বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয়-শিশুদের দাঁতের যত্ন
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
শিশুদের দাঁত উঠার সময় মায়েদের করণীয় সাধারণত শিশুদের ছয় মাস থেকে নয় মাসের মধ্যে দাঁত ওঠে। কোন কোন শিশু তার আগে দাঁত উঠে যায়। দাদু টার ক্ষেত্রে কোন কোন শিশুর এক বছরও লাগতে পারে। শিশুদের ফুটফুটে হাসি নির্ভর করে তার দাঁতের উপর। তাই শিশুদের দাঁতের সুস্থ এবং সৌন্দর্য রক্ষায় দাঁতের যত্ন নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরী। সুপ্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলে শিশুদের দাঁতের যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
একটি শিশুর জন্মের ৫ থেকে ৮ মাসের মধ্যে দুধ দাঁত হয়। মূলত তখন থেকে যত্ন নেওয়া উচিত। দুধ দাঁতের যত্ন না নিলে পরবর্তীতে দাত উঠার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ নবজাতকের ত্বকের যত্ন নেওয়ার ২০টি উপায়
শিশুদের দাঁত ওঠার ক্ষেত্রে করণীয়
১) শিশুদের দুধ দাত উঠার সময় শিশুরা অনেক অস্বস্তি বোধ করে। দাঁত কিড়মির করে এবং হাতের পাশে যা পায় তাই কামড় দেয়। তাই এ সময় শিশু আশেপাশে পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বিভিন্ন প্রকার জিনিস থেকে শিশুদের ধরে রাখতে হবে।
২) দাঁত ওঠার সময় শিশুদের মধ্যে কামড়ানোর প্রবণতা বেশি থাকে সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন তার সাথে সাথে খেলনা দিতে হবে তাকে। এগুলো দেওয়ার আগে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিতে পারেন তাহলে শিশু আরাম লাগবে।
৩) খেলনা না দিলে সুতির কাপড় পানিতে ভিজিয়ে ফ্রিজে ঠান্ডা করে রেখে তারপরে তাকে দিন। তাহলে কামড়ালে মাড়িতে ব্যথা পাবে না এবং সে কাপড়টি বারবার চিবোতে থাকবে ফলে শিশুর অস্বস্তি লাঘব হবে।
৪) শিশুদের জন্য নরম বিসল যুক্ত দাঁত মাজার জন্য ব্রাশ পাওয়া যায়। চিবানোর জন্য সেগুলো বাচ্চাদের দিতে পারেন।
৫) শিশুদের ৬ থেকে ৮ বছরের মধ্যে দুধ দাঁত পড়ে যায়। এবং নতুন স্থায়ী দাঁত গজায় শিশুদের অবশ্য নিয়মিত দাঁত ব্রাশের অভ্যাস করতে হবে। শিশুদের ছোট থেকে যদি পিতা-মাতার সন্তানকে নিয়ে দু'বার ব্রাশ করে তাহলে, পরবর্তী সময়ে শিশুদের অভ্যাসে পরিণত হবে এবং তারা নিজে নিজে ব্রাশ করতে থাকবে।
৬) শিশুদের নতুন দাঁত উঠার সময় মিষ্টি জাতীয় খাবার কম দিতে হবে বিশেষ করে রাতে একবারেই উচিত নয়। কেননা শিশু চিকিৎসকরা মিষ্টি জাতীয় খাবার দাঁতে গেলে সমস্যার কথা বলে থাকেন।
শিশুদের দাঁতের যত্ন করণীয়
শিশুদের দাঁতের যত্নে অনেকগুলো করণীয় রয়েছে। শিশুদের দাঁত ঠিক রাখতে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে দাঁত। শিশুদের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই দাঁতের পরিচর্যা করতে হবে। বয়স ভেদে দাঁতের বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। শিশুর জন্মের ছয় মাস পর থেকে দুধ দাঁত ওঠা শুরু হয় এবং প্রায় তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত দুধদাত উঠতে থাকে। তাই শিশুর ছয় মাস বয়স থেকেই দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ সময়ে এসে চোখে দুধের পাশাপাশি অন্যতম নরম খাবার দিতে হবে ল্যাক্টোজ গ্লুকোজ ও অন্যান্য পলিস্যাকারাইড লম্বা সময় ধরে তাদের স্পর্শ থাকে। কিছু খাবার খাওয়ানোর পর অবশ্যই ব্রাশ দিয়ে ভালোভাবে দাঁত মেজে দিতে হবে। কেননা খাবারের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া হার্মেন্টেশন তৈরি করে এতে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয়। যা তাদের জন্য খুব ক্ষতিকর। তাই দাঁতে যেন কাল যে বাদামী রং না ধরে সেজন্য চিকিৎসা করে পরামর্শ নিতে হবে সাত থেকে নয় বছরের শিশুদের সামনে দাঁতগুলো কিছুটা ফাঁকা ফাঁকা হয়ে থাকে। এ বিষয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই। কেননা টেশন দাঁত উঠে গেলে তারপর সঠিক পজিশনের দাঁত চলে যায়।
শিশুদের স্বাভাবিক গঠন উপস্থিতির জন্য সব ধরনের খাবার প্রয়োজন তবে ক্যান্ডি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার জুস জাতীয় খাবার সীমিত পরিমাণে খাওয়ানো উচিত সাধারণত এসিড ফুড যেমন ল্যাকটিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার দাদের ক্ষয়ের প্রধান কারণ তাই এ ধরনের খাবার খাওয়া থেকে শিশুদের বিরত রাখতে হবে সে ক্ষেত্রে শিশুদের মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন পেয়ারা আপেল আজ জাতীয় খাবার খাওয়ানো উত্তম।
শিশুদের দাঁতের বিশেষ যত্ন কিভাবে নিবেন
শিশুদের দাঁতের বিশেষ যত্নের জন্য তিন বছরের কম বয়সী শিশুকে বৃসেল যুক্ত ব্রাশ ভিজিয়ে দাঁত পরিষ্কার করাতে হবে এ ক্ষেত্রে টুথপেস্ট ছাড়াই দাঁত মাড়ি পরিষ্কার করাতে হবে দাঁত ওঠার আগেও শিশুকে খাওয়ানোর পর আঙ্গুলের পাতলা ভেজা কাপড় দিয়ে দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। শিশুর বয়স তিন বছর পার হয়ে গেলে ধীরে ধীরে তাকে নরম যুক্ত কাপড় ব্যবহার করাতে হবে এবং অল্প পরিমাণ একটু রেস্ট নিয়ে ব্রাশ করাতে হবে। দুধ দাঁত নির্দিষ্ট বয়সে না পড়লে অবশ্যই ডেন্টিসের পরামর্শ নিতে হবে।
দুর্ঘটনাবসত দাঁতের ক্ষতি বা দাঁত ভেঙে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের ব্যবস্থা নিলে ধাত্রী পুনরায় স্থাপন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে, পড়ে যাওয়া দাঁতটিকে দ্রুত নরমাল স্যালাইন (০.৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড) দিয়ে এবং তা না থাকলে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে যেখান থেকে দাঁতটি পড়েছে সেখানে কিছুক্ষণ চেপে ধরে রাখলে তা পুনরায় মাড়ির সঙ্গে আটকে যায়। শিশুদের দাঁত সাধারণত ৬ বছরের পর থেকে পড়তে থাকে কোন কারণে পার্মানেন্ট দাঁত উঠতে দেরি হলে এক্সরের মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে দাঁত উঠানো যায়।
ঋতুভেদে দাঁতের বিশেষ যত্ন
ঋতুবেদের শিশুদের দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। তাই শিশুর দাঁতে কোন ধরনের মাইক্রোস্কপিক স্পন জমা হয়েছে কিনা সেটা খেয়াল করতে হবে দাঁতে ব্যথা বাসিসের অনুভূত হলে গরম পানি লবণ দিয়ে কুলকুচি করাতে হবে ব্যথা তীব্রতা বেশি হলে ডেনটিসের কাছে অবশ্যই যাওয়া বাঞ্ছনীয়। তাছাড়া ব্যথা কমানোর জন্য লবঙ্গ ছেঁচে সেটির রস নরম তুলো দিয়ে যেখানে ক্যারিজ হয়েছে, সেখানে লাগাতে হবে।
শিশুদের দাঁতের যত্নে যা করা যাবে না
শিশুদের দাঁতের যত্ন নিতে হলে অবশ্যই অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়াতে হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন ক্যান্ডি ১৮ বা দাঁতের গায়ে লেগে থাকে এমন খাবার প্রয়োজনে চেয়ে বেশি খাওয়ানো যাবে না। এবং খাওয়ার পর অবশ্যই ভালোভাবে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে। শিশুদের সাধারণত বদ অভ্যাসগুলো থাকে যে, আঙ্গুল চোষা জিহ্বা চোষা ঠোঁট চোষা নখ কামড়ানো ইত্যাদি। এসব করান ধরেছে চোখে দিলে তো রাখতে হবে।
শিশুদের দাঁতের যত্নে বিশেষ সতর্কতা
অনেকের রয়েছেন যারা দাঁতে ব্যথা না হলে ডাক্তারের কাছে যান না এ অবস্থায় দেখা যায় দাঁতে রোগের কারণে চিকিৎসা করানো হয় কিন্তু পরবর্তীতে দাঁত পরিষ্কার না করার ফলে দাঁতের পার্শ্ববর্তী মাড়িতে পুনরায় ক্ষতি হয়। তাই প্রতিদিন দুবার দাঁত মাজার পাশাপাশি কুলকুচি করতে হবে। এছাড়াও দাঁতের সমস্যার সমাধানের জন্য বিডিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে নিয়মিত পরিচর্যা ও ছয় মাস অন্তর কাপের মাধ্যমে দাঁতকে সুস্থ রাখা সম্ভব।
আমাদের শেষের কথা:বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয়-শিশুদের দাঁতের যত্ন
প্রিয় পাঠক আমাদের সুন্দর ফুটফুটে শিশুর ভবিষ্যতের জন্য অবশ্যই আমরা তার ফুটফুটে হাসি মুখের দাঁতের যত্ন নেব। একটি শিশুর দাঁতই সৌন্দর্য। তাই শিশু সুন্দর্য রক্ষার্থে আমরা তাদের দাঁতের যত্ন নিতে অবশ্যই অবহেলা করবে না। সর্বোপরি আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে থাকুন আর প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল পড়ুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url