আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী? কিভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করতে হয়

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী? কিভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করতে হয়

সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। মোটিভেশন আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আজকে আমরা এই আর্টিকেল আলোচনা করতে চলেছি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি সেই বিষয়ে বিস্তারিত। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়তে হবে। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে বাংলায়  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে। মানুষের যেমন কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চিন্তা ভাবনা এবং এনালাইসিস এর ক্ষমতা থাকে সেই ধরনের চিন্তা ভাবনা এবং এনালাইসিস কম্পিউটার করতে পারার কথা নয়। কিন্তু কম্পিউটার ডিসিশন মেকিং এর জন্য পূর্বের ডাটা এনালাইসিস করে প্রোপার সিদ্ধান্ত নেয়ার পদ্ধতিকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বলা হয়।

আমরা যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি তখন পূর্বের সমস্ত তথ্যকে ব্যবহার করে উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি, আমাদের শিক্ষকরাও যখন কোন ছাত্রকে ভালো বা খারাপ এই দুই ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করি। তখন কিন্তু  হুট করেই ভালো মন্দ ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করি না।

এই সিদ্ধান্তগুলো নেয়ার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের পূর্বের বেশকিছু পরীক্ষার রেজাল্ট, আচরণ, নৈতিক গুনাবলি ইত্যাদি পর্যালোচনা করে। পূর্বের কিছু তথ্য-উপাত্ত দ্বারা সাময়িক ভাবে বলে দেয়া যায় ছাত্রটি ভালো কিংবা খারাপ। 

আরো পড়ুনঃ YouTube চ্যানেল ভেরিফিকেশনের ধাপসমূহ জেনে নিন 

পোস্ট সূচিপত্র: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী? কিভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করতে হয়

আজকের পোস্টে আমরা জানার চেষ্টা করব আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি? এবং এটি কিভাবে কাজ করে?

  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি?
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বৈশিষ্ট্য 
  • শেখা (Learning)-
  • যুক্তিসংগত চিন্তা (Reasoning)-
  • সমস্যা সমাধান (Problem Solving)-
  • উপলব্ধি (Perception)-
  • ভাষা  ব্যবহার (Using Language)-

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি?

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হচ্ছে এক প্রকার সিমুলেশন প্রক্রিয়া, যা মেশিনে মানুষের মত করে কোন কিছু চিন্তা এবং জটিল সমস্যা সমাধান করে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষের সাধারণ ব্যাবহারকে ‘বুদ্ধিমত্তা’ হিসেবে বিবেচিত করা হয়। কিন্তু কোন কীটপতঙ্গের আচরণকে কিন্তু ‘বুদ্ধিমত্তা’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। এর কারণটা কি বলতে পারবেন?

ছবি

Digger Wasp এর কথা একটু বলি। এরা যখন খাবার সংগ্রহ করে ফিরে তখন খাবার নিয়ে সরাসরি তাদের নিজেদের বাসস্থানের প্রবেশ করে না। প্রথমে বাসস্থানের সামনে খাবারটি রেখে দেয়। এরপর বাসার মধ্যে অন্য কোনো ক্ষতিকর কিছু আছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে। যদি সে দেখে যে স্থানটি নিরাপদ, তারপর সে বাসস্থানে সম্মুখে রাখা খাওয়ারটি সংরক্ষণ করে।

তাহলে এখন প্রশ্ন আসতে পারে পতঙ্গটির কাজটি কি কোন বুদ্ধিমত্তার কাজ নাকি নিত্যনৈমিত্তিক কাজ? 

হ্যাঁ, এইজন্যই গবেষকরা কীটপতঙ্গের ব্যাবহারকে ‘বুদ্ধিমত্তার’ সাথে তুলনা করতে চান। বুদ্ধিমত্তা হলো নতুন কোন পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়া। এখানে Digger Wasp একই কাজ বারবার করছে। কিন্তু বুদ্ধি খাটিয়ে নতুন কোন কিছু করছে না।

তেমনি মানুষের একক কোন বৈশিষ্ট্যের জন্য তাকে বুদ্ধিমান বলে স্বীকৃতি দেয়া যায় না। মেশিন লার্নিং কয়েকটা বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৃষ্টিতে শেখা, যুক্তিসংগত চিন্তা, সমস্যা সমাধান, উপলব্ধি, এবং অন্যান্য ভাষা  ব্যবহার, এই কয়েকটি উপাদানের উপর নির্ভর করতে হয়।

শেখা (Learning)-

মানুষকে কোন কিছু শেখানোর যেমন অনেকগুলো পথ রয়েছে, তেমনি কম্পিউটারকে শেখানোর জন্য রয়েছে অনেক রকম কৌশল । তার মধ্যে একটি হচ্ছে ট্রিয়াল এবং ইরর। আপনি যখন কম্পিউটার-এর সাথে খেলবেন, তখন দেখবেন মেশিন অটোমেটিক ‘চাল’ দিতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না চেকমেট হবে। যদি চেকমেট হয় তাহলে সে পুরো গেমপ্ল্যান’টি সেভ করে রাখবে। এভাবে প্রত্যেকটি গেমস সংরক্ষন করে রাখবে। 

এখন কম্পিউটার উক্ত গেইমের প্রতিটি মুভ’কে সলভিং হিসেবে ধরে  নিবে। এই সমস্যা সমাধানের প্রয়োগকে বলা হয় ‘জেনারেলাইজেশন।’ জেনারেলাইজেশন এর মাধ্যমে নতুন সমস্যার সমাধান পদ্ধতির সাথে পূর্বের সংরক্ষিত সমস্যার তুলনা করে তারপর নতুন সমাধান দিয়ে থাকে। 

যুক্তিসংগত চিন্তা (Reasoning)

ছবি

যেকোনো সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত চিন্তা করা অবশ্যক । এখন কম্পিউটার কিভাবে যুক্তিসংগত চিন্তা করবে? কম্পিউটার এটিকে দু’ভাগে করতে পারে। ডিডাকটিভ এবং ইন্ডাক্টিভ উপায়ে। ডিটেকটিভ হচ্ছে অনুমাননির্ভর যেমন ধরুন ‘হয়তো সাফিউল স্কুলে বা কলেজে আছে ।’ এখন কম্পিউটার যেটা বুঝবে সেটা হচ্ছে প্রথমে চেক করে দেখবে সাফিউল কি স্কুলে আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে তো উত্তর পেলে। আর যদি না থাকে তাহলে বুঝতে হবে সে কলেজে আছে। 

আর ইন্ডাক্টিভ উপায় হচ্ছে, আগে থেকেই কোন বিষয়টি কিভাবে চিন্তা-ভাবনা করবে সেটি নির্ধারণ করে দেওয়া। যেমন ধরুন বিজ্ঞানের কোন বিষয় যদি আগে থেকে ব্যাখ্যা করে কম্পিউটারকে বোঝানো হয়, তাহলে সে খুব সহজে ধরতে পারবে তার এই ক্ষেত্রে সমাধান কি দেওয়া উচিত। 

সমস্যা সমাধান (Problem Solving)

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সমস্যার সমাধান বলতে কিছু নির্দিষ্ট উপায় সার্চ করতে করতে সলিউশন খোঁজাকে পদ্ধতিকে সমস্যার সমাধান বলে। এ ধরনের সমস্যার সাধারণত দুই ভাবে করা সম্ভব। স্পেশাল পারপোজ এবং জেনারেল পারপোজ। স্পেশাল পারপোজ এর ক্ষেত্রে আগে থেকেই কোন সমস্যার সমাধানের একটি রোডম্যাপ দেয়া থাকে। যেটি ধরে সামনে এগোতে থাকলে সমস্যাটি একটা সমাধান বের করা যায়।

অপরটি হচ্ছে  জেনারেল পারপোজ। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি পদক্ষেপ ধীরে ধীরে গ্রহণ করে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। যেমন কোন রোবটকে প্রথমে বলা হলো, ডান দিকে যাও। তারপর বাম দিকে,  তারপর উপরে, নিচে এভাবে প্রত্যেকটা দিকে বর্ণনা করে সমস্যাটির সমাধান এর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

উপলব্ধি (Perception)

সেলফ ড্রাইভিং কার সম্পর্কে আমরা অনেকেই হয়তো জানি। এই কাজগুলো সাধারণত ক্যামেরার বিশেষ সেন্সর এর মাধ্যমে করে থাকে। গাড়ির উপরে ৩৬০° ক্যামেরা সেটআপ করা থাকে। এই ক্যামেরাগুলো অবস্থার পরিবর্তন বিশ্লেষণ করে গাড়ির পরবর্তী মুভমেন্টে ভূমিকা রাখে।

তেমনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রেও উপলব্ধি বিষয়টি এভাবে কাজ করা থাকে। বিভিন্ন উপায়ে তথ্য-উপাত্ত গ্রহণ করে সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সমস্যা সমাধান করা হয়, যা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এ সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ ভিসা কিভাবে করতে হয়? ভিসা করতে যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন

ভাষা  ব্যবহার (Using Language)

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ভাষা একটি বড় ধরনের ফ্যাক্টর। সেলফ ড্রাইভিং কার গুলো যখন কোন স্পেসিফিক লোকেশন এর মধ্য দিয়ে যায়, তখন সেখানকার সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ গুলো তাকে বুঝতে হয়। যেমন রাস্তায় যে ধরনের ট্রাফিক ইন্ডিকেটরগুলো দেয়া থাকে সেগুলোর মধ্যে ও স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করা হয়। এই ভাষাগুলো যদি সিস্টেম বা মেশিন ধরতে না পারে তাহলে সে ভুল নির্দেশনা দিতে পারে। 

এছাড়াও অনেক ভাষা আছে উচ্চারণের উপর নির্ভর করে বা ভাষার গতির উপর নির্ভর করে সবকিছু পরিবর্তন হয়। তাই ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অনেক বেশি সতর্ক থাকে। যদি কোন উপায়ে ভুল উপাত্ত গ্রহণ করে, তাহলে তার পুরো ডিসিশন মেকিং-এ সেট এর প্রভাব পড়বে।

গুগলের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর চমক আমরা অনেক দেখেছি। গুগোল কিংবা সিরির কথাই ভাবুন আপনার গুগলের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট আপনার আগের কনভারসেশন এর উপর ভিত্তি করে পরবর্তী রিপ্লাই গুলো দিতে পারে। এটিও কিন্তু একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এমনকি আপনার স্ক্রীনে কি ঘটছে সে অনুযায়ী যে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। 

আমাদের শেষের কথা 

সম্মানিত পাঠক বন্ধু আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর কাজ কি এবং কিভাবে ব্যবহার করতে হয় এসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। সম্মানিত পাঠক আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url