সিগারেট খাওয়ার ২০টি ক্ষতিকর দিক-ধূমপান থেকে বিরত থাকার ২০টি উপায়

সিগারেট খাওয়ার ২০টি ক্ষতিকর দিক-ধূমপান থেকে বিরত থাকার ২০টি  উপায় 

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আজকে এই আর্টিকেল আলোচনা করব সিগারেট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক এবং সিগারেট থেকে বা ধুমপান থেকে বেঁচে থাকার উপায় সম্পর্কে। সিগারেট খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে বহুর ক্ষতির প্রভাব পড়ে থাকে। নিম্নে সিগারেট খাওয়ার বৃষ্টির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। ক্ষতিকর দিকগুলো হল-

ছবি

1.ফুসফুসের ক্যান্সার: সিগারেট খেলে ফুসফুসে ক্যান্সারের সৃষ্টি করতে পারে। 

2.হৃদরোগ:সিগারেট খাওয়ার ফলে হৃৎপিণ্ড রক্তনালিকের সংকুচিত করে ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে যায়। 

3.স্ট্রোক: ধুমপান করলে রক্তচাপ বৃদ্ধির পায় ফলে স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

4.ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ

অনেকদিন যাবত ধূমপান করার ফলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় এবং ফুসফুসে অসুস্থতা লক্ষ্য করা যায়।

5.ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা ধূমপানের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। 

6.মুখগহ্বর এবং গলার ক্যান্সার: ধুমপান করলে শ্বাসনালী গলা এবং মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

7.অকাল বার্ধক্য হয়: ত্বক দ্রুত বয়স্ক হতে শুরু করে এবং মুখে রেখা পড়ে যায় ধূমপানের ফলে।

 8.গর্ভাবস্থার সমস্যা হয় : গর্ভবতীরা ধূমপান করলে শিশুর জন্মের সময় ওজন কমে যায় এবং গর্ভের শিশুর জটিলতা দেখা দেয়।

9.অস্টিওপরোসিস: ধুমপান করার ফলে শিশুর হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং অটিস্টিক হওয়ার ঝুঁকিপাড়ায়।

10.মুখে দুর্গন্ধ এবং দাঁতের ক্ষতি হয়: সিগারেট খাওয়ার ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয় এবং দাঁতের ক্ষতি সাধন করে। 

11.পেপটিক আলসারের ঝুঁকি বাড়ে: ধূমপানের ফলে হজমের সমস্যা হয় এবং পেপটিক আলসার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 

12.হাড় ভাঙ্গার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়: ধূমপান করার ফলে হাড় ভাঙ্গার ঝুঁকি থেকে যায়। কেননা ধূমপানের ফলে হাড়ের শক্তি কমে যায়।

13.মানসিক অবসাদ হয়: সিগারেট খাওয়ার ফলে মানসিক অবসাদ হয় এবং উদ্বেগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। 

14.স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়: ধূমপান করার ফলে স্মৃতিশক্তি লোপ পায়।

15.গলার সংক্রমণ: ধূমপানের ফলে গলার বা শ্বাসনালির সংক্রমণ বেড়ে যায়।

16.শারীরিক ফিটনেস কমে যায়: ধূমপানের ফলে শারীরিক সক্ষমতা কমে যায় এবং সহনশীলতা কমে যায়।

17.লিভারের ক্যান্সার হয়: সিগারেট খাওয়ার ফলে লিভারের ক্যান্সারে ঝুঁকি বেড়ে যায়।

18.বাচ্চাদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট হয়: ধূমপানের ফলের শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি সৃষ্টি হয়। যা শিশুদের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।

19.আঙুল ও নখের রং পরিবর্তন: সিগারেট খাওয়ার ফলে নোয়াখের পরিবর্তন হয়ে যায়। নক হলুদ হয়ে যেতে পারে।

20.কোষ্ঠকাঠিন্ বেড়ে যায়: ধূমপানের ফলে পেটের হজমের ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য বেড়ে যায়।

উপরের এসব কারণে ধূমপান করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সুতরাং অবশ্যই ধূমপান থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন এবং নিজে বাঁচুন।

আরো পড়ুনঃ আমলকি খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা। আমলকি খাওয়ার ক্ষতিকর দিক

ধূমপান থেকে বিরত থাকার ২০টি  উপায় 

প্রিয় পাঠক ধূমপান থেকে বিরত থাকার অনেক উপায় রয়েছে যে উপায়গুলো বা নিয়মগুলো কার্যকরী নিয়ম। নিচে কয়েকটি কার্যকরী পদ্ধতি উল্লেখ করছি-

1.ধূমপানের কারণ চিহ্নিত করুন: ধূমপান থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রথম উপায় হচ্ছে ধূমপানের কারণ চিহ্নিত করতে হবে ধূমপানের কারণ চিহ্নিত করার পর সেই ওই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।

2.প্রয়োজনীয় কারণ খুঁজে বের করা:

ধূমপান ছাড়ার জন্য আপনাকে ধূমপানের প্রয়োজনীয় কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে। যেমন স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় পরিবার বা অর্থ সাশ্রয় হয়।

3.বন্ধু এবং পরিবারের সহায়তা নিতে হবে: ধূমপান বন্ধ করতে হলে বন্ধু এবং পরিবারের সহায়তা নিতে হবে। আপনার সিদ্ধান্তটি যে ভুল কি সঠিক সেটা পরিবারের সাথে শেয়ার করে জানুন এবং তাদের সমর্থন নিন।

4.একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করতে হবে: ধূমপান ছাড়ার জন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করতে হবে। যেদিন থেকে আপনি ধূমপান ছাড়বেন এজন্য আপনার মনকে প্রস্তুত করতে চেয়ে তার একটি সহায়তা করবে।

 5.নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ব্যবহার করুন: ধূমপান ছাড়ার জন্য আপনাকে নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ব্যবহার করতে হবে। নিকোটিন প্যাচ, গাম, লজেঞ্জ ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে যা ধূমপানের প্রয়োজনীয়তা কমায়।

6.নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন: ধূমপান ছাড়তে হলে আপনাকে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে করে চাপ এবং ধূমপানের ইচ্ছা অনেকটাই কমে যাবে।

7.পরিবর্তন তৈরি করুন: ধূমপানের সাথে জড়িত যেই অভ্যাসগুলি রয়েছে সেই অভ্যাস গুলি আপনাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করতে হবে। যেমন কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে চেঞ্জ করতে হবে, বা অন্য ধূমপায়ীদের সাথে সময় কাটানোর অভ্যাস থাকলে তাদের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে।

8.চুইং গাম বা ক্যারমেল ব্যবহার করুন: ধূমপান ছাড়ার আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে মুখে সবসময় চুইংগা বা কেয়ারোমেল চালাতে পারেন। সেক্ষেত্রে ধূমপানের আকাঙ্ক্ষা কমে যাবে।

9.মাইন্ডফুলনেস এবং মেডিটেশন করা: মানসিক চাপ এর কারণে অনেকে ধূমপান করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে মানসিক চাপ কমাতে এবং ধূমপান এড়াতে মাইন্ডফুলনেস চর্চা করা যেতে পারে।

10.অ্যাপ ব্যবহার করুন: ধূমপান ত্যাগ করার জন্য মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে প্রগ্রেস ট্র্যাক করতে পারেন। 

11.ধূমপান এড়ানোর পরিবেশ তৈরি করতে হবে: ধূমপান এড়ানোর জন্য আপনাকে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এমন পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। যেখানে ধূমপান হয় সব সিগারেট এবং ধূমপানের সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলতে হবে।

12.নতুন শখ গড়ে তুলুন: সময় কাটানোর জন্য নতুন নতুন শখ গড়ে তুলতে হবে। নতুন নতুন শখের সন্ধান করতে হবে যেমন বই পড়া গান শোনা ছবি আঁকা ইত্যাদি করা যেতে পারে।

 13.নিজেকে পুরস্কার দিন: নিজেকে প্রতিদিন পুরস্কৃত করার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিবার ধূমপান ছাড়ার চেষ্টায় সফল হলে আপনি নিজেই নিজেকে পুরস্কৃত করবেন। এটি আপনাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

14.প্রতিদিন নিজের অগ্রগতি লক্ষ্য করুন: প্রতিদিন আপনার নিজের অগ্রগতি লক্ষ্য করতে হবে। সাথে সাথে আপনি ধূমপান থেকে বিরত আছেন এমন একটি ডায়েরিতে লিখে রাখতে হবে। এটি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।

15.অভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে: ধূমপান ছাড়ার জন্য আপনাকে আপনার অভ্যন্তরীণ মনোবল বাড়াতে হবে। এবং আপনার সিদ্ধান্তের উপর দৃঢ় থাকতে হবে নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে যে আপনি ধূমপান ছেড়েছেন।

16.ইলেকট্রনিক সিগারেট এড়িয়ে চলুন: ইলেকট্রনিক সিগারেট থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে কারণ এগুলো দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকারক হতে পারে।

17.ব্যস্ত থাকুন: ধূমপান ছাড়ার জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত ব্যস্ত থাকতে হবে। যেকোনো কাজ করে সময় কাটাতে হবে।

18.স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে: অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং নিজের শরীরকে মনকে সুস্থ রাখতে হবে। তাহলে ধূমপানের ইচ্ছা কমে যাবে।

19.পেশাদারদের সাহায্য নিন: অবশ্যই ধূমপান ছাড়ার জন্য পেশাদারদের সাহায্য নিতে হবে। চিকিৎসক কাউন্সিলর এদের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক সময় ধূমপান ছাড়ার জন্য বিশেষ থেরাপির প্রয়োজন হয়। সেগুলো গ্রহণ করতে হবে।

20.স্মরণ করিয়ে দিন নিজের কারণগুলি: আপনার ধূমপান ছাড়ার যেসব কারণগুলো রয়েছে সেই কারণগুলো নিজে নিজে মনে রাখুন। কারণ এই কারণগুলো ধূমপান থেকে আপনাকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয়-শিশুদের দাঁতের যত্ন 

মন্তব্য: সিগারেট খাওয়ার ২০টি ক্ষতিকর দিক-ধূমপান থেকে বিরত থাকার ২০টি  উপায় 

উপরোক্ত এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করলে এবং সঠিকভাবে তা পালন করলে ধূমপান থেকে নিজেকে বিরত রাখা সম্ভব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url