডস দিবস ডাবলু এইচ ও (WHO)এর পক্ষ থেকে ১৯৮৮ সালে পালিত হচ্ছে এই দিনটি। কিন্তু মানুষ এরপরেও কি সচেতন হচ্ছে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। এইডস'- এর ২০১৮ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩৭.৯ মিলিয়ন মানুষ HIV রোগে আক্রান্ত। মারা যান প্রায় ৭৭০০০০ জন মানুষ। নতুনভাবে, আক্রান্তের সংখ্যা ১.৭ মিলিয়ন। তবে, এই মাত্রাকে কমাতে UN এইডস'-এর পরিকল্পনা থমকে থাকেনি।

আরো পড়ুনঃ এইডস এর লক্ষণসমূহ কি কি-এইডস আক্রান্ত রোগীর খাবার 

এইডস কি?

এইডস হচ্ছে এইচআইভি রোগের ভাইরাস .এইডস রোগের পূর্ণরূপ হচ্ছে HIV=human immune deficiency virus. এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত মানুষকে এইচআইভি পজিটিভ (HIV+) বলা হয়। HIV ভাইরাসের প্রধান কাজ, মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অকেজো করে ফেলা। দেহের সবগুলো অঙ্গ কে এবং তন্ত্র কে ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় করে তোলে এবং শরীরের সমস্ত রোগের জন্ম দিতে প্রস্তুত এই ভাইরাস।

এইডসের কারণ সমূহ

এইডস রোগের অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যে কারণগুলো এইডস রোগ হওয়ার জন্য সরাসরি ভাবে যুক্ত। বর্তমান সময়ে এইডস রোগের কারণ দিন দিন মহামারীর আকার ধারণ করছে দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম মেলামেশার মাধ্যমে, এমনকি নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে, অথবা খাওয়ার মাধ্যমে। এছাড়াও যৌন মিলনের মাধ্যমে এর উৎপত্তি হয়ে থাকে এমন নয়। এগুলো ছাড়া আরো বিভিন্ন কারণে এই রোগের ভাইরাস হয়ে থাকে।

 যেমন - 

  • অবৈধ যৌন মিলনের মাধ্যমে এবং অন্যান্য অস্বাভাবিক যৌন কর্ম করে থাকলে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। 
  • এইডস রোগে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সঙ্গে অরক্ষিত যৌন মিলনে লিপ্ত হলে শরীরে HIV জীবাণু প্রবেশ করে থাকে। 
  • এইডস রোগে আক্রান্ত মায়ের থেকে গর্ভস্থ শিশু বা বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুর দেহে এইডস এর ভাইরাস প্রবেশ করে। 
  • বর্তমানে মাদকাসক্ত নেশার সময় একই সিরিঞ্জের মাধ্যমে একই সময়ে অনেকে মাদক গ্রহণের ফলে এইচআইভি ছড়াতে পারে।
  • এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত যদি কোনও সুস্থ মানুষের দেহে প্রবেশ করানো হয়, তবে সুস্থ ব্যক্তিটিও এইচআইভি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। 
  • এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ পুশ করার পর ভুলবশত কোন সুস্থ মানুষের দেহে যদি ওই সিলিং আবার পোস্ট করা হয় তাহলে এর মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
  • HIV আক্রান্ত কোন ব্যক্তির মাড়ির ক্ষত ও দেহের ক্ষত থেকে নিঃসৃত লালা ও রস থেকে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।

 এইডস রোগের লক্ষণ 

১) ঘন ঘন জ্বর হওয়া।

১০ দিন বা তারও বেশি সময় ধরে জ্বর থাকা। 

২) এইডস রোগের আরেকটি লক্ষণ হলো জিভে,ঠোঁটে,গলায় ও যৌনাঙ্গে ঘা হওয়া। 

৩) শরীরে এইডসের ভাইরাস দেখা দিলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। 

৪) কোনও কিছু খাওয়ার সময় মুখে ও গলায় ব্যথা অনুভূত হলে বুঝতে হবে এটা এইডস এর লক্ষণ।

৫) এইডসের অন্যতম আর একটি লক্ষণ হল শুকনো কাশি চলতেই থাকে। 

৬) শরীরে এইডস এর ভাইরাস ঢুকলে সারা শরীরে রাত্রিকালীন ঘাম দেখা যায়। 

৭) শরীরের লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া। 

৮) লাগাতার ডায়রিয়া চলতেই থাকা এইডস এর একটি অন্যতম লক্ষণ। 

৯) এইচআইভি ভাইরাস হলে প্রবেশ করলে শরীরের ওজন কমে যায়। 

১০) এইচআইভি ভাইরাসের আরেকটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো ধীরে ধীরে শরীরের অঙ্গ অকেজো হওয়া। 

এইচআইভি রোগের লক্ষণ গুলোর উপর ভিত্তি করে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এইচআইভির রোগ নির্ণয় করা হয়। এরপর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গে সংক্রমনের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

 এইডস রোগের চিকিৎসা 

এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু অনিবার্য কারণ এইডস রোগের কোন চিকিৎসা নেই তবে কিছু ওষধ ডাক্তাররা দিয়ে থাকে না আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে ভালো রাখার জন্য।

 ১) এইডস রোগের চিকিৎসা হিসেবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে। 

২) এইডস রোগীর উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি এআরটি-র এর  সাহায্য নিতে হবে। 

৩) এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এক ঘরে না করে দিয়ে পাশে থাকুন এবং মনের জোর বাড়ান। 

৪) এইডস আক্রান্ত রোগীকে সময় মাফিক ঔষধ, জল ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। 

৫) এইচআইভি অক্রান্তদের দৈনন্দিন কাজকর্ম থেকে বঞ্চিত না করে বিভিন্ন কাজে উৎসাহিত করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ মানব দেহের ৩৫ টি জটিল রোগ সম্পর্কে জেনে নিন

এইডস  প্রতিরোধের উপায় 

ছবি

যেকোনো রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। এইডস রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের মধ্যে এইডস রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এইডস প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরী। এইডস প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই শারীরিক মেলামেশার জন্য প্রটেকশন ব্যবহার করতে হবে। প্রটেকশন হিসেবে কনডম ব্যবহার করা যেতে পারে।এছাড়াও যৌন রোগের যথাযথ চিকিৎসা করা খুবই জরুরী কারণ যৌন রোগের ক্ষেত্রে বা যৌন রোগের কারণেও এইচআইভি ভাইরাস হয়ে থাকে। 

অনিরাপদ বা এইচআইভি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সিরিজ ব্যবহার করার মাধ্যমে এইচআইভি বা এইডস রোগে আক্রান্ত হতে পারে তাই রক্ত দেওয়া এবং নেওয়ার সময় অবশ্য সিরিঞ্জ চেঞ্জ করতে হবে। এইচ আই ভি এডস রোগ প্রতিরোধ করতে হলে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। এছাড়াও গর্ভের প্রথম অবস্থায় মায়ের এইচআইভি আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করানো উচিত।

মন্তব্য: এইডসের কারণ ও লক্ষণ সমূহ-এইডস প্রতিরোধ করার ২০টি সহজ উপায়  

সম্মানিত পাঠক বন্ধু আমরা এই আর্টিকেলে জানতে পারলাম এইডস রোগের কারণ, এইডস রোগের লক্ষণ এবং এইডস রোগ প্রতিরোধ করার উপায় গুলো সম্পর্কে। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে আপনার কোন অসুবিধা হয়নি। সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন এবং আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url