ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করার উপায়-কিভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়

ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করার উপায়-কিভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়

আমাদের সমাজে অনেকে রয়েছেন যাদের ডায়াবেটিস হয়েছে। এর মধ্যে আমরা অনেকেই জানিনা ডায়াবেটিস কি ডায়াবেটিস কিভাবে হয় বা ডায়বেটিস প্রতিরোধ করার উপায় গুলো কি কি। এসব কিছু যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টটি পড়ে আপনি জানতে পারবেন ডায়াবেটিস কি ডায়াবেটিস কেন হয়? ডায়াবেটিস এর লক্ষণ কি? ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায় বা প্রতিরোধের উপায় বাকি এগুলো সম্পর্কে। সুতরাং আর্টিকেলটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়বেন। 

পোস্ট সূচীপত্র: ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করার উপায়-কিভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়

  • ডায়াবেটিস কী?
  • ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ 
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার ৮টি উপায় 
  • ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার উপায় 

ডায়াবেটিস কী?

ডায়াবেটিস হলো এমন এক ধরনের অবস্থা যখন আমাদের শরীরে শরীর নিচ থেকে কোন ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে এবং ইনসুলিনার দক্ষতা হারিয়ে ফেলে বা ব্যবহার করতে পারে না। এর ফলে রক্তে শর্করা এবং গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা চেয়ে বেশি হয়ে যায়।

ছবি

মানুষের শরীরের কোর্সে শর্করা প্রবেশ কে নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন। এর ফলে আমাদের খাবার থেকে যে শর্করা বা গ্লুকোজ পাওয়া যায় তা রক্তের মধ্য দিয়ে বাহিত কোষে প্রবেশ করে। তখন কোষ শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তির জন্য গ্লুকোজ ব্যবহার করে থাকে।

ইনসুলিন তৈরি হয় অগ্ন্যাশয়ের বিশেষ কোষ দ্বারা তৈরি হরমোন আইলেটস থেকে। ডায়াবেটিস-জনিত ইনসুলিনের তারতম্যের জন্য আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রার তারতম্য ঘটে। তখন আমাদের শরীরে অস্বাভাবিক অবস্থা দেখা দেয়।

আরো পড়ুনঃ এইডসের কারণ ও লক্ষণ সমূহ-এইডস প্রতিরোধ করার ২০টি সহজ উপায় 

ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ 

সুপ্রিয় পাঠক আমরা অনেকেই আছি ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ সম্পর্কে অবগত নয়। সমস্যা নেই আমি আজকে ডায়াবেটিসের রোগের লক্ষণ সম্পর্কেও আপনাদের বলব। চলুন জেনে নেই। 

  • ডায়াবেটিস রোগের প্রথমত লক্ষণ হচ্ছে ঘন ঘন প্রথা হওয়া।
  • ঘন ঘন পিপাসা লাগলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার ড্রাইভার কিসের সমস্যা হয়েছে।
  • দুর্বল লাগাও ঘোর ঘোর ভাব আসা। 
  • খাবারে অরুচি আশা। 
  • ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া।
  • রক্তের শর্করা কমে যাওয়া সময় মত খাওয়া দাওয়া না হলে। 
  • মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া এবং কোন কারণ ছাড়াই শরীরের ওজন কমে যাওয়া। 
  • শরীরে কাটাছেঁড়া হলে দীর্ঘদিনের ও সেটা না সারা।
  • চামড়া খুসকো হয়ে যাওয়া। 
  • তোকে চুলকানি এবং খসখসে ভাব ধারণ করা। 
  • চোখে কম দেখতে শুরু করা।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার ৮টি উপায় 

বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস রোগটি মানবদেহে দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। লাখো মানুষ রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ার কারণে এই রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এই পর্বে আমরা জানবো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার আটটি উপায় সম্পর্কে।

 আট উপায়ে ডায়াবেটিস রাখতে পারেন নিয়ন্ত্রণে। জেনে নিন—

তেঁতো করলা

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো তেতো করলা খাওয়া। তেতো করলার জুস রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমা এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।

নয়নতারা ফুলের ব্যবহার 

আমাদের কাছে একটি পরিচিত ফুল হচ্ছে নয়নতারা ফুল। নয়নতারা ফুল তেঁতো। প্রতিদিন সকালে দুটি পাতা খালি পেটে চিবিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

মেথি

স্বাস্থ্যের জন্য একটি উপকারী বীজ হচ্ছে মেথি। মেথি হচ্ছে ফাইবার সমৃদ্ধ একটি বীজ। মেথি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। প্রতি রাতে দুই টেবিল চা চামচ মেথি পানিতে ভিজে সকালে খালি পেটে পান করুন এদের ডায়াবেটিস রোগের জন্য খুবই উপকার।

নিম-তুলসির পাতা খাওয়া 

নিম এবং তুলসী হচ্ছে এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ঔষধ। নিম পাতা এবং তুলসী পাতা ডায়াবেটিস নিরাময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন নিমপাতা এবং তুলসির পাতা ধুয়ে খালি পেটে চিবিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

কালো জাম

কালো জাম হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন একটি ফল। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কালোজাম সবচেয়ে উপকারী।

ঢেঁড়স

ভাইবার সমৃদ্ধ সবজি হচ্ছে ঢেঁড়স। এক গবেষণায় দেখা গেছে ডায়াবেটিস নিরাময় করতে এক রাতে এক গ্লাস পানির মধ্যে একটি ঢেঁড়স ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং সেই পানি সকালে খালি পেটে পান করতে হবে। তাহলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

মিষ্টি কুমড়া 

সবজির মধ্যে মিষ্টি কুমড়া হচ্ছে একটি পুষ্টিকর সবজি। মিষ্টি কুমড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই যার চোখের সমস্যা ও রাতকানা রোগ দূর করতেও সাহায্য করে।

নিয়মিত হাঁটা চলা করা 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে এবং রক্তের শর্করা প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে নিয়মিত প্রতিদিন হাঁটাচলা করতে হবে। অন্তত প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটাচলা করতে হবে। প্রথমে ধীরে ধীরে এবং পরে জড়িয়ে ধরে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে এতে ক্যালরি এবং চর্বি বার্ন করতে সাহায্য করবে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার উপায় 

ছবি

১. প্রতিদিন নিয়ম করে এক ঘণ্টা হাঁটুন

যেকোনো রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধে উত্তম। ঢাকা হাসপাতালে ডায়াবেটিস রোগীর বাংলাদেশে এক কোটিরও বেশি ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। নগর জীবনে আমাদের শারীরিক পরিশ্রম এবং হাঁটার প্রবণতা অনেক কমে গেছে। বর্তমান সময়ে আমরা কম্পিউটার বা মোবাইলে কাজ করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। যাদের পিতা মাতায় এবং পরিবারের কোনো সদস্য ডায়াবেটিস আছে তাদের জেনেটিক্যাল আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে হলে নিয়মিত হাঁটাচলা এবং শারীর পরিশ্রম শুরু করেন তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন।

২. জীবনধারা পাল্টে দিন

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার জন্য আপনার জীবনধারা পাল্টে দিন। চিকিৎসকরা বলছে পরিবার মা-বাবা অথবা বংশে যদি কারো ডায়াবেটিস থাকে তাহলে সে কারণে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই জীবনধারা পাল্টে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম। চিকিৎসকেরা বলছেন, যেসব পরিবারের বাবা-মা বা দাদা-দাদী, নানা-নানীর ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, তাদের পরবর্তী প্রজন্মের সদস্যদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

৩. ধূমপান ও মদ্যপান ছেড়ে দিন

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার জন্য অবশ্যই ধূমপান এবং মধ্যপ্রাণ ছেড়ে দিতে হবে। ধূমপান এবং মধ্য পান করার যদি কোন অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই তা পরিত্যাগ করতে হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগ ঠেকাতে হলে  যেসব খারাপ অভ্যাস সবার আগে ত্যাগ করতে হবে। তার মধ্যে রয়েছে ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস। কারণ এগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়।

আরো পড়ুনঃ হাঁপানি রোগের কারণ-শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ থেকে মুক্তির পাওয়ার উপায়

৪. মিষ্টি পরিহার করুন

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বা প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে মিষ্টি পরিহার করতে হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবারে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় তাই মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে সুতরাং মিষ্টি অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে মিষ্টি খেলেও নিয়ম বা পরিমান মত খাওয়া উচিত।

শেষের কথা: ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করার উপায়-কিভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়

সম্মানিত পাঠক বন্ধু আর্টিকেলটি যদি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি খুব ভালো লেগেছে। এবং অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন, আর নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url