লেবু খাওয়ার উপকারিতা-অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
লেবু খাওয়ার উপকারিতা-অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম আজকে এই আর্টিকেলে আলোচনা করতে চলেছি লেবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। লেবু খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে, লেবু কখন খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায় এসব বিষয়ে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। সুতরাং আর্টিকেল অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
পোস্ট সূচীপত্র: লেবু খাওয়ার উপকারিতা-অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
- ভূমিকা
- লেবু খাওয়ার উপকারিতা
- কিভাবে লেবু খাবেন
- অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
- কুসুম গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেলে ওজন কমে
- লেবুপানির খাওয়ার অন্যান্য উপকারিতা
- লেবু খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
- মন্তব্য
ভূমিকা: লেবু খাওয়ার উপকারিতা-অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি। লেবুতে যে কি পরিমাণ উপকার রয়েছে তা আমাদের কাছে অজানা নয়। লেবুর উপকারিতা পাওয়ার জন্য প্রতিদিন খাওয়ার প্লেটে এক টুকরো লেবু রাখা আবশ্যক। তবে লেবুর পুরোটাই গুনসমৃদ্ধ হলেও মাত্রাতিরিক্ত লেবু খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই এই আর্টিকেলে জানব কেন রোজ লেবু খাওয়া উচিত সে বিষয়ে।
আরো পড়ুনঃ ওষুধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
লেবু খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে লেবুর ব্যবহার রয়েছে। লেবু শুধু খাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে না বর্তমানে রূপচর্চার ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয়। লেবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে নেয়া যাক।
১. লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা অন্যান্য ফলের তুলনায় বেশি থাকে। এছাড়াও লেবুতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস হচ্ছে লেবু এবং ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে লেবু কাজ করে থাকে। তাই প্রতিদিন একটি করে লেবু খাওয়া পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
২. লেবু ত্বক চুল এবং শরীরের ধমনী ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এর ফলে পরোক্ষভাবে হার্টের কার্যক্ষমতা এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
৩. লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। ফুড পয়জনিং ডায়রিয়ার মত সমস্যায় লেবুর রস খুবই উপকারী। লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড যা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
৪.লেবু লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত হওয়ায় ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে লেবুর রস উপকারী।লেবুতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপযুক্ত রোগীদের জন্য ভাল। এতে করে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে যায়।
কিভাবে লেবু খাবেন
ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয় তাই পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে বা সর্ব তৈরি করে নিয়মিত খেতে পারেন। আবার প্রতিদিন নিয়মিত লেবু ভাতের সাথেও খাওয়া যায়। প্রতিদিন সকালে খাওয়ার ফল না থাকলে লেবুর রস খেতে পারেন ছানা তৈরীর ক্ষেত্রে লেবুর রস ব্যবহার করা ভালো। তবে লেবু এবং দুধ পর পর খাওয়া ঠিক নয়। অনেকে গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খান। এভাবে লেবু খাওয়া ঠিক নয়। কেননা গরম পানির উচ্চ তাপমাত্রায় লেবুর ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। সকালে খালি পেটে লেবুর রস খাওয়া ঠিক নয় এতে করে এসিডিটি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
করোনা মহামারীর পর থেকে বর্তমান সময়ে লেবু খাওয়ার অভ্যাস বেড়ে গেছে। বর্তমানে প্রায় সব বাড়িতেই লেবু খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। কেউ ভাতের সাথে লেবু খায় আবার কেউ চায়ের সাথে লেবু মিশিয়ে খায় প্রতিদিন একটি লেবু খাওয়া যেমন উপকারী তেমনি এর ফলে বিভিন্ন সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে। অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ফলে যাদের কিডনি সমস্যা রয়েছে তাদের কিডনিতে পটাশিয়ামের লেভেল বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা তৈরি হয়।
কেননা লেবুতে পটাশিয়ামের মাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে। যারা ইউরিক এসিডের রোগী রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রেও লেবু খাওয়ার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সরাসরি লেবু খাওয়ার ক্ষেত্রে দাঁতের এনামেলকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খালি পেটে লেবু খেলে সাইট্রিক এসিড পাক রসের এসিডের সাথে নিচে পাকস্থলীতে আলসারের সৃষ্টি করে। তাই আমাদের অতিরিক্ত লেবু খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
কুসুম গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেলে ওজন কমে
বর্তমান সময়ের শরীরের ওজন ভাড়া নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন। নানা কারণে শরীরের ওজন বাড়তে পারে আমরা সবাই চাই সহজ পদ্ধতিতে শরীরের ওজনকে কন্ট্রোলে রাখতে। সেক্ষেত্রে আমাদের কাছে পরিচিত একটি পদ্ধতি হচ্ছে কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করা। কিন্তু এভাবে কি আসলেই ওজন কমে? একটা প্রশ্ন থেকে যায়।
এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরা জানান, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে বা কমানোর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করা বেস্ট। কেউ যদি মনে করে লেবু পানি খেয়ে ওজন কমবে সেটা আসলে ভুল। সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম ব্যায়াম ইত্যাদি নিয়ম মত চলাফেলার পাশাপাশি লেবুর পানি পান করলে শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
আমাদের প্রায় সবারই সকালে ঘুম থেকে উঠে চা বা কফি পান করার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু ওজন কমাতে হলে চা কফির পরিবর্তে অবশ্যই কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে হবে। এটি শরীরের বিপাকীয় হার বাড়ায় এবং খাবার দ্রুত হজমের সাহায্য করে থাকে আবার খালি পেটে লেবু পান করলে ক্ষুধাও তো তুলনামূলক কম লাগে। খাবার গ্রহণের পরিমাণও কমে যায়। এভাবে শরীরের কম ক্যালরি প্রবেশ করে। এছাড়া লেবু পানি পান করার ক্ষেত্রে ব্যায়াম করলে ক্যালোরি ক্ষয়ের পরিমাণ বাড়ে।
আরো পড়ুনঃ কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা-কাঁঠালে কি কি ভিটামিন পাওয়া যায়?
লেবুপানির খাওয়ার অন্যান্য উপকারিতা
লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যেটা অ্যান্টিক অক্সিডেন্ট লেবু পানি পান করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরে কোর্সকে ক্ষতিকর ফ্রি-র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- লেবু মেশানো পানি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। শরীরকে ডিটক্সিফাই করে, অর্থাৎ দূষিত পদার্থ শরীর থেকে বের করে দিতে ভূমিকা রাখে।
- সকালে এক গ্লাস লেবুপানি খেলে পাকস্থলীর হজমশক্তি বাড়ায়। এ ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়ে যায়।
- লেবুপানি শরীরে ভিটামিন 'সি'র ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
- লেবুতে থাকা উপকারী উপাদান ত্বক উজ্জ্বল ও টানটান রাখতে সাহায্য করে।
- লেবুপানি পান করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
- লেবুপানি পান করলে শরীর ও মন সতেজ থাকে এবং ক্লান্তিভাব কম হয়।
লেবু খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসি ড যার ফলে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আসে তাদের লেবু পানি খেলে অসুবিধা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা লেবু পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে পারেন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পান করতে পারেন।
অতিরিক্ত লেবু পানি পান করার কারণে এসিডিটির সমস্যা দেখা দেয় তাই একটানা লেবু পানি পান না করে বিরতি দিয়ে পান করা ভালো। দিনে দুইবারের বেশি লেও পানি না খাওয়াই উত্তম। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা দাঁতের এনামেল এর ক্ষতি করতে পারে তাইলে ও পানি পানের পর ভালোভাবে গুলি করে মুখ পরিষ্কারভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
মন্তব্য: লেবু খাওয়ার উপকারিতা-অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
সুপ্রিয় পাঠক আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে লেবু খাওয়ার উপকারিতা লেবু খাওয়ার পদ্ধতি এবং লেবু খাবার ক্ষেত্রে সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন। এবং আশেপাশে বন্ধুদের জানার সুযোগ করে দিবেন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url